গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে চাপে বাংলাদেশের পোশাক খাত -নিক্কেই এশিয়ান রিভিউর রিপোর্ট
বাংলাদেশের
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম উৎস হচ্ছে ক্রমবর্ধমান পোশাক শিল্প। পুরো
এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে বেড়ে উঠছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প
রপ্তানি। কিন্তু সমপ্রতি বাংলাদেশ সরকারের গ্যাসের মূল্য রেকর্ড পরিমাণ
বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত শিল্পটির বিকাশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
প্রসঙ্গত, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয় তার চেয়ে কম দামে সরবরাহ করে থাকে বাংলাদেশ সরকার। ওই লোকসান কমাতে সমপ্রতি শিল্পখাতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম গড়ে এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০২০ অর্থবছরের শুরু অর্থাৎ ১লা জুলাই থেকে এ মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হয়ছে।
এদিকে, ২৭ বছর বয়সী পোশাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অনন্ত গার্মেন্ট প্রতি বছর ৩০ কোটি ডলারের বেশি পরিমাণ অর্থের পণ্য রপ্তানি করে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীর সংখ্যা ২৬ হাজার। তারা এইচ অ্যান্ড এম, গ্যাপ, লেভাই’স, মার্কস অ্যান্ড সেপন্সার, জ্যাক অ্যান্ড জোন্স ও জারার মতো ব্র্যান্ডের জন্য বোতাম, সোয়েটার, জ্যাকেটসহ নানাবিধ পণ্য তৈরি করে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে বলেছেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতিষ্ঠানটির উন্নতির হার ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যেই পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।
পোশাক শিল্পের নেতারাও একই ধরনের কথা বলছেন। বাংলাদেশ পোশাক শিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন- বিজিএমই’র প্রেসিডেন্ট রুবানা হক বলেন, পোশাক শিল্পের মোট খরচের ১.৫ শতাংশ খরচ হয় গ্যাস ব্যবহারে। সে হিসেবে গ্যাসের দাম ৩৮ শতাংশ বাড়ায় উৎপাদন খরচ বাড়ছে প্রায় ১ শতাংশ। এটা হয়তো শতাংশের হিসেবে খুব বেশি না, কিন্তু আমাদের পোশাক শিল্প হচ্ছে এমন একটি খাত যেখানে প্রতি পয়সার জন্য সংগ্রাম করতে হয়।
তিনি বলেন, অনিশ্চিত গ্যাস সরবরাহ, বাজারে অস্থিরতা ও পণ্যের দামের আচমকা উঠানামার মতো সমস্যার কারণেই নতুন উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে ইচ্ছুক নন। এর মধ্যে আচমকা এই মূল্যবৃদ্ধি তাদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ভেস্তে দিবে। এরকম মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমাদের উৎপাদন খরচ বাড়াবে। ক্ষুদ্র ও মধ্য পরিসরের ব্যবসার জন্য পরিস্থিতি আরো কঠিন হবে।
২০২০ সালের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন দরকার পড়বে ৮৫ কোটি কিউবিক ফুট এলএনজি। এই হিসাবের ওপর নির্ভর করেই কর্তৃপক্ষ গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু অনন্ত গার্মেন্টের মতো গ্যাস ব্যবহারকারী শিল্পগুলোর জন্য দাম বৃদ্ধি হয়েছে ৩৮ শতাংশ। এদিকে, ব্যক্তি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪৩.৯৭ শতাংশ ও বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বেড়েছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ। এই দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ব্যবসায়ী, ভোক্তা অধিকার সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো। বামপন্থি দলগুলো ৭ই জুলাই দেশব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে। কিন্তু সরকার মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এক বিবৃতিতে বলেছে, গ্যাস উৎপাদন, এলএনজি আমদানি, হস্তান্তর ও বন্টন খরচ এবং দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিচারে এই মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজন ছিল। বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেছেন, আপনাদের জ্বালানির খরচ ও জ্বালানি না থাকার খরচের পার্থক্য বুঝতে হবে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, এলএনজিসহ বাংলাদেশে প্রতিদিন উৎপাদিত গ্যাসের পরিমাণ হচ্ছে ৩ হাজার কোটি ঘন ফুট। কিন্তু দৈনিক চাহিদা হচ্ছে ৪ হাজার কোটি ঘন ফুট।
এদিকে, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, এই মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই ন্যায্য নয়। কেননা, গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। তিনি জানান, এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য যদি প্রধান পোশাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরাও ব্যাপক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি জানান, প্রতি বছর তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা তিন হাজার থেকে চার হাজার কোটি ডলার আয় করে। ব্যক্তি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত ৪৪ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি এই রপ্তানিকারকদের সরাসরি আঘাত হানবে। বাংলাদেশের ৯৯ শতাংশ পোশাকজাত পণ্য তৈরি কারখানায় এরকম বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। আলামিন সতর্ক করে বলেন, শিল্পে প্রতিযোগিতার হার কমে গেলে প্রায় পাঁচ হাজার কারখানা থেকে কর্মীরা চাকরি হারাবে। এসব বিষয়ে সরকারে সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করছে তার সংগঠন।
