রক্তাক্ত হোসনি দালান: তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলায় নিহত ১ আহত দেড় শতাধিক
রাজধানীর
হোসনি দালান এলাকায় তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলায় এক শিশু
নিহত ও অন্তত দেড় শ’ মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে এখনো প্রায় অর্ধশত
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ইমাম হোসাইনের (রা:) শহীদ হওয়ার
দিনকে উপলক্ষ করে গত শুক্রবার গভীর রাতে মুসলমানদের শিয়া সম্প্রদায়ের
অনুসারীরা তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা
বাহিনীর বেষ্টনীর মধ্যে দুর্বৃত্তরা এ হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়।
পবিত্র আশুরায় নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়। তবে ঢাকায় এই আয়োজন চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে অবাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় এই দিনকে স্মরণ করতে নানা আয়োজন চলে। দুলদুল সাজিয়ে বের হয় তাজিয়া মিছিল। পুরান ঢাকা ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে প্রতি বছরই দু’টি বিশাল মিছিল বের হয়। পুরান ঢাকার মিছিলটি হোসনি দালান এলাকা থেকে বের হয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। অপর দিকে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প এলাকা থেকে মিছিল বের হয়ে ঝিগাতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। হোসনি দালান এলাকা থেকে গত ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবে তাজিয়া মিছিল বের হয়ে আসছে। নির্বিঘেœ দিনটি অতিবাহিত হয়ে আসছে এ দীর্ঘ সময়। কিন্তু এবারের আশুরায় ঘটেছে বিস্ফোরণের ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন বলেছেন, এমনটি তারা কোনো দিনও কল্পনা করেননি। তাজিয়া মিছিলে এমন হামলার ঘটনা ঘটবে তা তারা স্বপ্নেও ভাবেননি। সাজিদ নামে এক যুবক বলেন, শত শত বছর ধরে এভাবে তারা ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল করে আসছেন। কিন্তু এবারেই বোমা হামলার শিকার হলেন। তিনি বলেন, রাত তখন ১টা ৫৫ মিনিটের মতো। হঠাৎ একটি বিস্ফোরণ, মানুষের দৌড়াদৌড়ি, বাঁচার আকুতি। এর মধ্যে আরো একটি বিস্ফোরণ। পরে ছোট ছোট আরো কয়েকটি শব্দ। সাজিদ বলেন, মুহূর্তে পুরো এলাকা রক্তাক্ত। আহত অবস্থায় অনেকে রাস্তার ওপর পড়ে আছেন। আবার কেউ কেউ রক্তাক্ত অবস্থায় নিরাপদ স্থানে দৌড়াচ্ছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুরো এলাকা ফাঁকা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কোত্থেকে কে বা কারা এ বোমা হামলা চালিয়েছে প্রচণ্ড ভিড়ে তা লক্ষ করা যায়নি। পুরো এলাকা যেমন মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ, তেমনি রাতের অন্ধকার। বিস্ফোরণের পর জীবন নিয়েই টানাটানি।
এ দিকে ঘটনাস্থল থেকে অনেকে নিজেরাই আহত অবস্থায় গিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। আবার অনেকে এতটাই গুরুতর ছিলেন যে তাদের ঘটনাস্থল থেকে অন্যরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। হাসপাতালে যাদের নেয়া হয় তাদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন সনজু (১৫) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়। সাজ্জাদের বাবার নাম মো: নাসির হোসেন। বাসা কেরানীগঞ্জের চরাইল হাইস্কুল হাবিবনগর গোলাবাজার এলাকায়। আগে তারা বাবুবাজারের ৫/১ জুম্মা লেনে বসবাস করত। স্থানীয় স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছিল সে। পরিবারের সাথে সে হোসনি দালানে এসেছিল।
সাজ্জাদের বড় ভাই রাশেদ হোসেন বলেন, রাত ১১টায় তারা কেরানীগঞ্জ থেকে হোসনি দালান এলাকায় আসেন তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে।
