৪২ বছর কোমায় থাকার পর অরুণার মৃত্যু
দীর্ঘ
৪২টি বছর কোমায় ছিলেন তিনি। সেই কোমা বা অচেতন অবস্থা থেকে আর ফেরা হলো না
তার। ২৫ বছর আগে ধর্ষণের শিকার নার্স অরুণা শানবাগ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে
৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা) মৃত্যুবরণ করেন। ৬ দিন আগে নিউমোনিয়ায়
অক্রান্ত হন অরুণা। তাকে মুম্বইয়ের কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালের
নিবিড় পরিচর্যা কক্ষে রাখা হয়। ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। এ খবর দিয়েছে
অনলাইন বিবিসি। ১৯৭৩ সালের ২৭শে নভেম্বরের ঘটনা। ২৫ বছর বয়সে পেশায় সেবিকা
অরুণা শানবাগ হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী সোহনলাল বাল্মিকী কর্তৃক
ধর্ষণের শিকার হন। সোহনলাল অরুণার গলায় লোহার চেইন পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধ
করে হত্যার চেষ্টা করে। অরুণাকে উদ্ধার করে জরুরি চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু,
ওই ঘটনার পর থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি তার। চিকিৎসকরা জানালেন, অরুণার
মস্তিষ্ক বিকল হয়ে গেছে। এদিকে ভারতীয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার জানিয়েছে,
হাসপাতালের খাবার চুরির জন্য সোহনলালকে ভর্ৎসনা করেছিলেন অরুণা। সেটাই কাল
হয় ওই নার্সের জন্য। হাসপাতালের কাজ শেষে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন
অরুণা। হাসপাতালের বেজমেন্টে পোশাক পরিবর্তনের সময় সোহনলাল তার ওপর পাশবিক
নির্যাতন চালায়। ধর্ষণের পর কুকুরের চেইন দিয়ে শ্বাসরোধ করে অরুণাকে হত্যার
চেষ্টা করে সোহনলাল এবং সেখানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। প্রায় ১১ ঘণ্টা পর
বেজমেন্ট থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়া তাকে। শ্বাসরোধের ফলে
মস্তিষ্কে অক্সিজেন প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। দৃষ্টিশক্তিও হারান অরুণা। তাকে
উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন থেকেই একটি কক্ষে কোমায় ৪২টি বছর
কাটিয়ে দেন তিনি। অরুণাকে খাওয়ানো হতো নাক দিয়ে। ওদিকে ডাকাতি ও হত্যা
চেষ্টার অভিযোগে সোহনলালকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তার ৭ বছরের কারাদ- হয়।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে ওই নার্সের স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবিতে আবেদন জানানো
হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু, অরুণা শানবাগকে সারিয়ে তোলার চেষ্টা চলছে,
এমন যুক্তিতে সে আবেদন বাতিল করা হয়। ভারতে যন্ত্রণাহীন মৃত্যু সম্পর্কিত
আইনকে প্রশ্নবিদ্ধ করলো এ মৃত্যু। নতুন করে উস্কে দিলো বিতর্ক।
No comments