মোড় ঘোরাতে পারে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের বাণিজ্য by আশিষ বিশ্বাস
ভারতের
সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে হয়তো বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে আছে। কিন্তু যদি
কোনও রাজ্যের সাথে তুলনা করা হয় তখন নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ অনেকটা এগিয়ে।
ত্রিপুরা কিংবা মেঘালয়ার মতো ভারতীয় রাজ্যের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে
অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু সরকারের নীতিনির্ধারকরা
বিষয়টি তেমন গুরুত্ব সহকারে না নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের
বৈষম্য নিয়েই হতাশা প্রকাশ করেন তারা। অথচ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই
রাজ্যগুলোর সঙ্গেই সম্পর্ক জোরদার করা জরুরি। কিন্তু এমনটা হয়নি। ভুটান ও
মিয়ানমারের মতো দেশ এই রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সুসংহত করেছে।
বাংলাদেশ এমন বাণিজ্যে সুবিধা পাওয়ার কারণ আসাম, মেঘালয়া ও ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলোই ব্যবসা করতে আগ্রহী। এই অঞ্চলের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবেই সংযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। অতীতে সবাই অবিভক্ত বাংলার অংশ ছিল।
এক্ষেত্রে দুটি উদাহরণের কথা উল্লেখ করা যায়। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সরবন্দা সোনোয়াল এই অঞ্চলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে। আশিয়ানের সাম্প্রতিক সম্মেলনেও গুয়াহাটিতে বাংলাদেশি কনস্যুলেট তৈরির প্রশংসা করেন তিনি। এই কনস্যুলেটের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের কর্মকর্তারা সহজেই বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ৩০৫ কোটি রুপির বাণিজ্য সম্পর্কে মাত্র ৪ কোটি ৬০ লাখের অংশীদারিত্ব ছিল ত্রিপুরার। এই পরিসংখ্যান উল্লেখ করে বিপ্লব দেব প্রস্তাব দেন যেন ২৭টি পণ্যের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা যেন তুলে নেওয়া হয়। তাহলে এগুলো বাংলাদেশে বিক্রি করতে পারবে তারা। বিপ্লব দেব হতাশা প্রকাশ করেন যে, আগে ত্রিপুরা থেকে আনারস আমদানি করলেও এখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে করছে বাংলাদেশ।
কিছুদিন আগে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, বিগত বছরগুলোতে মেঘালয়ের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে অনেক সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের দাবি, বাংলাদেশ এসব রাজ্যের সঙ্গে ব্যবসা কেন সম্প্রসারণ করছে না সেটা ভেবে পাচ্ছেন না তারা। এর ফলাফল ইতিবাচক নয়।
ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০০৯-১০ সালে ইন্দো-বাংলা বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬৯২ কোটি ৭১ লাখ রুপি। আর ২০১৩-১৪ সালে তা দাঁড়ায় ৭৯১ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজারে। ফলে বাণিজ্য বৃদ্ধি পায় ৪.৬০ শতাংশ।
তবে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর তুলনায় ইন্দো-বাংলা বাণিজ্য কিছুটা কমে গেছে। ২০০৯-১০ সালে যেই বাণিজ্য ভারতের ৯১ শতাংশ অংশ জুড়ে ছিল। ২০১৩-১৪ সালে সেটা হয় ৪১. ৮৬ শতাংশ। তখন মিয়ানমার, ভূটান ও থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়তে থাকে ভারতের।
কলকাতায় বসবাস করা বিশেষজ্ঞ চৌব্রত রায় বলেন, বিগত বছরগুলোতে ভারত-বাংলাদেশের সুসম্পর্ক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার এই দৃষ্টান্তগুলোর মাঝে এমন খবর চমকে ওঠার মতোই।
