পূর্ণ সহায়তা দেবে চীন
বাংলাদেশকে
মধ্যম আয়ের উন্নত জাতিতে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার গৃহীত পরিকল্পনা
রূপকল্প-২০২১ ও ৪১ অর্জনে পূর্ণ সহায়তা দেবে চীন। প্রেসিডেন্ট আবদুল
হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ আশ্বাস দেন সফররত দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী
লিউ ইয়ানদং। গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে সাক্ষাৎটি হয়। প্রেসিডেন্টের প্রেস
সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে সাক্ষাতের বিষয়ে ব্রিফ করেন। জানান,
সাক্ষাৎকালে লিউ ইয়ানদং প্রেসিডেন্টকে আবদুল হামিদকে আশ্বাস দেন যে, চীন
বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১-এর লক্ষ্যসমূহ অর্জনের
ক্ষেত্রে পূর্ণ সহায়তা দেবে। লিউ ইয়ানদংকে স্বাগত জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন,
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকী উদযাপন
উপলক্ষে তার এ সফর দুটি দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও
জোরদার করবে। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে চীনে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ চীন
সফর করেন। এর আগে জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটি সফর করেন। দুটি
সফর ফলপ্রসূ উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, এই সফরগুলো দুই দেশের বন্ধনকে
জোরদার করেছে। শাহজালাল সার কারখানা ও কাজীরটেকে ৭ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী
সেতুসহ চলমান প্রকল্পগুলোতে চীনের সহায়তা প্রশংসা করে প্রেসিডেন্ট চীনের
কাছ থেকে আরও সহায়তা কামনা করেন, যাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি আরও বেগবান
হয়। চীনা উপ-প্রধানমন্ত্রীকে প্রেসিডেন্ট আরও অবহিত করেন যে, বাংলাদেশ
সরকার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় প্রস্তাবিত চীনা অর্থনৈতিক ও
শিল্পাঞ্চলের জন্য ৭৭৪ একর ভূমি বরাদ্দ করেছে। তিনি বাংলাদেশ ও চীনের
মধ্যকার বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ পাট ও
পাটজাত পণ্য আমদানি করায় চীন সরকারের প্রশংসা করেন। প্রেসিডেন্ট চীনা
নেত্রীর এ সফরকালে দুটি দেশের মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কয়েকটি
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বিসিআইএম ইনিশিয়েটিভ
(বাংলাদেশ চীন ভারত মিয়ানমার) এগিয়ে নিয়ে সেটিকে বিসিআইএম ইকোনমিক করিডোর
(বিসিআইএম ইসি) প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চীনের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন,
বাংলাদেশ এই অঞ্চলে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার বিষয়ে আগ্রহী। ‘সিল্ক রোড ফান্ড’
গড়ে তোলার লক্ষ্যে চীনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আবদুল হামিদ আশা প্রকাশ
করেন, এই তহবিল থেকে বাংলাদেশ অবকাঠামো খাতে অর্থ পাবে। বাণিজ্য
ভারসাম্যহীনতার বিষয়ে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ ইয়ানদং বলেন, চীন
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, যাতে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার জন্য এখান
থেকে মানসম্পন্ন পণ্য আমদানি করতে পারে। বাংলাদেশের মন্ত্রণালয় ও
বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের উল্লেখ করে চীনের
উপ-প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এসব সমঝোতা স্মারক বিভিন্ন খাতে বিশেষ
করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে চীনা সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করবে। চীনা
শিক্ষামন্ত্রী ইউয়ান গুইরেন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং
কিয়াং এবং চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফজলুল করিম এবং প্রেসিডেন্ট
কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
No comments