পরিকল্পনা ছিল জিয়াকে হত্যা করার, প্রথম বিদ্রোহ করেন রফিক
২৫
মার্চ রাত ১২টার দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২০ বালুচ রেজিমেন্ট আমাদের
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল স্টোর আক্রমণ করে এবং প্রায় ২৩৫ জন সৈন্যকে মেরে
ফেলে, ৯০০ জনের মতো অ্যারেস্ট করে জেলখানায় নিয়ে যায়। আবার ঢাকায় রাত ১০টা
থেকে পিলখানায় ২২ এফএফ আমাদের ইপিআরকে নিরস্ত্র করতে থাকে। ইপিআর কন্ট্রোল
রুমে মেজর দেলওয়ার ও কুতুবুদ্দীন ইপিআরের ওয়ারলেসে অনবরত মেসেজ পাঠাচ্ছিল
যে আমাদেরকে নিরস্ত্র করা হচ্ছে। যে যেখানে আছ, তোমরা ইমিডিয়েটলি অ্যাকশনে
যাও। সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তারা ওই মেসেজ দিতে পারে, তারপর তাদেরও নিরস্ত্র
করা হয়। দশটার দিকে রফিক চট্টগ্রামে এই মেসেজটাই পান। তখনই তিনি অ্যাকশনে
চলে যান। আমাদের মধ্যে তিনিই প্রথম অ্যাকশনে যান এবং পুরোপুরি বিদ্রোহ
করেন। উনি ওয়ারলেসে মেসেজ পাঠান Bring some wood for me।
প্রয়াত মেজর জেনারেল আমীন আহম্মেদ চৌধুরী ‘১৯৭১ ও আমার সামরিক জীবন’ শীর্ষক বইতে এসব কথা লিখেছেন। সদ্য প্রকাশিত এ বইতে আরও লেখা হয়েছে- এদিকে ১০টার পরে মেজর জিয়াকে তার সিও কর্নেল জানজুয়া চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠান সোয়াত আনলোড করার জন্য। অর্থাৎ সেখানে মেজর জিয়া নিরস্ত্রভাবে যাবেন এবং তাঁকে মেরে ফেলা হবে- এই হলো উদ্দেশ্যে। তাকে নেভির গাড়িতে করে বন্দরের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়, কিন্তু দেওয়ানহাটের কাছে রেলের বগি দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়। সুতরাং সেখানে তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। এর মধ্যে, সাড়ে দশটার পর প্রথমবারের মতো স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার আবদুল কাদের ফোন করেন, কথা বলেন ক্যাপ্টেন অলির (বীর বিক্রম অলি আহমদ। পরে কর্নেল, বর্তমানে রাজনীতিবিদ) সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকায় ক্র্যাকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে, আর্মি মুভ করা আরম্ভ করেছে, আপনারা যে যা পারেন তাই নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যান। এ কথা জেনে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান চৌধুরী (বীর বিক্রম, ৩৬ পিএমএ, পরে ব্রিগেডিয়ার) জিপে করে দেওয়ানহাটে এসে মেজর জিয়াকে রাস্তায় অপেক্ষা করতে দেখেন। মেজর জিয়া দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলেন। ক্যাপ্টেন খালেক জিয়াকে বললেন, ‘স্যর, ঢাকায় ক্র্যাকডাউন শুরু হয়ে গেছে, আপনি বন্দরের দিকে যাবেন না। আমি আপনাকে ইউনিট লাইনে ফিরিয়ে নিতে এসেছি।’ এ কথা শুনে মেজর জিয়া এক হাত দিয়ে অন্য হাতে মুষ্টাঘাত করে বললেন, we will revol: । মেজর জিয়া ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামানকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন; তিনি বাকিদের নিয়ে আসছেন।