ভারতে সীমান্ত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার করতে বাংলাদেশের সঙ্গে ৪০৯৬ কিলোমিটার সীমান্তকে সমস্যা মনে না করে, সুযোগ হিসেবে দেখার কথা তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলেই আরও ‘হাট’ বৃদ্ধি করে বাণিজ্যের সম্ভাবনা প্রশস্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বিমসটেক ও ভারতের অ্যাকটিস্ট প্রকল্পের আওতায় চলমান রাজপথ/রেলপথ যুক্তকরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবর্তন আসবে। থাইল্যান্ডের লুকওয়েস্ট প্রকল্পের সঙ্গে বিবিআইএন ও বিসিআইএম ভেনচারের মাধ্যমে চীন ও উন্নত আশিয়ান দেশগুলোকে একত্রিত করবে। ফলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে সবাই।
ভারতের বড় পদক্ষেপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গুয়াহাটি বিমানবন্দরের ধারণ ক্ষমতা ১৫০ থেকে বাড়িয়ে ৪০৫০ বর্গমিটার করা। এছাড়া আসাম ও অরুণাচল প্রদেশ সংযোগে ৯ কিলোমিটার সেতু স্থাপনও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উত্তর পশ্চিমাঞ্চল অঞ্চলে একটি এভিয়েশন হাবও তৈরি করা হবে।
নতুন বাণিজ্য রুট তৈরি করতে ঢাকার সঙ্গে সিচার ও আগরতলা রাজপথের সংযোগ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চারটি সীমান্ত হাট রয়েছে। এগুলো আরও বাড়ানো যেতে পারে। সেই পয়েন্টগুলো থেকে বাণিজ্য সম্পর্কও বর্ধিত করা যেতে পারে। ২০১৫-১৬ সালে ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্ত মার্কেটে সীমাবদ্ধ সুবিধা ও যোগাযোগের সমস্যা থাকার পরও ১৮ কোটি রুপির ব্যবসা হয়। বাংলাদেশের চিলমারি থেকে নদীপথ ব্যবহার করে কিভাবে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা যায় সেই বিষয়টিও দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় প্রস্তাব তোলা হয়েছিল।
অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে কৃষিখাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আলোচনায় বলা হয়, ইন্দো-বাংলা বাণিজ্যে কৃষিখাতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ২০০৯-১০ সালের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে দুই দেশ ৪৫ কোটি ৮০ লাখ রুপি থেকে ২০১৩-১৪ সালে ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৬০৩ কোটি ৪০ লাখ রুপির ব্যবসা করে। আর দুই দেশের এই বাণিজ্যে অনকটা অংশই চাল, গম, সবচি, বাদাম, মসলার মতো পণ্য কেনা-বেচা করে এসেছে। এছাড়া অটোপার্টস, ওষুধ ও ইলেক্ট্রনিক দ্রব্যেরও চাহিদা ছিল।
বাংলাদেশ এমন বাণিজ্যে সুবিধা পাওয়ার কারণ আসাম, মেঘালয়া ও ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলোই ব্যবসা করতে আগ্রহী। এই অঞ্চলের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবেই সংযোগ রয়েছে বাংলাদেশের। অতীতে সবাই অবিভক্ত বাংলার অংশ ছিল।
এক্ষেত্রে দুটি উদাহরণের কথা উল্লেখ করা যায়। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সরবন্দা সোনোয়াল এই অঞ্চলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে। আশিয়ানের সাম্প্রতিক সম্মেলনেও গুয়াহাটিতে বাংলাদেশি কনস্যুলেট তৈরির প্রশংসা করেন তিনি। এই কনস্যুলেটের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের কর্মকর্তারা সহজেই বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ৩০৫ কোটি রুপির বাণিজ্য সম্পর্কে মাত্র ৪ কোটি ৬০ লাখের অংশীদারিত্ব ছিল ত্রিপুরার। এই পরিসংখ্যান উল্লেখ করে বিপ্লব দেব প্রস্তাব দেন যেন ২৭টি পণ্যের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা যেন তুলে নেওয়া হয়। তাহলে এগুলো বাংলাদেশে বিক্রি করতে পারবে তারা। বিপ্লব দেব হতাশা প্রকাশ করেন যে, আগে ত্রিপুরা থেকে আনারস আমদানি করলেও এখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে করছে বাংলাদেশ।
