শিশু সায়মা হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা
আটক ধর্ষক হারুনুর রশিদ |
সমবয়সী
বন্ধুর সঙ্গে খেলতে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হয়েছিল ৭ বছর বয়সী শিশু
সায়মা। একই ভবনের আট তলার ফ্ল্যাটে গিয়ে জানতে পারে তার বন্ধু ঘুমাচ্ছে।
তাই না খেলেই সে লিফটে করে তার ছয় তলার ফ্ল্যাটে ফিরছিল। লিফটের মধ্যেই
দেখা হয় তার সহপাঠীর বাবার খালাত ভাই হারুনুর রশিদের সঙ্গে। তখন হারুন
সায়মাকে ভবনের ছাদ ঘুরিয়ে দেখানোর কথা বলে। আট তলার লিফট থেকে সে সায়মাকে
ছাদে নিয়ে যায়। ছাদ থেকে আবার একই ভবনের নবনির্মিত নবম তলার একটি ফ্ল্যাটে
নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকে সায়মার দেহ।
হারুনুর রশিদ তাকে মৃত ভেবে ও পরবর্তীতে ধরা না পড়ার ভয়ে গলায় রশি পেঁছিয়ে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারের পর ধর্ষণ ও হত্যার লোমহর্ষক এই বর্ণনা দিয়েছে হারুনুর রশিদ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল এসব কথা জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন। এর আগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে ডিবি পুলিশ হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বাতেন বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই দিন মাকে বলে শিশু সায়মা আট তলার ফ্ল্যাটে যায়। আট তলার ফ্ল্যাট মালিক পারভেজের সন্তান সায়মার সমবয়সী। তার সঙ্গে সায়মা প্রায়ই খেলাধুলা করে এবং ওই বাসায় যাতায়াত করত। ঘটনার দিন সায়মা ওই ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর তার সহপাঠীর মা তাকে জানান সে ঘুমাচ্ছে পরে আসার জন্য। এই কথা শুনে সায়মা নিজের ঘরে যাবার জন্য লিফটে উঠে। তখন তার সঙ্গে দেখা হয় হারুনুর রশিদের।
সে তাকে ছাদ দেখানোর কথা বলে নয় তলার খালি ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন সায়মা চিৎকার করলে সে তার মুখ চেপে ধর্ষণ করে। ব্যাপক ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সায়মা নিস্তেজ হয়ে গেলে হারুন তার গলায় দড়ি পেঁছিয়ে টানতে টানতে রান্না ঘরে রেখে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় বাড়ির দারোয়ান তাকে দেখতে পায়। বাড়ির দারোয়ানের বক্তব্যের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে ধর্ষক হারুনকে শনাক্ত ও পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হয়।
আব্দুল বাতেন বলেন, হারুনুর রশিদ আট তলার একটি ফ্ল্যাটের মালিক পারভেজের খালাত ভাই। আগে সে নিয়মিত ওই বাসায় থেকে পারভেজের রঙের দোকানে কাজ করত। পহেলা জুলাই থেকে পারভেজ তাকে আর কাজে যেতে মানা করেন। কিন্তু আত্মীয় হওয়াতে সে আরও কয়েকদিন ওই বাসায় ছিল। আর এ সুযোগেই সে এরকম জগণ্য একটি কাজ করেছে। তিনি বলেন, ধর্ষণ শেষে হত্যা এ ধরণের ঘটনা অত্যন্ত কুরুচিকর। মানবতাবিরোধী অপরাধ। এ ধরনের অপরাধীরা ধর্ষণের পর যখন ভাবে সে বাঁচতে পারবে না তখনই হত্যার মত ঘটনা ঘটায়। এই ধর্ষককে শিশুটির বাবার করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে রিমাণ্ড চাওয়া হবে। বাতেন বলেন, এ ঘটনায় ওই বাসার অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত হারুন ছাড়া আর কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
