‘আইজ বাংলাদেশ উদ্বোধন হইব’ by সেলিম জাহিদ ও সফি খান
‘আইজ
বাংলাদেশ উদ্বোধন হইব’—দাশিয়ার ছড়ার কালীহাটের চা দোকানে বসে হরিয়ানা
রাজ্যে মেয়ে মোসলেমাকে এ খবর দিচ্ছিলেন বাবা মোফাজ্জল হক। আজ শুক্রবার
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মুঠোফোনে যখন বাবা-মেয়ের কথা হচ্ছিল, মোফাজ্জলের
মুখে তখন সূর্যের হাসির বিজ্ঞাপনের কার্টুনটির মতোই মুখ জোড়া হাসি। এমন
হাসি আর আনন্দ এখন পুরো ছিটমহল জুড়ে।
হাসি-আনন্দের পাশাপাশি আলোকসজ্জা, হাডুডু, লাঠিখেলা, নৌকা বাইচসহ নানান আয়োজন চলছে ছিটমহলগুলোতে।
৬৮ বছর পর ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহল শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট পর দুই দেশের ভূখণ্ডের অংশ হচ্ছে। এত দিন দেশহীন থাকা ছিটমহলগুলোর ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কাল থেকে দেশ পাচ্ছে। তাই ছিটমহলের সর্বত্র যেন বিজয় অর্জনের আনন্দ। চলছে উৎসবের নানা আয়োজন-আনুষ্ঠানিকতা।
দাশিয়ার ছড়ার ছিটমহলে বসে মোফাজ্জল উৎসবের খবর দিচ্ছিলেন মেয়েকে। তিনি জানালেন, চার মেয়ে তাঁর। মোসলেমা ও মফিজাকে বিয়ে দিয়েছেন। স্বামীদের নিয়ে তাঁরা ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের মেওয়াত এলাকায় থাকেন। বাকি দুই মেয়ে ও তাঁদের মাকে নিয়ে দাশিয়ার ছড়ায় থাকেন।
মোফাজ্জল জানান, আট বছর হলো কালীরহাটে চা দোকান করছেন। এত দিন এ হাটের কোনো ঠিকানা ছিল না, নাম বলা যেত না। এখন কালীরহাট স্বাধীন বাংলাদেশের অংশ। তিনি বলেন, ‘খুশি লাগছে, আমি সে হাটের একজন দোকানদার।’
মোফাজ্জলের চা দোকানের ২০০ গজ দূরে কালীরহাটের টিনের চাউনির ছোট্ট কালী মন্দিরটিও আজ অন্যদিনের চেয়ে ব্যতিক্রম বলে জানালেন পুরোহিত সুশীল চন্দ্র। সকাল থেকেই দল বেঁধে পূজা অর্চনা করেন ছিটমহলের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। একইভাবে শুক্রবারের জুমাবার পেয়ে নামাজের পর ছিটমহলের মুসল্লিরা মসজিদে মসজিদে দোয়া ও শোকরানা আদায় করেন।
শুক্রবার দুপুরে কালীরহাটে কথা হয় ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘৬৮ বছর পর মুক্ত জীবন পাচ্ছি। কাল থেকে শুরু হচ্ছে আমাদের নতুন জীবন। এ আনন্দ ভাষায় বর্ণনার মতো নয়।’
মুক্তির ঐতিহাসিক দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে সমন্বয় কমিটি দাশিয়ার ছড়ার বিভিন্ন প্রান্তে ২৫টি তোরণ বানিয়েছে। রাতে ১১টি স্থানে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিকেলে কালীরহাটের পাশে হাডুডু, লাঠিখেলা এবং ছিটমহলের পাশ দিয়ে যাওয়া নীল কমল নদীতে নৌকা বাইচ হয়।
হাসি-আনন্দের পাশাপাশি আলোকসজ্জা, হাডুডু, লাঠিখেলা, নৌকা বাইচসহ নানান আয়োজন চলছে ছিটমহলগুলোতে।
৬৮ বছর পর ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহল শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট পর দুই দেশের ভূখণ্ডের অংশ হচ্ছে। এত দিন দেশহীন থাকা ছিটমহলগুলোর ৫০ হাজারের বেশি মানুষ কাল থেকে দেশ পাচ্ছে। তাই ছিটমহলের সর্বত্র যেন বিজয় অর্জনের আনন্দ। চলছে উৎসবের নানা আয়োজন-আনুষ্ঠানিকতা।
দাশিয়ার ছড়ার ছিটমহলে বসে মোফাজ্জল উৎসবের খবর দিচ্ছিলেন মেয়েকে। তিনি জানালেন, চার মেয়ে তাঁর। মোসলেমা ও মফিজাকে বিয়ে দিয়েছেন। স্বামীদের নিয়ে তাঁরা ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের মেওয়াত এলাকায় থাকেন। বাকি দুই মেয়ে ও তাঁদের মাকে নিয়ে দাশিয়ার ছড়ায় থাকেন।
মোফাজ্জল জানান, আট বছর হলো কালীরহাটে চা দোকান করছেন। এত দিন এ হাটের কোনো ঠিকানা ছিল না, নাম বলা যেত না। এখন কালীরহাট স্বাধীন বাংলাদেশের অংশ। তিনি বলেন, ‘খুশি লাগছে, আমি সে হাটের একজন দোকানদার।’
