হঠাৎ কবিতা খানমের সুর বদল by সিরাজুস সালেকিন
জাতীয়
সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ নেই- এমন মন্তব্যের
কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল
হুদা। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে সিইসিকে সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শ
দেয়া হয়েছিল। ওই সময় সিইসির পাশে ছিলেন না তার সহকর্মী চার নির্বাচন
কমিশনারও। সিইসির ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা
খানম গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তারা শপথ নিয়েছেন সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্যই।
সিইসির বক্তব্যের সঙ্গে তিনি নিজেও একমত নন। কিন্তু তিন মাসের ব্যবধানে
অবস্থান বদলেছে কবিতা খানমের।
গত শুক্রবার প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সামনেই তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। যদিও এই বক্তব্যের প্রেক্ষাপট তিনি ব্যাখ্যাও করেছেন। নির্বাচন ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কবিতা খানমের এমন বক্তব্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য অজুহাত তৈরিতে সহায়ক হবে।
তাদেরকে এক প্রকার বার্তাই দেয়া হলো যে, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয়। একজন নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্য দেয়া নৈতিকতার পরিপন্থি। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তার উচিত পদ থেকে সরে যাওয়া। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার এটা কোনোভাবেই বলতে পারেন না।
এভাবে কথা বললে কমিশন বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। নির্বাচন কমিশনের ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু তারা এভাবে বললে অজুহাত দাঁড় করানো হবে। তারা কর্মকর্তাদের জন্য আগেই অজুহাত তৈরি করে রাখছে। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে তাদের উচিত ওই পদ থেকে সরে যাওয়া। নির্বাচন কমিশন এমন বক্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন বক্তব্যের কারণে প্রশ্ন জাগে, নির্বাচন কমিশন আসলেই ভালো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত কি না। এগুলো নির্বাচন কমিশনের বেসামাল হওয়ার লক্ষণ কি না তা জানা দরকার। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক এ বিষয়ে বলেন, এটা নৈতিকতার ব্যাপার। নির্বাচন কমিশনারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য। কেউ যদি মনে করে তার পক্ষে এটা সম্ভব না। নৈতিকভাবে দায়িত্ব পালনে তার থাকা তো উচিত না। দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোই তার জন্য নৈতিক কাজ হবে।
শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেন, বাংলাদেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা জনগণকে এমন কোনো নির্বাচন উপহার দিতে চাই না, যেন জনগণের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু হান্ড্রেড পারসেন্ট সুষ্ঠু নির্বাচন- এটা পৃথিবীর কোনো দেশেই হয় না। আমাদের দেশেও তা সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে চাই, একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, যেটা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে। সহাকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। এই হাওয়া যেন কোনোভাবেই বৈরী না হয়, এই নির্দেশনা কমিশন থেকে থাকবে। আপনাদের সেটা প্রতিপালন করতে হবে। কমিশন চায় না নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক।
অন্যদিকে ‘জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম হবে না, এমন নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ নেই’- মন্তব্য করে গত আগস্ট মাসে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে কি না এমন প্রশ্নে কেএম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এ ধরনের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েই থাকে। বড় বড় পাবলিক নির্বাচনে কিছু কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে। আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি। বরিশালে বেশি অনিয়ম হয়েছে, সেখানে আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি। নির্বাচনে অনিয়ম হলে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার, সেভাবে আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। সিইসির এই বক্তব্যের সঙ্গে বেগম কবিতা খানমসহ চার নির্বাচন কমিশনারই দ্বিমত করেছিলেন। তখন তারা বলেছিলেন, এটা ইসির অবস্থানও নয়।
ওই সময় কবিতা খানম সিইসির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, সিইসির ওই বক্তব্যকে আমি সমর্থন করি না। আমি দ্বিমত পোষণ করি। কারণ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্যই তো আমরা শপথ নিয়েছি। সুতরাং আমি এটা কখনই সমর্থন করি না। এটা কমিশনের বক্তব্য বলেও আমি মনে করি না। সিইসির এমন বক্তব্য নির্বাচনে অনিয়মকারীদের উসকে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সিইসির ওই বক্তব্য নিয়ে তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের দূরত্বও সৃষ্টি হয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছিল। তখন সিইসিকে সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শও দিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অপরদিকে সিইসিকে অভয় দিয়ে দেশবাসীর ওপর আস্থা রাখতে বলেছিলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
