ব্যাঙ্গালোরে গ্রামীণ কুটার করপোরেট সদর দপ্তর উদ্বোধন করলেন ড. ইউনূস
নোবেল
শান্তি পুরস্কারজয়ী বাংলাদেশী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৬ই সেপ্টেম্বর
ব্যাঙ্গালোরে ‘গ্রামীণ কুটা’র নতুন করপোরেট সদর দপ্তর উদ্বোধন করেন।
গ্রামীণ কুটা ভারতের সবচেয়ে বড় ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি, যা ৫টি
রাজ্যে ১০ লাখেরও বেশি নারী সদস্যকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। অধ্যাপক ইউনূসের
প্রেরণায় গ্রামীণ কুটা ১৯৯৮ সালে গ্রামীণ ট্রাস্টের কাছ থেকে প্রারম্ভিক
তহবিল ও প্রশিক্ষণ নিয়ে তার কার্যক্রম শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি তার পরবর্তী
পর্যায়ে তার কার্যক্রম ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা
কয়েকগুণ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। গ্রামীণ কুটা তার ১৮ বছরের ইতিহাসে একটি
অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন
করেছে এবং অধ্যাপক ইউনূসের সামাজিক দর্শন ও দরিদ্রকেন্দ্রিক কর্মপন্থা
বাস্তবায়নের জন্য বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস ব্যাঙ্গালোরে
প্রতিষ্ঠানটির নতুন বহুতলবিশিষ্ট সদর দপ্তরে পৌঁছলে গ্রামীণ কুটা’র
প্রতিষ্ঠাতা বিনাথা এম. রেড্ডি, পরিচালনা পরিষদ সদস্য সুরেশ কৃষ্ণ, প্রধান
নির্বাহী উদয় কুমার এবং প্রতিষ্ঠানটির কয়েকশ’ কর্মী তাকে সাদর অভ্যর্থনা
জানান। অধ্যাপক ইউনূসের আগমনের অব্যবহিত পূর্বেই গ্রামীণ কুটা’র সদর দপ্তর
এই নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়। অধ্যাপক ইউনূস নতুন ও বৃহৎ এই অফিসে
গ্রামীণ কুটা’র নবনিযুক্ত কর্মীদের এক বৃহৎ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। একই দিন
সকালে অধ্যাপক ইউনূস মহীশূরে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ইনফোসিস গ্লোবাল
ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের আমন্ত্রণে তাদের কার্যালয় পরিদর্শনে যান। ইনফোসিস ৭
জন উদ্যোক্তা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত যারা ১৯৮১ সালে গ্র্যাজুয়েশন সমাপ্তির পর
পরই প্রতিষ্ঠানটি গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ড. কে.
দীনেশ তাদের সৃষ্ট মহীশূরের এই অসাধারণ গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারটি
পরিদর্শনের জন্য অধ্যাপক ড. ইউনূসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ইনফোসিস
পরিচালকরা অধ্যাপক ইউনূসকে ৩১৭ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এই অনন্য-সাধারণ
দৃষ্টিনন্দন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ঘুরিয়ে দেখান যেখানে ১৫ হাজার
প্রশিক্ষণার্থী একসঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে পারে। ১৫ হাজার প্রশিক্ষণার্থীর
একেকটি নতুন ব্যাচ ৬ মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। বিনোদন ও খেলাধুলার
সুবিধাসহ প্রশিক্ষণার্থীদের পূর্র্ণ আবাসিক সুবিধা দেয়া হয়। এই
কমপ্লেক্সটিতে ভারতের অন্যতম বৃহৎ লন্ড্রি সুবিধা রয়েছে, যা অন্যান্য
সুবিধার সঙ্গে প্রতিদিন ১০ হাজার বিছানা-চাদর পরিষ্কার করতে পারে। মহীশূর
কেন্দ্রটি ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ১৩টি গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট
সেন্টারের মধ্যে সর্ববৃহৎ, যা ভারতের তথ্যপ্রযুক্তিগত সামর্থ্য বৃদ্ধির
লক্ষ্যে যুব সমাজকে প্রশিক্ষিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে ৩০০ ছাত্রের ৩টি ব্যাচ তাদের আইটি প্রশিক্ষকসহ এই
কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। ভারতের জন্য একটি নতুন বিশ্ব অর্থনীতি
তৈরিতে ইনফোসিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ব্যাঙ্গালোরকে একটি
সার্বক্ষণিক গ্লোবাল সিটিতে পরিণত করেছে। ইনফোসিসের প্রশাসকরা অধ্যাপক ড.
ইউনূসের কাছে তাদের প্রশিক্ষণ কৌশল ও ভবিষ্যৎ মহাপরিকল্পনা ব্যাখ্যা করেন।
No comments