হারলেন ট্রাম্প, টিকলেন হিলারি by হাসান ফেরদৌস
আইওয়াতে দলীয় ককাসে স্বামী বিল ক্লিনটনের সঙ্গে হিলারি ক্লিনটন। সোমবার রাতে ডে ময়েন শহরে |
২০১৬
সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম পরীক্ষায় ব্যর্থ হলেন ডোনাল্ড
ট্রাম্প। এই বিলিয়নিয়ার ক্যাসিনো ব্যবসায়ী, তাঁর নিজের কথায়, জিততে
ভালোবাসেন। নিজের বিজয় সম্পর্কে তিনি এতটা নিশ্চিত ছিলেন যে আইওয়া ককাসের
ঠিক আগ মুহূর্তে অনুষ্ঠিত সপ্তম বিতর্কে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকেন। তাঁকে
ডিঙিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নিলেন অতি-কট্টর রক্ষণশীল সিনেটর টেড ক্রুজ, মুখ্যত
আইওয়ার ইভানজেলিক্যাল ভোটারদের সমর্থনে। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ফ্লোরিডার
সিনেটর মার্কো রুবিও, যিনি তৃতীয় স্থানে থেকেও নিজেকে বিজয়ী ভাবছেন।
অন্যদিকে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান দুই প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও বার্নি স্যান্ডার্স, প্রায় সমান সমান ভোট পেয়েছেন। এই ফলাফল খুব বিস্ময়কর ছিল না, যদিও একজন ‘ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট’-এর কাছ থেকে এমন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিলারিকে নিঃসন্দেহে বিস্মিত ও কিঞ্চিৎ হতোদ্যম করেছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পর তিনি এ দেশের সবচেয়ে পরিচিত নাম, নির্বাচনী তহবিল ও সংগঠনের দিক দিয়ে তিনি অন্য সবার চেয়েও এগিয়ে। তা সত্ত্বেও স্যান্ডার্সকে নিশ্চিতভাবে পরাস্ত করার অক্ষমতা তাঁর দলের ভেতরে উদ্বেগের সঞ্চার করেছে।
আইওয়া
তাঁর অতি রক্ষণশীল ইভানজেলিক্যাল প্রবণতার জন্য সুবিদিত। এই রাজ্যের
রিপাবলিকান সমর্থকেরা বরাবর তাদের চোখে সবচেয়ে ‘খ্রিষ্টপন্থী’ এমন
প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যদিও জাতীয়ভাবে তাঁরা মোটেই সবচেয়ে জনপ্রিয়
প্রার্থীদের মধ্যে পড়েন না। যেমন, ২০০৮ ও ২০১২ সালে যথাক্রমে ধর্মযাজক মাইক
হাকাবি ও ‘স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি রক্ষণশীল’ সিনেটর রিক স্যান্টোরাম এই
রাজ্যের বিজয়ী শিরোপা ছিনিয়ে নেন। বলাই বাহুল্য, দুজনের একজনও নির্বাচনী
দৌড়ে খুব একটা এগোতে পারেননি।
২০১৬ সালের নির্বাচনে টেড ক্রুজ নিজেকে সবচেয়ে অধিক ‘খ্রিষ্টপন্থী’ হিসেবে উপস্থিত করেন। রিপাবলিকান পার্টির অভ্যন্তরে ক্রুজ তাঁর ‘এস্টাবলিশমেন্ট বিরোধী’ অবস্থানের কারণে নিন্দিত হয়েছেন। স্বাধীনচেতা বলে পরিচিত আইওয়ার ভোটারদের কাছে ক্রুজের এই ওয়াশিংটন-বিরোধী অবস্থান আদৃত হয়েছে। তবে শেষ বিচারে যে কারণে তিনি ভোটের হিসাবে শীর্ষস্থান দখল করেন, তা হলো তৃণমূল পর্যায়ে অত্যন্ত কার্যকর সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনা। ট্রাম্পের পরাজয়েরও সেটি প্রধান কারণ। মিডিয়ার কাছ থেকে অতিরিক্ত মনোযোগ পেয়ে ট্রাম্প নিজেকে বিজয়ী ভাবা শুরু করেছিলেন, অথচ ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগের জন্য এই রাজ্যে কোনো অর্থপূর্ণ প্রচারণা গড়ে তুলতে পারেননি।
