চট্টগ্রামে মাদক নিয়ন্ত্রণে ‘কিশোর গ্যাং’ by ইব্রাহিম খলিল
মাদক
ব্যবসা ও সেবনকে ঘিরে চট্টগ্রামে বাড়ছে কিশোর অপরাধ। আধিপত্য বিস্তারে এরা
জড়িয়ে পড়ছে খুনোখুনিতে। সমপ্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত কিশোর
গ্যাংস্টাররা গ্রেপ্তারের পর পুলিশকে এসব তথ্য দিয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম
মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম ।
তিনি জানান, চলতি বছরের সাড়ে ৪ মাসে চট্টগ্রামে মাদক ব্যবসা ও সেবনকেন্দ্রিক ৪৫ জনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রমজানেই খুন হয়েছে ৯ জন। এরা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
সর্বশেষ নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন হাজীপাড়া এলাকায় রাজু আহম্মেদ নামের একজন রিকশাচালককে হত্যা করে একদল কিশোর। যারা সবাই মাদকসেবী ও বিক্রেতা ছিল।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রতিটি মহল্লা ও জেলার উপজেলাগুলোর হাট-বাজার ও যানবাহনের স্টেশনগুলোতে একের পর এক গড়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। যারা গভীর রাত পর্যন্ত মাদক বিক্রি ও সেবনে জড়িত। ফলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাত আটটার পর কিশোর বয়সের কাউকে বাইরে আড্ডায় পেলেই গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পুলিশকে।
তিনি বলেন, কিশোর অপরাধে জড়িতরা অধিকাংশই ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। এদের অভিভাবকরা সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী। আবার কেউ কেউ বিত্তশালীর ছেলে। তারা নিজেদের সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না। ফলে তারা বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। এসব সন্তানরাই মা-বাবার স্নেহ মমতার অভাবে, বাবা মার সঙ্গে মানসিক বিচ্ছিন্নতার কারণে বিপথগামী হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ ও র্যাব সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরের প্রায় ৫০০ জায়গায় এবং জেলার ১৪ উপজেলার তিন হাজারেরও বেশি স্পটে মাদক বেচাকেনা হয়। এরমধ্যে নগরীর বরিশাল কলোনি, কদমতলী বাস টার্মিনাল, পাহাড়তলী, টাইগারপাস মাদকের সবচেয়ে বড় বাজার।
এরপর জেলার হাটহাজারী উপজেলা সদর, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদর ইছাখালী, পটিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, রাউজান, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, আনোয়ারা উপজেলা সদর মাদক বেচাকেনার বড় হাট। বিশেষ করে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদরের বড় মাদক ব্যবসায়ী ওসমানকে গ্রেপ্তারের পর তার নিয়ন্ত্রণ নেয় মো. বেলাল নামে এক কিশোর। ইছাখালিতে রয়েছে তার একটি কিশোর গ্যাং।
সূত্র জানায়, মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা যেমন বেশি তেমন ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বেশি। এসব মাদকসেবীরাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তুচ্ছ কারণে খুন করছে।
র্যাবের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত এক বছরে বন্দুকযুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলায় নিহত হয়েছে ১৭ জন মাদক ব্যবসায়ী। এর বাইরে ফেনী জেলায় ৮, কক্সবাজারে ২১ এবং বান্দরবানে ১ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। গত মাসে মাদকের প্রধান আস্তানা বরিশাল কলোনি এলাকায় র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় তিন মাদক ব্যবসায়ী। মাদকবিরোধী ২৮৮ অভিযানে গ্রেপ্তার হয় ৫১৪ জন।
র্যাব-৭ এর সহকারী পুলিশ সুপার মাশকুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই ইয়াবা পাচার হচ্ছে আবার প্রতিদিনই ধরাও পড়ছে। তবে পাচারের তুলনায় জব্দ হচ্ছে কম। গত বছরের ৩রা মে থেকে ১৪ই মে পর্যন্ত র্যাব অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ৪০৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। এ ছাড়াও গাঁজা, ফেনসিডিল, দেশি-বিদেশি মদ ও ব্যাপক অস্ত্র উদ্ধার হয়। তবে তার সংখ্যা পাচারের চেয়ে কম।
তিনি বলেন, প্রশাসনের কড়াকড়ি আরোপের কারণে ইয়াবা পাচারকারীরা অভিনব কৌশলে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে চট্টগ্রামে ইয়াবা নিয়ে আসছে। পেটের অভ্যন্তরে, ডাবের মধ্যে, মোটরসাইকেল ও গাড়ির জ্বালানির ট্যাংক, কার্ভাডভ্যানের ভেতরে বিশেষ বাক্সে এমনকি পিয়াজ রসুন ও কুমড়ার মধ্যে লুকিয়ে নগরে আসছে ইয়াবা। এছাড়াও সমপ্রতি রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাফ নদে মাছ ধরার ভান করে ওপারে গিয়ে ইয়াবা নিয়ে আসছে।
তিনি জানান, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নগরের শপিং মল, বাস স্টেশন, রেল স্টেশন এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাদা পোশাকে র্যাবর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের নিমিত্তে তৎপর থাকবে। বিশেষ করে পতেঙ্গা এলাকায় সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির ফলে সেখানে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়ে মাদকসেবীদের আড্ডা। এ নিয়েও বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মহানগরের পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান বলেন, যেকোনো নেশাদ্রব্য মানুষকে তাড়িত করে। এ সময় মানুষের উচিত অনুচিত বোধ থাকে না। সাদা মাথায় খুন করা আর মাদকাসক্ত হয়ে খুন করা বা কোনো অপরাধ সংঘটিত করা এক বিষয় নয়। তাই ইয়াবা যাতে দেশে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। আর মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, চলতি বছরের সাড়ে ৪ মাসে চট্টগ্রামে মাদক ব্যবসা ও সেবনকেন্দ্রিক ৪৫ জনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রমজানেই খুন হয়েছে ৯ জন। এরা সবাই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
