আত্মগোপনে দুবাইয়ের শাসকের স্ত্রী

দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ মাকতুমের স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনতে আল হুসেইন দেশ থেকে পালিয়ে লন্ডনে গিয়ে আত্মগোপন করে আছেন। সেখান থেকে তিনি জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ চাইছেন। কিন্তু তাকে ফেরত পেতে তৎপর দুবাই। এতে কোনো সাড়া মিলছে না। এ নিয়ে দুবাই ও বার্লিনের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে বৃটিশ মিডিয়ায়। ওদিকে প্রিন্সেস হায়া ও তার সৎমেয়ে প্রিন্সেস লতিফার পক্ষে প্রচারণায় নেমেছে অধিকার বিষয়ক প্রচারণাকারীরা। তারা প্রিন্সেস হায়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আপনি এখন মুক্ত।
আপনার মেয়েকে সাহায্য করুন।
এর মধ্য দিয়ে প্রিন্সেস হায়া’র সৎমেয়ে প্রিন্সেস লতিফাকে (৩৩) উদ্ধারে তার সহায়তার কথা বলা হয়েছে। মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রিন্সেস লতিফাও এর আগে দুবাই থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। ফলে তাকে দুবাইয়ে আটকে রাখা হয়েছে। প্রচারণাকারীরা বলছেন, তাকে ‘ড্রাগ’ দিয়ে রাখছে শাসকগোষ্ঠী, যাতে ভেতরের কোনো কথা বাইরে প্রকাশ না হয়। তাই প্রিন্সেস লতিফার চিকিৎসা ও তাকে উদ্ধারে প্রিন্সেস হায়া’র সহায়তা চেয়েছেন তারা। বৃটিশ মিডিয়ায় এ নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা হচ্ছে কয়েকদিন ধরে।
প্রথমে দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ মাকতুমের স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনতে আল হুসেইন জার্মানিতে পালিয়ে গেছেন বলে খবর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে বলা হচ্ছে, তিনি স্বামীকে ফেলে পালিয়ে গেছেন লন্ডনে। তার স্বামী বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধনীদের অন্যতম। কোনো কোনো রিপোর্টে বলা হচ্ছে, নতুন জীবন শুরু করতে প্রিন্সেস হায়া সংযুক্ত আরব আমিরাত ছাড়ার আগে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছেন ৩ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড। এখন তিনি শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ মাখতুমের কাছ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ চাইছেন।
গত বছর দুবাই থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ মাখতুমের এক মেয়ে প্রিন্সেস লতিফা। কিন্তু তাকে ধরে ফেলা হয়। তারপর থেকে এখন অবধি দুবাইয়ে তাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। আটক করার আগে প্রিন্সেস লতিফা ধারাবাহিকভাবে কিছু ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তিনি তাতে বলেছেন, তার জীবন কলঙ্কিত। এর মধ্য দিয়ে তিনি কি বুঝিয়েছেন তা পরিষ্কার নয়। এর আগে তিনি একবার পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। সে জন্য তাকে দু’বছর জেলে রাখা হয়েছিল।
তাকে আটক করার পর তার পক্ষে প্রচারণাকারীরা তাকে মুক্ত করার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, তাকে নেশাদ্রব্য প্রয়োগ করা হচ্ছে। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। তার পিতাকে যেন কোনো বিব্রতকর অবস্থায় তিনি ফেলতে না পারেন সে জন্য এমনটা করা হচ্ছে। এখন এই প্রচারণাকারীরাই চাইছেন, প্রিন্সেস হায়া দেশ থেকে পালাতে পেরেছেন। তারই উচিত এখন প্রিন্সেস লতিফার চিকিৎসার জন্য মুখ খোলা। তবে দুই সন্তানের মা প্রিন্সেস হায়া এখন কোথায় অবস্থান করছেন তা অজানা। এ অবস্থায় জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, লন্ডনে কেনসিংটন রাজপ্রাসাদের কাছেই রয়েছে তার ৮ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড মূলের একটি বাড়ি।
প্রিন্সেস লতিফাকে মুক্ত করার জন্য একটি প্রচারণা টিম গঠন হয়েছে। এর নাম ফ্রি লতিফা। এর অন্যতম নেত্রী টিনা জুহিয়াইনেন বলেন, দুবাইয়ে নিষ্পেষণমূলক শাসকের বিরুদ্ধে বিরাট কারাকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারই স্ত্রী। এটা উল্লেখ করার মতো একটি বিষয়। আমরা প্রিন্সেস হায়া’র প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি তিনি যেন তার বৈশ্বিক ক্ষমতা ও প্রভাবকে ব্যবহার করেন লতিফাকে মুক্ত করতে। পিতার নির্যাতনমূলক আচরণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লতিফা। তার জীবন রক্ষা করতে সহায়তা করার সুযোগ আছে প্রিন্সেস হায়া’র। প্রিন্সেস লতিফার জীবন ঝুঁকিতে। তিনি হতে পারেন একজন প্রিন্সেস। কিন্তু স্বাধীনতা ও সমান অধিকার নেই। আমরা আশা করবো প্রিন্সেস হায়া ও তার সন্তানরা নিরাপদে থাকবেন। আমাদের সঙ্গে প্রচারণায় যোগ দেবেন।

No comments

Powered by Blogger.