সিরিয়ায় নিহত সাইফুল দেশে এসেছিলেন ২০১৪ সালে, বাবা ও ভাই কারাগারে by গোলাম মর্তুজা
সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী সামরিক জোটের বিমান হামলায় নিহত সাইফুল হক ওরফে সুজনের বাংলাদেশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। যুক্তরাজ্যে অভিবাসন আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর তিনি ২০১৪ সালে দেশে ফেরেন। ওই বছর ঈদুল ফিতরের পর আবার দেশত্যাগ করেন। দেড় বছর পর তাঁর মৃত্যুসংবাদ পাওয়া গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরে সাইফুলের বাসায় গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাকুরদিয়ায়। তাঁর বাবা আবুল হাসনাত দন্ত চিকিৎসক। সাইফুল বড় হয়েছেন বাবার কর্মস্থল খুলনায়।
সাইফুলের বাবা ও এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ভাইকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত ৮ ডিসেম্বর আটক করেছে। জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলাও দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল ঢাকার বাসায় গিয়ে সাইফুলের মা ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভাইকে পাওয়া গেছে। তাঁরা জানান, সাইফুল সর্বশেষ দেশে এসেছিলেন ২০১৪ সালের ঈদুল ফিতরের আগে। তখন তাঁরা খুলনায় থাকতেন। ঈদের কয়েক দিন পর লন্ডনের উদ্দেশে সাইফুল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, এক বাচ্চা ও বড় ভাইয়ের পাঁচ বছরের বাচ্চাকে নিয়ে দেশত্যাগ করেন। এখন পরিবার ধারণা করছে, সাইফুল তখন লন্ডন না গিয়ে সিরিয়া চলে যান।
সাইফুলরা চার ভাই। বড় ভাই থাকেন স্পেনে। তাঁর স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তাঁর শিশুপুত্রকে লালনপালন করেছেন সাইফুলের স্ত্রী। তৃতীয় ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী। ছোট ভাই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।
ছোট ভাই প্রথম আলোকে বলে, ২০১৪ সালের রোজার ঈদে সাইফুল তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে দেশে আসেন। সবাই মিলে খুলনার সোনাডাঙার বাসায় ঈদ করেন। ঈদের পরে সাইফুল সবার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেন। তখন সাইফুলের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা ছিলেন। এরপর প্রায় দুই মাস পরিবারের সঙ্গে তাঁদের আর কোনো যোগাযোগ ছিল না। দুই মাস পর হঠাৎ একদিন ফোন করে সাইফুল পরিবারকে জানান, সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর অসুস্থতা ও সন্তান জন্মদান নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তবে তিনি কোন দেশে আছেন, সেটা বলেননি। এরপর সাইফুলের সঙ্গে যোগাযোগ কমে যায়। মাস খানেক আগে পরিবার জানতে পারে যে সাইফুল সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়া গেছেন। আর, চলতি সপ্তাহে তাঁরা খবর পান যে সাইফুল বিমান হামলায় মারা গেছেন।
সিরিয়া ও ইরাকে বিমান হামলায় নিহত আইএসের ১০ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতার একটি তালিকা গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট প্রকাশ করেছে। এ তালিকায় বাংলাদেশি সাইফুল হকের নামও রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট-এর খবরে বলা হয়, ১০ ডিসেম্বর আইএসের কথিত রাজধানী সিরিয়ার রাকা প্রদেশের কাছে বিমান হামলায় সাইফুল মারা যান। তিনি আইএসের হয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের পরিকল্পনাকারী, হ্যাকিং কর্মকাণ্ড, নজরদারি প্রতিরোধ প্রযুক্তি ও অস্ত্র উন্নয়নের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
তবে ঢাকা মহানগরের পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, সিরিয়ায় বিমান হামলায় নিহত সাইফুলের বাংলাদেশের পরিচয় সম্পর্কে তাঁদের কাছে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।
