ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত
ফ্রান্সে
একটি ম্যাগাজিনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের
বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। চেচনিয়ার রাজধানী গ্রোজনি,
ইরানের রাজধানী তেহরানে প্রতিবাদে নেমেছিল মানুষের ঢল। এ সময় বিক্ষুব্ধ
মানুষ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজির কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
গ্রোজনিতে বিক্ষোভে যোগ দেন প্রায় ৮ লাখ মানুষ। পাকিস্তানের বান্নুতে
‘ফরাসি সরকার নিপাত যাক’ স্লোগান দেয় তারা। তেহরানে ফরাসি দূতাবাসের বাইরে
কয়েক হাজার মুসলিম সমবেত হয়ে ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার দাবি করে। এ খবর
দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। এতে আরও বলা হয়, ৭ই জানুয়ারি উগ্র ইসলামপন্থি
কয়েক জঙ্গি ফ্রান্সের প্যারিসে ব্যঙ্গ ম্যাগাজিন ‘শার্লি এবদো’ কার্যালয়ে
প্রবেশ করে গুলি করে হত্যা করে কমপক্ষে ১২ জনকে। এ হামলার প্রতিবাদে মুসলিম
বিশ্ব সোচ্চার হয়েছে। তারা এর তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এ ঘটনার
রেশ কাটতে না কাটতেই ওই ম্যাগাজিনটির প্রচ্ছদে মহানবী (সা.)-এর
ব্যঙ্গচিত্র দিয়ে নতুন ইস্যু প্রকাশ করে। এতে বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের ধর্মীয়
অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। মুসলিম নেতারা বলছেন, এমনিতেই যেখানে শার্লি এবদো
হত্যাকাণ্ড নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে তখনই ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করে উস্কানি
সৃষ্টি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন দেশে মুসলমানরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ
করছেন। ডেইলি মেইল চেচনিয়ার গ্রোজনির কেন্দ্রস্থলের যে ছবি প্রকাশ করেছে
তাতে দেখা গেছে, কয়েক লাখ মানুষ গ্রোজনিতে বিক্ষোভ করছেন। রাশিয়ার
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সেখানে সমবেত মানুষের সংখ্যা
কমপক্ষে ৮ লাখ। শুক্রবার চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে
লিখেছেন, যারা শার্লি এবদোর পক্ষে কথা বলেন তারা তার ব্যক্তিগত শত্রু। তিনি
প্রত্যয় ঘোষণা করেন যে, গ্রোজনিতে সরকারি উদ্যোগে বিক্ষোভে যোগ দেবে
কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ। রাশিয়ায় জনসংযোগবিষয়ক এজেন্সির ওপর নজর রাখে
রসকোমন্দাজোর নামের এজেন্সি। তারা স্থানীয় বিভিন্ন মিডিয়ার কাছে চিঠি
পাঠিয়েছে। তাতে ফরাসি ম্যাগাজিনের ওই ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করা থেকে বিরত
থাকতে বলা হয়েছে। ওদিকে শুক্রবার প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জন কেরির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ
জারিফ। এ জন্য তাকে সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। অবমাননাকর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশের
পর ফ্রান্স সফরের জন্য জাভেদ জারিফকে ক্ষমা চাইতে বিবৃতি দিয়েছে কয়েকটি
সংগঠন। ওদিকে নাইজারে ৪৫টি চার্চে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে ৫ জন নিহত ও
১২৮ জন আহত হয়েছে। আলজেরিয়ায় সংঘর্ষে বেশকিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
নাইজারের নিয়ামিতে নাগরিকদের বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। রাস্তায়
প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলাকালে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। ফিলিস্তিনের
গাজা শহরে বিক্ষোভ করেছেন মুসলিমরা।
No comments