কৃষকের স্বপ্ন যাচ্ছে গরুর পেটে by এম ইদ্রিস আলী
ভালো
নেই শ্রীমঙ্গলের আমনচাষিরা। আমনের ফসল ভালো হলেও অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে
ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। তাই কৃষকের আশার মুখে পড়েছে হতাশার ছাপ। কৃষি
বিভাগের গাফিলাতি ও সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে পরামর্শ না পাওয়ায় অনেক
কৃষকের আমন ধানের স্বপ্ন যাচ্ছে এখন গরুর পেটে।
গুটি স্বর্ণ, স্বর্ণমুসুরী, চিনিগুড়া, কালা বিরুন জাতের শত শত জমির ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। যে সময় ধানের শীষ গাছে পরিপক্ষ হওয়ার কথা, সে মুহুর্তে গাছ কেটে বাজারে গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। আর কিছুদিন পরেই কৃষকের স্বপ্নের ফসল পাকা ধান ঘরে তোলার কথা ছিল। কিন্তু কৃষকের সেই আশা এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ স্থানীয় কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ না পাওয়ার ফলে কৃষকদের এই ক্ষতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় গিয়ে দেখা যায় উপজেলার আশিদ্রোন খোশবাস এলাকার কৃষক মনফর মিয়া তারা জমিনে ধান গাছের আগাছা পরিষ্কার করছেন। এসময় তার ধান ক্ষেতের অবস্থা এ প্রতিবেদকে দেখিয়ে বলেন- ‘বেমারে ধান পইচ্চা একবারে শেষ। আর ঔষধের লাগি গেলে একটার লাগি গেলে আরেকটা দেয়। তারা কয় ওটা ভালা হটা ভালা। ওটায় কাজ করব। কিন্তু তারার কথায় ঔষধ আনিয়া আমরার কাজ অয় না। আমরার ধান মরিয়া ক্ষের অই যায়। আর লাল অইয়া ধান মাঝে মাঝে পইচ্চা ধানের অবস্থা শেষ’। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষেত গৃহস্থি কইরা খাই। খাইলে কিতা অইব আমরার তো ক্ষেতে লাভবান না। ওই দেখইন ধান যে মরছে। প্রতি গোছার মাছে, একছা বের হয়। বারইয়া অখল গোছি গাইল্লা মাইরা জেগাত বই থাকে। বাড়য় না। তিনি বলেন-অখন ধান বাড় অইবার সময়। এখন তো বাড়ইতো নায়। এক ছা বাড় অইব। তিন গাছা ছোছা থাকব। আমরার বাঁচার তো উপায় নাই। এক গাছা বাড়য় তিনগাছা বাড়ায় না। ধানও বেমারে লাগাল পাইছে। ধানও খালি ছোছা। ছোছার মাঝে একছা ভালা অইলে নকছা ছোছা। তিনি বলেন-আমার ১০ কের জায়গা ক্ষেত আছে। এমলা আমার ৪ কের জাগাত। কৃষি অফিসারের লগে আমরার দেখা অয় কিন্তুক জমিনও এক দিনও আইছে না। না না কোনও পরামর্শ দিছে না’। মনফর মিয়া আরো বলেন,‘ আমি অনেক টাকা ঋণ করে ১২কেয়ার(৩০ শতাংশে এক কেয়ার) আমন ফসল করছি। সময় মত বিষ ও সার দিছি। তারপরও ৪ থেকে ৫ কেয়ার জমির ফসল লাল হয়ে পচে মরে যাচ্ছে’। চলতি শীত মৌসুমে এই ধান কাটার কথা ছিল ।
একই গ্রামের কৃষক মো. মোস্তফা মিয়া জানান, ‘আমি ৬-৭ কেয়ার (প্রতি ৩০ শতাংশে এক কেয়ার) জমিতে আমন ফসল রোপন করি। এরই মধ্যে আমার ৩-৪ কেয়ার জমিতে আমন ফসল ধান লাল হয়ে পচন ধরে মরে যাচ্ছে। এই ফসল আর হবে না। তাই এখন গরুকে কেটে খাওয়াচ্ছি। শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের ভাড়াউড়া গ্রামের কৃষক ইউছুব মিয়া,ছদর মিয়া,রিয়াজ মিয়া বলেন, ‘আমাদের জমিতে ধানের থোড়ে দুধ শুকিয়ে শীষগুলো সাদা হয়ে যাচ্ছে। সেকারণে আমনের আশানুরূপ ফল পাব না’।
