আম্মির গল্প by আশিক মুস্তাফা
বাড়ি থেকে দূরে হোস্টেলটা। সপ্তম
শ্রেণিতে উঠেই কুহু চলে আসে জেলা শহরের এই হোস্টেলে। সিঁড়িঘরের পাশে তার
এইটুকুন একটা ঘর। অনেকটা জেল-কয়েদিদের মতো। রুমে ছোট্ট একটা জানালা। তাতে
বসে সে বিড়াল ছানা কিডির কথা ভাবে, ভাবে গ্রামের দিনগুলোর কথা। আরেকজনের
কথাও তার খুব মনে পড়ে। তখন আর স্থির থাকতে পারে না। বুকটা কেঁপে ওঠে। চোখে
পানি আসে। টলমল করে গড়িয়ে পড়ে। কুহু হাতের পিঠ দিয়ে চোখের পানি মোছে।
দৌড়ে যায় হোস্টেল সুপারের কাছে। ফোন করে। আম্মির কণ্ঠ শুনেই ‘ব্যাঁ...’।
আম্মিও স্থির থাকতে পারেন না। ছোট ছোট কথা বলেন। কুহুকে শান্ত করেন, ‘তোর
কথাই ভাবছিলাম।’
কথা শেষে কুহু ঘুমায়। রাতে ফের ঘুম ভাঙে। তখন আর ফোন করা যায় না। খোলা জানালা দিয়ে, রাতজাগা তারায় চোখ রেখে সে আম্মিকে ডাকে। আম্মিও সায় দেন। জমে ওঠে গল্প। গল্পে গল্পে সকাল হয়। পোলাপান দেখে খ্যাপায়, ‘সিঁড়িঘরে রাত জেগে ভূতের সঙ্গে কথা বলিস নাকি রে?’
উত্তর দেয় না কুহু। তারা তো জানে না, সে যে টেলিপ্যাথি দিয়ে আম্মির সঙ্গে কথা বলে। এদিকে গ্রাম থেকে খবর আসে, আম্মিও একাকি কথা বলেন। কুহু মিটিমিটি হাসে! কাউকে বলে না, আম্মির সঙ্গে তার যোগাযোগের গোপন কথাটা। বলেন না কুহুর আম্মিটাও।
No comments