খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীকে সেলাই দেন ওয়ার্ড বয়! by উত্তম মণ্ডল
ডাকাতের রামদার কোপে গুরুতর জখম নিয়ে ১৩ জুলাই রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমিন। তাঁদের জখমের স্থানে সেলাই দেন ওয়ার্ড বয় আলমগীর হোসেন।
শুধু ফরহাদ বা ফারজানার ক্ষেত্রে নয়, ওই হাসপাতালে আসা এমন অনেকেরই ক্ষত স্থানে সেলাই দেওয়ার কাজটি করে থাকেন ওয়ার্ড বয়রাই। বিষয়টি কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয়রা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালে এটাই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।
ফরহাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত বন্ধ করতে সেখানকার ওয়ার্ডবয় কোনোরকমে সেলাই দেন। পরের দিন সকাল ১১টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে আবারও ক্ষতস্থানে সেলাই দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই দিন জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা (ইএমও) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন গৌতম কুমার মুখার্জী। আলমগীর হোসেন ছিলেন ওয়ার্ড বয়ের দায়িত্বে। আলমগীর বলেন, ‘ওই দুইজন (ফরহাদ ও ফারজানা) গুরুতর আহত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আসেন। তাঁদের ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। আমি এবং আরও তিনজন মিলে ক্ষতস্থান বেঁধে দিই। এরপর ইএমও স্যারকে ডেকে রক্ত বন্ধ না হওয়ার কথা বলি। স্যার আমাকে দ্রুত স্কিন টাইট করে রোলিং সেলাই দিতে বলেন। আমি কাটা জায়গায় বর্ডার সেলাই দিলে স্যার টিকিটে সই করে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন।’ আলমগীর আরও বলেন, ‘বহু বছর ধরে আমরা এখানে কাজ করছি। আমরা ডাক্তারদের সঙ্গে কাজ করে এবং দেখে অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। ছোটখাটো সেলাই আমরাই দিই। খুব বড় কিছু না হলে ডাক্তাররা সেলাই দেন না।’
ইএমও গৌতম কুমার বলেন, ‘আমার সামনে কিছুটা সেলাই হওয়ার পর আমি রুমে রোগী দেখতে যাই। ওয়ার্ড বয়দের সেলাই দেওয়ার বিষয়টি তো হাসপাতালের সুপার এবং সিনিয়র লেভেলের সবাই জানেন। যেহেতু আমাদের এখানে জনবল কম, তাই অভিজ্ঞতার আলোকে ওয়ার্ড বয়রা এগুলো করে থাকেন। সব জায়গাতেই তো এটা হয়।’ তিনি বলেন, ‘আসলে একটা অস্ত্রোপচারে শতভাগ নিয়মকানুন পালন করতে যে জনবল এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র দরকার, সেগুলো এখানে অপ্রতুল।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও পাঁচজন চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয় হাসপাতালে আসা রোগীদের ক্ষতস্থানে ওয়ার্ড বয়দের সেলাই দেওয়ার কথা প্রথম আলোর কাছে স্বীকার করেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের কাজ হয়, এটা আমি জানি না। একই সময়ে অনেক রোগী এলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া যায়—এমন রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট বা প্যারামেডিকদের সহায়তা নেন। তা ছাড়া আমার (হাসপাতালে) সার্জনের তো কেনো অভাব নেই, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও আছেন। ওয়ার্ড বয় সেলাই দেবেন কেন?’
