পালপাড়া ‘পোড়ানো’ মোরশেদ গ্রেপ্তার
দীর্ঘ
এক যুগ সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক পাল পরিবারের ওপর
জুলুম-নির্যাতন চালানোর পর অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছে বগুড়ার সন্ত্রাসী মোরশেদ
আলম (৩৫)। রোববার রাতে তাকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল সোমবার তার ফাঁসির
দাবিতে শাজাহানপুর থানাও ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
পুলিশ জানায়, বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের নয়মাইল এলাকায় বগুড়া অভিমুখী একটি নৈশকোচ থেকে রোববার রাতে মোরশেদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ হেফাজতে থাকা মোরশেদ বলেছে, আত্মসমর্পণ করতে ঢাকা থেকে বগুড়ায় আসার পথে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মোজাম্মেল হকের ভাষ্য, গত রোববার পালপাড়ায় গিয়ে তিনি নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মোরশেদের অত্যাচারের কথা শুনছিলেন। তখন আড়াল থেকে এই কথোপকথন শুনছিলেন মোরশেদের বড় ভাই তারাজুল ইসলাম ও তারাজুলের শ্বশুর এমদাদুল হক। বিষয়টি টের পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের আটক করা হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা মোরশেদকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। মোরশেদ আত্মসমর্পণ করতে রাতেই নৈশকোচে ঢাকা থেকে বগুড়ায় রওনা দেয়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কোচটি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর পালপাড়ায় সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে মোরশেদকে। অন্যদিকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।’
থানা ঘেরাও: মোরশেদকে গতকাল থানায় নেওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন পালপাড়ার নির্যাতিত কয়েক শ নারী-পুরুষ। তার ফাঁসি ও তাকে যারা প্রশ্রয় দিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল করেন তারা। সাড়ে চার কিলোমিটার পথ হেঁটে মিছিলসহকারে উপজেলা সদরে গিয়ে বেলা পৌনে একটা থেকে পৌনে দুইটা পর্যন্ত শাজাহানপুর থানা ঘেরাও করে রাখে তারা। এ সময় মোরশেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, তার বিরুদ্ধে অতীতের সব মামলা সচল ও সহযোগীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে শান্ত হন পালপাড়ার বাসিন্দারা।
শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া পালপাড়ায় সংখ্যালঘু শতাধিক পাল পরিবারের বসবাস। মৃৎশিল্প ও প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা চালান দরিদ্র এই পরিবারগুলোর লোকেরা। প্রায় এক যুগ ধরে তাঁদের ওপরই ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল আড়িয়া রহিমাবাদ দক্ষিণপাড়ার মোরশেদ আলম। পাল পরিবারের অবিবাহিত মেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়া, গৃহবধূদের নির্যাতন, মাদক ব্যবসা, জবরদখল, চাঁদাবাজি, হত্যা, বসতবাড়ি ও প্রতিমা ভাঙচুরের মতো নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার অত্যাচারে দেশ ছেড়ে চলে গেছে কয়েকটি পরিবার। ভয়ে-আতঙ্কে গত দুই সপ্তাহ ধরে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছিলেন পালপাড়ার বাসিন্দারা। এরই মধ্যে তার গ্রেপ্তারে বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি নেমে আসে।
আসকের প্রতিনিধিদলের পরিদর্শন: আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল সকালে পালপাড়া পরিদর্শন করেন। এ সময় নির্যাতিত নারী-পুরুষ মোরশেদ ও তার সহযোগীদের অত্যাচার-নির্যাতনের কাহিনি শোনান সদস্যদের। প্রতিনিধি দলে ছিলেন আসকের প্রধান তদন্ত ও প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা জন অসিত দাস এবং আসকের আইনজীবী নাহিদ শামস।
জন অসিত দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়া ও আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া এক সন্ত্রাসীর পক্ষে এত বছর এভাবে একটি পাড়ার লোকজনকে জিম্মি করে অত্যাচার-নির্যাতন চালানো কোনোভাবে সম্ভব না। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর তৎপর হয়েছে প্রশাসন। মোরশেদকে গ্রেপ্তার করাটা শেষ কথা নয়। পালপাড়ায় এখনো আতঙ্ক কাটেনি। সেখানকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার।’
গণশুনানি: সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে আজ মঙ্গলবার পালপাড়ায় গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শাজাহানপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুবায়েত খান এই গণশুনানির নোটিশ করেছেন।
