চীনে স্বপ্নপূরণের চেষ্টা কখনো থেমে থাকেনি
চীনে
অনেক উত্থান-পতন হলেও স্বপ্নপূরণের চেষ্টা কখনো থেমে থাকেনি বলে মন্তব্য
করেছেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ ইয়ানডুং। তিনি বলেন, ১৩০ কোটি মানুষকে
নিয়ে ‘চীনা স্বপ্ন’ পূরণের লক্ষ্যে কয়েক প্রজন্ম ধরে নিরলস প্রচেষ্টা
চালাতে হবে।
গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তৃতায় চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে তাঁর তিন দিনের সফরের গতকাল ছিল দ্বিতীয় দিন।
লিউ ইয়ানডুং বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘এটিই আমার প্রথম বাংলাদেশ সফর। কিন্তু বাংলাদেশ আমার কাছে পুরোপুরি অচিন দেশ নয়। বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। সুবিখ্যাত শিক্ষাঙ্গন হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অসংখ্য গুণী ও প্রতিভাবান মানুষ তৈরি করে আসছে। এর মধ্যে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সত্যেন্দ্র নাথ বসু, বুদ্ধদেব বসু প্রমুখ।’ তিনি বলেন, চীন-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিকাশের ক্ষেত্রেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রগামীর ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৫৬ ও ১৯৬৫ সালে চীনের তৎকালীন জাতীয় গণকংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির উপসভাপতি সুং শিং লিং এবং প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই পৃথকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছিলেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থকে তাঁদের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হয়।
চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনা সরকার এখন থেকে প্রতিবছর ১০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেবে। এ ছাড়া এ বছর ১০০ জন তরুণ-তরুণীকে চীনের কনফুশিয়াস সদর দপ্তরে অনুেষ্ঠয় শান্তি ক্যাম্পে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের চীনা গবেষণা কেন্দ্রে কম্পিউটারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। তিনি বলেন, চীনে অনেক উত্থান-পতন হলেও স্বপ্নপূরণের চেষ্টা কখনো থেমে থাকেনি। ১৯৭৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত চীনের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পরিমাণ ২৮ দশমিক ৩ গুণ বেড়েছে। আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে ২০৩ গুণ। মাথাপিছু জিডিপি ১৯ দশমিক ৮ গুণ বেড়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে ৬০ কোটি মানুষের। জনগণের জীবনমানেরও অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এরপরও চীন বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ। মোট জিডিপির দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও মাথাপিছু জিডিপির দিক থেকে অবস্থান এখনো ৮০তমের পরে। জাতিসংঘের মানদণ্ড অনুযায়ী চীনে এখনো ১০ কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। ১৩০ কোটি মানুষকে নিয়ে আধুনিকায়ন এগিয়ে নেওয়া এবং জাতীয় পুনরুত্থানে ‘চীনা স্বপ্ন’ পূরণের লক্ষ্যে কয়েক প্রজন্ম ধরে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
লিউ ইয়ানডুং বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে ছয় শতাংশে রয়েছে। ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রস্তাবকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডর নির্মাণের প্রস্তাবটি খুব ভালো। তিনি জানান, সহযোগিতা ও পারস্পরিক কল্যাণমূলক নতুন ধরনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে মানবজাতির জন্য এক অভিন্ন স্বার্থভোগী গোষ্ঠী তৈরি করতে ইচ্ছুক চীন। বর্তমান বিশ্বে কোনো দেশ অন্যের সহযোগিতা ছাড়া এগিয়ে যেতে পারে না, তাই সবাই এক ধরনের অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। জনগণের কল্যাণের ভিত্তিতে চীন-বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রজন্মের পর প্রজন্মে সঞ্চারিত করা উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বক্তৃতাকালে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্তরিক স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। হাজার বছরের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে উভয় দেশের। এ প্রসঙ্গে তিনি ঐতিহাসিক সিল্ক রোডের মাধ্যমে ২০০০ বছর আগে থেকেই উভয় ভূখণ্ডের মধ্যকার বাণিজ্যিক লেনদেনের কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান।
আজ যাবেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে: চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ ইয়ানডুং আজ মঙ্গলবার বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুশিয়াস ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। কনফুশিয়াস ইনস্টিটিউটের এক দশক পূর্তি উপলক্ষে তাঁর সম্মানে বিশ্ববিদ্যালয়টি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তৃতায় চীনা উপপ্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশে তাঁর তিন দিনের সফরের গতকাল ছিল দ্বিতীয় দিন।
