গুম খুনে তটস্থ চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে বিভিন্ন স্থান থেকে আইনশৃংখলা
রক্ষাকারী বাহিনী পুরো বছরে ৫০৩টি লাশ উদ্ধার করেছে। পুলিশের হিসাব
অনুযায়ী, চট্টগ্রামে চলতি বছর নভেম্বর পর্যন্ত খুন হয়েছে ২৪৩ জন। অপরদিকে
চট্টগ্রামে খাল, বিল, নদী-নালা, রাস্তার পাশে এবং নির্জন স্থানে মিলেছে
অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৬০ জন নারী-পুরুষের লাশ। এসব লাশ শেষ পর্যন্ত বেওয়ারিশ
হিসেবে দাফন করা হয়েছে।
গুম-খুনের ভয়ে আতংকিত চট্টগ্রামের বাসিন্দারা। চলতি বছরের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি ছিল বিগত যে কোনো বছরের তুলনায় নাজুক। হয় খুন, নয়তো গুম করে হত্যার পর ফেলে দেয়া লাশ মিলেছে যত্রতত্র। অধিকাংশ লাশের পরিচয় মেলেনি। নিখোঁজের অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে কয়েকশ’। এর মধ্যে অধিকাংশ নিখোঁজ ও অপহৃতের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাত লাশের অধিকাংশই অপহরণের পর গুম-খুনের শিকার হয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। লাশ শনাক্ত না হওয়ায় চিহ্নিত করা যায়নি অপরাধীদেরও।
২৪৩ খুন : চট্টগ্রামে গত বছরের চেয়ে এ বছর খুনের ঘটনা বেড়েছে। চলতি বছর গত নভেম্বর পর্যন্ত খুন হয়েছে ২৪৩ জন। এরমধ্যে নগরীতে ১১২ জন এবং জেলার ১৪ উপজেলায় ১৩১ জন। ২০১৩ সালে খুন হয় ২২৮ জন। যার মধ্যে ১৪ উপজেলায় ১৩৬ ও নগরীতে ৯২ জন। এ বছরের হিসাবে গত নভেম্বরে নগরীতে ১০ এবং জেলায় ১১ জন খুনের শিকার হয়েছে। অক্টোবরে খুনের সংখ্যা নগরীতে ১১ ও জেলায় ১৫ জন। এ ছাড়া নগরী ও জেলা মিলিয়ে সেপ্টেম্বরে ১৯, আগস্টে ১৬, জুলাইয়ে ৩৩, জুনে ২১, মে-তে ১৯, এপ্রিলে ২১, মার্চে ১৮, ফেব্রুয়ারিতে ২১ এবং জানুয়ারিতে ২৮ জন খুন হয়েছে। এ বছর অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৩৩টি। বেওয়ারিশ লাশ ২৬০ : চলতি বছর আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম ২৬০টি বেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে। তার মধ্যে জানুয়ারিতে ২৫, ফেব্র“য়ারিতে ২৯, মার্চে ২৮, এপ্রিলে ২০, মে-তে ৩১, জুনে ২৬, জুলাইয়ে ৩০, আগস্টে ১০, সেপ্টেম্বরে ১৫, অক্টোবরে ২২, নভেম্বরে ১৯ এবং ডিসেম্বরে বুধবার পর্যন্ত ৫টি লাশ দাফন করেছে। ১৪ বছরে ৪ হাজার ১৭৬টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করেছে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। এরমধ্যে ২০১৩ সালে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা ছিলা২৫৯টি। পুলিশের দাবি, শনাক্তকরণে উন্নত প্রযুক্তি না থাকায় অনেক লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে লোকজনের ফিঙ্গার প্রিন্টসহ বায়োডাটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় পুলিশ এখনও সনাতন পদ্ধতিতে বেওয়ারিশ লাশ শনাক্তকরণ পদ্ধতি অবলম্বন করে চলেছে।
পুলিশের পরিসংখ্যানের বাইরে থানায় মামলা না হওয়া কিংবা বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন হয়নি এমন আরও লাশ রয়েছে- যাদের খবর কেউ জানে না।
চাঞ্চল্যকর খুন : নগরীতে চলতি বছর ১১২টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ১৬ মার্চ নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে দুই বন্ধু এমইএস কলেজছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী কামরুল হাসান (২০) এবং ফোরকানের (১৯) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এবং ছিনতাইয়ের টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এ খুনের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ ধারণা করছে। দুই লাশের হাত, পা ও চোখ বাঁধা এবং দুই পায়ের রগ কাটা ছিল। ২৪ মার্চ দিন-দুপুরে খুন হয় মা রেজিয়া খাতুন (৫০) ও মেয়ে সায়মা আকতার (১৭)। আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার ১৭ নম্বর