প্রধান লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচন
দেশের রাজনীতিতে আবারও নয়া মেরুকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তৃতীয় একটি জোট গঠনের। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি জাতীয় নেতা আ স ম আবদুর রবকে সামনে রেখে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক এবং বাম-প্রগতিশীল ঘরানার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় এ জোট গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এ জোটের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে দেশব্যাপী জনমত গড়ে তোলা। পাশাপাশি এ ব্যাপারে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ প্রয়োগ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা ঘোষণা। আর এই রূপরেখার আলোকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দাবিতে রাজপথে নামবে এই নতুন জোট। এ ছাড়া নির্বাচনেও অংশ নেবে তারা। নয়া এ জোট গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র যুগান্তরের কাছে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র আরও জানায়, জোট গঠন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাতে আ স ম আবদুর রবের সঙ্গে তার উত্তরার বাসভবনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের স্থায়ী কমিটির সদস্য আওম শফিকউল্লাহ ও অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, বাসদের পলিটব্যুরোর সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মাহী বি চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শহিদুল্লাহ কায়সার, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীর প্রতীক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য বহ্নিশিখা জামালী। এ ছাড়া বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
তবে বৈঠক চলাকালে দুই দফা পুলিশের কয়েকজন সদস্য আ স ম আবদুর রবের বাসায় যান। তারা ওই বৈঠকের বিষয়ে জানতে চান। ওই সময় পুলিশকে জানানো হয়, সবাইকে রাতের খাবারের নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈঠকে আ স ম আবদুর রব তার বাসায় ঢুকে পুলিশের এমন আচরণের বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরে বলেন, ‘এর পরও কি আমরা চুপ থাকব? আমরা এভাবে ঘরে বসে থাকব? আমাদের কি কিছুই করণীয় নেই?’ তখন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমাদের কিছু একটা করা উচিত। মানুষ দুই দলের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। আমরা কিছু একটা করতে পারি।’ এ সময় মাহী বি চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কি করতে চাই, তা সুস্পষ্ট করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ঠিক করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, লক্ষ্যহীনভাবে পথ চলা যাবে না। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।’ এ সময় গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘সরকার দিন দিন আরও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছে। বিএনপির ওপরও মানুষের আস্থা নেই। এ অবস্থায় আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে।’ তখন অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন ভালো মানুষ। ভালো সব উদ্যোগে তিনি থাকেন। কিন্তু প্রয়োজনের সময় তাকে পাওয়া যায় না।’ জবাবে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন যাতে এখন থেকে সব সময় থাকেন, তার নিশ্চয়তা দেয়া হবে।’ এ সময় আ স ম রব বলেন, ‘আমাদের মতের ভিন্নতা আছে, দলগুলোর নিজস্ব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আছে। কিন্তু জাতীয় ইস্যুতে আমাদের এক হতে হবে। এক মঞ্চে আসতে হবে। দুই দল ও জোট ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা চাইলে সফল হতে পারি। সে সম্ভাবনা আমাদের রয়েছে। তাই আমাদের যে কোনো মূল্যে একত্র হতে হবে। দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্র রক্ষা করতে এর কোনো বিকল্প নেই।’ আ স ম আবদুর রবের এ বক্তব্যের পর মাহী বি. চৌধুরী বলেন, ‘সফল হতে হলে আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য স্থির করতে হবে। আমরা কী চাই? আমাদের চাওয়া কিভাবে পূরণ হবে? এসব বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।’ এ সময় অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় থাকতে চাইবে। বিএনপিও এবার নির্বাচনে অংশ নেবে। এ অবস্থায় আমাদের ভূমিকা কী হবে- তা ঠিক করতে হবে।’ এ সময় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দিন দিন সবকিছু সংঘাতময় হয়ে উঠছে।
