চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন ইমরান, অব্যাহতি দিলেন ব্লগাররাও by সোলায়মান তুষার
শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা.
ইমরান এইচ সরকার চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের
চিকিৎসক ছিলেন। সমপ্রতি সেখান থেকে ইস্তেফা দিয়েছেন। চাকরি ছাড়ার পর তিনি
দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তিনি যেকোন মুহূর্তে দেশ ছাড়তে
পারেন। তার প্রথম টার্গেট কানাডা। এছাড়া ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যের কোন একটি
দেশে যেতে পারেন তিনি।
চাকরি
ছাড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ইমরান। তবে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনার বিষয়টি
স্বীকার করেননি। অন্যদিকে গতকাল গণজাগরণ মঞ্চের মূখপাত্র থেকে ব্লগাররাও
তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন। এর আগে মঞ্চেরই একটি অংশ তাকে মুখপাত্রের পদ থেকে
অব্যাহতি দিয়েছিলেন। এর আগে ৭ই ডিসেম্বর তিনি কানাডা পালিয়ে যেতে চাইলেও
উপরের নির্দেশে বিমানবন্দর পুলিশ তাকে বাধা দেয়। ইমরান তার নিজস্ব চাকরি
থেকে ইস্তেফা দেয়ায় তার দেশ ছাড়ার বিষয়টি জোরালো হয়েছে। বিদেশে স্থায়ীভাবে
বসবাস করতে গণজাগরণ মঞ্চের নামে উত্তোলন করা কোটি কোটি টাকা তিনি বিভিন্ন
দেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার
কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে এসব টাকা পাচার করেছেন বলে জানিয়েছে
মঞ্চেরই একটি অংশ। সূত্র জানায়, ইমরানের ঘনিষ্ঠ ও মঞ্চের এক নারীকর্মী দুই
দফা কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্য গিয়ে টাকা রেখে আসেন। তিনি প্রথম কানাডা যান গত
বছরের এপ্রিলে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া জামায়াত নেতা আবদুল
কাদের মোল্লার রায়কে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি গড়ে ওঠে
শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ। এ মঞ্চের নামে যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে
চাঁদা ওঠানো হয়েছে তার দু’টি তালিকা এসেছে এ প্রতিবেদকের কাছে। তালিকা
দু’টি ফেসবুক, ব্লকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি তালিকায়
৩৬ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি এবং অপর তালিকায় ২৮টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নাম
দেয়া হয়েছে। ৩৬টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি থেকে কোটি কোটি টাকা চাঁদা ওঠানো
হয়েছে বলে হিসাব দেখানো হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে
চাঁদা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন ডা. ইমরান। তবে এসব টাকা তার নিজের কাছে
নেই বলে জানিয়েছেন। যেসব ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন
তার মধ্যে রয়েছেন একজন সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামনিস্ট। তিনি তিন দফায়
দিয়েছেন আড়াই লাখ টাকা। এ টাকা ইমরানের কাছে দেয়া হয়েছে মঞ্চের অন্যতম
সংগঠক গৌরব ৭১’র সাধারণ সম্পাদক এফএম শাহীনের মাধ্যমে। পুলিশের সাবেক
কর্মকর্তা এসপি মাহবুব দিয়েছেন ৪ লাখ টাকা। এ টাকা ইমরানের হাতে দেয়া হয়
মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসুর সামনে।
বাপ্পাদিত্যর পরিচিত কানাডা প্রবাসী জিয়াউল হক মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছেন
বলে জানা গেছে। একজন সিনিয়র আইনজীবীও দিয়েছেন টাকা। একটি পত্রিকার মাধ্যমে
গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি প্রবাসীদের ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৩ টাকা দেয়া হয় ইমরানের
কাছে। এটি পরের দিন পত্রিকাতেও প্রকাশিত হয়। গত বছরের ৬ই ফেব্রুয়ারি