মোফাজ্জলের চা দোকানের ২০০ গজ দূরে কালীরহাটের টিনের চাউনির ছোট্ট কালী মন্দিরটিও আজ অন্যদিনের চেয়ে ব্যতিক্রম বলে জানালেন পুরোহিত সুশীল চন্দ্র। সকাল থেকেই দল বেঁধে পূজা অর্চনা করেন ছিটমহলের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। একইভাবে শুক্রবারের জুমাবার পেয়ে নামাজের পর ছিটমহলের মুসল্লিরা মসজিদে মসজিদে দোয়া ও শোকরানা আদায় করেন।
শুক্রবার দুপুরে কালীরহাটে কথা হয় ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘৬৮ বছর পর মুক্ত জীবন পাচ্ছি। কাল থেকে শুরু হচ্ছে আমাদের নতুন জীবন। এ আনন্দ ভাষায় বর্ণনার মতো নয়।’
মুক্তির ঐতিহাসিক দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে সমন্বয় কমিটি দাশিয়ার ছড়ার বিভিন্ন প্রান্তে ২৫টি তোরণ বানিয়েছে। রাতে ১১টি স্থানে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া বিকেলে কালীরহাটের পাশে হাডুডু, লাঠিখেলা এবং ছিটমহলের পাশ দিয়ে যাওয়া নীল কমল নদীতে নৌকা বাইচ হয়।
ছিটমহলের বিনিময় উপলক্ষে হাডুডু খেলায় মেতেছে এরা |
আয়োজকেরা
জানান, ৬৮ বছরের অন্ধকার কাটিয়ে আলোর পথে যাত্রার লক্ষ্যে রাত ১২টা ১
মিনিটে ৬৮টি মোমবাতি জ্বালানো হবে কালীরহাটে। এর পর ৬৮টি পটকা ফুটিয়ে
তোপধ্বনি করা হবে। রাতে ছিটমহলের সদর রাস্তায় মশাল মিছিলে অংশ নেবেন
বাসিন্দারা।
ছিটমহলের এই আনন্দ উৎসব দেখতে বিকেলে কালীরহাটে জড়ো হয় হাজারও মানুষ। এত মানুষ এ হাটে কখন একত্র হয়নি। দূর-দূরান্ত থেকে দাশিয়ার ছড়া এসেছেন অনেকে। সুরুজ্জামান ও মিজানুর রহমান এসেছেন ভূরুঙ্গামারীর সিলকুড়ি থেকে। উৎসবে যোগ দেওয়া পশ্চিমটারীর নুরুন্নাহার বলেন, ‘ছিট বাংলা হইলো, তাই দেখপার আসছি।’
ছিটমহলের উৎসব আয়োজন এবং সেখানকার মানুষের জীবন-সংগ্রামের খবর সংগ্রহে গণমাধ্যমের কর্মীরা চষে বেড়াচ্ছেন দাশিয়ার ছড়ার বিভিন্ন প্রান্তে। সরাসরি সংবাদ সম্প্রচারে ছিটমহলের কাচা রাস্তার ধারে, জমিতে বসেছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর ভ্রাম্যমাণ স্টেশন। জটলা বেধে তা দেখছেন ছিটমহলের বাসিন্দারা। এ ছাড়া কালীহাট বাজারে বিজয় উৎসব দেখতে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে আসা হাজার খানেক মানুষের সমাবেশ হয়।
লাল-সবুজ পতাকা উত্তোলন, কেক কাটা হবে
আয়োজক ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, কাল শনিবার সকাল নয়টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন। বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কালীরহাট জামে মসজিদের পাশেই পতাকার জন্য পাকা স্ট্যান্ড তৈরি করা হচ্ছে। কাল ১ আগস্ট সকালে কেক কাটা হবে। এরপর মিষ্টিমুখ করে আনন্দ মিছিল বের করার কর্মসূচি ঠিক করা হয়েছে। সকাল ১০টায় নির্মাণাধীন দাশিয়ার ছড়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আয়োজক কমিটি ও কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
উৎসব ঘিরে স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলার রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ করেছে। ফুলবাড়ী থানার ১৪ জন পুলিশ সদস্য, কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন থেকে ১২ জন পুলিশ কনস্টেবল সকাল থেকে কালীরহাটে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া বিকেল সাড়ে ৪টায় গংগারহাট সীমান্ত ফাঁড়ির বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) চারজন সদস্যও নিরাপত্তায় অংশ নেন।
হঠাৎ উৎসবে ছেদ