সরকার আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তোরণে তৃতীয় শক্তির প্রয়োজন।’ এ সময় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক বলেন, ‘সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হবে। সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য ঘরে বসে না থেকে প্রয়োজন মাঠে নামা। একসঙ্গে আন্দোলন ও নির্বাচনের কৌশল প্রণয়ন করা।’ এ সময় পৃথক একটি জোট গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি একসঙ্গে আন্দোলন এবং নির্বাচনের কৌশল প্রণয়নেরও সিদ্ধান্ত হয়। নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটের পক্ষ থেকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা ঘোষণা নিয়েও আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈঠক উপলক্ষে রাতের খাবারেরও আয়োজন করা হয় আ স ম আবদুর রবের পক্ষ থেকে। সন্ধ্যা ৭টার পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তার বাসায় আসতে শুরু করেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছেলে মাহী বি চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এর আগেই আ স ম আবদুর রবের বাসায় রাজনীতিকদের বৈঠক হচ্ছে- এমন খবর পেয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা ছুটে আসেন। তারা বৈঠক করার ক্ষেত্রে ওপর মহলের নিষেধাজ্ঞা আছে বলে আ স ম রবকে জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকাকে নিয়ে চলে যান কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। বাকিরা পুলিশি বাধা উপেক্ষা করেই বৈঠক করেন এবং রাতের খাবার খান। এর মধ্যে আরও এক দফা আ স ম আবদুর রবের বাসায় যান পুলিশের কর্মকর্তারা। যদিও শীর্ষ রাজনীতিকদের সম্মিলিত বাধার মুখে তারা ফিরে আসেন।
জানা গেছে, রাতের এ বৈঠকে অংশ নেয়া শীর্ষ নেতারা দুই বড় দল এবং জোটের বাইরে তৃতীয় একটি নতুন রাজনৈতিক জোট গঠনের প্রয়োজনীয়তাসহ দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। সব দলের অংশগ্রহণে আগামীতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে জনমত গড়ে তোলা, নির্বাচন কার অধীনে হবে- সে বিষয়ে একটি রূপরেখা উপস্থাপন, একসঙ্গে আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়াসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা করেন তারা। এ ছাড়া সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এ ইস্যুতে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করারও সিদ্ধান্ত নেন তারা। যত দ্রুত সম্ভব জোট গঠন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা। এ ক্ষেত্রে বিশিষ্ট আইনজীবী গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গেও বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়। তিনি (ড. কামাল হোসেন) এ মুহূর্তে দেশের বাইরে রয়েছেন বলে বৈঠকে জানান গণফোরামের নেতারা। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, ‘মূলত এটা ছিল একটি খাওয়ার দাওয়াত। আর রাজনীতিবিদরা একসঙ্গে বসলে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, এখানেও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ যেভাবে ঘরের ভেতরে ঢুকে বাধা দিতে চেষ্টা করল, তা দুঃখজনক। পুলিশের এ আচরণই প্রমাণ করে, দেশের এখন কী অবস্থা।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে মানুষ ঘরেও এখন আর নিরাপদ না।
এ অবস্থার অবসান খুবই জরুরি।’ সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় দু’বছর আগে আ স ম আবদুর রবকে সামনে রেখে তৃতীয় একটি জোট গঠনের এ উদ্যোগ শুরু হয়। এ সময় একাধিকবার আ স ম আবদুর রবের বাসায় এবং সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে জোট গঠন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়। জেএসডির সিনিয়র সহসভাপতি এমএ গোফরান, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ এবং নাগরিক ঐক্যের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শহিদুল্লাহ কায়সারকে নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়। ১৪ দলীয় জোট এবং ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকা সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়। এই প্রক্রিয়া মাঝপথে স্তিমিত হয়ে গেলেও এটি আবার নতুন করে এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন যুগান্তরকে বলেন, ‘নতুন একটি জোট গঠনের প্রক্রিয়া আরও আগেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাঝে নানা ঘটনায় তা ঝিমিয়ে পড়ে। সম্প্রতি আবার নতুন করে এ উদ্যোগকে এগিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এর অংশ হিসেবেই বৃহস্পতিবার রাতে আ স ম আবদুর রবের বাসায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পুলিশ যেভাবে ঘরের ভেতরে ঢুকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে তা নজিরবিহীন। আইয়ুব-ইয়াহিয়ার শাসনামলেও এরকম ঘটনার কথা কেউ শোনেনি।’ আবদুল মালেক রতন বলেন, ‘দেশের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় এনে আমরা মনে করি, আর বসে থাকার সময় নেই। বসে থাকাটাও হবে বোকামি। এ অবস্থায় কিছু একটা করা উচিত।
