চীনের চাওয়া: বাংলাদেশের নির্বাচন -নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু
রোহিঙ্গা
ইস্যুতে চীনের ‘ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ’ নেই দাবি করে ঢাকায় নবনিযুক্ত
দেশটির রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু বলেছেন, পুঞ্জীভূত এ সমস্যার সমাধানে চীন তার
দুই প্রতিবেশী- বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে যথাসম্ভব সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বেইজিং ‘কার্যকরী ভূমিকা’ রাখতে চায়
বলেই উভয়কে এ সহায়তা দিচ্ছে। চলতি মাসে ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেয়া
চীনা দূত জু’র গতকাল ছিল প্রথম সংবাদ সম্মেলন। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা সংকট
ছাড়াও দেশের আসন্ন একাদশ নির্বাচন এবং বাংলাদেশ ও চীনের কৌশলগত অংশীদারিত্ব
নিয়ে কথা বলেন। নির্বাচন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত খুব অল্প
কথায় যা বলেন তার সারবত্তা হচ্ছে- এখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত
গভীর মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণে রেখেছে বেইজিং। বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার
হিসেবে চীন এখানে একটি নির্বিঘ্ন বা ঝামেলাহীন নির্বাচনই দেখতে চায়। এমন
নির্বাচনের ‘ফল’ যাই হোক অর্থাৎ দেশের জনগণ যে রায় দেবেন তার প্রতি বরাবরের
মতো সম্মান এবং শ্রদ্ধাশীল থাকবে বেইজিং। বাংলাদেশের এই মুহূর্তের সবচেয়ে
বড় সমস্যা ‘রোহিঙ্গা ইস্যু’ নিয়ে রাষ্ট্রদূত তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় কোনো
কথা না বললেও উন্মুক্ত সেশনে এ নিয়ে একাধিক প্রশ্নের জবাব দেন। বলেন,
রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের কোনো নিজস্ব স্বার্থ নেই। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে
সাহায্য করতে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা উভয়কে পরামর্শ ও
উৎসাহ দিচ্ছি। আমরা মনে করি আমাদের পরামর্শগুলো আন্তরিক, বাস্তবমুখী ও
গঠনমূলক। এ সময় রাষ্ট্রদূত দুই দেশের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ এ
আলাপ চালানো এবং দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সমাধান খুঁজে বের করার ওপর জোর দেন।
বলেন, ‘আমরা উভয়পক্ষের প্রতিই নিরপেক্ষ থাকবো।’ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
প্রশ্নে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যে চুক্তি-সমঝোতা হয়েছে তা
উৎসাহব্যঞ্জক উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ প্রত্যাবাসন তালিকা
হস্তান্তর করেছে। আশা করি মিয়ানমার দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে সাড়া দেবে।
উদ্বাস্তুদের গ্রহণ করে রাখাইনে আবাসের ব্যবস্থা করতে চীন মিয়ানমারের প্রতি
তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশে অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা
রোহিঙ্গারা আসন্ন বর্ষার মৌসুমে নতুন সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে এমন আশঙ্কা
ব্যক্ত করে তিনি বলেন, তাদের জন্য আমরা কী করতে পারি সেটিই খুঁজছি।
বাস্তুচ্যুতদের সহায়তায় চীন আগ্রহী বলেও জানান রাষ্ট্রদূত। দুপুরের
বারিধারাস্থ চ্যান্সারি ভবনের ওই সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার
প্রতিনিধিদের একটি দলও আমন্ত্রিত ছিল। সেখানে রাষ্ট্রদূত স্পষ্ট করেই বলেন,
রোহিঙ্গা সংকটের জটজলদি কোনো সমাধান হবে বলে মনে করে না বেইজিং। কারণ এর
সঙ্গে ঐতিহাসিক, জাতিগত এবং ধর্মীয়- নানা কারণ জড়িয়ে আছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে
বাংলাদেশে উদ্বেগের বিষয়টি চীন বোঝে এবং জানে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চীন
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে চায় বলেই মিয়ানমারে
আশ্রয়কেন্দ্র বানাতে সহযোগিতা করছে। এছাড়া চীন মিয়ানমারের ব্যবসায়ী ও
রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে এটির যথাযথ সমাধানের কথা বলেছে। মিয়ানমারের ওপর
প্রভাব থাকায় রোহিঙ্গা সংকট অবসানে চীনের কার্যকর ভূমিকা আশা করে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী এ সদস্যের ভেটোর কারণে এখনো মিয়ানমারের
বিরুদ্ধে কোনো রেজুলেশন নিতে পারেনি বিশ্ব সম্প্রদায়। সংবাদ সম্মেলন
সাংবাদিকদের তরফে এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে চীন দূত বহুপক্ষীয় উদ্যোগের
উল্লেখ না করেই দ্বিপক্ষীয় অর্থাৎ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আলোচনায় জোর দেন।
বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে মিয়ানমার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার
প্রকাশ্য ঘোষণা বা অঙ্গীকার করেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির
বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনাও চলমান রয়েছে। কিন্তু নানা ছুতোয় মিয়ানমার
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া প্রলম্বিত করছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- বাংলাদেশের
ঘাড়ে থাকা বাড়তি প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা লাঘবে এখন পর্যন্ত কোনো
দৃশ্যমান দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক উদ্যোগ নেই।
চীন, ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার- কেউ কারও শত্রু নয়: এদিকে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, এক বন্ধু আমার কাছে সমপ্রতি জানতে চান চীন-ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার কে কার শত্রু। আমি বলি- না, এখানে কেউ কারও শত্রু নয়। আমাদের (৪টি দেশের ) সবার কমন এক শত্রু আছে। তাহলো- দরিদ্রতা। দরিদ্রতা দূর করতে আমাদের আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো দরকার। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, আঞ্চলিক এ সহযোগিতা এবং উন্নয়নই শুধু পারে রাখাইনের সমস্যার কার্যকর সমাধান করতে। সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে চীনের ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী’ উল্লেখ করে বলেন, এ বছর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অনেক দ্বিপক্ষীয় বিষয় ছাড়াও ১২তম কূটনৈতিক সভা, সমুদ্র সহযোগিতা বিষয়ে দ্বিতীয় বাংলাদেশ-চীন সংলাপ এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে চীন-বাংলাদেশ যৌথ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী এ বছরের ১২ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসি। এটা বাংলাদেশে আমার প্রথম আসা। আমি এখানে এসেই বুঝেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়ছে এ দেশের মানুষ। দু’দেশের সম্পর্ক হাজার বছরের। এ সম্পর্ক আরো জোরদার করতে আমরা কাজ করে যাবো। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার কৌশলগত সম্পর্ক সামনের দিনগুলোতে আরো এগিয়ে যাবে। গত সপ্তাহে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আবারও নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে (শি জিনপিংকে) অভিনন্দন জানিয়েছেন- উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত। সংবাদ সম্মেলনে উপ-রাষ্ট্রদূত চ্যাং উই ছাড়াও দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
চীন, ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার- কেউ কারও শত্রু নয়: এদিকে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, এক বন্ধু আমার কাছে সমপ্রতি জানতে চান চীন-ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার কে কার শত্রু। আমি বলি- না, এখানে কেউ কারও শত্রু নয়। আমাদের (৪টি দেশের ) সবার কমন এক শত্রু আছে। তাহলো- দরিদ্রতা। দরিদ্রতা দূর করতে আমাদের আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো দরকার। রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, আঞ্চলিক এ সহযোগিতা এবং উন্নয়নই শুধু পারে রাখাইনের সমস্যার কার্যকর সমাধান করতে। সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে চীনের ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী’ উল্লেখ করে বলেন, এ বছর বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অনেক দ্বিপক্ষীয় বিষয় ছাড়াও ১২তম কূটনৈতিক সভা, সমুদ্র সহযোগিতা বিষয়ে দ্বিতীয় বাংলাদেশ-চীন সংলাপ এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে চীন-বাংলাদেশ যৌথ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনী বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী এ বছরের ১২ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসি। এটা বাংলাদেশে আমার প্রথম আসা। আমি এখানে এসেই বুঝেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়ছে এ দেশের মানুষ। দু’দেশের সম্পর্ক হাজার বছরের। এ সম্পর্ক আরো জোরদার করতে আমরা কাজ করে যাবো। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার কৌশলগত সম্পর্ক সামনের দিনগুলোতে আরো এগিয়ে যাবে। গত সপ্তাহে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আবারও নির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে (শি জিনপিংকে) অভিনন্দন জানিয়েছেন- উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত। সংবাদ সম্মেলনে উপ-রাষ্ট্রদূত চ্যাং উই ছাড়াও দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
No comments