শিশু সামিয়া আফরিন সায়মা নবাবপুরের ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের ছোট মেয়ে। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সায়মা সবার ছোট। ওয়ারির বনগাঁও এলাকার ১৩৯/১ বাসায় পরিবারের সঙ্গেই থাকত। আর ওয়ারির সিলভার ডেল স্কুলে নার্সারিতে পড়ালেখা করত। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে তার কোন খোঁজ পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভবনটির নয় তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতরে সায়মার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার গলায় রশি পেঁছানো ছিল ও মুখে ছিল রক্তের দাগ। রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নিয়ে যায়। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বাহ্যিকভাবে তার গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার আলামত পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার ঠোঁটে কামড়ের চিহ্ন এবং গোপনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এদিকে মেয়েকে ধর্ষণ ও পরে হত্যার বিচার চেয়েছেন সামিয়ার বাবা আব্দুস সালাম। তিনি শিগগিরই ওই ধর্ষকের ফাঁসি চেয়েছেন। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, পরীর মত মেয়ে আমার। এই মেয়েকে যে কষ্ট দিয়ে মেরেছে তার ফাঁসি চাই। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, মাগরিবের আজানের সময় আমি নামাজ পড়তে মসজিদে যাই। মসজিদ থেকে ফেরার সময় সাড়ে ৭টায় নাশতা কিনে বাসায় আসি। বাসায় এসে দেখি সায়মা নেই। আমি, আমার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সায়মাকে খুঁজতে শুরু করি। সবগুলো ফ্ল্যাটের সবস্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি শেষেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ৯ তলায় যাই। সেখানে দুটি ফ্ল্যাট আছে। একটি ফ্ল্যাট খোলা দেখে ভেতরে ঢুকে প্রথমেই আমার মেয়ের জুতা দুটি দেখতে পাই। এরপর মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে দেখি কিচেনের বেসিনের নিচে মেয়েকে ফেলে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, খেলার কথা বলে বাইরে যাওয়ার সময় তার মা তাকে বাধা দেন। তখন সে বলেছিল ১০ মিনিটের জন্য সে ওই বাসায় যাচ্ছে। একটু খেলে এসে পড়া বুঝিয়ে দেবে।
আব্দুস সালাম আরও বলেন, সায়মার মৃত্যুতে গত তিন ধরে পরিবারের কেউ এক ফোটা পানিও মুখে দেয়নি। দেশবাসীর উদ্দেশ্য তিনি বলেন, যাদের মেয়ে বাচ্চা আছে তাদের যেন মা-বাবা আগলে রাখেন। এক মুহূর্তের জন্য আড়াল হতে দেয়া যাবে না। আর এসব নরপিচাশদের হাত থেকে মেয়েদের খেয়াল রাখতে হবে।
হারুনুর রশিদ তাকে মৃত ভেবে ও পরবর্তীতে ধরা না পড়ার ভয়ে গলায় রশি পেঁছিয়ে মৃতদেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে গ্রেপ্তারের পর ধর্ষণ ও হত্যার লোমহর্ষক এই বর্ণনা দিয়েছে হারুনুর রশিদ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গতকাল এসব কথা জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন। এর আগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে ডিবি পুলিশ হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বাতেন বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই দিন মাকে বলে শিশু সায়মা আট তলার ফ্ল্যাটে যায়। আট তলার ফ্ল্যাট মালিক পারভেজের সন্তান সায়মার সমবয়সী। তার সঙ্গে সায়মা প্রায়ই খেলাধুলা করে এবং ওই বাসায় যাতায়াত করত। ঘটনার দিন সায়মা ওই ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর তার সহপাঠীর মা তাকে জানান সে ঘুমাচ্ছে পরে আসার জন্য। এই কথা শুনে সায়মা নিজের ঘরে যাবার জন্য লিফটে উঠে। তখন তার সঙ্গে দেখা হয় হারুনুর রশিদের।
সে তাকে ছাদ দেখানোর কথা বলে নয় তলার খালি ফ্ল্যাটে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন সায়মা চিৎকার করলে সে তার মুখ চেপে ধর্ষণ করে। ব্যাপক ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সায়মা নিস্তেজ হয়ে গেলে হারুন তার গলায় দড়ি পেঁছিয়ে টানতে টানতে রান্না ঘরে রেখে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় বাড়ির দারোয়ান তাকে দেখতে পায়। বাড়ির দারোয়ানের বক্তব্যের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে ধর্ষক হারুনকে শনাক্ত ও পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হয়।