লিউ ইয়ানডুং বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘এটিই আমার প্রথম বাংলাদেশ সফর। কিন্তু বাংলাদেশ আমার কাছে পুরোপুরি অচিন দেশ নয়। বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। সুবিখ্যাত শিক্ষাঙ্গন হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অসংখ্য গুণী ও প্রতিভাবান মানুষ তৈরি করে আসছে। এর মধ্যে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সত্যেন্দ্র নাথ বসু, বুদ্ধদেব বসু প্রমুখ।’ তিনি বলেন, চীন-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিকাশের ক্ষেত্রেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রগামীর ভূমিকা পালন করে আসছে। ১৯৫৬ ও ১৯৬৫ সালে চীনের তৎকালীন জাতীয় গণকংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির উপসভাপতি সুং শিং লিং এবং প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই পৃথকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছিলেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থকে তাঁদের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হয়।
চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনা সরকার এখন থেকে প্রতিবছর ১০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেবে। এ ছাড়া এ বছর ১০০ জন তরুণ-তরুণীকে চীনের কনফুশিয়াস সদর দপ্তরে অনুেষ্ঠয় শান্তি ক্যাম্পে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের চীনা গবেষণা কেন্দ্রে কম্পিউটারসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি দেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। তিনি বলেন, চীনে অনেক উত্থান-পতন হলেও স্বপ্নপূরণের চেষ্টা কখনো থেমে থাকেনি। ১৯৭৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত চীনের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পরিমাণ ২৮ দশমিক ৩ গুণ বেড়েছে। আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে ২০৩ গুণ। মাথাপিছু জিডিপি ১৯ দশমিক ৮ গুণ বেড়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে ৬০ কোটি মানুষের। জনগণের জীবনমানেরও অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এরপরও চীন বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ। মোট জিডিপির দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও মাথাপিছু জিডিপির দিক থেকে অবস্থান এখনো ৮০তমের পরে। জাতিসংঘের মানদণ্ড অনুযায়ী চীনে এখনো ১০ কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। ১৩০ কোটি মানুষকে নিয়ে আধুনিকায়ন এগিয়ে নেওয়া এবং জাতীয় পুনরুত্থানে ‘চীনা স্বপ্ন’ পূরণের লক্ষ্যে কয়েক প্রজন্ম ধরে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
লিউ ইয়ানডুং বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে ছয় শতাংশে রয়েছে। ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রস্তাবকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডর নির্মাণের প্রস্তাবটি খুব ভালো। তিনি জানান, সহযোগিতা ও পারস্পরিক কল্যাণমূলক নতুন ধরনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে মানবজাতির জন্য এক অভিন্ন স্বার্থভোগী গোষ্ঠী তৈরি করতে ইচ্ছুক চীন। বর্তমান বিশ্বে কোনো দেশ অন্যের সহযোগিতা ছাড়া এগিয়ে যেতে পারে না, তাই সবাই এক ধরনের অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। জনগণের কল্যাণের ভিত্তিতে চীন-বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রজন্মের পর প্রজন্মে সঞ্চারিত করা উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বক্তৃতাকালে চীনের উপপ্রধানমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্তরিক স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। হাজার বছরের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে উভয় দেশের। এ প্রসঙ্গে তিনি ঐতিহাসিক সিল্ক রোডের মাধ্যমে ২০০০ বছর আগে থেকেই উভয় ভূখণ্ডের মধ্যকার বাণিজ্যিক লেনদেনের কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান।
আজ যাবেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে: চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী লিউ ইয়ানডুং আজ মঙ্গলবার বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুশিয়াস ইনস্টিটিউটের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। কনফুশিয়াস ইনস্টিটিউটের এক দশক পূর্তি উপলক্ষে তাঁর সম্মানে বিশ্ববিদ্যালয়টি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
No comments