সবকিছুই আজ দ্বিখণ্ডিত এই মূল্যবোধ দিয়ে গণতন্ত্র হবে না -আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ by মনির হায়দার
দেশে
বইপড়া আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান রাজনৈতিক
দলগুলোকে পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত করে দিয়েছে। আজকে সবকিছু
দ্বিখণ্ডিত। এই মূল্যবোধ দিয়ে গণতন্ত্র হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক এ বাংলা উৎসব ও বইমেলার শেষদিনে গত রোববার দেয়া
বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিক হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় শেষদিনের আয়োজনে আরও বক্তৃতা করেন পশ্চিম বঙ্গের বিশ্ব ভারতীর পরিচালক রামকুমার মুখোপাধ্যায়। আগের দিন শনিবারের মতো এদিনও আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের বক্তব্য চলার সময় বার বার চিরকুট দিয়ে তাকে দ্রুত বক্তব্য শেষ করতে বলা হয়। এমনকি একপর্যায়ে কয়েক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে হইচই করে বক্তব্য থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। এরপর তিনি দ্রুত কথা শেষ করেন।
বরাবরই সব রকম রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে থাকা এই বিশিষ্টজন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, স্বধীনতার পর গত সাড়ে চার দশকে যেভাবে দেশ এগিয়ে যাবে বলে আমরা আশা করেছিলাম, বস্তুুত সেভাবে দেশ আগায়নি। তিনি বলেন, যে ব্যর্থতার জন্য দেশ এগুতে পারছে না, সেটা হলো রাজনৈতিক ব্যর্থতা। আর পরের সমস্যাটা হলো সংবিধান। যে সংবিধানের শিকার হয়ে রাজনীতি বিপাকে পড়েছে। এর থেকে রাজনীতি বের হতে পারছে না।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক নেতারা কখনই খারাপ ছিলেন না। কিন্তু তারা খারাপ হয়ে পড়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে সংবিধানের একটি ধারা পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত করে দিয়েছে। এটা করতে গিয়ে পুরোপুরিই সংঘাতের দিকে চলে গেছে দেশের রাজনীতি। এর থেকে মুক্তির পথ আমি আজ বলতে পারছি না। গত শনিবার মেলার দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় তা বোঝাতে চেয়েছি।
এ পর্যায়ে আয়োজকদের কেউ কেউ যখন তাঁর বক্তব্য থামিয়ে দেয়ার জন্য বার বার চিরকুট দিচ্ছিলেন, তখন আক্ষেপের সুরে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আপনারাই বলুন কারা দেশ চালাবে? সেই ধরনের মানুষ কি গড়ে উঠছে? সবগুলো সরকারি ইউনিভার্সিটির যা অবস্থা! সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যাড ইনভেস্ট হচ্ছে এই ইউনিভার্সিটিগুলো। টাকা দিচ্ছে, কিন্তু ইউনিভার্সিটিগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্য মেধা বের করে আনতে পারছে না। সরকার নিজের কারণেই এটা করতে পারছে না। কারণ, রাজনীতি এখন সবকিছুর মধ্যেই ঢুকে পড়েছে। আজকে সবকিছু দ্বিখণ্ডিত। এ অবস্থাই গণতন্ত্রের বড় শত্রু।
আলোকিত মানুষ গড়ার এই কারিগর আরও বলেন, মূল্যবোধের যে মান আমাদের; এই মূল্যবোধ দিয়ে কখনও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। সুশিক্ষা দিয়ে সামাজিক মূল্যবোধকে গড়ে তুলতে হবে। রোধ করতে হবে সামাজিক অবক্ষয়। তাহলেই আবার গণতন্ত্র জেগে উঠবে।
বাংলাদেশের জনগণকে অসহায় অভিহিত করে তিনি বলেন, জনগণ বর্তমানের দুই স্বৈরাচারকে হাতবদল করে নির্বাচিত করছে। একবার এ দলকে তো পরের বার অন্য দলকে। হতাশা থেকেই মানুষ এমনটি করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এক স্বৈরাচারের আচরণে হতাশ হয়ে মানুষ আবার আগের স্বৈরাচারকেই ভোট দিচ্ছে। আর এভাবেই হাতবদল করে স্বৈরতন্ত্র আমাদের গণতন্ত্রের মধ্যে ঢুকে পড়েছে, যা এখন স্থায়ী হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদকে একটু সংশোধন করলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