তার সাথে ছিলেন স্ত্রী সুমি আক্তার, মেয়ে সিনহা, ছেলে শিহাব, শাশুড়ি আয়েশা এবং ছোট ভাই সাজ্জাদ। সবাই মিলে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে রাত ১২টায় তারা হোসনি দালান মেইন কম্পাউন্ডে ঢোকেন। সেখানে তারা কতক্ষণ দুলদুল ঘোড়ার ঘরের কাছে দাঁড়ান। ঘোড়াটিকে সেখানে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল মিছিলে বের হওয়ার জন্য। কিছু সময় পড়েই মূল মিছিল বের হওয়ার কথা ছিল। সে কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন হোসনি দালান এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। রাশেদ বলেন, এক সময় লোকজনে কানায় কানায় ভরে যায় পুরো এলাকা। তারা কবর জিয়ারতের জন্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ। সময় তখন ১টা ৫৫ মিনিটের মতো। এর কয়েক সেকেন্ড পরেই মূল গেটে আবারো বিস্ফোরণ। রাশেদ বলেন, মুহূর্তে ছোটাছুটি। তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারাও এদিক-ওদিক চলে যান। কোনো মতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি সেখান থেকে বের হন। তার ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীও আহত হয়েছেন। তাদের নিয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখেন তার ভাই সনজু ও শাশুড়ি আয়েশা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরে মারা যান তার ভাই সনজু।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বোমার স্পিøন্টারে সনজুর হার্ট ও ফুসফুস ছিদ্র হয়ে গেছে। এতেই তার মৃত্যু ঘটেছে।
এই ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। যার মধ্যে এখনো প্রায় অর্ধশত হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ১৬ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ২৭ জন মিটফোর্ড হাসপাতাল এবং বাকিরা বিভিন্ন কিনিকে ভর্তি আছেন। আহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখানে ভর্তিকৃতরা হলেন, রুনা (৩০), আয়েশা (৫০), রিনা (৩৮), জামাল (৫৫), সানোয়ার (৩০), রুনি (২৫), নুর হোসেন (৫৫), রাকিব (২০), সোহান (১১), মনির (৩৬), হালিমা (২২), কামাল (২৩), সিনহা (১১), ফয়সাল (২), হাসম (৬) ও এরশাদ (২২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোমা হামলার সময় সেখানে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর মধ্যেই দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে নির্বিঘেœ চলে যায়। ঘটনার পর সেখানে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ঊর্ধ্বতন কর্তারা হাজির হন। সেখান থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন। গতকাল গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন, কবরস্থানের ভেতর থেকে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে এবং দু’জন এই বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
এ দিকে, র্যাব ১০-এর অধিনায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেছেন, হামলায় গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেগুলো হাতে তৈরি। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় তিনি হোসনি দালান চত্বরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেছেন, এ গ্রেনেড ভেতর থেকেই মারা হয়েছে। কারণ চত্বরের চার পাশে বড় বড় দেয়াল ও ভবন আছে। বাইরে থেকে এগুলো মারা সম্ভব নয়। তিনি বলেছেন, গ্রেনেডে ব্যবহৃত দু’টি সেফটি কিপ গতকাল বেলা পৌনে ১২ টার দিকে উদ্ধার করা হয়। দুর্বৃত্তরা মোট ৫টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের চেষ্টা করে। এর মধ্যে তিনটি বিস্ফোরিত হয়। বাকি দু’টি অবিস্ফোরিত ছিল। শনিবার ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত গ্রেনেড দু’টি ও দু’টি সেফটি কিপ উদ্ধার করা হয়। বাকি কিপ খোঁজা হচ্ছে।
এ দিকে মিছিলে বোমা হামলার ঘটনায় চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন চকবাজার থানার এক এসআই। মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি।
নিহত সনজুর পরিবার জানিয়েছে, তারা শিয়া সম্প্রদায়ের নন। তারা সুন্নি সম্প্রদায়ের। তবুও প্রতি বছরই তারা এই তাজিয়া মিছিলে অংশ নেন। ঘটনার পর থেকে পুরান ঢাকায় মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও শোক বিরাজ করছে। ঘটনার পরদিন তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে তাজিয়া মিছিলে অংশ নেন।
এ দিকে ঘটনার পর দুই দিন অতিবাহিত হলেও এর সাথে সম্পৃক্ত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি গোয়েন্দারা। মামলা দায়েরের পর থানা পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে।