কৃষক আশিদ্রোন খোশবাস এলাকার কৃষক আব্দুল কাদির, ফারুক মিয়া, মনফর মিয়া. মোস্তফা মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এবারে ফসলের ফলন দেখে প্রথমে বুকটা ভরে গেছিল। পরে ধানের পাতা লালচে হয়ে ধান গাছের গোছা আর বৃদ্ধি পাচ্ছে না। মাঝে মধ্যে ধানের থোড় বেরুচ্ছে। অজ্ঞাত রোগে কয়েকবার স্প্রে করেও ধানক্ষেত রক্ষা করতে পারি নাই। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব না। এ চিত্র শুধু আশিদ্রোন ও পশ্চিম ভাড়াউড়া নয় এটি উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের আলীসারকুল, লইয়ারকুল,ভুনবীর, কালাপুর ইউনিয়নের লামুয়া, সিন্দুর খান ইউনিয়নের লাহার পুর, ভূজপুরসহ মির্জাপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু ফসলি জমিতে এ অবস্থা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি তার লিখিত বক্তব্য বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ১৫০৯৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। ফসলের সার্বিক অবস্থা ভালো। তবে ২-৩টি জমির প্লট কৃষকের সুষম সার ব্যবহার না করা এবং সময়মতো আগাছা পরিষ্কার না করায় ধান গাছ হালকা হলুদ হয়েছে। গত ২ দিনের বৃষ্টিতে এটা ৩-৪ দিনের ঠিক হয়ে যাবে। এছাড়া স্থানীয় জাতে বিজাত থাকায় কিছু ধান আগে ও কিছু ধান পরে বের হয়েছে’। তিনি জানান, মাঠ পর্যায়ে আমার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়োজিত রয়েছে। তারা কৃষকদের মাঝে পরামর্শ অব্যাহত রেখেছে।
গুটি স্বর্ণ, স্বর্ণমুসুরী, চিনিগুড়া, কালা বিরুন জাতের শত শত জমির ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। যে সময় ধানের শীষ গাছে পরিপক্ষ হওয়ার কথা, সে মুহুর্তে গাছ কেটে বাজারে গবাদিপশুর খাদ্য হিসাবে বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। আর কিছুদিন পরেই কৃষকের স্বপ্নের ফসল পাকা ধান ঘরে তোলার কথা ছিল। কিন্তু কৃষকের সেই আশা এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ স্থানীয় কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ না পাওয়ার ফলে কৃষকদের এই ক্ষতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় গিয়ে দেখা যায় উপজেলার আশিদ্রোন খোশবাস এলাকার কৃষক মনফর মিয়া তারা জমিনে ধান গাছের আগাছা পরিষ্কার করছেন। এসময় তার ধান ক্ষেতের অবস্থা এ প্রতিবেদকে দেখিয়ে বলেন- ‘বেমারে ধান পইচ্চা একবারে শেষ। আর ঔষধের লাগি গেলে একটার লাগি গেলে আরেকটা দেয়। তারা কয় ওটা ভালা হটা ভালা। ওটায় কাজ করব। কিন্তু তারার কথায় ঔষধ আনিয়া আমরার কাজ অয় না। আমরার ধান মরিয়া ক্ষের অই যায়। আর লাল অইয়া ধান মাঝে মাঝে পইচ্চা ধানের অবস্থা শেষ’। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষেত গৃহস্থি কইরা খাই। খাইলে কিতা অইব আমরার তো ক্ষেতে লাভবান না। ওই দেখইন ধান যে মরছে। প্রতি গোছার মাছে, একছা বের হয়। বারইয়া অখল গোছি গাইল্লা মাইরা জেগাত বই থাকে। বাড়য় না। তিনি বলেন-অখন ধান বাড় অইবার সময়। এখন তো বাড়ইতো নায়। এক ছা বাড় অইব। তিন গাছা ছোছা থাকব। আমরার বাঁচার তো উপায় নাই। এক গাছা বাড়য় তিনগাছা বাড়ায় না। ধানও বেমারে লাগাল পাইছে। ধানও খালি ছোছা। ছোছার মাঝে একছা ভালা অইলে নকছা ছোছা। তিনি বলেন-আমার ১০ কের জায়গা ক্ষেত আছে। এমলা আমার ৪ কের জাগাত। কৃষি অফিসারের লগে আমরার দেখা অয় কিন্তুক জমিনও এক দিনও আইছে না। না না কোনও পরামর্শ দিছে না’। মনফর মিয়া আরো বলেন,‘ আমি অনেক টাকা ঋণ করে ১২কেয়ার(৩০ শতাংশে এক কেয়ার) আমন ফসল করছি। সময় মত বিষ ও সার দিছি। তারপরও ৪ থেকে ৫ কেয়ার জমির ফসল লাল হয়ে পচে মরে যাচ্ছে’। চলতি শীত মৌসুমে এই ধান কাটার কথা ছিল ।
একই গ্রামের কৃষক মো. মোস্তফা মিয়া জানান, ‘আমি ৬-৭ কেয়ার (প্রতি ৩০ শতাংশে এক কেয়ার) জমিতে আমন ফসল রোপন করি। এরই মধ্যে আমার ৩-৪ কেয়ার জমিতে আমন ফসল ধান লাল হয়ে পচন ধরে মরে যাচ্ছে। এই ফসল আর হবে না। তাই এখন গরুকে কেটে খাওয়াচ্ছি। শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের ভাড়াউড়া গ্রামের কৃষক ইউছুব মিয়া,ছদর মিয়া,রিয়াজ মিয়া বলেন, ‘আমাদের জমিতে ধানের থোড়ে দুধ শুকিয়ে শীষগুলো সাদা হয়ে যাচ্ছে। সেকারণে আমনের আশানুরূপ ফল পাব না’।
কৃষক আশিদ্রোন খোশবাস এলাকার কৃষক আব্দুল কাদির, ফারুক মিয়া, মনফর মিয়া. মোস্তফা মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এবারে ফসলের ফলন দেখে প্রথমে বুকটা ভরে গেছিল। পরে ধানের পাতা লালচে হয়ে ধান গাছের গোছা আর বৃদ্ধি পাচ্ছে না। মাঝে মধ্যে ধানের থোড় বেরুচ্ছে। অজ্ঞাত রোগে কয়েকবার স্প্রে করেও ধানক্ষেত রক্ষা করতে পারি নাই। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব না। এ চিত্র শুধু আশিদ্রোন ও পশ্চিম ভাড়াউড়া নয় এটি উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের আলীসারকুল, লইয়ারকুল,ভুনবীর, কালাপুর ইউনিয়নের লামুয়া, সিন্দুর খান ইউনিয়নের লাহার পুর, ভূজপুরসহ মির্জাপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু ফসলি জমিতে এ অবস্থা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি তার লিখিত বক্তব্য বলেন, ‘শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ১৫০৯৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। ফসলের সার্বিক অবস্থা ভালো। তবে ২-৩টি জমির প্লট কৃষকের সুষম সার ব্যবহার না করা এবং সময়মতো আগাছা পরিষ্কার না করায় ধান গাছ হালকা হলুদ হয়েছে। গত ২ দিনের বৃষ্টিতে এটা ৩-৪ দিনের ঠিক হয়ে যাবে। এছাড়া স্থানীয় জাতে বিজাত থাকায় কিছু ধান আগে ও কিছু ধান পরে বের হয়েছে’। তিনি জানান, মাঠ পর্যায়ে আমার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়োজিত রয়েছে। তারা কৃষকদের মাঝে পরামর্শ অব্যাহত রেখেছে।
No comments