গণজাগরণ মঞ্চ থেকে ওঠানো হয় প্রায় ৪৩ হাজার টাকা। গণজাগরণ মঞ্চের প্রথম ৪
দিন জাগরণ মঞ্চের মিডিয়া সেলের রেজিস্ট্রার খাতার হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৪৫
লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। এ টাকা বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি থেকে আসা। এ
রেজিস্ট্রার নিয়ন্ত্রণ করতেন মঞ্চের আরেক সংগঠক মাহমুদুল হক মুন্সী। পরে এ
রেজিস্ট্রার খাতা গায়েব করে ফেলেন ইমরান। এর হিসাব ইমরান ছাড়া কারও কাছে
নেই। ইমরান টাকা নিয়েছেন জামায়াত সমর্থিত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,
হাসপাতাল, ব্যাংক ও ফার্ম থেকেও। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা আদায়ের পর
চাপে পড়ে ফের কমপক্ষে ২০টি প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরতও দিতে হয়েছে। বিষয়টি
স্বীকার করেছেন মঞ্চেরই একজন সংগঠক। ইমরান এইচ সরকারের অর্থনৈতিক অনিয়ম ও
স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়টি সামনে আসে কয়েকদিন পরই। তার প্রতিবাদ জানিয়ে
আন্দোলনের এক পর্যায়ে নোট অব ডিসেন্টও দেয় ছাত্র ফেডারেশন। কোটি কোটি টাকার
চাঁদাবাজির বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু’র দোতলায় একাধিক দিন
আলোচনা হয়। নানা বিতর্কের মাঝেই ইমরান এইচ সরকারকে মঞ্চের আহ্বায়ক থেকে
অব্যাহতি দিয়েছে মঞ্চেরই একটি অংশ। ১২ই এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে ইমরান এইচ
সরকারকে অব্যাহতি দেন মঞ্চের অন্যতম সংগঠক কামাল পাশা চৌধুরী। ‘গণজাগরণ
মঞ্চের কর্মী ও সংগঠকবৃন্দের ব্যানারে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এর আগে একই
ব্যানারে ৪ঠা এপ্রিল ইমরানকে শাহবাগ এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। গণজাগরণ
মঞ্চের ব্যানার ব্যবহার করে ইমরান সমপ্রতি ঘোষণা দেন রাজনৈতিক দল গঠনের। এ
নিয়ে সহকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। মঞ্চের কর্মীদের মধ্যে বিভেদ প্রকট
হয়েছে। ইতিমধ্যে কামাল পাশা গ্রুপের এক কর্মীকে আহত করার অভিযোগ তোলা
হয়েছে ইমরান গ্রুপের বিরুদ্ধে।
ছাত্র সংগঠনগুলোর সরে যাওয়া: গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জড়িত বেশির ভাগ সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতারা সরে গেছেন। হাইকমান্ডের নির্দেশে গত বছরের ২৬শে মার্চ সরে যায় ছাত্রলীগ। এরপর ২০৫টি সামাজিক সংগঠন সরে দাঁড়ায় মঞ্চ থেকে। বাম ছাত্র সংগঠন ছাত্রমৈত্রী, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র সমিতি ও ছাত্র ঐক্যফোরাম সরে পড়ে এ মাসে। এসব সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
ইমরানকে অব্যাহতি দিলেন ব্লগাররা: গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারকে অব্যাহতি দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্ক (বোয়ান)। ইমরান বোয়ানের আহ্বায়ক ছিলেন। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরানের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে অব্যাহতি দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ব্লগার অনিমেষ রহমান। ২০১৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি গঠন করা হয়েছিল বোয়ান। তবে বোয়ানের নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে ইমরানকে সংগঠনটির আহ্বায়ক পদের ওপর অনাস্থা জানায়। তিনি বলেন, বোয়ান গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে আছে ও থাকবে। কিন্তু কোনো খণ্ডিত অংশের সঙ্গে তারা যাবে না। এই মুহূর্তে গণজাগরণ মঞ্চ সার্বিক অর্থে আর কার্যকর নেই। গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে ইমরান এইচ সরকার তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। একই সঙ্গে বোয়ানের আহ্বায়ক হিসেবেও তিনি তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেসব সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ইমরান এইচ সরকারকে মুখপাত্র বানিয়েছিল, তাদের কেউ এখন গণজাগরণ মঞ্চে আসে না। ইমরানের ব্যক্তিগত বক্তব্যকে গণজাগরণ মঞ্চের বক্তব্য হিসেবে চালানো যাবে না। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজকেরা জানান, বোয়ানের ২৫ জন সদস্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। এ কমিটি বোয়ানের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ করবে। এই কমিটিতে ইমরান এইচ সরকারকে রাখা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কানিজ আকলিমা সুলতানা, প্রীতম আহমেদ, রাশিদুল হাসান, মোরসালিন মিজান প্রমুখ।
ইমরান এইচ সরকারের বক্তব্য: ইমরান এইচ সরকার সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, গণজাগরণ মঞ্চকে বিতর্কিত করতেই এ ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে। আন্দোলন চালাতে অনেকেই টাকা দিয়েছেন বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। বলেন, এ টাকা বিভিন্ন খাতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যয় করা হয়েছে। কোন আয় রাখা হয়নি। অনেকেই দায়িত্ব পালন করেছেন। টাকার হিসাব নিয়ে ডাকসু’র দোতলায় কয়েকবার আলোচনার বিষয়টিও স্বীকার করেন। বিদেশে শত কোটি টাকা পাচারের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি ডাঁহা মিথ্যা কথা। আমি একটি টাকাও পাচার করিনি। নিজে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার বিষয়টিও অস্বীকার করেন। এর আগে কানাডা পালানোর প্রচেষ্টার বিষয়টিও অস্বীকার করেন। আর্থিক বিষয়টি তার নিয়ন্ত্রণে ছিল না বলে জানান। তিনি বলেন, আমি কোন টাকা গ্রহণ করিনি। তবে কারা টাকা দিচ্ছে জানতাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি লাভবান হইনি। বরং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাকে কেউ অব্যাহতি দিতে পারে না। যারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা মঞ্চের কেউ নন। চাকরি থেকে ইস্তফা দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনে জড়িত হওয়ার পরই আমি ইস্তফা দিয়েছি। সরকারি চাকরিতে থেকে এ ধরনের আন্দোলন করা নৈতিকতাবিরোধী। এখন আপনার ব্যয় চলে কিভাবে জানতে চাইলে বলেন, আমি এখন একটি মেসে সহকর্মীদের সঙ্গে থাকি। মেসে থাকতে বেশি টাকার দরকার হয় না। এ ব্যয় আমি পরিবার থেকেই পাই। ইমরান বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মঞ্চের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যাওয়ার বিষয়ে বলেন, মানুষের আস্থা কমেনি। বরং বেড়েছে। গত ডিসেম্বরে আমাদের একটি সমাবেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ হয়েছে। আমাদের আন্দোলন ইস্যুভিত্তিক। এটা চলতে থাকবে। প্রতিদিন করতে হবে বিষয়টি এমন নয়। যখনই প্রয়োজন হবে তখনই আন্দোলন হবে।
ছাত্র সংগঠনগুলোর সরে যাওয়া: গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে জড়িত বেশির ভাগ সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতারা সরে গেছেন। হাইকমান্ডের নির্দেশে গত বছরের ২৬শে মার্চ সরে যায় ছাত্রলীগ। এরপর ২০৫টি সামাজিক সংগঠন সরে দাঁড়ায় মঞ্চ থেকে। বাম ছাত্র সংগঠন ছাত্রমৈত্রী, জাসদ ছাত্রলীগ, ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র সমিতি ও ছাত্র ঐক্যফোরাম সরে পড়ে এ মাসে। এসব সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
