ছোটদের পরীক্ষায় বড় সাফল্য
প্রাথমিক
শিক্ষা সমাপনী ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় বড় সাফল্য
দেখিয়েছে শিক্ষার্থীরা। ছোটদের এ দুই পরীক্ষায় এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫
গতবারের চেয়ে বেড়েছে। ভালো ফলের কারণে সারা দেশে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের
মধ্যে ছিল আনন্দ-উচ্ছ্বাস।
তবে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ফল গতবারের চেয়ে খারাপ হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয় এই চার পরীক্ষার ফল। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। গতবার পাস করেছিল ৯৭ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮০ জন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেল। গতবার পেয়েছিল ২ লাখ ২৪ হাজার ৪১১ জন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলের অনুলিপি দেন মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনের পর বিদ্যালয়গুলোতে ফল প্রকাশের কথা থাকলেও অনেক বিদ্যালয়ে এর আগেই ফল পাওয়া যায়। আবার কেউ কেউ নির্ধারিত সময়ের আগেই ওয়েবসাইট থেকে ফল জেনে যায়। তবে নির্ধারিত সময়ে ওয়েবসাইটে অসংখ্য মানুষ ফল জানার চেষ্টা করায় ফল পেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ২৩৮ জন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ২৭৪ জন। এদের মধ্যে ১২ লাখ ৭৭ হাজার ১৪৬ জন ছাত্র এবং ১৫ লাখ ২০ হাজার ১২৮ জন ছাত্রী। পরিসংখ্যানই বলছে, ছাত্রীরা ভালো করেছে।
সমাপনীতে সাতটি বিভাগের মধ্যে পাসের হারের দিক থেকে এগিয়ে রাজশাহী বিভাগ। এই বিভাগে পাসের হার ৯৯ শতাংশ। সবচেয়ে কম পাসের হার সিলেট বিভাগে, ৯৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অপর পাঁচটি বিভাগে পাসের হার ৯৮ শতাংশের কম-বেশি।
জেলা হিসেবে এবারও সবচেয়ে ভালো করেছে মুন্সিগঞ্জ। এই জেলার সব শিক্ষার্থীই পাস করেছে। আর সবচেয়ে পিছিয়ে বরগুনা জেলা।
এবার সেরা বিদ্যালয় প্রকাশ না করায় বিদ্যালয়গুলোতে আলাদা করে সেরা হওয়ার আনন্দ ছিল না।
ধরন অনুযায়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়গুলোর (প্রাথমিক শাখা থাকা) ফল সবচেয়ে ভালো হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে গড় পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এবার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়গুলোর যেসব শিক্ষার্থী সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছে, তারা লটারির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। এত দিন প্রাথমিক শিক্ষা ইনস্টিটিউট-সংলগ্ন (পিটিআই) পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে পাসের হার বেশি হতো। এবার তারা দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। অন্যান্য বিদ্যালয়ে গড় পাসের হার ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশের মধ্যে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যেসব বিদ্যালয় ভালো করতে পারেনি, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে সাংবাদিকেরা গণশিক্ষামন্ত্রীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।
আবারও সাফল্যের ধারায় জেএসসি: জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ায় জেএসসি পরীক্ষায় ধারাবাহিক সাফল্যে গতবার ছেদ পড়েছিল। পরের বছরই আবার সাফল্যের ধারায় ফিরল এই স্তরের শিক্ষার্থীরা। এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই গতবারের চেয়ে বেড়েছে। পাসের হার প্রায় আড়াই শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯২ দশমিক ৩১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়াদের সংখ্যা গতবারের চেয়ে ৫০ হাজার ৫৫৭ জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫০২ জন।
দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জেএসসি পরীক্ষার ফলে এবার সব সূচকে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এই ফলে তাঁরা আনন্দিত।
সংবাদ সম্মেলনের পর বিদ্যালয়গুলোতে ফল প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট ও মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে ফল জানা যায়। তবে এবার সেরা প্রতিষ্ঠান বাছাই না করায় বিদ্যালয়গুলোতে আগের মতো আনন্দ-উল্লাস ছিল না।
এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেএসসিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৯ হাজার ৯৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৭০ জন।
এবার গণিত বিষয়ে শিক্ষার্থীরা গতবারের চেয়ে ভালো করেছে। ভালো ফলের পেছনে এটি ভূমিকা রেখেছে। জেএসসিতে আট বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুই দিক দিয়েই ছাত্রীরা ভালো করেছে। ছাত্রীদের পাসের হার ৯২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ছাত্রদের পাসের হার ৯২ দশমিক ২৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ৬ হাজার ৭৫৬ জন এবং ছাত্র ৮০ হাজার ৭৪৬ জন।