গত শুক্রবার প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সামনেই তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। যদিও এই বক্তব্যের প্রেক্ষাপট তিনি ব্যাখ্যাও করেছেন। নির্বাচন ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কবিতা খানমের এমন বক্তব্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য অজুহাত তৈরিতে সহায়ক হবে।
তাদেরকে এক প্রকার বার্তাই দেয়া হলো যে, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সক্ষম নয়। একজন নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্য দেয়া নৈতিকতার পরিপন্থি। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তার উচিত পদ থেকে সরে যাওয়া। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার এটা কোনোভাবেই বলতে পারেন না।
এভাবে কথা বললে কমিশন বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। নির্বাচন কমিশনের ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু তারা এভাবে বললে অজুহাত দাঁড় করানো হবে। তারা কর্মকর্তাদের জন্য আগেই অজুহাত তৈরি করে রাখছে। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে তাদের উচিত ওই পদ থেকে সরে যাওয়া। নির্বাচন কমিশন এমন বক্তব্যের মাধ্যমে নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন বক্তব্যের কারণে প্রশ্ন জাগে, নির্বাচন কমিশন আসলেই ভালো নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত কি না। এগুলো নির্বাচন কমিশনের বেসামাল হওয়ার লক্ষণ কি না তা জানা দরকার। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক এ বিষয়ে বলেন, এটা নৈতিকতার ব্যাপার। নির্বাচন কমিশনারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য। কেউ যদি মনে করে তার পক্ষে এটা সম্ভব না। নৈতিকভাবে দায়িত্ব পালনে তার থাকা তো উচিত না। দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোই তার জন্য নৈতিক কাজ হবে।
শুক্রবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম বলেন, বাংলাদেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা জনগণকে এমন কোনো নির্বাচন উপহার দিতে চাই না, যেন জনগণের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু হান্ড্রেড পারসেন্ট সুষ্ঠু নির্বাচন- এটা পৃথিবীর কোনো দেশেই হয় না। আমাদের দেশেও তা সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে চাই, একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, যেটা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকবে। সহাকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, দেশে নির্বাচনী হাওয়া বইছে। এই হাওয়া যেন কোনোভাবেই বৈরী না হয়, এই নির্দেশনা কমিশন থেকে থাকবে। আপনাদের সেটা প্রতিপালন করতে হবে। কমিশন চায় না নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক।
অন্যদিকে ‘জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম হবে না, এমন নিশ্চয়তা দেয়ার সুযোগ নেই’- মন্তব্য করে গত আগস্ট মাসে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময় জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে কি না এমন প্রশ্নে কেএম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এ ধরনের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েই থাকে। বড় বড় পাবলিক নির্বাচনে কিছু কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে। আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি। বরিশালে বেশি অনিয়ম হয়েছে, সেখানে আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি। নির্বাচনে অনিয়ম হলে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার, সেভাবে আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। সিইসির এই বক্তব্যের সঙ্গে বেগম কবিতা খানমসহ চার নির্বাচন কমিশনারই দ্বিমত করেছিলেন। তখন তারা বলেছিলেন, এটা ইসির অবস্থানও নয়।
ওই সময় কবিতা খানম সিইসির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, সিইসির ওই বক্তব্যকে আমি সমর্থন করি না। আমি দ্বিমত পোষণ করি। কারণ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্যই তো আমরা শপথ নিয়েছি। সুতরাং আমি এটা কখনই সমর্থন করি না। এটা কমিশনের বক্তব্য বলেও আমি মনে করি না। সিইসির এমন বক্তব্য নির্বাচনে অনিয়মকারীদের উসকে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। সিইসির ওই বক্তব্য নিয়ে তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের দূরত্বও সৃষ্টি হয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছিল। তখন সিইসিকে সংযতভাবে কথা বলার পরামর্শও দিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অপরদিকে সিইসিকে অভয় দিয়ে দেশবাসীর ওপর আস্থা রাখতে বলেছিলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
No comments