৬০ ঘাটে লোক পাচার থাইল্যান্ডে বসে নেতৃত্ব দিচ্ছে মালয়েশীয় নারী
সাগরপথে
অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে সারা দেশে নৌ-পথের ৬০টি ঘাটকে চিহ্নিত
করেছে পুলিশ। এসব ঘাট থেকে লোকজনকে ট্রলারযোগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র
পাড়ি দিচ্ছে দালাল চক্র। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারে পাঠানো
এক তদন্ত প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে বলে মানবজমিনকে জানিয়েছেন অতিরিক্ত
পুলিশ কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার। এ বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেদনটি কয়েক
মাস আগে আমরা কক্সবাজার, টেকনাফসহ বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে তৈরি করেছি। এখানে
৬০টি ঘাটের মধ্যে ৩০টির অবস্থা খুবই উদ্বেগজনক। কারণ এসব ঘাট থেকে প্রচুর
লোক প্রতিদিন সাগরপথে বিদেশে পাচার হচ্ছে।
পুলিশের প্রতিবেদনটি ঘেঁটে দেখা যায়, কক্সবাজার শহরের নুনিয়া ছড়া, ফিশারি ঘাট, নাজিরার টেক, সমিতি পাড়া ঘাট, কলাতলী ঘাট, ঈদগাহ ঘাট, খুরুশকূল ঘাট, চৌফলদন্ডি ঘাট, পিএমখালী ঘাট, মহেশখালীর সোনাদিয়া, গোরপঘাটা, কুতুবজোম ঘাট, ধলঘাটা, উখিয়ার সোনারপাড়া, রেজুরখাল, ইনানী, ছেপটখালী, মনখালী, শফিরবিল, টেকনাফের বাহার ছড়া, হাবির ছড়া, বড়ডেইল, মহেশখালী পাড়া, সাবরাং, নয়াপাড়া, কাটাবুনিয়া, খুরের মুখ, শাহপরীর দ্বীপ, ঘোলারপাড়া, মাঝের পাড়া, পশ্চিমপাড়া, জালিয়াপাড়া, হাদুরছড়া, জাহাজপুরা, কচ্ছপিয়া, শ্যামলপুর, চকরিয়া থানার বদরখালী, সুন্দরবন, পেকুয়া থানার মগনামা, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী, আনোয়ারা, পটিয়ার শিকলবাহা, গহিরা, সন্দ্বীপের উপকূলীয় ঘাট, চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী, বন্দর, পতেঙ্গার উপকূলীয় ঘাট, নোয়াখালীর চরজব্বার, হাতিয়ার নলচিরা ঘাট, জাহাজমারা ঘাট, পটুয়াখালীর মনপুরা, সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা, বরঘোনার উপকূলীয় এলাকা, খুলনার উপকূলীয় এলাকাসহ মোট ৬০টি ঘাট দিয়ে প্রতিদিন পাচার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, লোক পাচারের সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছে মায়ানমারের কোস্টগার্ডের সদস্যরাও। ভালো চাকরির লোভে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে লাশ হচ্ছে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষরা। স্বল্প সময়ে লাখপতি থেকে কোটিপতি হওয়ার ইচ্ছা তাদের ডেকে নিয়ে যাচ্ছে সর্বনাশা সমুদ্রে। খপ্পড়ে পড়ছে ভয়ংকর দালাল চক্রের। গিলে খাচ্ছে সাগরের প্রাণীরা।
সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়া নিয়ে এমনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হেডকোয়ার্টার গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে নিয়ে গঠিত কমিটি ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনটি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। এতে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য বদি ও তার ভাইসহ অনেক প্রভাবশালী মহলের নাম রয়েছে।
পুলিশ জানায়, দেশের বাইরে থাইল্যান্ডে বসে নেতৃত্ব দিচ্ছে মানাকিং নামের মালয়েশীয় এক নারী। বাংলাদেশে রয়েছে টেকনাফের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির স্বজন মংমং সেন রাখাইন। এই মংমং সেন রাখাইন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ৭ জনের মধ্যে ৩ নম্বরে থাকা ইয়াবা কারবারি। ১৩ই ডিসেম্বর কক্সবাজার পুলিশ তাকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে।
পাচারকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যারা যেতে চায় তাদের আটকিয়ে রাখে। এরপর তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। চাহিদামতো যারা টাকা দিতে পারে না তাদের ফেলে দেয়া হয় থাইল্যান্ডের র্যাংডং উপকূলীয় এলাকায়। টাকা লেনদেন হয় থাইল্যান্ড-মিয়ানমারের মধ্যবর্তী কতাংমিউ নামক স্থানে।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবেদনটি তৈরিতে সময় লেগেছে প্রায় দেড় মাস। এতে বলা হয়েছে, ২০০০ সাল থেকে টেকনাফ দিয়ে মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে লোক পাচার শুরু হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পাচার হয়েছে। গত ৫ বছরে সাগর দিয়ে অবৈধভাবে পাচারের সময় ২ হাজার ৭৩৩ জনকে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলার সদস্যরা। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২৪২টি। আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৩৫৫ জনকে।
বিদেশে অবৈধ পথে লোক পাঠিয়ে কোটিপতি বনে গেছে দেশের শীর্ষ ২৬ হুন্ডি ব্যবসায়ী। গত ৫ বছরে এসব ব্যক্তির অনেকের ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। গোপনে মোটা অংকের সুদের মাধ্যমে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা লোক পাঠাতো সিঙ্গাপুর, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে। এসব ব্যবসায়ীকে ধরতে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের গোয়েন্দা পুলিশ।
তবে অভিযুক্তদের মধ্যে ইসলাম নামের যে ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে তিনি টেকনাফ পৌরসভার সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই ও পৌরসভার প্যানল মেয়র-১ মুজিবুর রহমানের প্রধান সহযোগী বলে লেখা হয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, হুন্ডি ব্যবসায়ীরা এতটাই শক্তিশালী যে তারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে ফেলে। বিভিন্ন ঘটনায় তাদের নাম উঠে আসলেও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় না।
প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার মানবজমিনকে বলেন, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা তৈরি করে আমরা ঢাকায় হেডকোয়ার্টারে পাঠিয়েছি। সেখানে ২৬ জনের নাম রয়েছে। এসব ব্যক্তি কয়েক কোটি টাকার মালিক। অবৈধভাবে লোক পাঠিয়ে এরা মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করতো।
তিনি আরও বলেন, দু-একজন ধরা পড়ে এখন কারাগারে। বাকিদের বেশির ভাগই পলাতক। আমরা তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শুনেছি দেশের বাইরেও তাদের পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে তারা হুন্ডি ব্যবসা করে। বিষয়টি পুলিশের হেডকোয়ার্টারকে জানানো হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশের প্রতিবেদনটি ঘেঁটে দেখা যায়, কক্সবাজার শহরের নুনিয়া ছড়া, ফিশারি ঘাট, নাজিরার টেক, সমিতি পাড়া ঘাট, কলাতলী ঘাট, ঈদগাহ ঘাট, খুরুশকূল ঘাট, চৌফলদন্ডি ঘাট, পিএমখালী ঘাট, মহেশখালীর সোনাদিয়া, গোরপঘাটা, কুতুবজোম ঘাট, ধলঘাটা, উখিয়ার সোনারপাড়া, রেজুরখাল, ইনানী, ছেপটখালী, মনখালী, শফিরবিল, টেকনাফের বাহার ছড়া, হাবির ছড়া, বড়ডেইল, মহেশখালী পাড়া, সাবরাং, নয়াপাড়া, কাটাবুনিয়া, খুরের মুখ, শাহপরীর দ্বীপ, ঘোলারপাড়া, মাঝের পাড়া, পশ্চিমপাড়া, জালিয়াপাড়া, হাদুরছড়া, জাহাজপুরা, কচ্ছপিয়া, শ্যামলপুর, চকরিয়া থানার বদরখালী, সুন্দরবন, পেকুয়া থানার মগনামা, চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী, আনোয়ারা, পটিয়ার শিকলবাহা, গহিরা, সন্দ্বীপের উপকূলীয় ঘাট, চট্টগ্রাম মহানগরীর কর্ণফুলী, বন্দর, পতেঙ্গার উপকূলীয় ঘাট, নোয়াখালীর চরজব্বার, হাতিয়ার নলচিরা ঘাট, জাহাজমারা ঘাট, পটুয়াখালীর মনপুরা, সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা, বরঘোনার উপকূলীয় এলাকা, খুলনার উপকূলীয় এলাকাসহ মোট ৬০টি ঘাট দিয়ে প্রতিদিন পাচার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, লোক পাচারের সিন্ডিকেটে জড়িত রয়েছে মায়ানমারের কোস্টগার্ডের সদস্যরাও। ভালো চাকরির লোভে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে লাশ হচ্ছে এদেশের খেটে খাওয়া মানুষরা। স্বল্প সময়ে লাখপতি থেকে কোটিপতি হওয়ার ইচ্ছা তাদের ডেকে নিয়ে যাচ্ছে সর্বনাশা সমুদ্রে। খপ্পড়ে পড়ছে ভয়ংকর দালাল চক্রের। গিলে খাচ্ছে সাগরের প্রাণীরা।
সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়া নিয়ে এমনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হেডকোয়ার্টার গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে নিয়ে গঠিত কমিটি ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনটি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। এতে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য বদি ও তার ভাইসহ অনেক প্রভাবশালী মহলের নাম রয়েছে।
পুলিশ জানায়, দেশের বাইরে থাইল্যান্ডে বসে নেতৃত্ব দিচ্ছে মানাকিং নামের মালয়েশীয় এক নারী। বাংলাদেশে রয়েছে টেকনাফের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির স্বজন মংমং সেন রাখাইন। এই মংমং সেন রাখাইন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ৭ জনের মধ্যে ৩ নম্বরে থাকা ইয়াবা কারবারি। ১৩ই ডিসেম্বর কক্সবাজার পুলিশ তাকে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে।
পাচারকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যারা যেতে চায় তাদের আটকিয়ে রাখে। এরপর তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। চাহিদামতো যারা টাকা দিতে পারে না তাদের ফেলে দেয়া হয় থাইল্যান্ডের র্যাংডং উপকূলীয় এলাকায়। টাকা লেনদেন হয় থাইল্যান্ড-মিয়ানমারের মধ্যবর্তী কতাংমিউ নামক স্থানে।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবেদনটি তৈরিতে সময় লেগেছে প্রায় দেড় মাস। এতে বলা হয়েছে, ২০০০ সাল থেকে টেকনাফ দিয়ে মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে লোক পাচার শুরু হয়। সর্বশেষ ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পাচার হয়েছে। গত ৫ বছরে সাগর দিয়ে অবৈধভাবে পাচারের সময় ২ হাজার ৭৩৩ জনকে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলার সদস্যরা। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২৪২টি। আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৩৫৫ জনকে।
বিদেশে অবৈধ পথে লোক পাঠিয়ে কোটিপতি বনে গেছে দেশের শীর্ষ ২৬ হুন্ডি ব্যবসায়ী। গত ৫ বছরে এসব ব্যক্তির অনেকের ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। গোপনে মোটা অংকের সুদের মাধ্যমে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা লোক পাঠাতো সিঙ্গাপুর, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে। এসব ব্যবসায়ীকে ধরতে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানোর কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের গোয়েন্দা পুলিশ।
তবে অভিযুক্তদের মধ্যে ইসলাম নামের যে ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে তিনি টেকনাফ পৌরসভার সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই ও পৌরসভার প্যানল মেয়র-১ মুজিবুর রহমানের প্রধান সহযোগী বলে লেখা হয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, হুন্ডি ব্যবসায়ীরা এতটাই শক্তিশালী যে তারা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে ফেলে। বিভিন্ন ঘটনায় তাদের নাম উঠে আসলেও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় না।
প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার মানবজমিনকে বলেন, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা তৈরি করে আমরা ঢাকায় হেডকোয়ার্টারে পাঠিয়েছি। সেখানে ২৬ জনের নাম রয়েছে। এসব ব্যক্তি কয়েক কোটি টাকার মালিক। অবৈধভাবে লোক পাঠিয়ে এরা মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করতো।
তিনি আরও বলেন, দু-একজন ধরা পড়ে এখন কারাগারে। বাকিদের বেশির ভাগই পলাতক। আমরা তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শুনেছি দেশের বাইরেও তাদের পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে তারা হুন্ডি ব্যবসা করে। বিষয়টি পুলিশের হেডকোয়ার্টারকে জানানো হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
No comments