সবকিছু করতে সাড়ে বারোটা-একটা বেজে যায়। কাপ্তাই থেকে ক্যাপ্টেন হারুন আহমেদ চৌধুরী (বীর উত্তম, ৩৬ পিএমএ, পরবর্তীতে মেজর জেনারেল ও রাষ্ট্রদূত) ট্রুপস নিয়ে এসে কালুরঘাটে মেজর জিয়ার সঙ্গে যোগ দেন পরদিন ভোরে (২৬ মার্চ)। এই ফোর্সই শেষ পর্যন্ত ৮ম বেঙ্গলের প্রধান ফোর্স হয়ে দাঁড়ায়। ২৫ মার্চ ১২টার দিকে প্রায় ১৫০ ট্রুপসকে চট্টগ্রাম বন্দরে হত্যা করা হয়। তা ছাড়া ইবিআরসিতে আরও ২৩৫ ট্রুপসকে হত্যা করা হয়। মেজর জিয়ার কাছে সৈন্য এবং অস্ত্র কোনটাই তেমন ছিল না। তাই কাপ্তাই থেকে আসা ইপিআর ইউনিটটি একটি বিরাট ফোর্স হিসেবে কাজ করে। ওনারা পরে কালুরঘাট ব্রিজে পজিশন নেন। পরে মেজর জিয়া বোয়ালখালিতে চলে যান। এসব আমি পরে জানতে পেরেছি।
প্রয়াত মেজর জেনারেল আমীন আহম্মেদ চৌধুরী ‘১৯৭১ ও আমার সামরিক জীবন’ শীর্ষক বইতে এসব কথা লিখেছেন। সদ্য প্রকাশিত এ বইতে আরও লেখা হয়েছে- এদিকে ১০টার পরে মেজর জিয়াকে তার সিও কর্নেল জানজুয়া চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠান সোয়াত আনলোড করার জন্য। অর্থাৎ সেখানে মেজর জিয়া নিরস্ত্রভাবে যাবেন এবং তাঁকে মেরে ফেলা হবে- এই হলো উদ্দেশ্যে। তাকে নেভির গাড়িতে করে বন্দরের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়, কিন্তু দেওয়ানহাটের কাছে রেলের বগি দিয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়। সুতরাং সেখানে তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। এর মধ্যে, সাড়ে দশটার পর প্রথমবারের মতো স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার আবদুল কাদের ফোন করেন, কথা বলেন ক্যাপ্টেন অলির (বীর বিক্রম অলি আহমদ। পরে কর্নেল, বর্তমানে রাজনীতিবিদ) সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকায় ক্র্যাকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে, আর্মি মুভ করা আরম্ভ করেছে, আপনারা যে যা পারেন তাই নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যান। এ কথা জেনে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান চৌধুরী (বীর বিক্রম, ৩৬ পিএমএ, পরে ব্রিগেডিয়ার) জিপে করে দেওয়ানহাটে এসে মেজর জিয়াকে রাস্তায় অপেক্ষা করতে দেখেন। মেজর জিয়া দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলেন। ক্যাপ্টেন খালেক জিয়াকে বললেন, ‘স্যর, ঢাকায় ক্র্যাকডাউন শুরু হয়ে গেছে, আপনি বন্দরের দিকে যাবেন না। আমি আপনাকে ইউনিট লাইনে ফিরিয়ে নিতে এসেছি।’ এ কথা শুনে মেজর জিয়া এক হাত দিয়ে অন্য হাতে মুষ্টাঘাত করে বললেন, we will revol: । মেজর জিয়া ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামানকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন; তিনি বাকিদের নিয়ে আসছেন।
সবকিছু করতে সাড়ে বারোটা-একটা বেজে যায়। কাপ্তাই থেকে ক্যাপ্টেন হারুন আহমেদ চৌধুরী (বীর উত্তম, ৩৬ পিএমএ, পরবর্তীতে মেজর জেনারেল ও রাষ্ট্রদূত) ট্রুপস নিয়ে এসে কালুরঘাটে মেজর জিয়ার সঙ্গে যোগ দেন পরদিন ভোরে (২৬ মার্চ)। এই ফোর্সই শেষ পর্যন্ত ৮ম বেঙ্গলের প্রধান ফোর্স হয়ে দাঁড়ায়। ২৫ মার্চ ১২টার দিকে প্রায় ১৫০ ট্রুপসকে চট্টগ্রাম বন্দরে হত্যা করা হয়। তা ছাড়া ইবিআরসিতে আরও ২৩৫ ট্রুপসকে হত্যা করা হয়। মেজর জিয়ার কাছে সৈন্য এবং অস্ত্র কোনটাই তেমন ছিল না। তাই কাপ্তাই থেকে আসা ইপিআর ইউনিটটি একটি বিরাট ফোর্স হিসেবে কাজ করে। ওনারা পরে কালুরঘাট ব্রিজে পজিশন নেন। পরে মেজর জিয়া বোয়ালখালিতে চলে যান। এসব আমি পরে জানতে পেরেছি।
No comments