ফাটা পাইপের পানিতে বেহাল সড়ক, ক্ষতিতে উড়ালসড়ক- পরস্পরকে দায়ী করে সিটি করপোরেশন ওয়াসার চিঠি চালাচালি by অরূপ দত্ত
(প্রায় পাঁচ মাস ধরে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের সায়েদাবাদ র্যাম্পে ওঠার নিচে ঢাকা ওয়াসার প্রধান পাইপলাইনের কাটা অংশ দিয়ে বের হওয়া পানিতে তলিয়ে আছে সড়ক। গত শনিবার তোলা ছবি l সাজিদ হোসেন পাইপলাইনের ফেটে যাওয়া অংশের ওপর বসানো হয়েছে ড্রাম। সেই ড্রাম থেকে পড়ছে পানি l ছবি: প্রথম আলো) রাজধানীর
মেয়র হানিফ (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী) উড়ালসড়কের সায়েদাবাদ র্যাম্পে ওঠার
নিচে ঢাকা ওয়াসার প্রধান একটি পাইপ লাইন ফেটে আছে প্রায় পাঁচ মাস। অনবরত
পানি বের হয়ে অপচয় হচ্ছে। পানিতে তলিয়ে থাকায় বেহাল হয়ে পড়েছে
গোলাপবাগ-সায়েদাবাদ প্রধান সড়কের ১০০ মিটার অংশ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
উড়ালসড়ক। বিষয়টি নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা ওয়াসা
পরস্পরকে দায়ী করে চিঠি চালাচালি করলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সংশ্লিষ্ট
সূত্র জানায়, গত ঈদুল আজহার আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
সেখানে গিয়েছিলেন। ফাটা পাইপ থেকে অবিরাম পানি বের হয়ে সড়ক খারাপ হচ্ছে
দেখে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে
মুঠোফোনে কথা বলেন। ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বিষয়টি
গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানান। পরে উড়ালসড়কের কিছু অংশ খনন করে
পাইপ মেরামতের চেষ্টা করা হয়। এতে সড়কের ক্ষতি হলেও পাইপের ফাটা অংশ
সারানো যায়নি। কারণ হিসেবে বলা হয়, ফাটা অংশ খুঁজে পেতে উড়ালসড়কের
অনেকটা কাটতে হবে। কিন্তু কোন কর্তৃপক্ষ এর খরচ দেবে, তা নিয়ে সমস্যা
বাধে।
গত সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের ওই প্রধান পাইপলাইনের ফাটা অংশের ওপর ড্রাম বসানো হয়েছে। ড্রাম উপচে পানি রাস্তা ও আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। যেন বর্ষার ভারী বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে আছে। ওই এলাকার মীম রেস্তোরাঁ ও কয়েকটি দোকানের মালিক বলেন, প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলছে এই বর্ষাদশা। রাস্তায় সারাক্ষণ পানি জমে থাকে। জমে থাকা পানি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। রাতে তো বটেই, দিনের বেলায়ও এখানে যানবাহন উল্টে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় (অঞ্চল-৫) থেকে প্রায় আড়াই মাস আগে রাস্তার ক্ষতির বিবরণ জানিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাবদ ৩৯ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। নির্বাহী প্রকৌশলী এম এ হাশেম প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে ওই টাকা ৬০ থেকে ৭০ লাখে ঠেকেছে। উড়ালসড়কের প্রকল্প পরিচালকের পক্ষ থেকেও বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়ে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গত বছরের ১ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবের উপস্থিতিতে এক সভায় কিছু সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল পানির লাইনের ফুটো (লিকেজ) মেরামতের কাজ ১১ অক্টোবরের মধ্যে ঢাকা ওয়াসা শুরু করবে, যা নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে। এ ছাড়া মেরামতের জন্য উড়ালসড়কের রিটেইনিং দেয়ালের যে অংশ ভাঙতে হবে, সেটি ওয়াসা পুনর্নির্মাণ করে দেবে। এ বাবদ ওয়াসা ক্ষতিপূরণ দাবি করবে না। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ওয়াসাকে দেওয়া প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ের এক চিঠি থেকে জানা যায়, লাইন সারানোর নামে সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্টদের অনুমতি ছাড়াই ১১ সেপ্টেম্বর ভোররাতে উল্লিখিত র্যাম্পের কাঠামো ভাঙা হয়। ওই দিন দুপুরে ওয়াসার সঙ্গে সভায় বসে এর জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ওয়াসা অনুরোধ রাখেনি। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী পরিচালককে ২ অক্টোবর ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের লেখা চিঠিতেও এর সত্যতা জানা যায়। প্রকল্প পরিচালক ও ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সিদ্ধান্ত হলেও ওয়াসা তার মূল্য দেয়নি। চার মাস আগে ওয়াসা ডিএসসিসি ও কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে উড়ালসড়কের কয়েকটি স্থানে খননকাজ করে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়, নাশকতা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। উড়ালসড়কের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. শাহজাহান আলী পাটোয়ারী ৩০ ডিসেম্বর ওয়াসাকে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বলা হয়, ফেটে যাওয়া পাইপ ও উড়ালসড়কের খনন করা অংশ মেরামত না করার কারণে ক্ষতির পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। চিঠিতে এগুলো দ্রুত মেরামতের অনুরোধ করা হয়।
জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সপ্তাহ দুয়েক আগে আমরা জানিয়ে দিয়েছি, যারা উড়ালসড়ক নির্মাণ করেছে, তাদেরই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি না, প্রশ্ন করলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিষয়টি সম্পর্কে ওরিয়ন ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আশফাকুল আলম বলেন, ওয়াসার পাইপও গুরুত্বপূর্ণ, উড়ালসড়কটি জাতীয় সম্পদ। বিষয়টির প্রতি ওয়াসা আরও দায়িত্বশীল হোক, এটা সবাই চায়।
গত সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারের ওই প্রধান পাইপলাইনের ফাটা অংশের ওপর ড্রাম বসানো হয়েছে। ড্রাম উপচে পানি রাস্তা ও আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। যেন বর্ষার ভারী বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে আছে। ওই এলাকার মীম রেস্তোরাঁ ও কয়েকটি দোকানের মালিক বলেন, প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলছে এই বর্ষাদশা। রাস্তায় সারাক্ষণ পানি জমে থাকে। জমে থাকা পানি দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। রাতে তো বটেই, দিনের বেলায়ও এখানে যানবাহন উল্টে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় (অঞ্চল-৫) থেকে প্রায় আড়াই মাস আগে রাস্তার ক্ষতির বিবরণ জানিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাবদ ৩৯ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। নির্বাহী প্রকৌশলী এম এ হাশেম প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে ওই টাকা ৬০ থেকে ৭০ লাখে ঠেকেছে। উড়ালসড়কের প্রকল্প পরিচালকের পক্ষ থেকেও বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়ে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গত বছরের ১ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবের উপস্থিতিতে এক সভায় কিছু সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তের মধ্যে ছিল পানির লাইনের ফুটো (লিকেজ) মেরামতের কাজ ১১ অক্টোবরের মধ্যে ঢাকা ওয়াসা শুরু করবে, যা নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে। এ ছাড়া মেরামতের জন্য উড়ালসড়কের রিটেইনিং দেয়ালের যে অংশ ভাঙতে হবে, সেটি ওয়াসা পুনর্নির্মাণ করে দেবে। এ বাবদ ওয়াসা ক্ষতিপূরণ দাবি করবে না। গত ২৪ সেপ্টেম্বর ওয়াসাকে দেওয়া প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ের এক চিঠি থেকে জানা যায়, লাইন সারানোর নামে সিটি করপোরেশন ও সংশ্লিষ্টদের অনুমতি ছাড়াই ১১ সেপ্টেম্বর ভোররাতে উল্লিখিত র্যাম্পের কাঠামো ভাঙা হয়। ওই দিন দুপুরে ওয়াসার সঙ্গে সভায় বসে এর জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ওয়াসা অনুরোধ রাখেনি। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী পরিচালককে ২ অক্টোবর ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের লেখা চিঠিতেও এর সত্যতা জানা যায়। প্রকল্প পরিচালক ও ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সিদ্ধান্ত হলেও ওয়াসা তার মূল্য দেয়নি। চার মাস আগে ওয়াসা ডিএসসিসি ও কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে উড়ালসড়কের কয়েকটি স্থানে খননকাজ করে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়, নাশকতা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। উড়ালসড়কের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. শাহজাহান আলী পাটোয়ারী ৩০ ডিসেম্বর ওয়াসাকে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বলা হয়, ফেটে যাওয়া পাইপ ও উড়ালসড়কের খনন করা অংশ মেরামত না করার কারণে ক্ষতির পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। চিঠিতে এগুলো দ্রুত মেরামতের অনুরোধ করা হয়।
জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সপ্তাহ দুয়েক আগে আমরা জানিয়ে দিয়েছি, যারা উড়ালসড়ক নির্মাণ করেছে, তাদেরই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কি না, প্রশ্ন করলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিষয়টি সম্পর্কে ওরিয়ন ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আশফাকুল আলম বলেন, ওয়াসার পাইপও গুরুত্বপূর্ণ, উড়ালসড়কটি জাতীয় সম্পদ। বিষয়টির প্রতি ওয়াসা আরও দায়িত্বশীল হোক, এটা সবাই চায়।
No comments