ফরহাদ-ফারজানা দম্পতির বিষয়টি জানালে প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখব এবং ব্যবস্থাও নেব।’
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সভাপতি বাহারুল আলম বলেন, ‘ওয়ার্ড বয়রা কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হয়। নতুন বা মধ্যম মানের গ্র্যাজুয়েটদের চেয়েও অনেক সময় তাঁরা ভালো বোঝেন।’
বাংলাদেশ মেডিকেল এবং ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রার এ জেড এম বাসুনিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএমডিসির নিবন্ধন নেই, এমন কেউ কোনোভাবেই রোগীর ক্ষতস্থানে সেলাই দিতে পারবেন না। আইনগতভাবে কোনো ওয়ার্ড বয়ই এটা করতে পারেন না।’
শুধু ফরহাদ বা ফারজানার ক্ষেত্রে নয়, ওই হাসপাতালে আসা এমন অনেকেরই ক্ষত স্থানে সেলাই দেওয়ার কাজটি করে থাকেন ওয়ার্ড বয়রাই। বিষয়টি কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয়রা স্বীকার করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালে এটাই রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।
ফরহাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত বন্ধ করতে সেখানকার ওয়ার্ডবয় কোনোরকমে সেলাই দেন। পরের দিন সকাল ১১টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে আবারও ক্ষতস্থানে সেলাই দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই দিন জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা (ইএমও) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন গৌতম কুমার মুখার্জী। আলমগীর হোসেন ছিলেন ওয়ার্ড বয়ের দায়িত্বে। আলমগীর বলেন, ‘ওই দুইজন (ফরহাদ ও ফারজানা) গুরুতর আহত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আসেন। তাঁদের ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। আমি এবং আরও তিনজন মিলে ক্ষতস্থান বেঁধে দিই। এরপর ইএমও স্যারকে ডেকে রক্ত বন্ধ না হওয়ার কথা বলি। স্যার আমাকে দ্রুত স্কিন টাইট করে রোলিং সেলাই দিতে বলেন। আমি কাটা জায়গায় বর্ডার সেলাই দিলে স্যার টিকিটে সই করে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন।’ আলমগীর আরও বলেন, ‘বহু বছর ধরে আমরা এখানে কাজ করছি। আমরা ডাক্তারদের সঙ্গে কাজ করে এবং দেখে অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। ছোটখাটো সেলাই আমরাই দিই। খুব বড় কিছু না হলে ডাক্তাররা সেলাই দেন না।’
ইএমও গৌতম কুমার বলেন, ‘আমার সামনে কিছুটা সেলাই হওয়ার পর আমি রুমে রোগী দেখতে যাই। ওয়ার্ড বয়দের সেলাই দেওয়ার বিষয়টি তো হাসপাতালের সুপার এবং সিনিয়র লেভেলের সবাই জানেন। যেহেতু আমাদের এখানে জনবল কম, তাই অভিজ্ঞতার আলোকে ওয়ার্ড বয়রা এগুলো করে থাকেন। সব জায়গাতেই তো এটা হয়।’ তিনি বলেন, ‘আসলে একটা অস্ত্রোপচারে শতভাগ নিয়মকানুন পালন করতে যে জনবল এবং আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র দরকার, সেগুলো এখানে অপ্রতুল।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও পাঁচজন চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয় হাসপাতালে আসা রোগীদের ক্ষতস্থানে ওয়ার্ড বয়দের সেলাই দেওয়ার কথা প্রথম আলোর কাছে স্বীকার করেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের কাজ হয়, এটা আমি জানি না। একই সময়ে অনেক রোগী এলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া যায়—এমন রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট বা প্যারামেডিকদের সহায়তা নেন। তা ছাড়া আমার (হাসপাতালে) সার্জনের তো কেনো অভাব নেই, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও আছেন। ওয়ার্ড বয় সেলাই দেবেন কেন?’
ফরহাদ-ফারজানা দম্পতির বিষয়টি জানালে প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখব এবং ব্যবস্থাও নেব।’
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সভাপতি বাহারুল আলম বলেন, ‘ওয়ার্ড বয়রা কাজ করতে করতে অভিজ্ঞ হয়। নতুন বা মধ্যম মানের গ্র্যাজুয়েটদের চেয়েও অনেক সময় তাঁরা ভালো বোঝেন।’
বাংলাদেশ মেডিকেল এবং ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রার এ জেড এম বাসুনিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএমডিসির নিবন্ধন নেই, এমন কেউ কোনোভাবেই রোগীর ক্ষতস্থানে সেলাই দিতে পারবেন না। আইনগতভাবে কোনো ওয়ার্ড বয়ই এটা করতে পারেন না।’
No comments