সমপ্রতি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য কিছুটা সু-খবর প্রকাশ পেয়েছে। চীনসহ অন্যান্য দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র শুল্কারোপ করায় গত ১১ মাসে দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির হার বেড়েছে ১৩ শতাংশ, যার আর্থিক মূল্য ৩ হাজার ১৭৩ কোটি ডলার।
প্রসঙ্গত, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয় তার চেয়ে কম দামে সরবরাহ করে থাকে বাংলাদেশ সরকার। ওই লোকসান কমাতে সমপ্রতি শিল্পখাতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম গড়ে এক-তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০২০ অর্থবছরের শুরু অর্থাৎ ১লা জুলাই থেকে এ মূল্যবৃদ্ধি কার্যকর হয়ছে।
এদিকে, ২৭ বছর বয়সী পোশাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অনন্ত গার্মেন্ট প্রতি বছর ৩০ কোটি ডলারের বেশি পরিমাণ অর্থের পণ্য রপ্তানি করে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীর সংখ্যা ২৬ হাজার। তারা এইচ অ্যান্ড এম, গ্যাপ, লেভাই’স, মার্কস অ্যান্ড সেপন্সার, জ্যাক অ্যান্ড জোন্স ও জারার মতো ব্র্যান্ডের জন্য বোতাম, সোয়েটার, জ্যাকেটসহ নানাবিধ পণ্য তৈরি করে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে বলেছেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রতিষ্ঠানটির উন্নতির হার ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যেই পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।
পোশাক শিল্পের নেতারাও একই ধরনের কথা বলছেন। বাংলাদেশ পোশাক শিল্প প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন- বিজিএমই’র প্রেসিডেন্ট রুবানা হক বলেন, পোশাক শিল্পের মোট খরচের ১.৫ শতাংশ খরচ হয় গ্যাস ব্যবহারে। সে হিসেবে গ্যাসের দাম ৩৮ শতাংশ বাড়ায় উৎপাদন খরচ বাড়ছে প্রায় ১ শতাংশ। এটা হয়তো শতাংশের হিসেবে খুব বেশি না, কিন্তু আমাদের পোশাক শিল্প হচ্ছে এমন একটি খাত যেখানে প্রতি পয়সার জন্য সংগ্রাম করতে হয়।
তিনি বলেন, অনিশ্চিত গ্যাস সরবরাহ, বাজারে অস্থিরতা ও পণ্যের দামের আচমকা উঠানামার মতো সমস্যার কারণেই নতুন উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে ইচ্ছুক নন। এর মধ্যে আচমকা এই মূল্যবৃদ্ধি তাদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ভেস্তে দিবে। এরকম মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমাদের উৎপাদন খরচ বাড়াবে। ক্ষুদ্র ও মধ্য পরিসরের ব্যবসার জন্য পরিস্থিতি আরো কঠিন হবে।
২০২০ সালের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন দরকার পড়বে ৮৫ কোটি কিউবিক ফুট এলএনজি। এই হিসাবের ওপর নির্ভর করেই কর্তৃপক্ষ গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু অনন্ত গার্মেন্টের মতো গ্যাস ব্যবহারকারী শিল্পগুলোর জন্য দাম বৃদ্ধি হয়েছে ৩৮ শতাংশ। এদিকে, ব্যক্তি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪৩.৯৭ শতাংশ ও বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বেড়েছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ। এই দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ব্যবসায়ী, ভোক্তা অধিকার সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো। বামপন্থি দলগুলো ৭ই জুলাই দেশব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে। কিন্তু সরকার মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এক বিবৃতিতে বলেছে, গ্যাস উৎপাদন, এলএনজি আমদানি, হস্তান্তর ও বন্টন খরচ এবং দেশের সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিচারে এই মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজন ছিল। বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেছেন, আপনাদের জ্বালানির খরচ ও জ্বালানি না থাকার খরচের পার্থক্য বুঝতে হবে।
সরকারি তথ্য অনুসারে, এলএনজিসহ বাংলাদেশে প্রতিদিন উৎপাদিত গ্যাসের পরিমাণ হচ্ছে ৩ হাজার কোটি ঘন ফুট। কিন্তু দৈনিক চাহিদা হচ্ছে ৪ হাজার কোটি ঘন ফুট।
এদিকে, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, এই মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই ন্যায্য নয়। কেননা, গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। তিনি জানান, এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য যদি প্রধান পোশাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরাও ব্যাপক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি জানান, প্রতি বছর তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা তিন হাজার থেকে চার হাজার কোটি ডলার আয় করে। ব্যক্তি মালিকানাধীন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত ৪৪ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি এই রপ্তানিকারকদের সরাসরি আঘাত হানবে। বাংলাদেশের ৯৯ শতাংশ পোশাকজাত পণ্য তৈরি কারখানায় এরকম বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। আলামিন সতর্ক করে বলেন, শিল্পে প্রতিযোগিতার হার কমে গেলে প্রায় পাঁচ হাজার কারখানা থেকে কর্মীরা চাকরি হারাবে। এসব বিষয়ে সরকারে সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করছে তার সংগঠন।
সমপ্রতি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য কিছুটা সু-খবর প্রকাশ পেয়েছে। চীনসহ অন্যান্য দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র শুল্কারোপ করায় গত ১১ মাসে দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির হার বেড়েছে ১৩ শতাংশ, যার আর্থিক মূল্য ৩ হাজার ১৭৩ কোটি ডলার।
No comments