উগ্রবাদ শুধু ধর্মীয় হয় না উল্লেখ করে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বাঙালিত্বও এক ধরণের উগ্রবাদ। রবীন্দ্রনাথও এক ধরণের উগ্রবাদ। মোল্লা শুধু ধর্মীয় মোল্লা হয় না। বাঙালি মোল্লা হয়। এমনকি রবীন্দ্রনাথ মোল্লাও হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২২শে মে শুক্রবার সন্ধ্যায় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নিউ ইয়র্ক-এর বার্ষিক বাংলা উৎসব ও বইমেলা এবং গত রোববার তা শেষ হয়।
সাংবাদিক হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় শেষদিনের আয়োজনে আরও বক্তৃতা করেন পশ্চিম বঙ্গের বিশ্ব ভারতীর পরিচালক রামকুমার মুখোপাধ্যায়। আগের দিন শনিবারের মতো এদিনও আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের বক্তব্য চলার সময় বার বার চিরকুট দিয়ে তাকে দ্রুত বক্তব্য শেষ করতে বলা হয়। এমনকি একপর্যায়ে কয়েক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে হইচই করে বক্তব্য থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা চালায়। এরপর তিনি দ্রুত কথা শেষ করেন।
বরাবরই সব রকম রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের ঊর্ধ্বে থাকা এই বিশিষ্টজন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, স্বধীনতার পর গত সাড়ে চার দশকে যেভাবে দেশ এগিয়ে যাবে বলে আমরা আশা করেছিলাম, বস্তুুত সেভাবে দেশ আগায়নি। তিনি বলেন, যে ব্যর্থতার জন্য দেশ এগুতে পারছে না, সেটা হলো রাজনৈতিক ব্যর্থতা। আর পরের সমস্যাটা হলো সংবিধান। যে সংবিধানের শিকার হয়ে রাজনীতি বিপাকে পড়েছে। এর থেকে রাজনীতি বের হতে পারছে না।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আমাদের রাজনৈতিক নেতারা কখনই খারাপ ছিলেন না। কিন্তু তারা খারাপ হয়ে পড়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে সংবিধানের একটি ধারা পরস্পরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে লিপ্ত করে দিয়েছে। এটা করতে গিয়ে পুরোপুরিই সংঘাতের দিকে চলে গেছে দেশের রাজনীতি। এর থেকে মুক্তির পথ আমি আজ বলতে পারছি না। গত শনিবার মেলার দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় তা বোঝাতে চেয়েছি।
এ পর্যায়ে আয়োজকদের কেউ কেউ যখন তাঁর বক্তব্য থামিয়ে দেয়ার জন্য বার বার চিরকুট দিচ্ছিলেন, তখন আক্ষেপের সুরে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আপনারাই বলুন কারা দেশ চালাবে? সেই ধরনের মানুষ কি গড়ে উঠছে? সবগুলো সরকারি ইউনিভার্সিটির যা অবস্থা! সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যাড ইনভেস্ট হচ্ছে এই ইউনিভার্সিটিগুলো। টাকা দিচ্ছে, কিন্তু ইউনিভার্সিটিগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্য মেধা বের করে আনতে পারছে না। সরকার নিজের কারণেই এটা করতে পারছে না। কারণ, রাজনীতি এখন সবকিছুর মধ্যেই ঢুকে পড়েছে। আজকে সবকিছু দ্বিখণ্ডিত। এ অবস্থাই গণতন্ত্রের বড় শত্রু।
আলোকিত মানুষ গড়ার এই কারিগর আরও বলেন, মূল্যবোধের যে মান আমাদের; এই মূল্যবোধ দিয়ে কখনও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। সুশিক্ষা দিয়ে সামাজিক মূল্যবোধকে গড়ে তুলতে হবে। রোধ করতে হবে সামাজিক অবক্ষয়। তাহলেই আবার গণতন্ত্র জেগে উঠবে।
বাংলাদেশের জনগণকে অসহায় অভিহিত করে তিনি বলেন, জনগণ বর্তমানের দুই স্বৈরাচারকে হাতবদল করে নির্বাচিত করছে। একবার এ দলকে তো পরের বার অন্য দলকে। হতাশা থেকেই মানুষ এমনটি করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এক স্বৈরাচারের আচরণে হতাশ হয়ে মানুষ আবার আগের স্বৈরাচারকেই ভোট দিচ্ছে। আর এভাবেই হাতবদল করে স্বৈরতন্ত্র আমাদের গণতন্ত্রের মধ্যে ঢুকে পড়েছে, যা এখন স্থায়ী হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদকে একটু সংশোধন করলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
উগ্রবাদ শুধু ধর্মীয় হয় না উল্লেখ করে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বাঙালিত্বও এক ধরণের উগ্রবাদ। রবীন্দ্রনাথও এক ধরণের উগ্রবাদ। মোল্লা শুধু ধর্মীয় মোল্লা হয় না। বাঙালি মোল্লা হয়। এমনকি রবীন্দ্রনাথ মোল্লাও হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২২শে মে শুক্রবার সন্ধ্যায় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নিউ ইয়র্ক-এর বার্ষিক বাংলা উৎসব ও বইমেলা এবং গত রোববার তা শেষ হয়।
No comments