জেএসসিতেও সেরা রাজশাহী: প্রাথমিক সমাপনীর মতো জেএসসি পরীক্ষায়ও রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে ভালো করেছে। জেএসসিতে রাজশাহী বোর্ডে গড় পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সবচেয়ে পিছিয়ে চট্টগ্রাম বোর্ডের শিক্ষার্থীরা, পাসের হার ৮৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
ঢাকা বোর্ডের অধীন বিদেশের আটটি কেন্দ্রে জেএসসির ৫৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৫৪৮ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ২১ শতাংশ। গতবার ছিল ৯৯ দশমিক ২০ শতাংশ। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১১ জন। গতবার পেয়েছিল ১৩৮ জন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক প্রমুখ।
মাদ্রাসায় খারাপ ফল: মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন জেডিসি পরীক্ষায় পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। গতবারের চেয়ে পাসের হার ১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ কমেছে। এই পরীক্ষায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ হাজার ৭৬১ জন। গতবার পেয়েছিল ১৯ হাজার ২৯০ জন। জেডিসিতে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ১৯০ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৩১২ জন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাদ্রাসায় খারাপ ফলের কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম ছায়েফ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এবার প্রথমবারের মতো চালু হওয়া বাংলা ও ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, শারীরিক শিক্ষা/কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা বিষয়ের প্রতিটিতে পূর্ণমান ৫০-এর মধ্যে আলাদা করে ৪০ নম্বর না পেলে জিপিএ-৫ ধরা হয়নি। এ কারণেই মূলত জিপিএ-৫ কমেছে।
এবার ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৪৭৩ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬ হাজার ৫৪১ জন। এবার পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ৫১ হাজার ২৬৬ জন। পাস করা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪২৫ জন ছাত্র এবং ১ লাখ ২২ হাজার ৮৪১ জন ছাত্রী।
তবে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ফল গতবারের চেয়ে খারাপ হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয় এই চার পরীক্ষার ফল। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। গতবার পাস করেছিল ৯৭ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮০ জন। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেল। গতবার পেয়েছিল ২ লাখ ২৪ হাজার ৪১১ জন।
দুপুর সাড়ে ১২টায় সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলের অনুলিপি দেন মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনের পর বিদ্যালয়গুলোতে ফল প্রকাশের কথা থাকলেও অনেক বিদ্যালয়ে এর আগেই ফল পাওয়া যায়। আবার কেউ কেউ নির্ধারিত সময়ের আগেই ওয়েবসাইট থেকে ফল জেনে যায়। তবে নির্ধারিত সময়ে ওয়েবসাইটে অসংখ্য মানুষ ফল জানার চেষ্টা করায় ফল পেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ২৩৮ জন। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ২৭৪ জন। এদের মধ্যে ১২ লাখ ৭৭ হাজার ১৪৬ জন ছাত্র এবং ১৫ লাখ ২০ হাজার ১২৮ জন ছাত্রী। পরিসংখ্যানই বলছে, ছাত্রীরা ভালো করেছে।
সমাপনীতে সাতটি বিভাগের মধ্যে পাসের হারের দিক থেকে এগিয়ে রাজশাহী বিভাগ। এই বিভাগে পাসের হার ৯৯ শতাংশ। সবচেয়ে কম পাসের হার সিলেট বিভাগে, ৯৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অপর পাঁচটি বিভাগে পাসের হার ৯৮ শতাংশের কম-বেশি।
জেলা হিসেবে এবারও সবচেয়ে ভালো করেছে মুন্সিগঞ্জ। এই জেলার সব শিক্ষার্থীই পাস করেছে। আর সবচেয়ে পিছিয়ে বরগুনা জেলা।
এবার সেরা বিদ্যালয় প্রকাশ না করায় বিদ্যালয়গুলোতে আলাদা করে সেরা হওয়ার আনন্দ ছিল না।
ধরন অনুযায়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়গুলোর (প্রাথমিক শাখা থাকা) ফল সবচেয়ে ভালো হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে গড় পাসের হার ৯৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এবার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়গুলোর যেসব শিক্ষার্থী সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছে, তারা লটারির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। এত দিন প্রাথমিক শিক্ষা ইনস্টিটিউট-সংলগ্ন (পিটিআই) পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে পাসের হার বেশি হতো। এবার তারা দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। অন্যান্য বিদ্যালয়ে গড় পাসের হার ৯৮ থেকে ৯৯ শতাংশের মধ্যে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যেসব বিদ্যালয় ভালো করতে পারেনি, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পর্যাপ্ত তথ্য দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে সাংবাদিকেরা গণশিক্ষামন্ত্রীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।