দেশের মানুষেরও এমনটাই চাওয়া। তাই আমরা অচিরেই একটি জোট নিয়ে আত্মপ্রকাশ করার কথা ভাবছি। এ জোট আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব নতুন জোট দেশবাসীকে উপহার দেব।’ বৈঠক সম্পর্কে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘দুই বড় দল ও জোটের বাইরে বিকল্প একটি শক্তির উত্থান দেশবাসীও চায়। আমরাও চাই। এরকম একটি চাওয়া থেকেই আমরা এর আগেও আলোচনায় বসেছিলাম। বৃহস্পতিবার রাতেও আলোচনায় বসেছি। এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় ইস্যুতে যুগপৎভাবে রাজপথে থাকা যায় কিনা, পাশাপাশি একটি যুক্তফ্রন্ট করে একসঙ্গে আন্দোলন, জনমত গড়ে তোলা এবং নির্বাচনে অংশ নেয়া যায় কিনা, সে বিষয়টি নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।’ সাইফুল হক বলেন, ‘এর আগেও কয়েক দফা আমরা আলোচনা করেছি। তবে এবারের আলোচনা অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ আমরা বেশকিছু ইস্যুতে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত ও অবস্থান নিয়েছি।’ এ প্রসঙ্গে বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘আ স ম আবদুর রব তার বাসায় খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছিলেন। সেখানে আমরা ছিলাম। রাজনীতিবিদরা একসঙ্গে বসলে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়, আমরাও আলোচনা করেছি। দেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি, এ মুহূর্তে করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে। এ সময় জোট গঠন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’ জানা গেছে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বাম ঘরানার বেশ কয়েকটি দল গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা নামে পৃথক একটি জোট গঠন করে দীর্ঘদিন ধরে পথ চলছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) জোটবদ্ধভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। সম্প্রতি বাসদ, সিপিবি এবং গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা একসঙ্গে পথ চলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে নয়া কর্মসূচি ঘোষণা করবে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। বেলা ৩টায় তারা সিপিবি এবং বাসদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। এ সময় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে তারা। সূত্র জানায়, এখন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সবাইকে এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসার। যদিও এর আগে গণফোরাম সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আ স ম আবদুর রব, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীসহ সমমনাদের নিয়ে পৃথক একটি জোট গঠন করলেও কিছুদিন যেতে না-যেতেই তা ভেঙে যায়।
নয়া জোট গঠন প্রক্রিয়ায় অতীতের সেই অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগানো হবে। জানা গেছে, এ বৈঠকে নয়া জোট গঠন করা ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে কাদের নেয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জানতে চাইলে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আ স ম রবের বাসায় ডিনারের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানেও পুলিশ বাধা দিয়েছে। আরও কয়েকটি দলের প্রধান আসার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসেননি। বাসার একটি ডিনারে পুলিশি হানা কাম্য হতে পারে না।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে খেতে বসলে তো অনেক বিষয়েই আলোচনা হয়।’ এ প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট সুব্র চৌধুরী বলেন, ‘একটি বাসায় যখন রাজনীতিবিদরা একত্র হন, তখন পুলিশ বাধা দেয়। এ থেকেই বোঝা যায় দেশে বর্তমান অবস্থা।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে আমরা মনে করি, আর বসে থাকা ঠিক হবে না। কিছু একটা করা উচিত। আমরা আমাদের করণীয় নির্ধারণ করতে আবারও বৈঠকে বসব।’
No comments