রংপুরে জনজীবন অতিষ্ঠ, বিদ্যুৎ অফিস ভাংচুর by জাভেদ ইকবাল
রংপুরে
লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দিন-রাত সমান তালে চলছে বিদ্যুতের
ভেলকিবাজি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে করে
একদিকে যেমন কলকারখানার উৎপাদনসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে
অপরদিকে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটছে। এমন কি মধ্য রাতে ঘণ্টার পর
ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে স্থানীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো ছাপাতে দুর্ভোগ পোহাতে
হচ্ছে। বিদ্যুতের আসা-যাওয়া এমন লুকোচুরি খেলা যেন দিনের পর দিন বেড়েই
চলেছে। এসবের সঙ্গে যোগ হয়েছে জ্যৈষ্ঠর দাবদাহ ভ্যাপসা গরম তার উপর
লোডশেডিং। এ দুই মিলে ফুঁসে উঠেছে রংপুরবাসী। অবস্থা হয়ে উঠেছে বেসামাল।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত আকার ধারণ করার কারণে ইতিমধ্যে দুবার হামলা চালানো হয়েছে
বিদ্যুৎ অফিসে। ভাঙচুর করা হয়েছে ব্যাপক। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের
দাবিতে মহাসড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ করেছে সর্বস্তরের মানুষ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধের দাবিতে বিক্ষুব্ধ জনতা বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর লালবাগ শান্তিনগর এলাকার কারমাইকেল কলেজ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে রংপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে দরজা-জানালা ভাঙচুর করেছে। এরপর তারা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় রাস্তার দু’পাশের শত শত যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগে কর্মরত এজাজুল ইসলাম নামে এক আনসার কর্মকর্তাকে আহত করে। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে র্যাবকে আহ্বান করা হয়। পরে সকলের হস্তক্ষেপে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আর এসব কারণে আতঙ্কে ভুগছে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রংপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এরপরও আমাদের আতঙ্কে ভুগতে হচ্ছে। উত্তেজিত জনতা ফ্যামিলি কোয়ার্টারসহ অফিসে হামলা করেছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি। রংপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের জিলানী বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে যে ঘটনা ঘটেছে তা পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে পুলিশের কড়া ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রংপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র রয়েছে দুটি। এর মধ্যে নগরীর শাপলা চত্বর এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র-১ এবং কটকিপাড়া এলাকায় বিতরণ কেন্দ্র-২। এ দুুটি বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে রংপুর নগরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। দুটি কেন্দ্রের মধ্যে ২৫ মেগাওয়াট করে দুটি কেন্দ্রে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৫০ মেগাওয়াট। আর গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার। এ দুই কেন্দ্রের মধ্যে বিতরণ কেন্দ্র-১ এ গ্রাহক ২৯ হাজার ও বিতরণ কেন্দ্র-২ এ ৩৬ হাজার। ভোগান্তির শিকার নগরীর গুপ্তপাড়া এলাকার মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সদরুল আলম দুলু জানান, বহুদিন থেকে শুধু শুনেই আসছি এ সমস্যা আর থাকবে না। খুব শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু ঠিক আর হয় না। এক বছর আগেও এমন কথা বলা হয়েছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একটি চক্র এসব করে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলছে। মাহিগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী হাশেম আলী জানান, বিদ্যুৎ কখন আসবে আর কখন থাকবে না তা নিয়ে আমরা বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছি। ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারছি না। অনেক দিন থেকেই শুনে আসছি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সফরমার বসানো হচ্ছে। সেবার কথা বলা হলেও তেমন কোন সেবা নেই। সারা দিনে অন্তত ১৫ থেকে ১৬ বার বিদ্যুৎ যায় আবার আসে। কবি সোহরাব হোসেন দুলাল হারানো দিনের মাহমুদুন্নবীর গাওয়া গানের সুর ধরে বলেন, এ আঁধার কখনও যাবে না মুছে, আমার পৃথিবী থেকে এ গান শুনে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন বিদ্যুতের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তারপরও চলছে সমানতালে লোডশেডিং। তাই আমিও গানের সুরে বলতে চাই ‘এ আঁধার কখনও যাবে না মুছে আমার বাংলাদেশ থেকে।’ রংপুর বিদ্যুৎ বিতরণ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মর্তুজা জানায়, এ বিতরণ কেন্দ্রে ৪০ এমভিএ (মেগাভোল্ট অ্যাম্পায়ার) দুটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফরমার থাকায় এর আওতায় এলাকাগুলোর বিদ্যুৎ বিতরণে তেমন অসুবিধা হয় না। তবে ট্রান্সফরমারসহ কিছু কাজের জন্য মাঝে মধ্যে মাইকযোগে প্রচার চালিয়ে বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ। এদিকে, বিতরণ কেন্দ্র-১ এর আওতাভুক্ত এলাকাগুলোয় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে অন্তত দুবার। এর ফলে প্রচণ্ড গরমে গ্রাহকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে নগরীর মাহিগঞ্জ, সাতমাথা, খাসবাগ, নূরপুর, গুপ্তপাড়া, কামালকাছনা, শালবন, শালবন মিস্ত্রিপাড়া, জুম্মাপাড়া, সেন্ট্রাল রোড, কলেজ রোড, শাপলা, বৈরাগীপাড়া, রবার্টসগঞ্জ, মণ্ডলপাড়া, তাজহাট, বাবুপাড়া, গোসাইবাড়ী, বড় রংপুর। এ বিতরণ কেন্দ্রের গ্রাহক ৩৬ হাজার। এব্যাপারে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদের গণি বলেন, ১৯৯২ সালে