এ দিকে গত রাতে মামলাটি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) ন্যস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ডিবি পুলিশ ইতোমধ্যেই অনানুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। র্যাব সদস্যরাও ছায়া তদন্ত শুরু করেছেন।
পবিত্র আশুরায় নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়। তবে ঢাকায় এই আয়োজন চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে অবাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় এই দিনকে স্মরণ করতে নানা আয়োজন চলে। দুলদুল সাজিয়ে বের হয় তাজিয়া মিছিল। পুরান ঢাকা ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে প্রতি বছরই দু’টি বিশাল মিছিল বের হয়। পুরান ঢাকার মিছিলটি হোসনি দালান এলাকা থেকে বের হয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। অপর দিকে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প এলাকা থেকে মিছিল বের হয়ে ঝিগাতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। হোসনি দালান এলাকা থেকে গত ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবে তাজিয়া মিছিল বের হয়ে আসছে। নির্বিঘেœ দিনটি অতিবাহিত হয়ে আসছে এ দীর্ঘ সময়। কিন্তু এবারের আশুরায় ঘটেছে বিস্ফোরণের ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন বলেছেন, এমনটি তারা কোনো দিনও কল্পনা করেননি। তাজিয়া মিছিলে এমন হামলার ঘটনা ঘটবে তা তারা স্বপ্নেও ভাবেননি। সাজিদ নামে এক যুবক বলেন, শত শত বছর ধরে এভাবে তারা ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিল করে আসছেন। কিন্তু এবারেই বোমা হামলার শিকার হলেন। তিনি বলেন, রাত তখন ১টা ৫৫ মিনিটের মতো। হঠাৎ একটি বিস্ফোরণ, মানুষের দৌড়াদৌড়ি, বাঁচার আকুতি। এর মধ্যে আরো একটি বিস্ফোরণ। পরে ছোট ছোট আরো কয়েকটি শব্দ। সাজিদ বলেন, মুহূর্তে পুরো এলাকা রক্তাক্ত। আহত অবস্থায় অনেকে রাস্তার ওপর পড়ে আছেন। আবার কেউ কেউ রক্তাক্ত অবস্থায় নিরাপদ স্থানে দৌড়াচ্ছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুরো এলাকা ফাঁকা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, কোত্থেকে কে বা কারা এ বোমা হামলা চালিয়েছে প্রচণ্ড ভিড়ে তা লক্ষ করা যায়নি। পুরো এলাকা যেমন মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ, তেমনি রাতের অন্ধকার। বিস্ফোরণের পর জীবন নিয়েই টানাটানি।
এ দিকে ঘটনাস্থল থেকে অনেকে নিজেরাই আহত অবস্থায় গিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। আবার অনেকে এতটাই গুরুতর ছিলেন যে তাদের ঘটনাস্থল থেকে অন্যরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। হাসপাতালে যাদের নেয়া হয় তাদের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন সনজু (১৫) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়। সাজ্জাদের বাবার নাম মো: নাসির হোসেন। বাসা কেরানীগঞ্জের চরাইল হাইস্কুল হাবিবনগর গোলাবাজার এলাকায়। আগে তারা বাবুবাজারের ৫/১ জুম্মা লেনে বসবাস করত। স্থানীয় স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছিল সে। পরিবারের সাথে সে হোসনি দালানে এসেছিল।
সাজ্জাদের বড় ভাই রাশেদ হোসেন বলেন, রাত ১১টায় তারা কেরানীগঞ্জ থেকে হোসনি দালান এলাকায় আসেন তাজিয়া মিছিলে অংশ নিতে।
তার সাথে ছিলেন স্ত্রী সুমি আক্তার, মেয়ে সিনহা, ছেলে শিহাব, শাশুড়ি আয়েশা এবং ছোট ভাই সাজ্জাদ। সবাই মিলে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে রাত ১২টায় তারা হোসনি দালান মেইন কম্পাউন্ডে ঢোকেন। সেখানে তারা কতক্ষণ দুলদুল ঘোড়ার ঘরের কাছে দাঁড়ান। ঘোড়াটিকে সেখানে সাজিয়ে রাখা হয়েছিল মিছিলে বের হওয়ার জন্য। কিছু সময় পড়েই মূল মিছিল বের হওয়ার কথা ছিল। সে কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন হোসনি দালান এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। রাশেদ বলেন, এক সময় লোকজনে কানায় কানায় ভরে যায় পুরো এলাকা। তারা কবর জিয়ারতের জন্য যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ। সময় তখন ১টা ৫৫ মিনিটের মতো। এর কয়েক সেকেন্ড পরেই মূল গেটে আবারো বিস্ফোরণ। রাশেদ বলেন, মুহূর্তে ছোটাছুটি। তার সঙ্গে যারা ছিলেন তারাও এদিক-ওদিক চলে যান। কোনো মতে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি সেখান থেকে বের হন। তার ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীও আহত হয়েছেন। তাদের নিয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখেন তার ভাই সনজু ও শাশুড়ি আয়েশা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরে মারা যান তার ভাই সনজু।