ইসরাইলের সঙ্গে ভারতের ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র চুক্তি বাতিল by অমিতাভ রঞ্জন

ইসরাইলের কাছ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের স্পাইক এন্টি-ট্যাংক মিসাইল কেনার চুক্তি বাতিল করেছে ভারত। ইসরাইলী প্রতিরক্ষা ঠিকাদার রাফায়েল এডভান্সড ডিফেন্স সিস্টেমের কাছ থেকে ক্ষেপনাস্ত্রগুলো কেনার কথা ছিলো। ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান – ডিফেন্স রিসার্স এন্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) দুই বছরের মধ্যে স্পাইকের বিকল্প সরবরাহ করতে পারবে বলে দাবি করার পর ভারত সরকার ওই সিদ্ধান্ত নেয়।
চুক্তিটি অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে চুক্তিটি চিরতরে বাতিলের ব্যাপারে ইসরাইলকে অবহিত করা হয়েছে। ডিআরডিও দাবি করছে যে তারা ভিইএম টেকনলজি লি.-এর সহায়তায় আরো কম মূল্যে একই ধরনের প্রযুক্তি সরবরাহ করতে পারবে।
কর্মকর্তারা জানান যে দেশীয় উৎপাদনকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ডিআরডিও একটি ম্যান-পোর্টেবল এন্টি-ট্যাংক গাইডেড মিসাইল তৈরির পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এর দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ডিআরডিও জানায় যে তারা গত সেপ্টেম্বরে আহমেদনগরের রেঞ্জে ক্ষেপনাস্ত্রটির পরীক্ষা চালিয়েছে।
তবে ডিআরডিও তার দাবি অনুযায়ী সময়মতো প্রয়োজন পূরণ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সেনাবাহিনী সন্দিহান। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চায় ডিআরডিও যেন সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি পূরণ করে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন যে মন্ত্রণালয় এখন সময়ক্ষেপনকারী আমদানি প্রক্রিয়ার চেয়ে দেশে তৈরি এন্টি-ট্যাংক মিসাইলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
কর্মকর্তারা জানান, ভারত গত বছর রাফায়েলের সঙ্গে স্পাইক মিসাইল চুক্তি বিলম্বিত করে। কারণ ফ্রান্স থেকে রাফাল জেট কেনা নিয়ে যে বিতর্ক চলছিলো এই চুক্তি তাতে নতুন বিতর্ক তৈরি করতে পারতো।
তখন বলা হয়েছিলো যে দেশের উচ্চ তাপমাত্রার পরিবেশে স্পাইকের ইনফ্রারেড ব্যবস্থা ভালোভাবে কার্যকর কিনা তা প্রমাণের জন্য স্পাইক মিসাইলের আরো পরীক্ষা চালাতে হবে। বলা হয় যে পাকিস্তান সংলগ্ন পশ্চিম সীমান্তে এই ক্ষেপনাস্ত্র কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে সেনাবাহিনীর সন্দেহ রয়েছে।
কিন্তু ডিআরডিও ২০২১ সালের মধ্যে কয়েক হাজার দেশে তৈরি এ ধরনের ক্ষেপনাস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। স্পাইক মিসাইলগুলোর সরবরাহ পেতেও প্রায় এ রকম সময়েরই প্রয়োজন হতো।
২০১৪ সালের অক্টোবরে প্রথম ভারত ৩২১টি স্পাইক ল্যান্সার ও ৮,৩৫৬টি ক্ষেপনাস্ত্রের জন্য ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি করে। কিন্তু ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ডিআরডিও’র অনুকূলে চুক্তিটি বাতিল করা হয়।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরাইল সফরের পর কাজটি আবারো রাফায়েলকে দেয়া হয়। সে অনুযায়ী গত বছর আগস্টে ভারতের কল্যাণি গ্রুপের সঙ্গে একটি উৎপাদন ফ্যাসিলিটিও উদ্বোধন করে।

No comments

Powered by Blogger.