ঢাকায় সাইফুলের বাসা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাইফুলের স্ত্রী দুই শিশুপুত্র ও ভাইয়ের পাঁচ বছরের ছেলে সাইফুলের সঙ্গেই ছিল। এর মধ্যে দেশ ছাড়ার পর ছোট ছেলের জন্ম হয়েছে। এর আগে ২০০৩ সালে সাইফুল লেখাপড়ার জন্য লন্ডনে যান। কম্পিউটার প্রকৌশলী সাইফুল পরে কার্ডিফে চলে যান।
গতকাল যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র টেলিগ্রাফ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর সাইফুল গ্লোমরগ্যান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি আইব্যাক নামে তথ্যপ্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ব্যবসায় খুবই ভালো করেন। টেলিগ্রাফ তাঁকে স্থানীয় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে একটি পিলার হিসেবে অভিহিত করেছে। তিনি সবাইকে সাহায্য করতেন। সাইফুলের প্রতিবেশীরা টেলিগ্রাফকে জানিয়েছে, তিনি খুব দামি হাই পারফরম্যান্স কার চালাতেন। তাঁর একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়িও ছিল।
টেলিগ্রাফ-এর খবরে আরও বলা হয়, যুক্তরাজ্যে নাগরিকত্বের আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ২০১৪ সালের জুলাই মাসে সাইফুল বাংলাদেশে ফিরে যান। তখন তিনি তাঁর বন্ধু ও সহকর্মীদের বলেছেন যে তিনি দেশে ফিরে যেতে চান। দেশে তাঁদের পাটের ব্যবসা রয়েছে। তখন বাংলাদেশে যাওয়ার আগে তিনি তুরস্কে গিয়েছিলেন বলেও শোনা যায়।
তবে সাইফুলের ছোট ভাই প্রথম আলোকে জানায়, বাবা আবুল হাসনাত (৬৭) দন্ত চিকিৎসক। তিনি চিকিৎসা পেশা ছেড়ে গিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে একটি বায়োফুয়েলের (জৈব জ্বালানি) কারখানা তৈরি করছেন। তবে সাইফুল দেশে থাকা অবস্থায় কোথায় পড়াশোনা করেছেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি তাঁর ছোট ভাই। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তিনি যুক্তরাজ্যেই পড়েছেন।
সাইফুলের যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের আবেদন ফরমে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি ২০০৩ সালে শিক্ষা ভিসায় যুক্তরাজ্যে যান। এরপর ২০১২ সাল থেকে তিনি একজন অভিবাসী উদ্যোক্তা হিসেবে সেখানে অবস্থান করছিলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরে সাইফুলের বাসায় গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়। সাইফুলের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাকুরদিয়ায়। তাঁর বাবা আবুল হাসনাত দন্ত চিকিৎসক। সাইফুল বড় হয়েছেন বাবার কর্মস্থল খুলনায়।
সাইফুলের বাবা ও এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ভাইকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত ৮ ডিসেম্বর আটক করেছে। জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলাও দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল ঢাকার বাসায় গিয়ে সাইফুলের মা ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভাইকে পাওয়া গেছে। তাঁরা জানান, সাইফুল সর্বশেষ দেশে এসেছিলেন ২০১৪ সালের ঈদুল ফিতরের আগে। তখন তাঁরা খুলনায় থাকতেন। ঈদের কয়েক দিন পর লন্ডনের উদ্দেশে সাইফুল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী, এক বাচ্চা ও বড় ভাইয়ের পাঁচ বছরের বাচ্চাকে নিয়ে দেশত্যাগ করেন। এখন পরিবার ধারণা করছে, সাইফুল তখন লন্ডন না গিয়ে সিরিয়া চলে যান।
সাইফুলরা চার ভাই। বড় ভাই থাকেন স্পেনে। তাঁর স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তাঁর শিশুপুত্রকে লালনপালন করেছেন সাইফুলের স্ত্রী। তৃতীয় ভাই এসএসসি পরীক্ষার্থী। ছোট ভাই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।