দাশিয়ার ছড়ায় বিজয় উৎসবের আয়োজন চলছিল অনেক দিন থেকে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ উৎসব আয়োজনে যেন ছেদ পড়ে। ছিটমহলের বাসিন্দা এবং উৎসব আয়োজনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম-২ (কুড়িগ্রাম সদর-রাজারহাট ও ফুলবাড়ি) আসনের সাংসদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁকে নিয়ে আয়োজকেরা কিছুটা ইতস্তত ও দ্বিধায় পড়েছেন।
সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তাফা বলেন, তাজুল ইসলাম চৌধুরী হঠাৎ করে আসতে চেয়েছেন। তিনি মতবিনিময় করবেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিয়ম সমন্বয় কমিটি ৩১ জুলাই মধ্যরাত ঘিরে উৎসবের জন্য কালীরহাটের পাশে দাশিয়ার ছড়া দাখিল মাদ্রাসা (প্রস্তাবিত) মাঠে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করে। এই উৎসব কর্মসূচির সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ মো. জাফর আলীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা সম্পৃক্ত।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খবর আসে সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ কুড়িগ্রাম-২ আসনের জাতীয় পার্টির (জাপা) সাংসদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী উৎসবে যোগ দেবেন। এতে ছিটমহল বিনিয়ম সমন্বয় কমিটি অস্বস্তিতে পড়ে। কারণ আওয়ামী লীগের সাংসদ ও নেতারা জাপার সাংসদ তাজুল ইসলামকে একই মঞ্চে রাখতে আগ্রহী না। কিন্তু ফুলবাড়ী জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. মঈনুল হক দাশিয়ার ছড়া ছিটমহল বিনিয়ম সমন্বয় কমিটির সভাপতি। কাল থেকে দাশিয়ার ছড়া বাংলাদেশের অংশ হওয়ার পর তা এই আসনের অন্তর্ভুক্ত হবে বিধায় তিনি দলীয় সাংসদকে উৎসবে অতিথি করতে আগ্রহী। এ অবস্থায় আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে মাদ্রাসার মূল মঞ্চের দুই জমি দূরত্বে ‘তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ এর ব্যানারে আরেকটি মঞ্চ বানানো হয়। বিকেলে সেই মঞ্চে তাজুল ইসলাম বক্তব্য দেন। রাতের অনুষ্ঠানের জন্য নির্মিত মঞ্চে থাকবেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
তাজুল ইসলাম চৌধুরীর আকস্মিক আগমনে ‘ঝামেলায় পড়ে গেলাম’ বলে মন্তব্য করেন ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নূর ইসলাম।
অবশ্য জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিকেলে প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁর সফরটা সরকারি। তাই সফরসূচি ঠিক করতে সময় লেগে গেছে।
ছিটমহলের এই আনন্দ উৎসব দেখতে বিকেলে কালীরহাটে জড়ো হয় হাজারও মানুষ। এত মানুষ এ হাটে কখন একত্র হয়নি। দূর-দূরান্ত থেকে দাশিয়ার ছড়া এসেছেন অনেকে। সুরুজ্জামান ও মিজানুর রহমান এসেছেন ভূরুঙ্গামারীর সিলকুড়ি থেকে। উৎসবে যোগ দেওয়া পশ্চিমটারীর নুরুন্নাহার বলেন, ‘ছিট বাংলা হইলো, তাই দেখপার আসছি।’
ছিটমহলের উৎসব আয়োজন এবং সেখানকার মানুষের জীবন-সংগ্রামের খবর সংগ্রহে গণমাধ্যমের কর্মীরা চষে বেড়াচ্ছেন দাশিয়ার ছড়ার বিভিন্ন প্রান্তে। সরাসরি সংবাদ সম্প্রচারে ছিটমহলের কাচা রাস্তার ধারে, জমিতে বসেছে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর ভ্রাম্যমাণ স্টেশন। জটলা বেধে তা দেখছেন ছিটমহলের বাসিন্দারা। এ ছাড়া কালীহাট বাজারে বিজয় উৎসব দেখতে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে আসা হাজার খানেক মানুষের সমাবেশ হয়।
লাল-সবুজ পতাকা উত্তোলন, কেক কাটা হবে