গত শনিবার প্রথম আলোয় ‘পালপাড়া পোড়াচ্ছে এক সন্ত্রাসী’ শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপা হয়। গতকাল এ বিষয়ে ছাপা হয়েছে সম্পাদকীয়।
পুলিশ জানায়, বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের নয়মাইল এলাকায় বগুড়া অভিমুখী একটি নৈশকোচ থেকে রোববার রাতে মোরশেদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ হেফাজতে থাকা মোরশেদ বলেছে, আত্মসমর্পণ করতে ঢাকা থেকে বগুড়ায় আসার পথে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মোজাম্মেল হকের ভাষ্য, গত রোববার পালপাড়ায় গিয়ে তিনি নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে মোরশেদের অত্যাচারের কথা শুনছিলেন। তখন আড়াল থেকে এই কথোপকথন শুনছিলেন মোরশেদের বড় ভাই তারাজুল ইসলাম ও তারাজুলের শ্বশুর এমদাদুল হক। বিষয়টি টের পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের আটক করা হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা মোরশেদকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। মোরশেদ আত্মসমর্পণ করতে রাতেই নৈশকোচে ঢাকা থেকে বগুড়ায় রওনা দেয়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কোচটি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর পালপাড়ায় সন্ত্রাসী হামলা ও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে মোরশেদকে। অন্যদিকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।’
থানা ঘেরাও: মোরশেদকে গতকাল থানায় নেওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন পালপাড়ার নির্যাতিত কয়েক শ নারী-পুরুষ। তার ফাঁসি ও তাকে যারা প্রশ্রয় দিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল করেন তারা। সাড়ে চার কিলোমিটার পথ হেঁটে মিছিলসহকারে উপজেলা সদরে গিয়ে বেলা পৌনে একটা থেকে পৌনে দুইটা পর্যন্ত শাজাহানপুর থানা ঘেরাও করে রাখে তারা। এ সময় মোরশেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, তার বিরুদ্ধে অতীতের সব মামলা সচল ও সহযোগীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে শান্ত হন পালপাড়ার বাসিন্দারা।
শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া পালপাড়ায় সংখ্যালঘু শতাধিক পাল পরিবারের বসবাস। মৃৎশিল্প ও প্রতিমা তৈরি করে জীবিকা চালান দরিদ্র এই পরিবারগুলোর লোকেরা। প্রায় এক যুগ ধরে তাঁদের ওপরই ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল আড়িয়া রহিমাবাদ দক্ষিণপাড়ার মোরশেদ আলম। পাল পরিবারের অবিবাহিত মেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়া, গৃহবধূদের নির্যাতন, মাদক ব্যবসা, জবরদখল, চাঁদাবাজি, হত্যা, বসতবাড়ি ও প্রতিমা ভাঙচুরের মতো নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার অত্যাচারে দেশ ছেড়ে চলে গেছে কয়েকটি পরিবার। ভয়ে-আতঙ্কে গত দুই সপ্তাহ ধরে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছিলেন পালপাড়ার বাসিন্দারা। এরই মধ্যে তার গ্রেপ্তারে বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি নেমে আসে।
আসকের প্রতিনিধিদলের পরিদর্শন: আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল সকালে পালপাড়া পরিদর্শন করেন। এ সময় নির্যাতিত নারী-পুরুষ মোরশেদ ও তার সহযোগীদের অত্যাচার-নির্যাতনের কাহিনি শোনান সদস্যদের। প্রতিনিধি দলে ছিলেন আসকের প্রধান তদন্ত ও প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা জন অসিত দাস এবং আসকের আইনজীবী নাহিদ শামস।
জন অসিত দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়া ও আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া এক সন্ত্রাসীর পক্ষে এত বছর এভাবে একটি পাড়ার লোকজনকে জিম্মি করে অত্যাচার-নির্যাতন চালানো কোনোভাবে সম্ভব না। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পর তৎপর হয়েছে প্রশাসন। মোরশেদকে গ্রেপ্তার করাটা শেষ কথা নয়। পালপাড়ায় এখনো আতঙ্ক কাটেনি। সেখানকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার।’
গণশুনানি: সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে আজ মঙ্গলবার পালপাড়ায় গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শাজাহানপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রুবায়েত খান এই গণশুনানির নোটিশ করেছেন।
গত শনিবার প্রথম আলোয় ‘পালপাড়া পোড়াচ্ছে এক সন্ত্রাসী’ শিরোনামে প্রতিবেদন ছাপা হয়। গতকাল এ বিষয়ে ছাপা হয়েছে সম্পাদকীয়।
No comments