ছোট ভাই প্রথম আলোকে বলে, ২০১৪ সালের রোজার ঈদে সাইফুল তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে দেশে আসেন। সবাই মিলে খুলনার সোনাডাঙার বাসায় ঈদ করেন। ঈদের পরে সাইফুল সবার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেন। তখন সাইফুলের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা ছিলেন। এরপর প্রায় দুই মাস পরিবারের সঙ্গে তাঁদের আর কোনো যোগাযোগ ছিল না। দুই মাস পর হঠাৎ একদিন ফোন করে সাইফুল পরিবারকে জানান, সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর অসুস্থতা ও সন্তান জন্মদান নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। তবে তিনি কোন দেশে আছেন, সেটা বলেননি। এরপর সাইফুলের সঙ্গে যোগাযোগ কমে যায়। মাস খানেক আগে পরিবার জানতে পারে যে সাইফুল সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে সিরিয়া গেছেন। আর, চলতি সপ্তাহে তাঁরা খবর পান যে সাইফুল বিমান হামলায় মারা গেছেন।
সিরিয়া ও ইরাকে বিমান হামলায় নিহত আইএসের ১০ জন গুরুত্বপূর্ণ নেতার একটি তালিকা গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট প্রকাশ করেছে। এ তালিকায় বাংলাদেশি সাইফুল হকের নামও রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট-এর খবরে বলা হয়, ১০ ডিসেম্বর আইএসের কথিত রাজধানী সিরিয়ার রাকা প্রদেশের কাছে বিমান হামলায় সাইফুল মারা যান। তিনি আইএসের হয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের পরিকল্পনাকারী, হ্যাকিং কর্মকাণ্ড, নজরদারি প্রতিরোধ প্রযুক্তি ও অস্ত্র উন্নয়নের কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
তবে ঢাকা মহানগরের পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, সিরিয়ায় বিমান হামলায় নিহত সাইফুলের বাংলাদেশের পরিচয় সম্পর্কে তাঁদের কাছে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই।
ঢাকায় সাইফুলের বাসা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সাইফুলের স্ত্রী দুই শিশুপুত্র ও ভাইয়ের পাঁচ বছরের ছেলে সাইফুলের সঙ্গেই ছিল। এর মধ্যে দেশ ছাড়ার পর ছোট ছেলের জন্ম হয়েছে। এর আগে ২০০৩ সালে সাইফুল লেখাপড়ার জন্য লন্ডনে যান। কম্পিউটার প্রকৌশলী সাইফুল পরে কার্ডিফে চলে যান।
গতকাল যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র টেলিগ্রাফ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর সাইফুল গ্লোমরগ্যান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি আইব্যাক নামে তথ্যপ্রযুক্তির প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ব্যবসায় খুবই ভালো করেন। টেলিগ্রাফ তাঁকে স্থানীয় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে একটি পিলার হিসেবে অভিহিত করেছে। তিনি সবাইকে সাহায্য করতেন। সাইফুলের প্রতিবেশীরা টেলিগ্রাফকে জানিয়েছে, তিনি খুব দামি হাই পারফরম্যান্স কার চালাতেন। তাঁর একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়িও ছিল।
টেলিগ্রাফ-এর খবরে আরও বলা হয়, যুক্তরাজ্যে নাগরিকত্বের আবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর ২০১৪ সালের জুলাই মাসে সাইফুল বাংলাদেশে ফিরে যান। তখন তিনি তাঁর বন্ধু ও সহকর্মীদের বলেছেন যে তিনি দেশে ফিরে যেতে চান। দেশে তাঁদের পাটের ব্যবসা রয়েছে। তখন বাংলাদেশে যাওয়ার আগে তিনি তুরস্কে গিয়েছিলেন বলেও শোনা যায়।
তবে সাইফুলের ছোট ভাই প্রথম আলোকে জানায়, বাবা আবুল হাসনাত (৬৭) দন্ত চিকিৎসক। তিনি চিকিৎসা পেশা ছেড়ে গিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে একটি বায়োফুয়েলের (জৈব জ্বালানি) কারখানা তৈরি করছেন। তবে সাইফুল দেশে থাকা অবস্থায় কোথায় পড়াশোনা করেছেন সে সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি তাঁর ছোট ভাই। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তিনি যুক্তরাজ্যেই পড়েছেন।
সাইফুলের যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের আবেদন ফরমে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি ২০০৩ সালে শিক্ষা ভিসায় যুক্তরাজ্যে যান। এরপর ২০১২ সাল থেকে তিনি একজন অভিবাসী উদ্যোক্তা হিসেবে সেখানে অবস্থান করছিলেন।
No comments