জেলখানায় অনিরাপদ নারী: যুক্তরাষ্ট্রের জেলখানায় ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনের শিকার নারী
যুক্তরাষ্ট্রের
বিভিন্ন জেলখানায় নারীরা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। এসব নারী হতে পারেন
আসামী বা জেলখানায় দায়িত্ব পালনরত অফিসার। তাদেরকে পুরুষ আসামী অথবা অন্য
কর্মকর্তারা মাঝে মধ্যেই ধর্ষণ করে। অন্যান্য যৌন আপত্তিকর আচরণ করে। এ
নিয়ে প্রামাণ্য আকারে একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে প্রভাবশালী
পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমস। এতে কেইটলিন ডিকারসন বিস্তাতি লিখেছেন। তিনি
লিখেছেন, জেলখানায় নারীদের মেকআপ, কানের রিং অথবা সুগন্ধীর ব্যবহার অনেক
কমে গেছে। একইভাবে ম্লান হয়ে গেছে তাদের হাসি।
এমনকি তাদের পনি-টেইলের মতো বাঁধা চুল অপ্রত্যাশিত মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে। তারা পুরুষের চোখে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারেন। তাই নারীরা তাদের চুল পিছন দিকে দিয়ে বেঁধে রাখেন। এ রকম চুল বাঁধার পদ্ধতি স্থানীয়ভাবে ‘ব্যুরো বান’ নামে পরিচিত। এসবই হচ্ছে ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজন্সে। অর্থাৎ সরকারের কেন্দ্রীয় জেলখানাগুলোতে।
এসব জেলখানায় নিজেদের শরীর বা শরীরে পরা অন্তর্বাসকে ঢেকে রাখতে নারীরা পড়েন আলখাল্লা, অতি বড় আকারের পোশাক। কাঁধ থেকে উরু পর্যন্ত তারা কালো পোশাকে ঢেকে রাখেন। এ জন্য এমন পোশাকের পরিচয় হয়েছে ‘ট্রাস ব্যাগ’ বা ময়লা ফেলার ব্যাগ হিসেবে। শীতের দিনে হলে কথা নেই। কিন্তু গ্রীষ্মের গরমেও নারীদেরকে কংক্রিটের তৈরি জেলখানার ভিতরে এই পোশাক পরে থাকতে হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের এসব জেলখানায় যেসব নারী কাজ করেন তারা তাদের নারীত্বকে প্রতিটি সময় টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। তাদের সংখ্যা পুরুষ সহকর্মী ও পুরুষ বন্দির চেয়ে অনেক বেশি। ক্যালিফোর্নিয়ার ভিক্টরভিলেতে বন্দিদের ওপর নজর রাখেন সুপারভাইজার অক্টাভিয়া ব্রাউন। তিনি বলেন, নারীরা কি পোশাক পরছেন কখনো তা দেখে না তারা (পুরুষরা)। তারা এ পোশাকের ভিতর দিয়ে তাদের অন্তর্চক্ষু প্রবেশ করিয়ে দেয়। অনেক বন্দি নারীদের দিকে তাকিয়ে থাকে নির্লজ্জের মতো। তারা নারীদের পাকড়াও করে। তাদেরকে হুমকি দেয়। এমন কি এসব বন্দি নিজেদের শরীরকে উন্মুক্ত করে প্রকাশ করে।
বিভিন্ন জনের সাক্ষ্য, আদালতের ডকুমেন্ট ও জেলখানার নারী কর্মীদের সাক্ষাৎকার অনুযায়ী, পুরুষ সহকর্মীরা এমন আচরণকে উৎসাহি করেন। তারা জেলখানায় নিয়োজিত নারী অফিসারদের অবমাননা করেন। তাদের নিরাপত্তাকে বিপর্যস্ত করেন। অন্য পুরুষ কর্মচারীরা নিজেরাই যৌন হয়রানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। এক্ষেত্রে কোনো নারী যদি এমন হয়রানির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন তাহলে তাকে প্রতিশোধের মুখে পড়তে হয়, তার বিরুদ্ধে পেশাগত সাবোটাজ করা হয়। এমন কি তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস দেখতে পেয়েছে এমন হয়রানির জন্য যারা অভিযুক্ত এবং এসব অভিযুক্তকে যারা সুরক্ষা দিয়েছেন তাদের অবস্থা ফুলেফেঁপে উঠেছে।