আব্দুল বাতেন বলেন, হারুনুর রশিদ আট তলার একটি ফ্ল্যাটের মালিক পারভেজের খালাত ভাই। আগে সে নিয়মিত ওই বাসায় থেকে পারভেজের রঙের দোকানে কাজ করত। পহেলা জুলাই থেকে পারভেজ তাকে আর কাজে যেতে মানা করেন। কিন্তু আত্মীয় হওয়াতে সে আরও কয়েকদিন ওই বাসায় ছিল। আর এ সুযোগেই সে এরকম জগণ্য একটি কাজ করেছে। তিনি বলেন, ধর্ষণ শেষে হত্যা এ ধরণের ঘটনা অত্যন্ত কুরুচিকর। মানবতাবিরোধী অপরাধ। এ ধরনের অপরাধীরা ধর্ষণের পর যখন ভাবে সে বাঁচতে পারবে না তখনই হত্যার মত ঘটনা ঘটায়। এই ধর্ষককে শিশুটির বাবার করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে রিমাণ্ড চাওয়া হবে। বাতেন বলেন, এ ঘটনায় ওই বাসার অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত হারুন ছাড়া আর কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
শিশু সামিয়া আফরিন সায়মা নবাবপুরের ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের ছোট মেয়ে। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সায়মা সবার ছোট। ওয়ারির বনগাঁও এলাকার ১৩৯/১ বাসায় পরিবারের সঙ্গেই থাকত। আর ওয়ারির সিলভার ডেল স্কুলে নার্সারিতে পড়ালেখা করত। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে তার কোন খোঁজ পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভবনটির নয় তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতরে সায়মার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার গলায় রশি পেঁছানো ছিল ও মুখে ছিল রক্তের দাগ। রাত ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নিয়ে যায়। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বাহ্যিকভাবে তার গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার আলামত পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার ঠোঁটে কামড়ের চিহ্ন এবং গোপনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এদিকে মেয়েকে ধর্ষণ ও পরে হত্যার বিচার চেয়েছেন সামিয়ার বাবা আব্দুস সালাম। তিনি শিগগিরই ওই ধর্ষকের ফাঁসি চেয়েছেন। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, পরীর মত মেয়ে আমার। এই মেয়েকে যে কষ্ট দিয়ে মেরেছে তার ফাঁসি চাই। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, মাগরিবের আজানের সময় আমি নামাজ পড়তে মসজিদে যাই। মসজিদ থেকে ফেরার সময় সাড়ে ৭টায় নাশতা কিনে বাসায় আসি। বাসায় এসে দেখি সায়মা নেই। আমি, আমার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সায়মাকে খুঁজতে শুরু করি। সবগুলো ফ্ল্যাটের সবস্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি শেষেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ৯ তলায় যাই। সেখানে দুটি ফ্ল্যাট আছে। একটি ফ্ল্যাট খোলা দেখে ভেতরে ঢুকে প্রথমেই আমার মেয়ের জুতা দুটি দেখতে পাই। এরপর মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে দেখি কিচেনের বেসিনের নিচে মেয়েকে ফেলে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, খেলার কথা বলে বাইরে যাওয়ার সময় তার মা তাকে বাধা দেন। তখন সে বলেছিল ১০ মিনিটের জন্য সে ওই বাসায় যাচ্ছে। একটু খেলে এসে পড়া বুঝিয়ে দেবে।
আব্দুস সালাম আরও বলেন, সায়মার মৃত্যুতে গত তিন ধরে পরিবারের কেউ এক ফোটা পানিও মুখে দেয়নি। দেশবাসীর উদ্দেশ্য তিনি বলেন, যাদের মেয়ে বাচ্চা আছে তাদের যেন মা-বাবা আগলে রাখেন। এক মুহূর্তের জন্য আড়াল হতে দেয়া যাবে না। আর এসব নরপিচাশদের হাত থেকে মেয়েদের খেয়াল রাখতে হবে।
সামিয়া আফরিন সায়মা |
No comments