কী দোষ করেছিল আমাদের বাবা, প্রশ্ন তাহিয়াত-নাহিয়ানের by আবদুল আজিজ
কক্সবাজারের
টেকনাফে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’নিহত কাউন্সিলর একরামুল হকের দুই
মেয়ে তাহিয়াত হক (১৪) ও নাহিয়ান হক (১১)। তারা দুই বোন টেকনাফ বিজিবি
পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থী। তাহিয়াত অষ্টম ও নাহিয়ান ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে।
স্কুলে যাওয়া-আসার একমাত্র সঙ্গী ছিলেন তাদের বাবা একরাম। মোটরসাইকেলে করে
সকালে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসতেন বাবা। স্কুল ছুটির পর আবার তাদের বাড়ি নিয়ে
আসতেন। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বাবাকে ঘিরে দু’বোনের কত শত স্মৃতি। বাবাই
তাদের একমাত্র বন্ধু, একমাত্র অভিভাবক। সেই বাবা আজ নেই। বাবাকে হারিয়ে দুই
বোনের কান্না থামছেই না। তারা জানে না, এই কান্নার শেষ কোথায়। তাদের একটাই
প্রশ্ন—কী দোষ করেছিল আমাদের বাবা? কেন তাকে মেরে ফেলা হলো?
স্বজন হারানোর শোকে পাগল প্রায় পরিবারটি। বিশেষ করে দুই মেয়ে, বাবাকে হারানোর বিষয়টি মানতেই পারছে না। ঘটনার পর খাওয়া-দাওয়াও ছেড়ে দিয়েছে তারা। একটু পর পরই কান্না করছে তারা। মাঝে মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে। এরই মধ্যে তারা অসুস্থ হয়েও পড়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ মে) তাদের দুবোনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান একরামের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘জানি না, তাহিয়াত ও নাহিয়ানের কান্নার শেষ কোথায়? ছোটবেলা থেকেই বাবার আদর-স্নেহে বড় হয়েছে ওরা। সব সময় ছায়ার মতো তাদের পাশে পেয়েছে বাবাকে। এজন্য তাদের নিয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছি। ওদের কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না। কথায় কথায় বলছে, বাবাকে এনে দাও।’
একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নিরপরাধ। সে কোনোদিন ইয়াবা তো দূরের কথা, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পর্যন্ত চলাফেরা করেনি। র্যাবের সঙ্গে কোনও বন্দুকযুদ্ধ হয়নি। বন্দুকযুদ্ধের নামে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে যে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ সাজানো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিভাগীয় বিচার এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করছি। যাতে আর কোনও নারী এভাবে স্বামীহারা না হয়।’
তিনি বলেন, ‘কদিন আগেও আমার একটি সাজানো সংসার ছিল। হাসি-আনন্দ ছিল। অভাব অনটন থাকলেও আমাদের কোনও দুঃখ ছিল না। কিন্তু হঠাৎ সব তছনছ হয়ে গেলো। আজ পিতৃহারা হয়েছে আমার দুই মেয়ে। প্রতিদিন স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আবার নিয়ে আসতো। আজ কে আমার মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যাবে? আমার মেয়েরা কাকে বাবা বলে ডাকবে? আমাদের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার। কী নিয়ে বাঁচবো আমরা?’
নিহত একরামের মেজ ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই ১২ বছর টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনবার পৌর কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। টেকনাফ স্টেশনে ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ছিলেন। টেকনাফ বর্ডার গার্ড পরিচালিত পাবলিক স্কুল পরিচালনা কমিটির দীর্ঘদিন সদস্য ছিলেন। থানায় তার নামে কোনও মামলা ছিল না। তার নিজের কোনও বাড়ি নেই। এখনও পৈত্রিক বাড়ির একটি কক্ষে থাকেন। কেন তাকে এত নির্মমভাবে মারা হলো? আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের বিভাগীয় বিচার দাবি করছি।’
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর বলেন, ‘একরাম আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা। দীর্ঘদিন একসঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এ কারণে আমি একরামকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তিনি অত্যন্ত সৎ একজন মানুষ। কেন তাকে এভাবে মরতে হরৈা জানি না। আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। ’
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ রোডে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’টেকনাফ পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরাম নিহত হন। র্যাবের দাবি—‘একরাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। ওই দিন ইয়াবা নিয়ে কক্সবাজার যাওয়ার পথে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধেএকরাম নিহত হয়। এসময় ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।’ এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নিজ এলাকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
স্বজন হারানোর শোকে পাগল প্রায় পরিবারটি। বিশেষ করে দুই মেয়ে, বাবাকে হারানোর বিষয়টি মানতেই পারছে না। ঘটনার পর খাওয়া-দাওয়াও ছেড়ে দিয়েছে তারা। একটু পর পরই কান্না করছে তারা। মাঝে মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে। এরই মধ্যে তারা অসুস্থ হয়েও পড়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ মে) তাদের দুবোনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান একরামের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘জানি না, তাহিয়াত ও নাহিয়ানের কান্নার শেষ কোথায়? ছোটবেলা থেকেই বাবার আদর-স্নেহে বড় হয়েছে ওরা। সব সময় ছায়ার মতো তাদের পাশে পেয়েছে বাবাকে। এজন্য তাদের নিয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছি। ওদের কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না। কথায় কথায় বলছে, বাবাকে এনে দাও।’
একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নিরপরাধ। সে কোনোদিন ইয়াবা তো দূরের কথা, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পর্যন্ত চলাফেরা করেনি। র্যাবের সঙ্গে কোনও বন্দুকযুদ্ধ হয়নি। বন্দুকযুদ্ধের নামে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে যে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ সাজানো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিভাগীয় বিচার এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করছি। যাতে আর কোনও নারী এভাবে স্বামীহারা না হয়।’
তিনি বলেন, ‘কদিন আগেও আমার একটি সাজানো সংসার ছিল। হাসি-আনন্দ ছিল। অভাব অনটন থাকলেও আমাদের কোনও দুঃখ ছিল না। কিন্তু হঠাৎ সব তছনছ হয়ে গেলো। আজ পিতৃহারা হয়েছে আমার দুই মেয়ে। প্রতিদিন স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আবার নিয়ে আসতো। আজ কে আমার মেয়েদের স্কুলে নিয়ে যাবে? আমার মেয়েরা কাকে বাবা বলে ডাকবে? আমাদের ভবিষ্যৎ এখন অন্ধকার। কী নিয়ে বাঁচবো আমরা?’
নিহত একরামের মেজ ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই ১২ বছর টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনবার পৌর কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। টেকনাফ স্টেশনে ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ছিলেন। টেকনাফ বর্ডার গার্ড পরিচালিত পাবলিক স্কুল পরিচালনা কমিটির দীর্ঘদিন সদস্য ছিলেন। থানায় তার নামে কোনও মামলা ছিল না। তার নিজের কোনও বাড়ি নেই। এখনও পৈত্রিক বাড়ির একটি কক্ষে থাকেন। কেন তাকে এত নির্মমভাবে মারা হলো? আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের বিভাগীয় বিচার দাবি করছি।’
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর বলেন, ‘একরাম আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা। দীর্ঘদিন একসঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এ কারণে আমি একরামকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তিনি অত্যন্ত সৎ একজন মানুষ। কেন তাকে এভাবে মরতে হরৈা জানি না। আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। ’
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ রোডে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’টেকনাফ পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরাম নিহত হন। র্যাবের দাবি—‘একরাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। ওই দিন ইয়াবা নিয়ে কক্সবাজার যাওয়ার পথে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধেএকরাম নিহত হয়। এসময় ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।’ এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নিজ এলাকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
No comments