কুকুরের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত নবজাতক যাবে নতুন আশ্রয়ে by মানসুরা হোসাইন
কুকুরের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত নবজাতক সুস্থ হয়ে উঠছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতকের বিশেষায়িত সেবার কেন্দ্র স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিটে দিন কাটছে শিশুটির। ছবি: মানসুরা হোসাইন |
চুলগুলো
বেশ বড় ও ঘন হয়েছে। তাতে সিঁথি করা। গায়ে হালকা গোলাপি রঙের একটি জামা।
একটু আগেই খাওয়ানো হয়েছে। তারপর আয়েশি ভঙ্গিতে ঘুম। সামান্য শব্দেই হাত
নেড়ে একটু বিরক্তি প্রকাশ করে আবার ঘুম। অন্যদিকে নার্সের মুখে প্রশান্তির
হাসি। যাক, সব ঠিক আছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতকের বিশেষায়িত সেবার কেন্দ্র স্ক্যাবু বা স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিটে এভাবেই দিন কাটছে ওর। বৃহস্পতিবার ওর জন্মের পর ২৩তম দিন। এখন পর্যন্ত রাজকন্যা, রাজকুমারীসহ বিভিন্ন নামে ডাকা হলেও কোনো নাম রাখা হয়নি। ছোট্ট তুলতুলে শরীরে আর বিশেষ কোনো সমস্যা নেই। তাই স্ক্যাবু ছাড়তে হবে। কিন্তু ও কোথায় যাবে?
জন্মের পরপরই ওর মা, বাবা বা আপনজন মাঠে সিমেন্টর বস্তায় ভরে ফেলে গিয়েছিল। কুকুরের দল বস্তার ভেতর থেকে বের করে ঠোঁট ও নাকের বেশ খানিকটা অংশ খেয়ে ফেলে। বাম হাতের দুটো আঙুলের মাথাও গেছে কুকুরের পেটে। কয়েকজন নারী ওকে কুকুরের হাত থেকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজধানীর শিশু হাসপাতাল তারপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তারপর থেকে এই নবজাতক স্ক্যাবুর চিকিৎসক ও নার্সদের আপনজনে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগ, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিকেল বোর্ড সার্বক্ষণিক নজর রাখছে নবজাতকের দিকে। এখন ওকে বিদায় জানাতে হবে। আপাতত গন্তব্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোটমণি নিবাস। তারই প্রস্তুতি চলছে। আজ ছোটমণি নিবাসের কর্তৃপক্ষ ওকে দেখতে আসে।
১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পূর্ব শেওড়াপাড়ার পুরোনো বিমানবন্দর-সংলগ্ন রানওয়ে মাঠে চার-পাঁচটি কুকুরের সামনে থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।
আজ উদ্ধারকারীদের মধ্যে দুজন তানিয়া আক্তার ও লিপি নবজাতককে দেখতে যান। বিশেষ অনুমতি নিয়ে তাঁরা স্ক্যাবুর ভেতরে ঢোকেন। সেখান থেকে বের হয়েই তাঁদের মুখ খুশিতে ঝলমল করতে থাকে। অনুমতি নিয়ে মুঠোফোনে একটি ছবিও তুলেছেন। তাঁদের বিশ্বাসই হচ্ছে না, তাঁরা যে নবজাতককে উদ্ধার করেছিলেন আর যার ছবি তুললেন দুজনই এক। ঠোঁট ও নাক থেঁতলে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল। সারা শরীরে ছিল কুকরের আঁচড়ের দাগ। অথচ এখন দেখলে মনেই হবে না ওর জীবনে এত বড় একটি ঘটনা ঘটেছে।
তানিয়া আক্তার নিজেই শিশুটিকে নিজের কাছে নিতে চান। তাঁর এক ছেলে বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী। দুই নাতি আছে। দুই নাতি কথা বলতে পারে। কিন্তু একটি মেয়ের শখ। আর নবজাতকটির প্রতি মায়াও জন্মে গেছে। নবজাতককে পেতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। এক ফাঁকে তানিয়া বললেন, ‘আমি না পাইলেও যেই পাক, ও যেন ভালো থাকে। আর যেন কষ্ট না পায়।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের অধ্যাপক মনীষা ব্যানার্জী প্রথম আলোকে বলেন,‘ ওই নবজাতককে দেখে আমরা সবাই প্রচণ্ড ধাক্কা খাই। আমাদের চিকিৎসকদের জন্যও ছিল নতুন অভিজ্ঞতা। এখন ও বলতে গেলে পুরোপুরি সুস্থ। ক্ষত স্থানগুলো শুকিয়ে এসেছে। ওজনও বেড়েছে। এখন ওকে বিদায় জানাতে হবে ভেবেই নার্সসহ আমাদের সবার খুব মন খারাপ হচ্ছে।’
নবজাতক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কয়দিন আমার প্রথম কাজই ছিল হাসপাতালে ঢুকেই গাউন গায়ে দিয়ে আগে ওকে দেখে আসা। ওর কাছে গেলেই মায়া লাগে। ও চলে গেলে খুব খারাপ লাগবে। ও এখন সুস্থ। ওকে আর রাখার সুযোগ নেই। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ওর নতুন আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সে প্রস্তুতি চলছে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতকের বিশেষায়িত সেবার কেন্দ্র স্ক্যাবু বা স্পেশাল কেয়ার বেবি ইউনিটে এভাবেই দিন কাটছে ওর। বৃহস্পতিবার ওর জন্মের পর ২৩তম দিন। এখন পর্যন্ত রাজকন্যা, রাজকুমারীসহ বিভিন্ন নামে ডাকা হলেও কোনো নাম রাখা হয়নি। ছোট্ট তুলতুলে শরীরে আর বিশেষ কোনো সমস্যা নেই। তাই স্ক্যাবু ছাড়তে হবে। কিন্তু ও কোথায় যাবে?
