রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখলো মার্কিন প্রতিনিধিদল আজ ঢাকায় বৈঠক

রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সরজমিনে দেখতে বাংলাদেশ সফর করছেন মার্কিন কংগ্রেস সংশ্লিষ্ট দু’জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (কংগ্রেশনাল স্টাফার)। তারা হলেন- রবার্ট কারেন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজার ফর সিনেট ম্যাজোরিটি লিডার মিচ ম্যাককনেল এবং পল গ্রোভ, সিনেট অ্যাপ্রোপ্রিয়েট কমিটি (সেক) এর ফরেন অপারেশনস অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রফেশনাল স্টাফ মেম্বার। দু’জন গতকাল কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দুদিন আগে ঢাকায় আসা মার্কিন প্রতিনিধি দলটির আজ ঢাকায়  বাংলাদেশ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে চলমান অনিশ্চয়তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণে রেখেছে এ ইস্যুতে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক এবং মানবিক- সর্বোতভাবে সহায়তা দেয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কেবল ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধিই নয়, দেশটির আইন প্রণেতা এবং তাদের প্রতিনিধিরাও পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন। প্রতিনিয়ত তারা ঢাকা এবং ইয়াংগুন থেকে রিপোর্ট নিচ্ছেন। ইস্যুটি নিয়ে কথা বলছেন, যা বৈশ্বিক জনমত ধরে রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা করছে।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ এবং টেকসই সমাধানে বাংলাদেশ তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহায়তায় দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয় দু’টি পথেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা আলোচনার দ্বার যেমন খোলা রাখছে তেমনি বৈশ্বিকভাবে মিয়ানমারের ওপর চাপও অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু কোন কিছুতেই অং সান সু চি সরকারকে বাগে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সময় যত যাচ্ছে, ইস্যুটি ততই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। যা বাংলাদেশ তথা মানবাধিকার সংবেদনশীল রাষ্ট্রগুলোকে ভাবিয় তুলছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের পশ্চিমা বন্ধুরা এ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে ব্যুরো অব পপুলেশন, রিফিউজিস এন্ড মাইগ্রেশন ইয়াংগুন অফিস এবং ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিরা কক্সবাজার সফর করেন। সেখানে তারা প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুতকৃত ইউএনএইচসিআর-এর ট্রানজিট ক্যাম্প এবং ইউনিসেফ লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন। তারা আশ্রয় ক্যাম্পগুলোও পরিদর্শন করেন। পরিস্থিতি সরজমিনে দেখা ছাড়াও রোহিঙ্গা শরণার্থী ও নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরবর্তীতে বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার কক্সবাজার এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্প কুতুপালং পরিদর্শন করেন। ক্যাম্পের বিভিন্ন প্রোগ্রাম ছাড়াও তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ইউএনএইচসিআর এর ‘শরণার্থীর সাথে সংহতি’ ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে তাদের উদারতার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ এবং সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।

No comments

Powered by Blogger.