একবার একজন পুরুষ বন্দি জেসিকা হোদাকের শরীরের পিছন দিকে তার শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গ চেপে ধরে। এমন কি তাকে ধর্ষণের হুমকি দেয়। এ সময় জেসিকা তার বিরুদ্ধে শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ আনতে চান। জেসিকা তখন ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ায় জেলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে। তিনি ওই অভিযোগ আনতে চাইলে তার ম্যানেজার তাকে এসব বিষয় ভুলে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এ নিয়ে মামলা করেছেন জেসিকা।
ইকুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশনে একটি অভিযোগ মুলতবি অবস্থায় আছে। এতে একজন নারী প্রহরী মেলিন্দা জেনসিনস অভিযোগ করেছেন যে, একজন পুরুষ বন্দি তাকে পাকড়াও করেছিল। কিন্তু তাতে ওই অভিযোগ ভুলে যেতে বলা হয়েছে। মেলিন্দা তাতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে ম্যানেজার তার ওপর ক্ষিপ্ত হন। তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে তাকে একটি মেডিকেল চেকআপের জন্য দরখাস্ত জমা দিতে বলেন। এই চেকআপ করাতে গেলে মেলিন্দাকে অন্য একজন সহকর্মীর সামনে তার বক্তদেশ উন্মুক্ত করাতে হবে।
এর চেয়েও ভয়াবহ ঘটনা আছে। তাকসান জেলের একজন বন্দি ধর্ষণ করে একজন ম্যানেজার ওয়াইনোনা মিক্সনকে। এরপরই অকস্মাৎ তিনি নিজেকে দেখতে পান এমন এক অবস্থায়, যাতে তাকে জেলে যেতে হতে পারে। তার বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ গঠন করা হয়। বলা হয়, তার ওপর হামলাকারীকে তিনিই ধর্ষণ করেছেন।
এসব জেলে নারীদের ওপর যৌন হয়রানি করেছেন বা করেন এমন অনেক উচ্চ পদস্থ অফিসর আছেন। তবে তাদের খুব কম জনকেই এর জন্য আইনের বা বিচারের সম্মুখিন হতে হয়। একই কথা প্রযোজ্য তাদের সুপারভাইজারদের ক্ষেত্রেও। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মাঝে মাঝে অন্য জেলখানায় স্থানান্তর করা হয়। এক্ষেত্রে তাদেরকে দেয়া হয় প্রমোশন। এর মাধ্যমে আরও একবার যৌন হয়রানির সুযোগ পান তারা। এভাবেই যৌন হয়রানির চক্রটি ঘুরতে থাকে বৃত্তের মতো।
এমনকি তাদের পনি-টেইলের মতো বাঁধা চুল অপ্রত্যাশিত মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে। তারা পুরুষের চোখে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারেন। তাই নারীরা তাদের চুল পিছন দিকে দিয়ে বেঁধে রাখেন। এ রকম চুল বাঁধার পদ্ধতি স্থানীয়ভাবে ‘ব্যুরো বান’ নামে পরিচিত। এসবই হচ্ছে ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজন্সে। অর্থাৎ সরকারের কেন্দ্রীয় জেলখানাগুলোতে।
এসব জেলখানায় নিজেদের শরীর বা শরীরে পরা অন্তর্বাসকে ঢেকে রাখতে নারীরা পড়েন আলখাল্লা, অতি বড় আকারের পোশাক। কাঁধ থেকে উরু পর্যন্ত তারা কালো পোশাকে ঢেকে রাখেন। এ জন্য এমন পোশাকের পরিচয় হয়েছে ‘ট্রাস ব্যাগ’ বা ময়লা ফেলার ব্যাগ হিসেবে। শীতের দিনে হলে কথা নেই। কিন্তু গ্রীষ্মের গরমেও নারীদেরকে কংক্রিটের তৈরি জেলখানার ভিতরে এই পোশাক পরে থাকতে হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের এসব জেলখানায় যেসব নারী কাজ করেন তারা তাদের নারীত্বকে প্রতিটি সময় টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন। তাদের সংখ্যা পুরুষ সহকর্মী ও পুরুষ বন্দির চেয়ে অনেক বেশি। ক্যালিফোর্নিয়ার ভিক্টরভিলেতে বন্দিদের ওপর নজর রাখেন সুপারভাইজার অক্টাভিয়া ব্রাউন। তিনি বলেন, নারীরা কি পোশাক পরছেন কখনো তা দেখে না তারা (পুরুষরা)। তারা এ পোশাকের ভিতর দিয়ে তাদের অন্তর্চক্ষু প্রবেশ করিয়ে দেয়। অনেক বন্দি নারীদের দিকে তাকিয়ে থাকে নির্লজ্জের মতো। তারা নারীদের পাকড়াও করে। তাদেরকে হুমকি দেয়। এমন কি এসব বন্দি নিজেদের শরীরকে উন্মুক্ত করে প্রকাশ করে।
