এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়ানোর সুযোগ নেই by রাশেদা কে চৌধূরী
রাশেদা কে চৌধূরী |
যুক্তরাষ্ট্রে
বসে অনলাইনে ও পত্রিকায় বরগুনার খবরটি দেখে শিউরে উঠলাম। এতে শুধু ক্ষুব্ধ
ও হতাশই নই, সব মিলিয়ে মনের মধ্যে আতঙ্ক অনুভূত হচ্ছে। কারণ, দেশে এ ধরনের
ঘটনা ঘটেই চলছে। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আদালতও বলেছেন, সমাজ কোথায় যাচ্ছে? এ রকম পরিস্থিতিতে একজন উন্নয়ন ও
সমাজকর্মী হিসেবে প্রশ্ন জাগে, পরিবার ও সমাজে কী ঘটছে? রাষ্ট্র এখানে কী
করছে? সমাজে দেখছি একধরনের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যেখানে প্রকাশ্যে অপরাধ
সংঘটিত হলেও এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। বরগুনায় দিনদুপুরে কলেজের সামনে এমন একটি
বর্বর ঘটনা ঘটল। অথচ কেউ এগিয়ে এল না।
একজন নারী আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাঁর স্বামীকে রক্ষা করতে পারলেন না। কলেজের তরুণ শিক্ষার্থীরা তাহলে কোথায় ছিল? এই বয়সে তাদের তো এগিয়ে আসার কথা ছিল। কেউ জরুরি নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করতে পারত। আশপাশের লোকজনেরও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এ রকম পরিস্থিতির জন্য কাকে দায়ী করব? এই ঘটনাটি তো আর ঘরের মধ্যে রাতের আঁধারে হয়নি, যা নারীদের সঙ্গে প্রায়ই করা হয়। এখানে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে প্রকাশ্যে ঘটনাটি ঘটল। তাহলে বলতে হয়, আমাদের শিক্ষা কোথায় যাচ্ছে। কোন মূল্যবোধ শেখাচ্ছে। কেউ যদি এসে ধাওয়াও দিত, তাহলেও হয়তো রিফাত শরীফকে বাঁচানো যেত। এর আগে বিশ্বজিৎ (পুরান ঢাকায় নৃশংসভাবে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল) ও অভিজিৎকে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জঙ্গিদের হাতে নিহত) বাঁচানো যায়নি। এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য আমরা কী করছি, তা ভেবে দেখা দরকার। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ভয় পাইনি, তাহলে আজ কাকে ভয় পাচ্ছি? কেন প্রতিরোধ করতে পারছি না? বিচার চাইতে গিয়েও কিন্তু ফেঁসে যাওয়ার ভয় কাজ করে। এই বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। আর পরীক্ষাকেন্দ্রিক পড়াশোনা থেকে বের হয়ে মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষার্থী তৈরির দিকে জোর দিতে হবে।
বরগুনার এই ঘটনা এখন খুব আলোচনা হচ্ছে। হয়তো আবার কোনো ঘটনা ঘটবে, তখন আবার এটি ভুলে যাব। দেখে মনে হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। গণমাধ্যমকেও অনুরোধ করব, বিচার না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকার জন্য। সর্বোপরি পার পাওয়ার সংস্কৃতির দানবটাকে সরাতে হবে।
লেখক: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
একজন নারী আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাঁর স্বামীকে রক্ষা করতে পারলেন না। কলেজের তরুণ শিক্ষার্থীরা তাহলে কোথায় ছিল? এই বয়সে তাদের তো এগিয়ে আসার কথা ছিল। কেউ জরুরি নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করতে পারত। আশপাশের লোকজনেরও কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এ রকম পরিস্থিতির জন্য কাকে দায়ী করব? এই ঘটনাটি তো আর ঘরের মধ্যে রাতের আঁধারে হয়নি, যা নারীদের সঙ্গে প্রায়ই করা হয়। এখানে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে প্রকাশ্যে ঘটনাটি ঘটল। তাহলে বলতে হয়, আমাদের শিক্ষা কোথায় যাচ্ছে। কোন মূল্যবোধ শেখাচ্ছে। কেউ যদি এসে ধাওয়াও দিত, তাহলেও হয়তো রিফাত শরীফকে বাঁচানো যেত। এর আগে বিশ্বজিৎ (পুরান ঢাকায় নৃশংসভাবে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল) ও অভিজিৎকে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জঙ্গিদের হাতে নিহত) বাঁচানো যায়নি। এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য আমরা কী করছি, তা ভেবে দেখা দরকার। মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে ভয় পাইনি, তাহলে আজ কাকে ভয় পাচ্ছি? কেন প্রতিরোধ করতে পারছি না? বিচার চাইতে গিয়েও কিন্তু ফেঁসে যাওয়ার ভয় কাজ করে। এই বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। আর পরীক্ষাকেন্দ্রিক পড়াশোনা থেকে বের হয়ে মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষার্থী তৈরির দিকে জোর দিতে হবে।
বরগুনার এই ঘটনা এখন খুব আলোচনা হচ্ছে। হয়তো আবার কোনো ঘটনা ঘটবে, তখন আবার এটি ভুলে যাব। দেখে মনে হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। গণমাধ্যমকেও অনুরোধ করব, বিচার না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকার জন্য। সর্বোপরি পার পাওয়ার সংস্কৃতির দানবটাকে সরাতে হবে।
লেখক: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
No comments