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বোমার স্পিøন্টারে সনজুর হার্ট ও ফুসফুস ছিদ্র হয়ে গেছে। এতেই তার মৃত্যু ঘটেছে।
এই ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। যার মধ্যে এখনো প্রায় অর্ধশত হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ১৬ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ২৭ জন মিটফোর্ড হাসপাতাল এবং বাকিরা বিভিন্ন কিনিকে ভর্তি আছেন। আহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখানে ভর্তিকৃতরা হলেন, রুনা (৩০), আয়েশা (৫০), রিনা (৩৮), জামাল (৫৫), সানোয়ার (৩০), রুনি (২৫), নুর হোসেন (৫৫), রাকিব (২০), সোহান (১১), মনির (৩৬), হালিমা (২২), কামাল (২৩), সিনহা (১১), ফয়সাল (২), হাসম (৬) ও এরশাদ (২২)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বোমা হামলার সময় সেখানে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর মধ্যেই দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে নির্বিঘেœ চলে যায়। ঘটনার পর সেখানে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের ঊর্ধ্বতন কর্তারা হাজির হন। সেখান থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন। গতকাল গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন, কবরস্থানের ভেতর থেকে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে এবং দু’জন এই বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
এ দিকে, র্যাব ১০-এর অধিনায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর বলেছেন, হামলায় গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেগুলো হাতে তৈরি। গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় তিনি হোসনি দালান চত্বরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি বলেছেন, এ গ্রেনেড ভেতর থেকেই মারা হয়েছে। কারণ চত্বরের চার পাশে বড় বড় দেয়াল ও ভবন আছে। বাইরে থেকে এগুলো মারা সম্ভব নয়। তিনি বলেছেন, গ্রেনেডে ব্যবহৃত দু’টি সেফটি কিপ গতকাল বেলা পৌনে ১২ টার দিকে উদ্ধার করা হয়। দুর্বৃত্তরা মোট ৫টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের চেষ্টা করে। এর মধ্যে তিনটি বিস্ফোরিত হয়। বাকি দু’টি অবিস্ফোরিত ছিল। শনিবার ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত গ্রেনেড দু’টি ও দু’টি সেফটি কিপ উদ্ধার করা হয়। বাকি কিপ খোঁজা হচ্ছে।
এ দিকে মিছিলে বোমা হামলার ঘটনায় চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন চকবাজার থানার এক এসআই। মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি।
নিহত সনজুর পরিবার জানিয়েছে, তারা শিয়া সম্প্রদায়ের নন। তারা সুন্নি সম্প্রদায়ের। তবুও প্রতি বছরই তারা এই তাজিয়া মিছিলে অংশ নেন। ঘটনার পর থেকে পুরান ঢাকায় মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও শোক বিরাজ করছে। ঘটনার পরদিন তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে তাজিয়া মিছিলে অংশ নেন।
এ দিকে ঘটনার পর দুই দিন অতিবাহিত হলেও এর সাথে সম্পৃক্ত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি গোয়েন্দারা। মামলা দায়েরের পর থানা পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে।
এ দিকে গত রাতে মামলাটি তদন্তের জন্য গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) ন্যস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ডিবি পুলিশ ইতোমধ্যেই অনানুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করেছে। র্যাব সদস্যরাও ছায়া তদন্ত শুরু করেছেন।
No comments