বিভিন্ন জনের সাক্ষ্য, আদালতের ডকুমেন্ট ও জেলখানার নারী কর্মীদের সাক্ষাৎকার অনুযায়ী, পুরুষ সহকর্মীরা এমন আচরণকে উৎসাহি করেন। তারা জেলখানায় নিয়োজিত নারী অফিসারদের অবমাননা করেন। তাদের নিরাপত্তাকে বিপর্যস্ত করেন। অন্য পুরুষ কর্মচারীরা নিজেরাই যৌন হয়রানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান। এক্ষেত্রে কোনো নারী যদি এমন হয়রানির বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন তাহলে তাকে প্রতিশোধের মুখে পড়তে হয়, তার বিরুদ্ধে পেশাগত সাবোটাজ করা হয়। এমন কি তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। নিউ ইয়র্ক টাইমস দেখতে পেয়েছে এমন হয়রানির জন্য যারা অভিযুক্ত এবং এসব অভিযুক্তকে যারা সুরক্ষা দিয়েছেন তাদের অবস্থা ফুলেফেঁপে উঠেছে।
একবার একজন পুরুষ বন্দি জেসিকা হোদাকের শরীরের পিছন দিকে তার শরীরের স্পর্শকাতর অঙ্গ চেপে ধরে। এমন কি তাকে ধর্ষণের হুমকি দেয়। এ সময় জেসিকা তার বিরুদ্ধে শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ আনতে চান। জেসিকা তখন ছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ায় জেলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে। তিনি ওই অভিযোগ আনতে চাইলে তার ম্যানেজার তাকে এসব বিষয় ভুলে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এ নিয়ে মামলা করেছেন জেসিকা।
ইকুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশনে একটি অভিযোগ মুলতবি অবস্থায় আছে। এতে একজন নারী প্রহরী মেলিন্দা জেনসিনস অভিযোগ করেছেন যে, একজন পুরুষ বন্দি তাকে পাকড়াও করেছিল। কিন্তু তাতে ওই অভিযোগ ভুলে যেতে বলা হয়েছে। মেলিন্দা তাতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে ম্যানেজার তার ওপর ক্ষিপ্ত হন। তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে তাকে একটি মেডিকেল চেকআপের জন্য দরখাস্ত জমা দিতে বলেন। এই চেকআপ করাতে গেলে মেলিন্দাকে অন্য একজন সহকর্মীর সামনে তার বক্তদেশ উন্মুক্ত করাতে হবে।
এর চেয়েও ভয়াবহ ঘটনা আছে। তাকসান জেলের একজন বন্দি ধর্ষণ করে একজন ম্যানেজার ওয়াইনোনা মিক্সনকে। এরপরই অকস্মাৎ তিনি নিজেকে দেখতে পান এমন এক অবস্থায়, যাতে তাকে জেলে যেতে হতে পারে। তার বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ গঠন করা হয়। বলা হয়, তার ওপর হামলাকারীকে তিনিই ধর্ষণ করেছেন।
এসব জেলে নারীদের ওপর যৌন হয়রানি করেছেন বা করেন এমন অনেক উচ্চ পদস্থ অফিসর আছেন। তবে তাদের খুব কম জনকেই এর জন্য আইনের বা বিচারের সম্মুখিন হতে হয়। একই কথা প্রযোজ্য তাদের সুপারভাইজারদের ক্ষেত্রেও। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মাঝে মাঝে অন্য জেলখানায় স্থানান্তর করা হয়। এক্ষেত্রে তাদেরকে দেয়া হয় প্রমোশন। এর মাধ্যমে আরও একবার যৌন হয়রানির সুযোগ পান তারা। এভাবেই যৌন হয়রানির চক্রটি ঘুরতে থাকে বৃত্তের মতো।
No comments