মঙ্গলের কক্ষপথে মঙ্গলযান
মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে প্রবেশ করেছে মানুষবিহীন ভারতীয় নভোযান ‘মঙ্গলযান’। এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার প্রথম চেষ্টায়ই সফল হয়েছে যানটি। এ অর্জনের মধ্য দিয়ে রহস্যময় ‘লাল গ্রহ’ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে এশিয়ার যেকোনো দেশের চেয়ে এগিয়ে গেল ভারত। এত দিন শুধু যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এ কাজ করতে পেরেছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছানোর জন্য ১০ মাসে ৬৬ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে ভারতীয় নভোযানটি। এতে সংযুক্ত কৃত্রিম উপগ্রহটি (স্যাটেলাইট) মঙ্গলের কক্ষপথে স্থাপিত হবে এবং সেখানে সম্ভাব্য প্রাণের অনুসন্ধানমূলক গবেষণায় সহায়তা করবে। এ অভিযানে ভারতের ব্যয় হয়েছে সাত কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার, যা যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) বা আন্তর্জাতিক মানে খুবই কম। বলা হয়েছে, হলিউডের কল্পবিজ্ঞাননির্ভর চলচ্চিত্র গ্র্যাভিটির নির্মাণব্যয়ও এর চেয়ে কম—১০ কোটি ডলার! নাসার স্যাটেলাইট ম্যাভেন মঙ্গলের কক্ষপথে পাঠাতে খরচ পড়েছে ৬৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।
ম্যাভেনও সফলভাবে মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছে গত সোমবার গ্রহটিকে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করেছে। স্বল্প বাজেটে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত মঙ্গলযানের এ সাফল্যে বিপুল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বেঙ্গালুরুর কাছে অবস্থিত ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (আইএসআরও) ঘাঁটিতে গিয়ে সেখানকার বিজ্ঞানীদের অভিবাদন জানিয়েছেন। মোদি তাঁদের বলেন, ‘ইতিহাস রচিত হয়েছে। আমরা অজানায় পৌঁছানোর সাহস দেখিয়ে প্রায় অসম্ভবকে অর্জন করেছি।’ লাল গ্রহের কক্ষপথে পৌঁছাতে মঙ্গলযানের সাফল্যে ভারতকে অভিনন্দন জানিয়েছে নাসা এবং চীন। ভারতীয় স্যাটেলাইটটি প্রায় ছয় মাস ধরে মঙ্গলকে এর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে থেকে প্রদক্ষিণ করবে। এটি বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে পৃথিবীতে পাঠাবে। মঙ্গলে নভোযান পাঠানোর ক্ষেত্রে চতুর্থ দেশ হিসেবে সাফল্য পেল ভারত। এত দিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এ কৃতিত্বের দাবিদার ছিল। ভারত তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র চীনের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার চেষ্টায় মহাকাশ কর্মসূচিতে শত শত কোটি ডলার খরচ করেছে।
No comments