আইনের সীমাবদ্ধতায় অধরা মাদকের গডফাদাররা by শেখ জাহাঙ্গীর আলম
আইনের
সীমাবদ্ধতার কারণে মাদক ব্যবসায়ীদের সহজে গ্রেফতার করা যায় না।
সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মাদক বেচাকেনার স্পটগুলোতে অভিযান চালালেও ধরা
পড়ে না মাদকের গডফাদাররা। এর কারণ হিসেবে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের
সীমাবদ্ধতাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর জানিয়েছে, বিভিন্ন সময়েই মাদক ব্যবসার অনেক গডফাদারকে শনাক্ত করা হয়। তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা আছে। কিন্তু আইন অনুযায়ী, সঙ্গে মাদক না পাওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয় না।
মাদকের বিরুদ্ধে গত ২১ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত ১৫ দিনের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। অধিদফতরের রিজার্ভ ফোর্স (পুলিশ) নিয়ে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটের সঙ্গে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ অভিযানে তালিকা অনুযায়ী মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সঙ্গে মাদক থাকুক বা না থাকুক, গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তবে স্পটগুলোতে বড় মাদক কারবারিদের পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, গত ১৪ মে র্যাব-পুলিশের পৃথক মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৯৯ জনের বেশি মাদক বহনকারী ও খুচরা বিক্রেতা নিহত হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে কয়েকশ মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী। তবে নিহত বা গ্রেফতারদের মধ্যে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের কেউই নেই।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক (এডি) খোরশেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০ এ আসামি গ্রেফতারে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। মূলত এই কারণে ইতোপূর্বে মাদকের অনেক গডফাদারকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ, মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে যদি কাউকে গ্রেফতার করতে হয়, তবে তার সঙ্গে মাদক (রিকভারি বা উদ্ধার) থাকতে হবে; অন্যথায় তাকে গ্রেফতার করা যায় না।’
আইনে যা আছে
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০-এ প্রকাশ্য স্থান ইত্যাদিতে আটক বা গ্রেফতারের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে– ‘যদি ধারা ৩৬ এ উল্লিখিত কোনও কর্মকর্তার এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে কোনও প্রকাশ্য স্থানে বা কোনও চলমান যানবাহনে- (ক) এই আইনের পরিপন্থী কোনও মাদকদ্রব্য বা বাজেয়াপ্তযোগ্য কোনও বস্তু বা এই আইনের অধীন কোনও অপরাধ প্রমাণের সহায়ক কোনও দলিল দস্তাবেজ রক্ষিত আছে, তাহা হইলে, তাহার অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, তিনি উক্ত মাদকদ্রব্য, বস্তু বা দলিল দস্তাবেজ তল্লাশি করিয়া আটক করিতে পারিবেন; (খ) এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনকারী বা সংঘটনে উদ্যত কোনও ব্যক্তি আছেন, তাহা হইলে তাহার অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, তিনি তাহাকে আটক করিয়া তল্লাশি করিতে পারিবেন এবং তাহার নিকট দফা (ক) এ উল্লিখিত মাদকদ্রব্য বা বস্তু বা দলিল দস্তাবেজ পাওয়া গেলে তাহাকে গ্রেফতার করিতে পারিবেন।’
খোরশেদ আলম আরও বলেন, ‘নতুন মানি লন্ডারিং আইনের ক্ষমতাবলে তদন্তসাপেক্ষে একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা যাবে। যদি বাংলাদেশ ফাইন্যানসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কার্যকর হয়, তবে মানির থ্রো (অর্থের উৎস তদন্ত) দিয়ে এটি করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিকভারিসহ মাদক ব্যবসায়ীকে না পাওয়া গেলেও মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় ওই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা যাবে।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তৈরি তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৫০০ স্পট নিয়ন্ত্রণ করছে মাদকের চিহ্নিত ৩৭ গডফাদার। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। রাজধানী ঢাকার তালিকাভুক্ত ৩৭ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে মোহাম্মদপুর এলাকায় ইশতিয়াক ওরফে কামরুল হাসান, জেনেভা ক্যাম্পে নাদিম ওরফে পঁচিশ, উত্তরায় ফজলুল করিম, গোলাম সামদানি, বাড্ডায় সাব্বির হোসেন, রিয়াদ উল্লাহ, ভাটারায় ইতি বেগম, গুলশান ও বনানীতে এনায়েত করিম, শরিফ ভুইয়া, আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু, নার্গিস ওরফে মামি, শাহবাগে শহিদুজ্জামান, চাঁনখারপুলে পারভিন আক্তার, আসমা, কামাল হোসেন, বংশালে নাসির উদ্দিন, চকবাজারে ওমর ফারুক, লাল মিয়া, মুগদায় পারভীন, শফিকুল ইসলাম মলাই, রাজু আহমেদ ও আলম হোসেন, কমলাপুরে লিটন, কলাবাগানে নাজমুস সাকিব ভুইয়া, শামীম, কামরাঙ্গীরচরে খুরশিদা ওরফে খুশি, যাত্রাবাড়ীতে মোবারক, গেণ্ডারিয়া এলাকায় রহিম, মিরপুরে নজরুল, রাজীব ও রুস্তম। তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকের কারবার রয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীর বড় মাদক স্পটগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে মাদকের এই গডফাদারদের পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অভিযান শুরুর পর বিভিন্ন স্পট থেকে মাদকসহ অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা গেছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ডিডি) মুকুল জ্যোতি চাকমা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ী সে ছোট বা বড় হোক, তালিকা অনুযায়ী সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমাদের তালিকা ধরে ঢাকার বিভিন্ন স্পটে হানা দিচ্ছি, তবে ব্যবসায়ীদের পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযানের ফলে তালিকাভুক্ত অনেক মাদক ব্যবসায়ী পালিয়ে বেড়াচ্ছে।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর জানিয়েছে, বিভিন্ন সময়েই মাদক ব্যবসার অনেক গডফাদারকে শনাক্ত করা হয়। তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা আছে। কিন্তু আইন অনুযায়ী, সঙ্গে মাদক না পাওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয় না।
