ভারতের কেবিনেট বৈঠকে সীমান্ত চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়নি
প্রবল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল যে, বিজয় দিবসের আগেই ভারত সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের সব কাজ সেরে ফেলবে। কিন্তু পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে এই শীতকালীন সংসদ অধিবেশনে সীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিলটি পেশ করা সম্ভব না-ও হতে পারে। আগামী ২২শে ডিসেম্বরই এই অধিবেশন শেষ হয়ে যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ভারতের কেবিনেটের বৈঠকে সীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত খসড়া বিল নিয়ে আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু সময়াভাবে সেই আলোচনা হয়নি বলে জানা গেছে। আগামী ১৭ই ডিসেম্বর পরবর্তী কেবিনেট কমিটির বৈঠকে বিলটি নিয়ে আলোচনা হবে। আগে জানা গিয়েছিল যে, ভারত সরকার বাংলাদেশের বিজয় দিবসের আগেই সীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত বিলটি সংসদে অনুমোদন করিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে সুখবর জানাবে। গত সপ্তাহেই সীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত খসড়া বিলটি নিয়ে পররাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট সংসদের দুই কক্ষে পেশ করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সেই রিপোর্ট ও খসড়া বিলটি কেবিনেট বৈঠকে অনুমোদনের পরেই প্রথমে রাজ্যসভায় অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে এবং পরবর্তী পর্যায়ে পেশ করা হবে লোকসভায়। কিন্তু বৃহস্পতিবারের কেবিনেট বৈঠকে আলোচনা না হওয়ায় গোটা প্রক্রিয়াই পিছিয়ে গেছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিলটির খসড়া সর্বসম্মতিতে অনুমোদন পাওয়ায় এটি পাস হওয়া সময়ের অপেক্ষা। সব পক্ষকেই আরও একটু ধৈর্য ধরতে হবে। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরেই বিলটি সংসদে পাস করানোর চেষ্টা হচ্ছে। এদিকে অপদখলীয় জমি ও ছিটমহল হস্তান্তরের পরে পুনর্বাসন কিভাবে হবে তা নিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সীমান্ত সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। প্রথম পর্যায়ে বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে অলোচনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামীর ডাকা এই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি জিএমপি রেড্ডি। বৈঠকে ভারতের স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামীসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ বিভাগীয় কর্মকর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর মহাপরিচালক ডিকে পাঠক, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা সচিব স্নেহলতা কুমার এবং কেন্দ্রীয় নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অধীন জমি অধিকর্তা বিভাগের সচিব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ বিভাগের যুগ্ম সচিব শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথনসহ কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়লের শীর্ষ কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষে ছিটমহলবাসীদের পুনর্বাসনে সম্পূর্ণ আর্থিক দায়ভার নেয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এই কাজের জন্য কেন্দ্রের কাছে তিন হাজার কোটি রুপির দাবিও জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে এদিন ফের ভারত সরকারকে জানানো হয়েছে, নীতিগত ভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ছিটমহল হস্তান্তরে রাজি। সম্প্রতি কোচবিহার জেলার একটি ছিটমহল সংলগ্ন এলাকায় সভা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি সীমান্ত বিলে রাজি। তবে ভারত সরকারকেই পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে, বাসস্থানের ব্যবস্থা, স্কুল ও হাসপাতাল তৈরি এবং এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়ন।
No comments