জন্মের পরপরই ওর মা, বাবা বা আপনজন মাঠে সিমেন্টর বস্তায় ভরে ফেলে গিয়েছিল। কুকুরের দল বস্তার ভেতর থেকে বের করে ঠোঁট ও নাকের বেশ খানিকটা অংশ খেয়ে ফেলে। বাম হাতের দুটো আঙুলের মাথাও গেছে কুকুরের পেটে। কয়েকজন নারী ওকে কুকুরের হাত থেকে উদ্ধার করে প্রথমে রাজধানীর শিশু হাসপাতাল তারপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তারপর থেকে এই নবজাতক স্ক্যাবুর চিকিৎসক ও নার্সদের আপনজনে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগ, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি মেডিকেল বোর্ড সার্বক্ষণিক নজর রাখছে নবজাতকের দিকে। এখন ওকে বিদায় জানাতে হবে। আপাতত গন্তব্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোটমণি নিবাস। তারই প্রস্তুতি চলছে। আজ ছোটমণি নিবাসের কর্তৃপক্ষ ওকে দেখতে আসে।
১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পূর্ব শেওড়াপাড়ার পুরোনো বিমানবন্দর-সংলগ্ন রানওয়ে মাঠে চার-পাঁচটি কুকুরের সামনে থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।
আজ উদ্ধারকারীদের মধ্যে দুজন তানিয়া আক্তার ও লিপি নবজাতককে দেখতে যান। বিশেষ অনুমতি নিয়ে তাঁরা স্ক্যাবুর ভেতরে ঢোকেন। সেখান থেকে বের হয়েই তাঁদের মুখ খুশিতে ঝলমল করতে থাকে। অনুমতি নিয়ে মুঠোফোনে একটি ছবিও তুলেছেন। তাঁদের বিশ্বাসই হচ্ছে না, তাঁরা যে নবজাতককে উদ্ধার করেছিলেন আর যার ছবি তুললেন দুজনই এক। ঠোঁট ও নাক থেঁতলে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল। সারা শরীরে ছিল কুকরের আঁচড়ের দাগ। অথচ এখন দেখলে মনেই হবে না ওর জীবনে এত বড় একটি ঘটনা ঘটেছে।
তানিয়া আক্তার নিজেই শিশুটিকে নিজের কাছে নিতে চান। তাঁর এক ছেলে বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী। দুই নাতি আছে। দুই নাতি কথা বলতে পারে। কিন্তু একটি মেয়ের শখ। আর নবজাতকটির প্রতি মায়াও জন্মে গেছে। নবজাতককে পেতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। এক ফাঁকে তানিয়া বললেন, ‘আমি না পাইলেও যেই পাক, ও যেন ভালো থাকে। আর যেন কষ্ট না পায়।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের অধ্যাপক মনীষা ব্যানার্জী প্রথম আলোকে বলেন,‘ ওই নবজাতককে দেখে আমরা সবাই প্রচণ্ড ধাক্কা খাই। আমাদের চিকিৎসকদের জন্যও ছিল নতুন অভিজ্ঞতা। এখন ও বলতে গেলে পুরোপুরি সুস্থ। ক্ষত স্থানগুলো শুকিয়ে এসেছে। ওজনও বেড়েছে। এখন ওকে বিদায় জানাতে হবে ভেবেই নার্সসহ আমাদের সবার খুব মন খারাপ হচ্ছে।’
নবজাতক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কয়দিন আমার প্রথম কাজই ছিল হাসপাতালে ঢুকেই গাউন গায়ে দিয়ে আগে ওকে দেখে আসা। ওর কাছে গেলেই মায়া লাগে। ও চলে গেলে খুব খারাপ লাগবে। ও এখন সুস্থ। ওকে আর রাখার সুযোগ নেই। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ওর নতুন আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সে প্রস্তুতি চলছে।’
No comments