মাদকের বিরুদ্ধে গত ২১ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত ১৫ দিনের বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। অধিদফতরের রিজার্ভ ফোর্স (পুলিশ) নিয়ে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটের সঙ্গে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ অভিযানে তালিকা অনুযায়ী মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সঙ্গে মাদক থাকুক বা না থাকুক, গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা। তবে স্পটগুলোতে বড় মাদক কারবারিদের পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, গত ১৪ মে র্যাব-পুলিশের পৃথক মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে সারাদেশে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৯৯ জনের বেশি মাদক বহনকারী ও খুচরা বিক্রেতা নিহত হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে কয়েকশ মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী। তবে নিহত বা গ্রেফতারদের মধ্যে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের কেউই নেই।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো উত্তরের সহকারী পরিচালক (এডি) খোরশেদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০ এ আসামি গ্রেফতারে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। মূলত এই কারণে ইতোপূর্বে মাদকের অনেক গডফাদারকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ, মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে যদি কাউকে গ্রেফতার করতে হয়, তবে তার সঙ্গে মাদক (রিকভারি বা উদ্ধার) থাকতে হবে; অন্যথায় তাকে গ্রেফতার করা যায় না।’
আইনে যা আছে
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০-এ প্রকাশ্য স্থান ইত্যাদিতে আটক বা গ্রেফতারের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে– ‘যদি ধারা ৩৬ এ উল্লিখিত কোনও কর্মকর্তার এইরূপ বিশ্বাস করিবার কারণ থাকে যে কোনও প্রকাশ্য স্থানে বা কোনও চলমান যানবাহনে- (ক) এই আইনের পরিপন্থী কোনও মাদকদ্রব্য বা বাজেয়াপ্তযোগ্য কোনও বস্তু বা এই আইনের অধীন কোনও অপরাধ প্রমাণের সহায়ক কোনও দলিল দস্তাবেজ রক্ষিত আছে, তাহা হইলে, তাহার অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, তিনি উক্ত মাদকদ্রব্য, বস্তু বা দলিল দস্তাবেজ তল্লাশি করিয়া আটক করিতে পারিবেন; (খ) এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনকারী বা সংঘটনে উদ্যত কোনও ব্যক্তি আছেন, তাহা হইলে তাহার অনুরূপ বিশ্বাসের কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া, তিনি তাহাকে আটক করিয়া তল্লাশি করিতে পারিবেন এবং তাহার নিকট দফা (ক) এ উল্লিখিত মাদকদ্রব্য বা বস্তু বা দলিল দস্তাবেজ পাওয়া গেলে তাহাকে গ্রেফতার করিতে পারিবেন।’
খোরশেদ আলম আরও বলেন, ‘নতুন মানি লন্ডারিং আইনের ক্ষমতাবলে তদন্তসাপেক্ষে একজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা যাবে। যদি বাংলাদেশ ফাইন্যানসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কার্যকর হয়, তবে মানির থ্রো (অর্থের উৎস তদন্ত) দিয়ে এটি করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘রিকভারিসহ মাদক ব্যবসায়ীকে না পাওয়া গেলেও মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় ওই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা যাবে।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তৈরি তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৫০০ স্পট নিয়ন্ত্রণ করছে মাদকের চিহ্নিত ৩৭ গডফাদার। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। রাজধানী ঢাকার তালিকাভুক্ত ৩৭ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে মোহাম্মদপুর এলাকায় ইশতিয়াক ওরফে কামরুল হাসান, জেনেভা ক্যাম্পে নাদিম ওরফে পঁচিশ, উত্তরায় ফজলুল করিম, গোলাম সামদানি, বাড্ডায় সাব্বির হোসেন, রিয়াদ উল্লাহ, ভাটারায় ইতি বেগম, গুলশান ও বনানীতে এনায়েত করিম, শরিফ ভুইয়া, আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু, নার্গিস ওরফে মামি, শাহবাগে শহিদুজ্জামান, চাঁনখারপুলে পারভিন আক্তার, আসমা, কামাল হোসেন, বংশালে নাসির উদ্দিন, চকবাজারে ওমর ফারুক, লাল মিয়া, মুগদায় পারভীন, শফিকুল ইসলাম মলাই, রাজু আহমেদ ও আলম হোসেন, কমলাপুরে লিটন, কলাবাগানে নাজমুস সাকিব ভুইয়া, শামীম, কামরাঙ্গীরচরে খুরশিদা ওরফে খুশি, যাত্রাবাড়ীতে মোবারক, গেণ্ডারিয়া এলাকায় রহিম, মিরপুরে নজরুল, রাজীব ও রুস্তম। তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকের কারবার রয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীর বড় মাদক স্পটগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে মাদকের এই গডফাদারদের পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অভিযান শুরুর পর বিভিন্ন স্পট থেকে মাদকসহ অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা গেছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ডিডি) মুকুল জ্যোতি চাকমা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাদক ব্যবসায়ী সে ছোট বা বড় হোক, তালিকা অনুযায়ী সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমাদের তালিকা ধরে ঢাকার বিভিন্ন স্পটে হানা দিচ্ছি, তবে ব্যবসায়ীদের পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযানের ফলে তালিকাভুক্ত অনেক মাদক ব্যবসায়ী পালিয়ে বেড়াচ্ছে।’
No comments