আবারও সাফল্যের ধারায় জেএসসি: জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ায় জেএসসি পরীক্ষায় ধারাবাহিক সাফল্যে গতবার ছেদ পড়েছিল। পরের বছরই আবার সাফল্যের ধারায় ফিরল এই স্তরের শিক্ষার্থীরা। এবার পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই গতবারের চেয়ে বেড়েছে। পাসের হার প্রায় আড়াই শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯২ দশমিক ৩১ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়াদের সংখ্যা গতবারের চেয়ে ৫০ হাজার ৫৫৭ জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫০২ জন।
দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফলাফলের তথ্য তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জেএসসি পরীক্ষার ফলে এবার সব সূচকে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এই ফলে তাঁরা আনন্দিত।
সংবাদ সম্মেলনের পর বিদ্যালয়গুলোতে ফল প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট ও মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে ফল জানা যায়। তবে এবার সেরা প্রতিষ্ঠান বাছাই না করায় বিদ্যালয়গুলোতে আগের মতো আনন্দ-উল্লাস ছিল না।
এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে জেএসসিতে পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৯ হাজার ৯৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৭৭০ জন।
এবার গণিত বিষয়ে শিক্ষার্থীরা গতবারের চেয়ে ভালো করেছে। ভালো ফলের পেছনে এটি ভূমিকা রেখেছে। জেএসসিতে আট বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুই দিক দিয়েই ছাত্রীরা ভালো করেছে। ছাত্রীদের পাসের হার ৯২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ছাত্রদের পাসের হার ৯২ দশমিক ২৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে ছাত্রী ১ লাখ ৬ হাজার ৭৫৬ জন এবং ছাত্র ৮০ হাজার ৭৪৬ জন।
জেএসসিতেও সেরা রাজশাহী: প্রাথমিক সমাপনীর মতো জেএসসি পরীক্ষায়ও রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে ভালো করেছে। জেএসসিতে রাজশাহী বোর্ডে গড় পাসের হার ৯৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সবচেয়ে পিছিয়ে চট্টগ্রাম বোর্ডের শিক্ষার্থীরা, পাসের হার ৮৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
ঢাকা বোর্ডের অধীন বিদেশের আটটি কেন্দ্রে জেএসসির ৫৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৫৪৮ জন। পাসের হার ৯৮ দশমিক ২১ শতাংশ। গতবার ছিল ৯৯ দশমিক ২০ শতাংশ। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১১ জন। গতবার পেয়েছিল ১৩৮ জন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক প্রমুখ।
মাদ্রাসায় খারাপ ফল: মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন জেডিসি পরীক্ষায় পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। গতবারের চেয়ে পাসের হার ১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ কমেছে। এই পরীক্ষায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ হাজার ৭৬১ জন। গতবার পেয়েছিল ১৯ হাজার ২৯০ জন। জেডিসিতে ৩ লাখ ৪৩ হাজার ১৯০ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৩১২ জন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাদ্রাসায় খারাপ ফলের কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা হবে। আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে এম ছায়েফ উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, এবার প্রথমবারের মতো চালু হওয়া বাংলা ও ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, শারীরিক শিক্ষা/কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা বিষয়ের প্রতিটিতে পূর্ণমান ৫০-এর মধ্যে আলাদা করে ৪০ নম্বর না পেলে জিপিএ-৫ ধরা হয়নি। এ কারণেই মূলত জিপিএ-৫ কমেছে।
এবার ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫ হাজার ৪৭৩ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬ হাজার ৫৪১ জন। এবার পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৪ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ৫১ হাজার ২৬৬ জন। পাস করা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪২৫ জন ছাত্র এবং ১ লাখ ২২ হাজার ৮৪১ জন ছাত্রী।
No comments