সর্বশেষ নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন হাজীপাড়া এলাকায় রাজু আহম্মেদ নামের একজন রিকশাচালককে হত্যা করে একদল কিশোর। যারা সবাই মাদকসেবী ও বিক্রেতা ছিল।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রতিটি মহল্লা ও জেলার উপজেলাগুলোর হাট-বাজার ও যানবাহনের স্টেশনগুলোতে একের পর এক গড়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। যারা গভীর রাত পর্যন্ত মাদক বিক্রি ও সেবনে জড়িত। ফলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাত আটটার পর কিশোর বয়সের কাউকে বাইরে আড্ডায় পেলেই গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পুলিশকে।
তিনি বলেন, কিশোর অপরাধে জড়িতরা অধিকাংশই ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। এদের অভিভাবকরা সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী। আবার কেউ কেউ বিত্তশালীর ছেলে। তারা নিজেদের সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন না। ফলে তারা বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। এসব সন্তানরাই মা-বাবার স্নেহ মমতার অভাবে, বাবা মার সঙ্গে মানসিক বিচ্ছিন্নতার কারণে বিপথগামী হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ ও র্যাব সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরের প্রায় ৫০০ জায়গায় এবং জেলার ১৪ উপজেলার তিন হাজারেরও বেশি স্পটে মাদক বেচাকেনা হয়। এরমধ্যে নগরীর বরিশাল কলোনি, কদমতলী বাস টার্মিনাল, পাহাড়তলী, টাইগারপাস মাদকের সবচেয়ে বড় বাজার।
এরপর জেলার হাটহাজারী উপজেলা সদর, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদর ইছাখালী, পটিয়া, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, রাউজান, সীতাকুণ্ড, মিরসরাই, আনোয়ারা উপজেলা সদর মাদক বেচাকেনার বড় হাট। বিশেষ করে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা সদরের বড় মাদক ব্যবসায়ী ওসমানকে গ্রেপ্তারের পর তার নিয়ন্ত্রণ নেয় মো. বেলাল নামে এক কিশোর। ইছাখালিতে রয়েছে তার একটি কিশোর গ্যাং।
সূত্র জানায়, মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা যেমন বেশি তেমন ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বেশি। এসব মাদকসেবীরাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তুচ্ছ কারণে খুন করছে।
র্যাবের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত এক বছরে বন্দুকযুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলায় নিহত হয়েছে ১৭ জন মাদক ব্যবসায়ী। এর বাইরে ফেনী জেলায় ৮, কক্সবাজারে ২১ এবং বান্দরবানে ১ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। গত মাসে মাদকের প্রধান আস্তানা বরিশাল কলোনি এলাকায় র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় তিন মাদক ব্যবসায়ী। মাদকবিরোধী ২৮৮ অভিযানে গ্রেপ্তার হয় ৫১৪ জন।
র্যাব-৭ এর সহকারী পুলিশ সুপার মাশকুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই ইয়াবা পাচার হচ্ছে আবার প্রতিদিনই ধরাও পড়ছে। তবে পাচারের তুলনায় জব্দ হচ্ছে কম। গত বছরের ৩রা মে থেকে ১৪ই মে পর্যন্ত র্যাব অভিযান চালিয়ে ২৯ লাখ ৮৯ হাজার ৪০৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। এ ছাড়াও গাঁজা, ফেনসিডিল, দেশি-বিদেশি মদ ও ব্যাপক অস্ত্র উদ্ধার হয়। তবে তার সংখ্যা পাচারের চেয়ে কম।
তিনি বলেন, প্রশাসনের কড়াকড়ি আরোপের কারণে ইয়াবা পাচারকারীরা অভিনব কৌশলে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে চট্টগ্রামে ইয়াবা নিয়ে আসছে। পেটের অভ্যন্তরে, ডাবের মধ্যে, মোটরসাইকেল ও গাড়ির জ্বালানির ট্যাংক, কার্ভাডভ্যানের ভেতরে বিশেষ বাক্সে এমনকি পিয়াজ রসুন ও কুমড়ার মধ্যে লুকিয়ে নগরে আসছে ইয়াবা। এছাড়াও সমপ্রতি রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাফ নদে মাছ ধরার ভান করে ওপারে গিয়ে ইয়াবা নিয়ে আসছে।
তিনি জানান, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নগরের শপিং মল, বাস স্টেশন, রেল স্টেশন এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাদা পোশাকে র্যাবর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের নিমিত্তে তৎপর থাকবে। বিশেষ করে পতেঙ্গা এলাকায় সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির ফলে সেখানে মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়ে মাদকসেবীদের আড্ডা। এ নিয়েও বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মহানগরের পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান বলেন, যেকোনো নেশাদ্রব্য মানুষকে তাড়িত করে। এ সময় মানুষের উচিত অনুচিত বোধ থাকে না। সাদা মাথায় খুন করা আর মাদকাসক্ত হয়ে খুন করা বা কোনো অপরাধ সংঘটিত করা এক বিষয় নয়। তাই ইয়াবা যাতে দেশে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। আর মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
No comments