সৌদিতে সিলেটের রিপার আকুতি: আমাকে বাঁচাও- নতুবা নির্যাতনে মারাই যাবো by ওয়েছ খছরু
মাত্র
দুই সপ্তাহ হলো সৌদি আরবে গেছেন সিলেটের গৃহবধূ রিপা বেগম। চোখে-মুখে
স্বপ্ন নিয়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন ওখানে। কিন্তু যেতে না যেতেই বিপদের মুখে
পড়েছেন তিনি। সেখানে একটি বাসায় রিপাকে আটকে রেখে অমানুষিক শারীরিক ও
মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এতে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন রিপা বেগম। বার বার
ফোন করে দেশে থাকা স্বামীর কাছে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছেন তিনি। স্ত্রীর এই
অবস্থায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন দেশে থাকা স্বামীও। স্ত্রীকে ফিরে পেতে
তিনি ইতিমধ্যে আবেদনও জানিয়েছেন। রিপার স্বামী সিলেটের গোয়াইনঘাটের পশ্চিম
কালিনগর গ্রামের মুন্না মিয়া। স্ত্রীকে ফিরে পেতে তিনি সিলেট মেট্রোপলিটন
পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। তিনি অভিযুক্ত করেছেন ট্রাভেলস
এজেন্সির মালিক সিলেট নগরের ইদ্রিস মার্কেটের হামিদ এন্টারপ্রাইজের
স্বত্বাধিকারী মো. হামিদকে। পুলিশ কমিশনার অভিযোগপত্রটি আমলে নিয়ে তা তদন্ত
করে দেখার জন্য অধীনস্থদের নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে মুন্না মিয়া
উল্লেখ করেন- ‘তার স্ত্রীকে সৌদিতে রেখে মানসিক ও যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে।
রিপা দেশে আসার জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে এ বিষয়টি হামিদকে জানালে তিনি
উল্টো ধমক দিয়ে বলে আমি আর রিপার সঙ্গে যাতে কোনো যোগাযোগ না করি।’ তিনি
বলেন, ‘যেভাবে হউক নির্যাতনের হাত থেকে আমার স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে
আসার জন্য সরকারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এছাড়াও যে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে তার বিরুদ্ধেও যেন আইনানুগ ব্যবস্থা
নেয়া হয়। প্রয়োজনে তিনি হামিদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. হামিদের
বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করবেন।’ মুন্না মিয়া জানিয়েছেন, তার স্ত্রী বার
বার বলছে আমাকে বাঁচাও, নতুবা আমি মারাই যাবো। কিন্তু আমি তার জন্য কিছু
করতে পারছি না।’ নিজ এলাকা গোয়াইনঘাটে শ্রমিকের কাজ করেন মুন্না মিয়া। কখনো
পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করেন, আবার কখনো কৃষি কাজও করেন। নিতান্তই
হতদরিদ্র পরিবার তার। তার স্ত্রী রিপা বেগমের বয়স বেশি নয়। ২০ বছর হবে।
সিলেটের জিন্দাবাজারের ট্রাভেলস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী হামিদ আহমদের সঙ্গে
সম্প্রতি
পরিচয় মুন্না মিয়ার। জানতে পারেন- সরকারি খরচে সৌদি আরবে মহিলা শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে। হামিদ মিয়ার কথায় মুন্না মিয়া সায় দেন। কথা বলেন স্ত্রী রিপার সঙ্গে। পরিবারকে সচ্ছল করতে তিনি সাহায্য চান স্ত্রীর। স্ত্রীও তার কথায় সায় দেন। কিন্তু রাজি হচ্ছিল না রিপার পরিবার। তারা কোনো ভাবেই রিপাকে সৌদিতে পাঠাতে মত দিচ্ছিলো না। অবশেষে রিপা তার পরিবারের সবাইকে বুঝিয়ে রাজি করান। করা হয় পাসপোর্টও। সব প্রস্তুতি শেষ হওয়ার পর সিলেটের ওই ট্রাভেলস এজেন্সির মাধ্যমে রিপাকে গত ৮ই মার্চ পাঠানো হয় সৌদি আরবে। মুন্না মিয়া নিজেই স্ত্রীকে ফ্লাইটে তুলে দিয়ে আসেন। ওই দিন সৌদি আরবে যাওয়ার পর রিপা স্বামীর সঙ্গে ১০ মিনিট মোবাইল ফোনে কথা বলেন। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বাসায়। সেখানে আটকে রেখে রিপার ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। রিপা যে বাসায় রয়েছে সেই বাসায় এক মহিলা রয়েছে। তার মোবাইলে মাঝে মধ্যে কথা হয় স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু দুই থেকে তিন মিনিট কথা বলার পর ওই প্রান্ত থেকে রিপার কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। মুন্না মিয়া জানিয়েছেন, রিপার সঙ্গে যখনই কথা হয়- তখন সে অঝোরে কাঁদে। তার জীবন হুমকির মুখে বলে জানায়। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করে। এদিকে এ ঘটনার পর ট্রাভেলস এজেন্সির সঙ্গে কথা বলেও কোনো সান্ত্বনা পাচ্ছেন না মুন্না মিয়া। তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। ওদিকে হামিদ ট্রাভেলস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমাসে ৮শ’ রিয়াল চুক্তিতে তাকে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছে। তবে নির্যাতনের বিষয়টি ট্রাভেলস এজেন্সির জানা নেই। এ ব্যাপারে তারাও সৌদি আরবে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানান এজেন্সির কর্মকর্তারা।
পরিচয় মুন্না মিয়ার। জানতে পারেন- সরকারি খরচে সৌদি আরবে মহিলা শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে। হামিদ মিয়ার কথায় মুন্না মিয়া সায় দেন। কথা বলেন স্ত্রী রিপার সঙ্গে। পরিবারকে সচ্ছল করতে তিনি সাহায্য চান স্ত্রীর। স্ত্রীও তার কথায় সায় দেন। কিন্তু রাজি হচ্ছিল না রিপার পরিবার। তারা কোনো ভাবেই রিপাকে সৌদিতে পাঠাতে মত দিচ্ছিলো না। অবশেষে রিপা তার পরিবারের সবাইকে বুঝিয়ে রাজি করান। করা হয় পাসপোর্টও। সব প্রস্তুতি শেষ হওয়ার পর সিলেটের ওই ট্রাভেলস এজেন্সির মাধ্যমে রিপাকে গত ৮ই মার্চ পাঠানো হয় সৌদি আরবে। মুন্না মিয়া নিজেই স্ত্রীকে ফ্লাইটে তুলে দিয়ে আসেন। ওই দিন সৌদি আরবে যাওয়ার পর রিপা স্বামীর সঙ্গে ১০ মিনিট মোবাইল ফোনে কথা বলেন। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বাসায়। সেখানে আটকে রেখে রিপার ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। রিপা যে বাসায় রয়েছে সেই বাসায় এক মহিলা রয়েছে। তার মোবাইলে মাঝে মধ্যে কথা হয় স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু দুই থেকে তিন মিনিট কথা বলার পর ওই প্রান্ত থেকে রিপার কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। মুন্না মিয়া জানিয়েছেন, রিপার সঙ্গে যখনই কথা হয়- তখন সে অঝোরে কাঁদে। তার জীবন হুমকির মুখে বলে জানায়। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করে। এদিকে এ ঘটনার পর ট্রাভেলস এজেন্সির সঙ্গে কথা বলেও কোনো সান্ত্বনা পাচ্ছেন না মুন্না মিয়া। তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। ওদিকে হামিদ ট্রাভেলস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমাসে ৮শ’ রিয়াল চুক্তিতে তাকে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছে। তবে নির্যাতনের বিষয়টি ট্রাভেলস এজেন্সির জানা নেই। এ ব্যাপারে তারাও সৌদি আরবে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন বলে জানান এজেন্সির কর্মকর্তারা।
No comments