পূর্ণতার পথে মানচিত্র- আজ মধ্যরাতে ছিটমহল বিনিময়
’৭৪-এর স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হচ্ছে। ফলে এই অংশে থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশের ভূখণ্ড এবং ওই অংশে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতের ভূখণ্ড হয়ে হবে। এটি দুই দেশেরই মানচিত্র পূর্ণতা পাওয়ার পথে একধাপ অগ্রগতি।
এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪১ বছর পর ’৭৪ সালের দুই দেশের স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। অবসান ঘটতে যাচ্ছে দীর্ঘ ৬৮ বছরের এক মানবিক সমস্যার। ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তির এক বছর পর এবার স্থলসীমান্ত সমস্যাও মিটতে চলেছে। গত বছরের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে সমুদ্রসীমার বিরোধ মিটে যাওয়ার পর সমুদ্র এলাকার ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটারে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এবার ছিটমহল বিনিময়ের পর স্থলভাগেও বাংলাদেশের ভূখণ্ড বাড়বে। এর সঙ্গে বাড়বে জনসংখ্যাও।
স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত জমি সংযুক্ত করে এবং বহির্ভূত জমি বাদ দিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হচ্ছে। ভারতে একইভাবে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক গতকাল তাঁর দপ্তরে প্রথম আলোকে বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী সুষ্ঠুভাবে স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ এগোচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ছিটমহল বিনিময় ৩১ জুলাই শেষ হচ্ছে।
ছিটমহল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে স্থলসীমান্ত চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হলেও এর অন্য দুই উপাদান অপদখলীয় ভূমি বিনিময় ও সাড়ে ছয় কিলোমিটার সীমান্ত চিহ্নিত করার কাজও চলছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো শেষ হওয়ার মাধ্যমে শেষ হবে স্থলসীমান্ত চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন।
এর ফলে বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ১১১টি ছিটমহলের মধ্যে যাঁরা ভারতে ফিরে যেতে চান (তালিকায় নাম দেওয়া ৯৭৯ জন), তাঁরা ছাড়া বাকি সবাইকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। অন্যদিকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ৫১টি ছিটমহলের লোকজন পাবেন ভারতীয় নাগরিকত্ব। ১ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ভারতের পূর্ববর্তী ১১১টি ছিটমহলে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়বে।
বাংলাদেশে ভারতের ১৭ হাজার ১৬০ একর আয়তনের ১১১টি ছিটমহল এবং ভারতে বাংলাদেশের ৭ হাজার ১১০ একর আয়তনের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। ভারতে সবগুলো ছিটমহল পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশে ছিটমহলগুলো পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী জেলায় অবস্থিত।
এই ছিটমহলগুলোতে ২০১১ সালে একটি যৌথ জরিপ চালানো হয় এবং ১৬২ ছিটমহলে ৫১ হাজার ৫৪৯ অধিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে ৩৭ হাজার ৩৩৪ জন ভারতীয় বাংলাদেশে অবস্থিত ছিটমহলগুলোতে বাস করে এবং ১৪ হাজার ২১৫ জন বাংলাদেশি ভারতের ছিটমহলগুলোতে বাস করে।
চলতি মাসে আরেকটি যৌথ জরিপ চালানো হয়। এর ফলাফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি। বাংলাদেশ ভারতকে ২ হাজার ৭৭৭ একর অপদখলীয় জমি হস্তান্তর করবে এবং ভারত বাংলাদেশকে ২ হাজার ২৬৭ একর অপদখলীয় জমি হস্তান্তর করবে।
এদিকে দুই দেশ যখন আজ মধ্যরাত থেকে ছিটমহল বিনিময় করছে, তার আগে গতকাল ঢাকায় দুই দেশের হাইকমিশনাররা ৩০টি গুচ্ছ মানচিত্রে সই করেন। এর মাধ্যমে এখন দুই দেশের ১ হাজার ১৪৫টি মানচিত্রের মধ্যে একটি ছাড়া সবগুলো সই শেষ হলো। মুহুরির চর নিয়ে অবশিষ্ট গুচ্ছ মানচিত্রে ভূমির পরিমাণ দুই কিলোমিটার। ২০১১ সালে দুই দেশ ১ হাজার ১১৪টি গুচ্ছ মানচিত্রে সই করে।
প্রসঙ্গত, দুই দেশের স্থলসীমান্ত সুরাহার জন্য ১৯৭৪ সালের ১৬ মে বাংলাদেশের তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্থলসীমান্ত চুক্তিতে সই করেন। বাংলাদেশ ওই বছরই চুক্তিটি সংসদে অনুসমর্থন করলেও ভারত সেটি করেনি। ফলে দুই নিকট প্রতিবেশী উপমহাদেশের বিভক্তির সময় থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ হয়। চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং স্থলসীমান্ত চুক্তির প্রটোকলে সই করেন। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক টানাপোড়েন ভারতের সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের সংবিধান সংশোধনী বিল পাসে ব্যর্থ হয়। এবার নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত মে মাসে সর্বসম্মতভাবে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় ভারতের সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হয়। অবসান ঘটে দীর্ঘ ৪১ বছরের অপেক্ষার।
এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪১ বছর পর ’৭৪ সালের দুই দেশের স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। অবসান ঘটতে যাচ্ছে দীর্ঘ ৬৮ বছরের এক মানবিক সমস্যার। ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তির এক বছর পর এবার স্থলসীমান্ত সমস্যাও মিটতে চলেছে। গত বছরের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে সমুদ্রসীমার বিরোধ মিটে যাওয়ার পর সমুদ্র এলাকার ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটারে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এবার ছিটমহল বিনিময়ের পর স্থলভাগেও বাংলাদেশের ভূখণ্ড বাড়বে। এর সঙ্গে বাড়বে জনসংখ্যাও।
স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বৃহস্পতিবার পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত জমি সংযুক্ত করে এবং বহির্ভূত জমি বাদ দিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হচ্ছে। ভারতে একইভাবে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক গতকাল তাঁর দপ্তরে প্রথম আলোকে বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী সুষ্ঠুভাবে স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ এগোচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ছিটমহল বিনিময় ৩১ জুলাই শেষ হচ্ছে।
ছিটমহল বিনিময়ের মধ্য দিয়ে স্থলসীমান্ত চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হলেও এর অন্য দুই উপাদান অপদখলীয় ভূমি বিনিময় ও সাড়ে ছয় কিলোমিটার সীমান্ত চিহ্নিত করার কাজও চলছে। পর্যায়ক্রমে এগুলো শেষ হওয়ার মাধ্যমে শেষ হবে স্থলসীমান্ত চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন।
এর ফলে বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ১১১টি ছিটমহলের মধ্যে যাঁরা ভারতে ফিরে যেতে চান (তালিকায় নাম দেওয়া ৯৭৯ জন), তাঁরা ছাড়া বাকি সবাইকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। অন্যদিকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ৫১টি ছিটমহলের লোকজন পাবেন ভারতীয় নাগরিকত্ব। ১ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত ভারতের পূর্ববর্তী ১১১টি ছিটমহলে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়বে।
বাংলাদেশে ভারতের ১৭ হাজার ১৬০ একর আয়তনের ১১১টি ছিটমহল এবং ভারতে বাংলাদেশের ৭ হাজার ১১০ একর আয়তনের ৫১টি ছিটমহল রয়েছে। ভারতে সবগুলো ছিটমহল পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশে ছিটমহলগুলো পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী জেলায় অবস্থিত।
এই ছিটমহলগুলোতে ২০১১ সালে একটি যৌথ জরিপ চালানো হয় এবং ১৬২ ছিটমহলে ৫১ হাজার ৫৪৯ অধিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে ৩৭ হাজার ৩৩৪ জন ভারতীয় বাংলাদেশে অবস্থিত ছিটমহলগুলোতে বাস করে এবং ১৪ হাজার ২১৫ জন বাংলাদেশি ভারতের ছিটমহলগুলোতে বাস করে।
চলতি মাসে আরেকটি যৌথ জরিপ চালানো হয়। এর ফলাফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি। বাংলাদেশ ভারতকে ২ হাজার ৭৭৭ একর অপদখলীয় জমি হস্তান্তর করবে এবং ভারত বাংলাদেশকে ২ হাজার ২৬৭ একর অপদখলীয় জমি হস্তান্তর করবে।
এদিকে দুই দেশ যখন আজ মধ্যরাত থেকে ছিটমহল বিনিময় করছে, তার আগে গতকাল ঢাকায় দুই দেশের হাইকমিশনাররা ৩০টি গুচ্ছ মানচিত্রে সই করেন। এর মাধ্যমে এখন দুই দেশের ১ হাজার ১৪৫টি মানচিত্রের মধ্যে একটি ছাড়া সবগুলো সই শেষ হলো। মুহুরির চর নিয়ে অবশিষ্ট গুচ্ছ মানচিত্রে ভূমির পরিমাণ দুই কিলোমিটার। ২০১১ সালে দুই দেশ ১ হাজার ১১৪টি গুচ্ছ মানচিত্রে সই করে।
প্রসঙ্গত, দুই দেশের স্থলসীমান্ত সুরাহার জন্য ১৯৭৪ সালের ১৬ মে বাংলাদেশের তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্থলসীমান্ত চুক্তিতে সই করেন। বাংলাদেশ ওই বছরই চুক্তিটি সংসদে অনুসমর্থন করলেও ভারত সেটি করেনি। ফলে দুই নিকট প্রতিবেশী উপমহাদেশের বিভক্তির সময় থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ হয়। চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং স্থলসীমান্ত চুক্তির প্রটোকলে সই করেন। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক টানাপোড়েন ভারতের সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের সংবিধান সংশোধনী বিল পাসে ব্যর্থ হয়। এবার নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত মে মাসে সর্বসম্মতভাবে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় ভারতের সংবিধান সংশোধনী বিল পাস হয়। অবসান ঘটে দীর্ঘ ৪১ বছরের অপেক্ষার।
No comments