নাগাল্যান্ডে প্রার্থীদের সম্পদ বাড়ছে, সঙ্গে দলবদলও
ভারতের
নাগাল্যান্ড রাজ্যে গত বছর জনপ্রতিনিধিদের ঘোষিত সম্পত্তি বেড়েছে ৪১
শতাংশ। সম্পদ বৃদ্ধির হারে বিজেপির নতুন বন্ধু দল নাগাল্যান্ড ডেমোক্রেটিক
পিপলস পার্টির (এনডিপিপি) সদস্যরা সবার আগে রয়েছেন। বিজেপি বিধায়কেরাও
সম্পদ বৃদ্ধিতে খুব একটা পিছিয়ে নেই। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এই
তথ্য উঠে এসেছে। আগামী মঙ্গলবার উত্তর-পূর্ব ভারতের এ পাহাড়ি রাজ্যে
বিধানসভার নির্বাচন। নাগাল্যান্ড বিধানসভার নির্বাচনে ৫৩ জন বিধায়ক এবারও
ভোটে লড়ছেন। তবে তাঁদের অনেকেই দলবদল করে এখন অন্য প্রতীকে ভোটযুদ্ধে
শামিল। এই ৫৩ জনের দেওয়া ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সম্পত্তির খতিয়ান অনুযায়ী গড়ে
৪১ শতাংশ সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে গত পাঁচ বছরে। ভারতীয় মুদ্রায় গত পাঁচ বছরে
তাঁদের সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ ১ কোটি ২৪ লাখ রুপি। হলফনামা বিশ্লেষণ করে
দেখা যাচ্ছে, গত পাঁচ বছরে বিজেপির নয় প্রার্থীর সম্পদ বেড়েছে গড়ে ১ কোটি
৪২ লাখ রুপির। তাঁদেরই জোটসঙ্গী এনডিপিপির ১২ প্রার্থী সম্পদ বাড়িয়েছেন ৭
কোটি ৭০ লাখ এবং শাসক দল এনপিএফের ২৮ প্রার্থীর সম্পদ বৃদ্ধির হার ৩ কোটি
৭৫ লাখ রুপি।
বিধায়ক ছিলেন, এমন কোনো প্রার্থী অবশ্য এবার কংগ্রেসের হয়ে
লড়ছেন না। তাই তাঁদের গত পাঁচ বছরের ঘোষিত সম্পদ বৃদ্ধির পরিসংখ্যানও এখানে
নেই। নাগাল্যান্ডের ভোটপ্রার্থী মানেই ধরে নেওয়া যায় তিনি ঘোষিত কোটিপতি।
এটাই এখানকার রীতি। অথচ রাজ্যবাসীর গড় আয় গোটা দেশের মধ্যে অনেক কম।
ভারতের গড় আয় যেখানে ১ লাখ ৩ হাজার ২১৯, সেখানে নাগাল্যান্ডে ৬৪ হাজার ৮৬৯
রুপি। নাগাল্যান্ডের রাজ্য রাজনীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হলো দলবদল।
নিন্দুকেরা বলেন, ‘ঘোড়া কেনাবেচা’য় প্রসিদ্ধ নাগাল্যান্ড। এবারে যে ৫৩ জন
বিধায়ক ৬০ সদস্যের রাজ্য বিধানসভায় প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের অনেকেই দলবদল
রোগের শিকার। গত বছর ক্ষমতাসীন এনপিএফের হয়ে ভোটে জিতেছিলেন ৩৮ জন। তাঁদের
মধ্যে মাত্র ১৮ জন এবার এনপিএফের হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে। বাকিদের মধ্যে চারজন
বিজেপিতে, ১০ জন এনডিপিপিতে, একজন জেডি (ইউ) এবং একজন এনপিপির হয়ে ভোটে
লড়ছেন। তিনজন অবশ্য এবার ভোটেই দাঁড়াননি। অন্য দল থেকে আরও ১১ জনকে
ভাঙিয়ে এনেছে এনপিএফ। বিজেপির শরিক এনডিপিপির ১১ জন প্রার্থী রয়েছেন অন্য
দল থেকে গতবার জেতা। সব মিলিয়ে দলবদল এখানে প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে। এবারও
তার ব্যতিক্রম নেই। অথচ সব দলই দুর্নীতিকে ইস্যু করেছে এবারের ভোটে। সঙ্গে
রয়েছে স্থায়িত্বের অঙ্গীকার। কিন্তু ভোট মিটতেই টানা পাঁচ বছর সব অঙ্গীকারই
চাপা পড়ে যায় বলে মনে করেন নাগাল্যান্ডের সাধারণ মানুষ। তাই ভোট এলে হাত
পেতে নিতেও আপত্তি করে না নাগা জনতা।
No comments