কিছুদিন আগে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, বিগত বছরগুলোতে মেঘালয়ের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে অনেক সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের দাবি, বাংলাদেশ এসব রাজ্যের সঙ্গে ব্যবসা কেন সম্প্রসারণ করছে না সেটা ভেবে পাচ্ছেন না তারা। এর ফলাফল ইতিবাচক নয়।
ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০০৯-১০ সালে ইন্দো-বাংলা বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬৯২ কোটি ৭১ লাখ রুপি। আর ২০১৩-১৪ সালে তা দাঁড়ায় ৭৯১ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজারে। ফলে বাণিজ্য বৃদ্ধি পায় ৪.৬০ শতাংশ।
তবে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর তুলনায় ইন্দো-বাংলা বাণিজ্য কিছুটা কমে গেছে। ২০০৯-১০ সালে যেই বাণিজ্য ভারতের ৯১ শতাংশ অংশ জুড়ে ছিল। ২০১৩-১৪ সালে সেটা হয় ৪১. ৮৬ শতাংশ। তখন মিয়ানমার, ভূটান ও থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়তে থাকে ভারতের।
কলকাতায় বসবাস করা বিশেষজ্ঞ চৌব্রত রায় বলেন, বিগত বছরগুলোতে ভারত-বাংলাদেশের সুসম্পর্ক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার এই দৃষ্টান্তগুলোর মাঝে এমন খবর চমকে ওঠার মতোই।
ভারতে সীমান্ত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার করতে বাংলাদেশের সঙ্গে ৪০৯৬ কিলোমিটার সীমান্তকে সমস্যা মনে না করে, সুযোগ হিসেবে দেখার কথা তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলেই আরও ‘হাট’ বৃদ্ধি করে বাণিজ্যের সম্ভাবনা প্রশস্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বিমসটেক ও ভারতের অ্যাকটিস্ট প্রকল্পের আওতায় চলমান রাজপথ/রেলপথ যুক্তকরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবর্তন আসবে। থাইল্যান্ডের লুকওয়েস্ট প্রকল্পের সঙ্গে বিবিআইএন ও বিসিআইএম ভেনচারের মাধ্যমে চীন ও উন্নত আশিয়ান দেশগুলোকে একত্রিত করবে। ফলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে সবাই।
ভারতের বড় পদক্ষেপগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গুয়াহাটি বিমানবন্দরের ধারণ ক্ষমতা ১৫০ থেকে বাড়িয়ে ৪০৫০ বর্গমিটার করা। এছাড়া আসাম ও অরুণাচল প্রদেশ সংযোগে ৯ কিলোমিটার সেতু স্থাপনও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। উত্তর পশ্চিমাঞ্চল অঞ্চলে একটি এভিয়েশন হাবও তৈরি করা হবে।
নতুন বাণিজ্য রুট তৈরি করতে ঢাকার সঙ্গে সিচার ও আগরতলা রাজপথের সংযোগ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চারটি সীমান্ত হাট রয়েছে। এগুলো আরও বাড়ানো যেতে পারে। সেই পয়েন্টগুলো থেকে বাণিজ্য সম্পর্কও বর্ধিত করা যেতে পারে। ২০১৫-১৬ সালে ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্ত মার্কেটে সীমাবদ্ধ সুবিধা ও যোগাযোগের সমস্যা থাকার পরও ১৮ কোটি রুপির ব্যবসা হয়। বাংলাদেশের চিলমারি থেকে নদীপথ ব্যবহার করে কিভাবে বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা যায় সেই বিষয়টিও দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় প্রস্তাব তোলা হয়েছিল।
অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে কৃষিখাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। আলোচনায় বলা হয়, ইন্দো-বাংলা বাণিজ্যে কৃষিখাতকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ২০০৯-১০ সালের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে দুই দেশ ৪৫ কোটি ৮০ লাখ রুপি থেকে ২০১৩-১৪ সালে ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৬০৩ কোটি ৪০ লাখ রুপির ব্যবসা করে। আর দুই দেশের এই বাণিজ্যে অনকটা অংশই চাল, গম, সবচি, বাদাম, মসলার মতো পণ্য কেনা-বেচা করে এসেছে। এছাড়া অটোপার্টস, ওষুধ ও ইলেক্ট্রনিক দ্রব্যেরও চাহিদা ছিল।
No comments