এ কেন্দ্রে ২০ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন যে ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে বর্তমানে তা দিয়ে আর চলছে না। কেননা, এর চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহ বেশি। লোড নিতে পারছে না ট্রান্সফরমারটি। তাই ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে নগরের মাহিগঞ্জে আরও একটি ২০ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফরমার বসানো হচ্ছে। কাজ প্রায় শেষের দিকে। এটি চালু হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধের দাবিতে বিক্ষুব্ধ জনতা বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর লালবাগ শান্তিনগর এলাকার কারমাইকেল কলেজ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে রংপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে দরজা-জানালা ভাঙচুর করেছে। এরপর তারা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় রাস্তার দু’পাশের শত শত যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগে কর্মরত এজাজুল ইসলাম নামে এক আনসার কর্মকর্তাকে আহত করে। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে র্যাবকে আহ্বান করা হয়। পরে সকলের হস্তক্ষেপে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আর এসব কারণে আতঙ্কে ভুগছে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রংপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এরপরও আমাদের আতঙ্কে ভুগতে হচ্ছে। উত্তেজিত জনতা ফ্যামিলি কোয়ার্টারসহ অফিসে হামলা করেছে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছি। রংপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের জিলানী বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে যে ঘটনা ঘটেছে তা পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে পুলিশের কড়া ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রংপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীর বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র রয়েছে দুটি। এর মধ্যে নগরীর শাপলা চত্বর এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র-১ এবং কটকিপাড়া এলাকায় বিতরণ কেন্দ্র-২। এ দুুটি বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে রংপুর নগরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। দুটি কেন্দ্রের মধ্যে ২৫ মেগাওয়াট করে দুটি কেন্দ্রে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৫০ মেগাওয়াট। আর গ্রাহক সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার। এ দুই কেন্দ্রের মধ্যে বিতরণ কেন্দ্র-১ এ গ্রাহক ২৯ হাজার ও বিতরণ কেন্দ্র-২ এ ৩৬ হাজার। ভোগান্তির শিকার নগরীর গুপ্তপাড়া এলাকার মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সদরুল আলম দুলু জানান, বহুদিন থেকে শুধু শুনেই আসছি এ সমস্যা আর থাকবে না। খুব শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু ঠিক আর হয় না। এক বছর আগেও এমন কথা বলা হয়েছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে একটি চক্র এসব করে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলছে। মাহিগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী হাশেম আলী জানান, বিদ্যুৎ কখন আসবে আর কখন থাকবে না তা নিয়ে আমরা বেশ দুশ্চিন্তায় রয়েছি। ঠিকভাবে ব্যবসা করতে পারছি না। অনেক দিন থেকেই শুনে আসছি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সফরমার বসানো হচ্ছে। সেবার কথা বলা হলেও তেমন কোন সেবা নেই। সারা দিনে অন্তত ১৫ থেকে ১৬ বার বিদ্যুৎ যায় আবার আসে। কবি সোহরাব হোসেন দুলাল হারানো দিনের মাহমুদুন্নবীর গাওয়া গানের সুর ধরে বলেন, এ আঁধার কখনও যাবে না মুছে, আমার পৃথিবী থেকে এ গান শুনে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন বিদ্যুতের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তারপরও চলছে সমানতালে লোডশেডিং। তাই আমিও গানের সুরে বলতে চাই ‘এ আঁধার কখনও যাবে না মুছে আমার বাংলাদেশ থেকে।’ রংপুর বিদ্যুৎ বিতরণ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মর্তুজা জানায়, এ বিতরণ কেন্দ্রে ৪০ এমভিএ (মেগাভোল্ট অ্যাম্পায়ার) দুটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফরমার থাকায় এর আওতায় এলাকাগুলোর বিদ্যুৎ বিতরণে তেমন অসুবিধা হয় না। তবে ট্রান্সফরমারসহ কিছু কাজের জন্য মাঝে মধ্যে মাইকযোগে প্রচার চালিয়ে বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ। এদিকে, বিতরণ কেন্দ্র-১ এর আওতাভুক্ত এলাকাগুলোয় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে অন্তত দুবার। এর ফলে প্রচণ্ড গরমে গ্রাহকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে নগরীর মাহিগঞ্জ, সাতমাথা, খাসবাগ, নূরপুর, গুপ্তপাড়া, কামালকাছনা, শালবন, শালবন মিস্ত্রিপাড়া, জুম্মাপাড়া, সেন্ট্রাল রোড, কলেজ রোড, শাপলা, বৈরাগীপাড়া, রবার্টসগঞ্জ, মণ্ডলপাড়া, তাজহাট, বাবুপাড়া, গোসাইবাড়ী, বড় রংপুর। এ বিতরণ কেন্দ্রের গ্রাহক ৩৬ হাজার। এব্যাপারে বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্র-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদের গণি বলেন, ১৯৯২ সালে এ কেন্দ্রে ২০ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন যে ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে বর্তমানে তা দিয়ে আর চলছে না। কেননা, এর চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহ বেশি। লোড নিতে পারছে না ট্রান্সফরমারটি। তাই ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে নগরের মাহিগঞ্জে আরও একটি ২০ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফরমার বসানো হচ্ছে। কাজ প্রায় শেষের দিকে। এটি চালু হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।
No comments