আয়োজক ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্র জানায়, কাল শনিবার সকাল নয়টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন। বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কালীরহাট জামে মসজিদের পাশেই পতাকার জন্য পাকা স্ট্যান্ড তৈরি করা হচ্ছে। কাল ১ আগস্ট সকালে কেক কাটা হবে। এরপর মিষ্টিমুখ করে আনন্দ মিছিল বের করার কর্মসূচি ঠিক করা হয়েছে। সকাল ১০টায় নির্মাণাধীন দাশিয়ার ছড়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আয়োজক কমিটি ও কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
উৎসব ঘিরে স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলার রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ করেছে। ফুলবাড়ী থানার ১৪ জন পুলিশ সদস্য, কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন থেকে ১২ জন পুলিশ কনস্টেবল সকাল থেকে কালীরহাটে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া বিকেল সাড়ে ৪টায় গংগারহাট সীমান্ত ফাঁড়ির বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) চারজন সদস্যও নিরাপত্তায় অংশ নেন।
হঠাৎ উৎসবে ছেদ
দাশিয়ার ছড়ায় বিজয় উৎসবের আয়োজন চলছিল অনেক দিন থেকে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ উৎসব আয়োজনে যেন ছেদ পড়ে। ছিটমহলের বাসিন্দা এবং উৎসব আয়োজনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম-২ (কুড়িগ্রাম সদর-রাজারহাট ও ফুলবাড়ি) আসনের সাংসদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁকে নিয়ে আয়োজকেরা কিছুটা ইতস্তত ও দ্বিধায় পড়েছেন।
সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তাফা বলেন, তাজুল ইসলাম চৌধুরী হঠাৎ করে আসতে চেয়েছেন। তিনি মতবিনিময় করবেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিয়ম সমন্বয় কমিটি ৩১ জুলাই মধ্যরাত ঘিরে উৎসবের জন্য কালীরহাটের পাশে দাশিয়ার ছড়া দাখিল মাদ্রাসা (প্রস্তাবিত) মাঠে মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করে। এই উৎসব কর্মসূচির সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ মো. জাফর আলীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা সম্পৃক্ত।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খবর আসে সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ কুড়িগ্রাম-২ আসনের জাতীয় পার্টির (জাপা) সাংসদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী উৎসবে যোগ দেবেন। এতে ছিটমহল বিনিয়ম সমন্বয় কমিটি অস্বস্তিতে পড়ে। কারণ আওয়ামী লীগের সাংসদ ও নেতারা জাপার সাংসদ তাজুল ইসলামকে একই মঞ্চে রাখতে আগ্রহী না। কিন্তু ফুলবাড়ী জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. মঈনুল হক দাশিয়ার ছড়া ছিটমহল বিনিয়ম সমন্বয় কমিটির সভাপতি। কাল থেকে দাশিয়ার ছড়া বাংলাদেশের অংশ হওয়ার পর তা এই আসনের অন্তর্ভুক্ত হবে বিধায় তিনি দলীয় সাংসদকে উৎসবে অতিথি করতে আগ্রহী। এ অবস্থায় আজ শুক্রবার দুপুরের দিকে মাদ্রাসার মূল মঞ্চের দুই জমি দূরত্বে ‘তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ এর ব্যানারে আরেকটি মঞ্চ বানানো হয়। বিকেলে সেই মঞ্চে তাজুল ইসলাম বক্তব্য দেন। রাতের অনুষ্ঠানের জন্য নির্মিত মঞ্চে থাকবেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
তাজুল ইসলাম চৌধুরীর আকস্মিক আগমনে ‘ঝামেলায় পড়ে গেলাম’ বলে মন্তব্য করেন ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নূর ইসলাম।
অবশ্য জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিকেলে প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁর সফরটা সরকারি। তাই সফরসূচি ঠিক করতে সময় লেগে গেছে।
No comments