ক্রুজ
ও ট্রাম্প উভয়েই রিপাবলিকান দলের নেতৃত্বের কাছে আতঙ্ক হিসেবে পরিচিত।
দলের সবচেয়ে রক্ষণশীল সমর্থকদের মধ্যে তাঁদের জনপ্রিয়তা থাকলেও জাতীয়ভাবে
তাঁরা ‘নির্বাচনযোগ্য’ নন। তাঁরা দুজনেই সংখ্যালঘু, বিশেষত
আফ্রিকান-আমেরিকান ও ম্যাক্সিকান-আমেরিকানদের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা
প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন। কিঞ্চিৎ মধ্যপন্থী মার্কো রুবিওর তৃতীয় স্থান অর্জন
করে রিপাবলিকান এস্টাবলিশমেন্টের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করেছেন।
অধিকাংশ ভাষ্যকার একমত, আইওয়া ককাসের পর রুবিও রিপাবলিকান চাঁদাদাতাদের
সুনজরে পড়বেন।
জেব বুশ, যিনি নিজ দলের নেতাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়, আইওয়ায় মাত্র ২ শতাংশ ভোট পেয়ে কার্যত নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান দুই প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও বার্নি স্যান্ডার্স, প্রায় সমান সমান ভোট পেয়েছেন। এই ফলাফল খুব বিস্ময়কর ছিল না, যদিও একজন ‘ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট’-এর কাছ থেকে এমন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিলারিকে নিঃসন্দেহে বিস্মিত ও কিঞ্চিৎ হতোদ্যম করেছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পর তিনি এ দেশের সবচেয়ে পরিচিত নাম, নির্বাচনী তহবিল ও সংগঠনের দিক দিয়ে তিনি অন্য সবার চেয়েও এগিয়ে। তা সত্ত্বেও স্যান্ডার্সকে নিশ্চিতভাবে পরাস্ত করার অক্ষমতা তাঁর দলের ভেতরে উদ্বেগের সঞ্চার করেছে।
রিপাবলিকান প্রার্থী টেড ক্রুজ ২৭.৭% |
২০১৬ সালের নির্বাচনে টেড ক্রুজ নিজেকে সবচেয়ে অধিক ‘খ্রিষ্টপন্থী’ হিসেবে উপস্থিত করেন। রিপাবলিকান পার্টির অভ্যন্তরে ক্রুজ তাঁর ‘এস্টাবলিশমেন্ট বিরোধী’ অবস্থানের কারণে নিন্দিত হয়েছেন। স্বাধীনচেতা বলে পরিচিত আইওয়ার ভোটারদের কাছে ক্রুজের এই ওয়াশিংটন-বিরোধী অবস্থান আদৃত হয়েছে। তবে শেষ বিচারে যে কারণে তিনি ভোটের হিসাবে শীর্ষস্থান দখল করেন, তা হলো তৃণমূল পর্যায়ে অত্যন্ত কার্যকর সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনা। ট্রাম্পের পরাজয়েরও সেটি প্রধান কারণ। মিডিয়ার কাছ থেকে অতিরিক্ত মনোযোগ পেয়ে ট্রাম্প নিজেকে বিজয়ী ভাবা শুরু করেছিলেন, অথচ ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগের জন্য এই রাজ্যে কোনো অর্থপূর্ণ প্রচারণা গড়ে তুলতে পারেননি।
রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২৩.৪% |
জেব বুশ, যিনি নিজ দলের নেতাদের কাছে সবচেয়ে প্রিয়, আইওয়ায় মাত্র ২ শতাংশ ভোট পেয়ে কার্যত নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন।
No comments