ইমরানকে অব্যাহতি দিলেন ব্লগাররা: গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারকে অব্যাহতি দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নেটওয়ার্ক (বোয়ান)। ইমরান বোয়ানের আহ্বায়ক ছিলেন। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরানের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে অব্যাহতি দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ব্লগার অনিমেষ রহমান। ২০১৩ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি গঠন করা হয়েছিল বোয়ান। তবে বোয়ানের নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে ইমরানকে সংগঠনটির আহ্বায়ক পদের ওপর অনাস্থা জানায়। তিনি বলেন, বোয়ান গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে আছে ও থাকবে। কিন্তু কোনো খণ্ডিত অংশের সঙ্গে তারা যাবে না। এই মুহূর্তে গণজাগরণ মঞ্চ সার্বিক অর্থে আর কার্যকর নেই। গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে ইমরান এইচ সরকার তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। একই সঙ্গে বোয়ানের আহ্বায়ক হিসেবেও তিনি তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেসব সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ইমরান এইচ সরকারকে মুখপাত্র বানিয়েছিল, তাদের কেউ এখন গণজাগরণ মঞ্চে আসে না। ইমরানের ব্যক্তিগত বক্তব্যকে গণজাগরণ মঞ্চের বক্তব্য হিসেবে চালানো যাবে না। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজকেরা জানান, বোয়ানের ২৫ জন সদস্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। এ কমিটি বোয়ানের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ করবে। এই কমিটিতে ইমরান এইচ সরকারকে রাখা হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কানিজ আকলিমা সুলতানা, প্রীতম আহমেদ, রাশিদুল হাসান, মোরসালিন মিজান প্রমুখ।
ইমরান এইচ সরকারের বক্তব্য: ইমরান এইচ সরকার সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, গণজাগরণ মঞ্চকে বিতর্কিত করতেই এ ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছে। আন্দোলন চালাতে অনেকেই টাকা দিয়েছেন বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। বলেন, এ টাকা বিভিন্ন খাতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যয় করা হয়েছে। কোন আয় রাখা হয়নি। অনেকেই দায়িত্ব পালন করেছেন। টাকার হিসাব নিয়ে ডাকসু’র দোতলায় কয়েকবার আলোচনার বিষয়টিও স্বীকার করেন। বিদেশে শত কোটি টাকা পাচারের বিষয়ে তিনি বলেন, এটি ডাঁহা মিথ্যা কথা। আমি একটি টাকাও পাচার করিনি। নিজে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার বিষয়টিও অস্বীকার করেন। এর আগে কানাডা পালানোর প্রচেষ্টার বিষয়টিও অস্বীকার করেন। আর্থিক বিষয়টি তার নিয়ন্ত্রণে ছিল না বলে জানান। তিনি বলেন, আমি কোন টাকা গ্রহণ করিনি। তবে কারা টাকা দিচ্ছে জানতাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি লাভবান হইনি। বরং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাকে অব্যাহতি দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাকে কেউ অব্যাহতি দিতে পারে না। যারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা মঞ্চের কেউ নন। চাকরি থেকে ইস্তফা দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনে জড়িত হওয়ার পরই আমি ইস্তফা দিয়েছি। সরকারি চাকরিতে থেকে এ ধরনের আন্দোলন করা নৈতিকতাবিরোধী। এখন আপনার ব্যয় চলে কিভাবে জানতে চাইলে বলেন, আমি এখন একটি মেসে সহকর্মীদের সঙ্গে থাকি। মেসে থাকতে বেশি টাকার দরকার হয় না। এ ব্যয় আমি পরিবার থেকেই পাই। ইমরান বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মঞ্চের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যাওয়ার বিষয়ে বলেন, মানুষের আস্থা কমেনি। বরং বেড়েছে। গত ডিসেম্বরে আমাদের একটি সমাবেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ হয়েছে। আমাদের আন্দোলন ইস্যুভিত্তিক। এটা চলতে থাকবে। প্রতিদিন করতে হবে বিষয়টি এমন নয়। যখনই প্রয়োজন হবে তখনই আন্দোলন হবে।
No comments