ত্রিপুরার প্রথম চাওয়া চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ -সাক্ষাৎকারে : মানিক সরকার
বাংলাদেশের
কাছে ত্রিপুরার প্রথম চাওয়া হবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুযোগ। এ
কথা বলেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। গতকাল বিবিসিকে দেয়া
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ত্রিপুরাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো
যদি চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে পারে, সেখান থেকে মালামাল পরিবহনের সুযোগ
পায় তাহলে লাভ হবে দুই দেশেরই। বিবিসি জানায়, মানিক সরকার বাংলাদেশের কাছ
থেকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ এবং সড়ক পথে ট্রানজিটের সুবিধাও
চেয়েছেন। তিনি বলেন, ভারতের পার্লামেন্টে স্থল সীমান্ত বিল পাস হওয়ার পর
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যে আস্থা তৈরি হয়েছে তাতে তিনি আশা করছেন যে, দিল্লি
এবার এই বিষয়গুলোও ঢাকার কাছে উত্থাপন করবে। ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ
কেন্দ্র থেকে এ বছরেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরে মানিক সরকারও তার
সঙ্গী হবেন। আর এই পটভূমিতে ত্রিপুরার দাবিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও
বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ভারতের চারটি
রাজ্য- পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরার মধ্যে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ
সরকারের সবচেয়ে ভাল সম্পর্ক ত্রিপুরার সঙ্গেই। ত্রিপুরার গত ১৭ বছরের
মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
ব্যক্তিগত হৃদ্যতার কথাও সুবিদিত। মানিক সরকার বলেন, আমাদের প্রস্তাবটি
বাংলাদেশের বিবেচনায় আছে বলেই আমি জানি। তারা সরাসরি এটি কখনও নাকচ করে
দেননি। আবার পরিষ্কার করে ছাড়পত্রও দেননি। জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র
মোদির প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসার কথা। সেই সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী যে তার সফরসঙ্গী হবেন, তা মোটামুটি নিশ্চিত। ধারণা
করা হচ্ছে, সেই সফরে মানিক সরকার নিজেই এই দাবিগুলোর পক্ষে সওয়াল করবেন। আর
তাতে সমর্থন থাকবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারেরও। বিবিসি জানায়, ত্রিপুরার
প্রয়োজনে বাংলাদেশ এর আগে একাধিকবার তাদের নদীপথ ও আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার
করতে দিয়েছে। এখন মানিক সরকার সড়কপথেও বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে যোগাযোগের
সুবিধা চাইছেন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য ইদানীংকালে আগরতলা-ঢাকা
বাস পরিষেবা বার বার ব্যাহত হয়েছে। কিন্তু ত্রিপুরা সরকার বলছে, এই পরিষেবা
কলকাতা অবধি সমপ্রসারিত করলে সমস্যা অনেকটা মেটে। মানিক সরকার বলেন, সময়
সময় এই পরিষেবা চলে। আবার থমকে যায়। এই মুহূর্তে ত্রিপুরার লোকজনকে আগরতলা
থেকে ঢাকায় গিয়ে আবার কলকাতার বাস ধরার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এভাবেই চলে
আসছে। আমরা চাইছি বাংলাদেশ যেন আমাদের বাসকে আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে সরাসরি
পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত অবধি যাওয়ার অনুমতি দেয়। এতে আমাদের অনেক সুবিধে হবে।
ত্রিপুরার বাস যদি আগরতলা থেকে ঢাকা হয়ে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ যাওয়ার অনুমতি
পায়, তাহলে সেটা হবে বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারতের সড়কপথে ট্রানজিট পাওয়ারই
সামিল। এই মুহূর্তে ঢাকা তা দিতে পারবে কি না সেটা অন্য প্রশ্ন। কিন্তু
সম্ভবত শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের সুবাদেই মানিক সরকার এ বিষয়ে
যথেষ্ট আশাবাদী।
No comments