ভেলানগর বাসস্ট্যান্ডের পাশে আবর্জনার স্তূপ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের হাফিজ মিয়া (৫২) পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি প্রায়ই নরসিংদী শহরে যান। বাসে করে ভেলানগর বাসস্ট্যান্ডে নেমে তারপর গন্তব্যে যান তিনি। গত বুধবার বাসস্ট্যান্ড থেকে জেলখানার মোড় হয়ে মূল শহরে প্রবেশের সময় তীব্র দুর্গন্ধে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিরক্তি নিয়ে হাফিজ মিয়া বলেন, ‘মহাসড়ক মানে সাধারণ সড়ক নয়, বড় কিছু। অথচ এই মহাসড়কের পাশে আবর্জনার স্তূপ। পচা গন্ধ নাকে এসে লাগার পর সহ্য করতে পারিনি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নরসিংদীর অন্যতম প্রধান বাসস্ট্যান্ড ভেলানগর। সড়কপথ ব্যবহার করে জেলা সদরে প্রবেশের জন্য বেশির ভাগ মানুষ এ বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করে। বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া জেলখানা। মহাসড়কের জেলখানা প্রান্তে স্থানীয় বাসিন্দারা ময়লা-আবর্জনা ফেলে বড় স্তূপ করে রেখেছে। ইদানীং এখানে হাঁস, মুরগিসহ মৃত জীবজন্তু ফেলা হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন দিন দিন স্তূপের আকার বড় হচ্ছে, আবার দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বেশি। সরেজমিনে গত বুধবার দেখা যায়, ভেলানগর বাসস্ট্যান্ড থেকে জেলখানার মোড় পর্যন্ত যানজট লেগে আছে। আশপাশের লোকজন আবর্জনা-ময়লা পলিথিনে করে মহাসড়কের পাশে ফেলছে। দুর্গন্ধের কারণে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ও চালকদের নাকেমুখে কাপড় এবং হাত চেপে ধরে রাখতে হচ্ছে। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, আশপাশের এলাকায় ডাস্টবিন নেই। তাঁরা বাসস্ট্যান্ডের পাশে ময়লা ফেলেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয় সড়ক এলাকার বাসিন্দা শহিদ মিয়া (২৫) বলেন, ‘আমরা যেমন তেমন বাইরের লোক আইসা যখন গন্ধ খাই, তখন নরসিংদী এবং আমরার সম্পর্কে ধারণা খারাপ হইয়া যায়।’ শহরের বাজিরমোড় মহল্লার বাসিন্দা ও ফল ব্যবসায়ী তৌহিদ মিয়া (৩২) বলেন,
‘এই জায়গায় ময়লা ফেলা অভ্যাস হইয়া গেছে। না করলেও শুনে না। পৌরসভা থাইক্কা পরিষ্কার করা হয় না। আমরা আছি বেশি কষ্টে।’ সিলেট থেকে ছেড়ে আসা মিতালী পরিবহনের একটি বাসের চালক লোকমান হোসেন (৫০)। তিনি ২০ বছর ধরে এই মহাসড়কে বাস চালান। লোকমান বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়কের একটি। প্রতিদিন যানবাহন বাড়ছে, লোকজনও বাড়ছে। অথচ এই মহাসড়কের পাশ ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পৌরসভার সচিব মো. মাহফুজ বলেন, মূলত পৌরসভার বাইরে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের লোকজন সেখানে ময়লা ফেলছে। পৌরসভার মেয়র কামরুজ্জামান বলেন, জেলখানার মোড়ে পৌরসভার পক্ষ থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় না। ওই আবর্জনার স্তূপের জন্য স্থানীয় ব্যক্তিরা দায়ী। সেখান থেকে আবর্জনার স্তূপ সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে।
No comments