সড়কের ১২৯ নম্বর পদ্মা নামের একটি ভবনের চতুর্থ তলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের কুপিয়ে হত্যা করে কথিত প্রেমিক রায়হান ও তার এক সহযোগী। সায়মা আগ্রাবাদ সিডিএ গালর্স স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। নিহতরা সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের স্ত্রী ও মেয়ে। এ ঘটনাটি চট্টগ্রামে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ১৬ সেপ্টেম্বর হালিশহর মোল্লাপাড়ার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় নওগাঁ জেলার বিচারক কাজী আবদুল হাসিব মোহাম্মদ সাঈদের (৪৭) লাশ। বিচারককে খুনের অভিযোগে তার কথিত স্ত্রী সানজিদা আক্তার মিশু, তার মা লাকী আক্তার, ভাই ইমরান আহমেদ এবং বাসার গৃহপরিচারিকা রীমা আক্তারকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে বিচারক আÍহত্যা করেছেন মর্মে ৩০ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হলে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডির কাছে হস্থান্তর করা হয়। সম্প্রতি আদালতের অনুমতিসাপেক্ষে বিচারকের লাশ আবারও কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রকাশিত হবে বলে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক কাজল কান্তি বড়ুয়া জানিয়েছেন। ২১ ফেব্র“য়ারি কোতোয়ালি থানার ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অজ্ঞাত এক যুবককে। এখন পর্যন্ত নিহত যুবকের পরিচয় মেলেনি। উদ্ঘাটন করা যায়নি হত্যারহস্য। ৬ মার্চ পাহাড়তলী কৈবল্যধামের নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় রাজীব শীল ও তার স্ত্রী সঙ্গীতা শীলের লাশ। রাজীব চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত একটি স্কুলের শিক্ষক। পরিবারের দাবি ওই দম্পতিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ১৩ মার্চ রাতে নগরীর শিল্পকলা একাডেমিসংলগ্ন এমএম আলী রোডে নিজ ফ্ল্যাট থেকে ব্যবসায়ী ওমর ফারুকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
চট্টগ্রামে চলতি বছর অপহরণ এবং নিখোঁজের অভিযোগে থানাগুলোতে অসংখ্য মামলা হয়েছে। গত এক যুগে নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে কয়েক হাজার লোক। বহু নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান পরিবার-পরিজন এখনও পায়নি। এমনকি তারা বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে সেটিও অবগত নয়। তারপরেও হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি একদিন ফিরে আসবে এমন আশায় দিন কাটে স্বজনদের।
কয়েক বছরেও সন্ধান মেলেনি রাউজান বাগোয়ান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জাফর, সন্ত্রাসী আজিম উদ্দিন মাহমুদ, বোয়ালখালী করলডেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাচাসহ অসংখ্য ব্যক্তির। পুলিশ জানায়, অজ্ঞাত লাশগুলোকে বেওয়ারিশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বিভিন্ন নদী-খাল, নালা, পাহাড় ও নির্জন স্থানে পাওয়া এসব লাশ উদ্ধার করার পর তিন দিন অপেক্ষা করা হয়। এরপর আঞ্জমান মফিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এসব লাশ দাফন করা হয়। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেওয়ারিশ লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। অনেক হত্যা রহস্য এ কারণে উদ্ঘাটিত না হওয়ায় নগরীতে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলা পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার যুগান্তরকে জানান, যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার অধিকাংশই পারিবারিক সহিংসতার ফল। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।
সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) বনজ কুমার মজুমদার জানান, অধিকাংশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত অনেককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আর যেসব অজ্ঞাত লাশ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো অন্য কোনো স্থানে হত্যা করার পর অপরাধীরা এনে ফেলে রেখে যাচ্ছে।
গুম-খুনের ভয়ে আতংকিত চট্টগ্রামের বাসিন্দারা। চলতি বছরের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি ছিল বিগত যে কোনো বছরের তুলনায় নাজুক। হয় খুন, নয়তো গুম করে হত্যার পর ফেলে দেয়া লাশ মিলেছে যত্রতত্র। অধিকাংশ লাশের পরিচয় মেলেনি। নিখোঁজের অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে কয়েকশ’। এর মধ্যে অধিকাংশ নিখোঁজ ও অপহৃতের সন্ধান পাওয়া যায়নি। অজ্ঞাত লাশের অধিকাংশই অপহরণের পর গুম-খুনের শিকার হয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। লাশ শনাক্ত না হওয়ায় চিহ্নিত করা যায়নি অপরাধীদেরও।
২৪৩ খুন : চট্টগ্রামে গত বছরের চেয়ে এ বছর খুনের ঘটনা বেড়েছে। চলতি বছর গত নভেম্বর পর্যন্ত খুন হয়েছে ২৪৩ জন। এরমধ্যে নগরীতে ১১২ জন এবং জেলার ১৪ উপজেলায় ১৩১ জন। ২০১৩ সালে খুন হয় ২২৮ জন। যার মধ্যে ১৪ উপজেলায় ১৩৬ ও নগরীতে ৯২ জন। এ বছরের হিসাবে গত নভেম্বরে নগরীতে ১০ এবং জেলায় ১১ জন খুনের শিকার হয়েছে। অক্টোবরে খুনের সংখ্যা নগরীতে ১১ ও জেলায় ১৫ জন। এ ছাড়া নগরী ও জেলা মিলিয়ে সেপ্টেম্বরে ১৯, আগস্টে ১৬, জুলাইয়ে ৩৩, জুনে ২১, মে-তে ১৯, এপ্রিলে ২১, মার্চে ১৮, ফেব্রুয়ারিতে ২১ এবং জানুয়ারিতে ২৮ জন খুন হয়েছে। এ বছর অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৩৩টি। বেওয়ারিশ লাশ ২৬০ : চলতি বছর আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম ২৬০টি বেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে। তার মধ্যে জানুয়ারিতে ২৫, ফেব্র“য়ারিতে ২৯, মার্চে ২৮, এপ্রিলে ২০, মে-তে ৩১, জুনে ২৬, জুলাইয়ে ৩০, আগস্টে ১০, সেপ্টেম্বরে ১৫, অক্টোবরে ২২, নভেম্বরে ১৯ এবং ডিসেম্বরে বুধবার পর্যন্ত ৫টি লাশ দাফন করেছে। ১৪ বছরে ৪ হাজার ১৭৬টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করেছে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। এরমধ্যে ২০১৩ সালে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা ছিলা২৫৯টি। পুলিশের দাবি, শনাক্তকরণে উন্নত প্রযুক্তি না থাকায় অনেক লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে লোকজনের ফিঙ্গার প্রিন্টসহ বায়োডাটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় পুলিশ এখনও সনাতন পদ্ধতিতে বেওয়ারিশ লাশ শনাক্তকরণ পদ্ধতি অবলম্বন করে চলেছে।
পুলিশের পরিসংখ্যানের বাইরে থানায় মামলা না হওয়া কিংবা বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন হয়নি এমন আরও লাশ রয়েছে- যাদের খবর কেউ জানে না।
চাঞ্চল্যকর খুন : নগরীতে চলতি বছর ১১২টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ১৬ মার্চ নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের সেপটিক ট্যাংক থেকে দুই বন্ধু এমইএস কলেজছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী কামরুল হাসান (২০) এবং ফোরকানের (১৯) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এবং ছিনতাইয়ের টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এ খুনের ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ ধারণা করছে। দুই লাশের হাত, পা ও চোখ বাঁধা এবং দুই পায়ের রগ কাটা ছিল। ২৪ মার্চ দিন-দুপুরে খুন হয় মা রেজিয়া খাতুন (৫০) ও মেয়ে সায়মা আকতার (১৭)। আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার ১৭ নম্বর সড়কের ১২৯ নম্বর পদ্মা নামের একটি ভবনের চতুর্থ তলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের কুপিয়ে হত্যা করে কথিত প্রেমিক রায়হান ও তার এক সহযোগী। সায়মা আগ্রাবাদ সিডিএ গালর্স স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। নিহতরা সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের স্ত্রী ও মেয়ে। এ ঘটনাটি চট্টগ্রামে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ১৬ সেপ্টেম্বর হালিশহর মোল্লাপাড়ার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় নওগাঁ জেলার বিচারক কাজী আবদুল হাসিব মোহাম্মদ সাঈদের (৪৭) লাশ। বিচারককে খুনের অভিযোগে তার কথিত স্ত্রী সানজিদা আক্তার মিশু, তার মা লাকী আক্তার, ভাই ইমরান আহমেদ এবং বাসার গৃহপরিচারিকা রীমা আক্তারকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে বিচারক আÍহত্যা করেছেন মর্মে ৩০ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হলে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডির কাছে হস্থান্তর করা হয়। সম্প্রতি আদালতের অনুমতিসাপেক্ষে বিচারকের লাশ আবারও কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রকাশিত হবে বলে তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক কাজল কান্তি বড়ুয়া জানিয়েছেন। ২১ ফেব্র“য়ারি কোতোয়ালি থানার ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অজ্ঞাত এক যুবককে। এখন পর্যন্ত নিহত যুবকের পরিচয় মেলেনি। উদ্ঘাটন করা যায়নি হত্যারহস্য। ৬ মার্চ পাহাড়তলী কৈবল্যধামের নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় রাজীব শীল ও তার স্ত্রী সঙ্গীতা শীলের লাশ। রাজীব চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত একটি স্কুলের শিক্ষক। পরিবারের দাবি ওই দম্পতিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ১৩ মার্চ রাতে নগরীর শিল্পকলা একাডেমিসংলগ্ন এমএম আলী রোডে নিজ ফ্ল্যাট থেকে ব্যবসায়ী ওমর ফারুকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
চট্টগ্রামে চলতি বছর অপহরণ এবং নিখোঁজের অভিযোগে থানাগুলোতে অসংখ্য মামলা হয়েছে। গত এক যুগে নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে কয়েক হাজার লোক। বহু নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধান পরিবার-পরিজন এখনও পায়নি। এমনকি তারা বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে সেটিও অবগত নয়। তারপরেও হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি একদিন ফিরে আসবে এমন আশায় দিন কাটে স্বজনদের।
কয়েক বছরেও সন্ধান মেলেনি রাউজান বাগোয়ান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জাফর, সন্ত্রাসী আজিম উদ্দিন মাহমুদ, বোয়ালখালী করলডেঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাচাসহ অসংখ্য ব্যক্তির। পুলিশ জানায়, অজ্ঞাত লাশগুলোকে বেওয়ারিশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বিভিন্ন নদী-খাল, নালা, পাহাড় ও নির্জন স্থানে পাওয়া এসব লাশ উদ্ধার করার পর তিন দিন অপেক্ষা করা হয়। এরপর আঞ্জমান মফিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এসব লাশ দাফন করা হয়। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেওয়ারিশ লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। অনেক হত্যা রহস্য এ কারণে উদ্ঘাটিত না হওয়ায় নগরীতে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলা পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার যুগান্তরকে জানান, যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার অধিকাংশই পারিবারিক সহিংসতার ফল। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।
সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) বনজ কুমার মজুমদার জানান, অধিকাংশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। অপহরণের সঙ্গে জড়িত অনেককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আর যেসব অজ্ঞাত লাশ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো অন্য কোনো স্থানে হত্যা করার পর অপরাধীরা এনে ফেলে রেখে যাচ্ছে।
No comments