সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ঘরেল আদমি @বাবা ভয়ঙ্কর রাজাকার তাই অপহরণ?
শুরু থেকেই সরব ফেসবুক। বেলা'র প্রধান
নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী এ বি সিদ্দিকের অপহরণ নিয়ে সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি চলছে সেই অপহরণের দিন থেকেই। যখন অপহৃত
ছিলেন তখনও যেমন সোচ্চার ছিলেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। ফিরে আসার পরেও সরব
তারা। দিচ্ছেন নানা প্রতিক্রিয়া। ছড়াচ্ছেন উত্তাপ। ঘটনার পক্ষে বিপক্ষে মত
আসছে। কারে মনে প্রশ্ন জাগছে। কেউ যা কিছু বলা হচ্ছে সব মেনে নিচ্ছেন কেউ
চাইছেন অমিমাংসিত কিছু প্রসঙ্গের উত্তর। কেউ এই ঘটনাকে 'নাটক' আখ্যা দিয়ে
সন্দেহ প্রকাশ করে নানান যুক্তি তুলে ধরেছেন, আবার অন্যপক্ষ এমন একটি বিষয়
নিয়ে কটাক্ষ করায় কড়া সমালোচনা করেছেন প্রতিপক্ষের মন্তব্যকারীদের। কারো
কারো স্ট্যাটাস রসিকতায় ভরা।
সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ ছড়া কেটে লিখেছেন, 'সিদ্দিক সিদ্দিক ডাক পাড়ি, সিদ্দিক গেছে সতীন বাড়ি, ওরে সিদ্দিক ফিরে আয়, বেলা যে তোর বহে যায়'। একটি ছড়ায় ক্ষান্ত হননি। লিখেছেন আরও একটি ছড়া 'বাড়ির ঠিকানা গুজে রাখিস না, বুক পকেটে, হারালে হারাবি একেবারে' শেয়ার করে তিনি বলেছেন, 'সিদ্দিক হারায় নি, হারানোর মতলব মাত্র'।
টিভি উপস্থাপক আব্দুন নূর তুষার লিখেছেন, ভুইয়া ফিলিং স্টেশন এর সামনে চা খেতে রাজী আছেন কে কে? এই পুরো ডামাডোলে পেট্রোল পাম্পটির ফ্রি কাভারেজ এর দাম কয়েক কোটি টাকা! আসেন দেশের খারাপ লোকগুলাকে ঐখানে মেজবানী দাওয়াত দেই! মাইক্রো ভাইদের ও! তবে যদি দেশে শান্তি আসে!
সাহিত্যিক অদিতি ফাল্গুনী লিখেছেন, 'শেভরনের সাথে পরিবেশ বিরোধী নানা কর্মের দরুণ দাতারা কি অর্থ দান করিতেছিলেন না? প্রচার কম হইতেছিল? এইবার অর্থ, প্রচার সবই মিলিবে! দেশের অন্য উন্নয়ন নেতৃবৃন্দও সংস্থার রাতারাতি লাইম লাইটের জন্য এমন কিছু ভাবিয়া দেখিতে পারেন!
অমি রহমান পিয়াল লিখেছেন, এই সৈয়দা রিজওয়ানা কে? খুবই ঘরেল আদমি মানতেই হবে। কেমন অবলীলায় বলে দিলেন, স্বামীর মুক্তির জন্যে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। তার মানে হলো, প্রধানমন্ত্রী চাইলে সব গুম হওয়া প্রাণীকে ফিরিয়ে দিতে পারেন। আরো গভীর মানে করেছেন ভারে আক্রান্ত ফখরুল। তিনি বলেছেন, একই ব্যক্তি জনাব ইলিয়াস সাহেবকে অপহরণ করেছেন (অর্থাৎ, ম্যাডাম রিজওয়ানার সূত্র ধরে তিনি বলতে চেয়েছেন যে প্রধান মন্ত্রী এইসব গুমের ব্যবসা করছেন)।
নাজমুল তপন লিখেছেন, একটা সহজ থিওরি... বাংলাদেশে রাজাকার পরিবারের লোকজনদের তেমন কোন বিপদ হয় না। বেশিরভাগ সময়ই অন্যায় অবিচার আর অত্যাচারের শিকার হয় মুক্তিযেদ্ধা পরিবারের লোকজনরা!
'রেজোয়ানা হাসান হলো কেন নামটা? রেজোয়ানা বকর হতে পারলো না' শিরোনামে সরদার আমিন লিখেছেন, বাবা সৈয়দ মহিবুল হাসান ১৯৬৪ সালে মুসলিম লীগের এমপি হন। ৭১-এ ভয়ঙ্কর রাজাকার ও পলাতক থাকেন ১৯৭৫ পর্যন্ত। এরপর জিয়ার সরকারে মন্ত্রী হন। তার বিষয়ে গর্বিত বলেই তিনি স্বামীর নামের শেষাংশ নয়, বাবার নামের শেষাংশ ব্যবহার করেন। তারপরও কিছু বক ধার্মিকের মত বক মুক্তিযোদ্ধা বলতে চায়, বাবা রাজাকার হলে কি মেয়ে সে অপবাদ সইবে? এসব লোকরা উপরে খুব মুক্তিযুদ্ধপ্রীতি দেখায়, নীচে রাজাকার অরিজিন বা পরিবর্তীত রাজাকার। পাল্টা স্ট্যাটাসও দিয়েছেন অনেকে।
শরীফুজ্জামান শরিফ লিখেছেন, 'সকাল থেকে কিছু মানুষের লেখা পড়ে মনটা এতো খারাপ লাগছে। এদের বিবেচনা-রুচি-বিবেক এতো নীচে নেমেছে? এদের কেউ কেউ আবার রাষ্ট্র বা সরকারের বড় পদে ছিলেন! ছি:। আরও খারাপ লাগছে এদের কেউ কেউ আমার বা আমাদের ভার্চুয়াল জগতের বন্ধু!
সাংবাদিক গোলাম মর্তুজা তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, 'আহসান হাবিবের জনপ্রিয় 'উম্মাদ' পত্রিকাটির এখন আর কোনো প্রয়োজন নেই। উম্মাদ এখন ঢাকা শহরের পথে ঘাটে ঘুরছে। এশিয়ার নোবেল ম্যগসাইসাই জয়ী রিজওয়ানা হাসানের স্বামী অপহরণ, অক্ষত ফিরে আসা নিয়ে কতিপয় উম্মাদ কি উম্মাদনাই না করছে! 'এটা সাজানো নাটক'- প্রমাণ করার জন্য তথাকথিত কতিপয় ব্যক্তি/ লেখকের সৃজনশীলতার, কল্পনা শক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার দেখছি!' সংকলিত।
No comments