আশাবাদ ও সংশয় নিয়ে নতুন বছর by এম সাখাওয়াত হোসেন
২০১৮
সালে দেশে একটি ভালো জাতীয় নির্বাচন হবে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো
সঠিকভাবে হবে-সেটা আমরা চাই। এটা দেশবাসীরও আকাঙ্ক্ষা। একটি নিরপেক্ষ
নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সরকার কিছু কিছু কাজ করেছে। নতুন নির্বাচন
কমিশনার নিয়োগ দিয়েছে। তারা রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ভালোমতো করেছে।
কিন্তু তাতেও নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ভোট নিয়ে মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরে
আসেনি। একটি বড় সমস্যা আমাদের এখনো রয়ে গেছে, তা হচ্ছে গণতন্ত্রে উত্তরণের
সঠিক পথটি এখনো খুঁজে পাইনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের
মধ্যে ভোটের ওপর যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে, এই চার বছরেও তা আর ফিরে আসেনি।
উৎসবমুখর ও গণতান্ত্রিক পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠান বা ভোটের যে সংস্কৃতি
দেশে ছিল, তা এখন আর নেই। সেটা প্রতিষ্ঠা করা নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ।
কিন্তু তারা এটা কতটুকু পারবে, তা নিয়ে আশাবাদ ও সংশয়ে আমরা নতুন বছর শুরু
করতে যাচ্ছি।
কেননা, আমাদের প্রশাসন এখনো সরকার দিয়ে প্রভাবিত অবস্থায়
আছে। তাদের নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ হতে হবে। কিন্তু তার কোনো লক্ষণ দেখছি
না। নির্বাচনের সময় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী সব সময় তাদের ওপর নির্ধারিত
দায়িত্ব পালন করে থাকে। নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীকে কীভাবে নিরাপত্তা
পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, তা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। সেই
পরিকল্পনা এখন থেকেই নিতে হবে। এটা নিয়ে বিতর্ক করার কোনো কারণ আছে কি না,
তা আমি মনে করি না। নির্বাচনকে ঘিরে আরেকটি বড় সমস্যা আমাদের আছে। তা হচ্ছে
দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে যোজন যোজন
দূরত্ব এখনো রয়ে গেছে। তাদের মধ্যে দূরত্ব না কমলে একটি ভালো নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হওয়া কঠিন হবে। কিন্তু ফেলে আসা বছরগুলোতে এ ব্যাপারে কোনো
উদ্যোগও আমরা দেখলাম না। আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশ এখনো দ্বিদলীয় ধারায়
বিভক্ত। অন্য যে রাজনৈতিক দল আছে, তারা ওই দুই দলে ভাগ হয়ে জোট বেঁধে
নির্বাচন ও রাজনীতি করে। ফলে ২০১৮-এর নির্বাচনের আগে ওই দুই দলের মধ্যে
একটি ন্যূনতম পর্যায়ের হলেও সমঝোতা তৈরি হতে হবে।
No comments