এই সরকার দীর্ঘায়িত হওয়া বিপজ্জনক
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া |
(সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া)
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, 'একতরফা' নির্বাচনের মাধ্যমে ৫
জানুয়ারি দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বর্তমান সংসদ
জনপ্রতিনিধিত্বহীন এবং সরকার 'অবৈধ'। তার মতে, এই অবৈধ সরকার দীর্ঘায়িত
হওয়া খুবই বিপজ্জনক। দেশ এখন গণতন্ত্রবিহীন অবস্থায় রয়েছে দাবি করে খালেদা
জিয়া বলেন, তাই এখন শুরু হবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। একটি অবৈধ
সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়িত্ববোধ থাকে না। শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য
অবিলম্বে 'বিপজ্জনক সরকার'কে সরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায়
আন্দোলনের পাশাপাশি সমঝোতা ও সংলাপের আহ্বানও জানান তিনি। খালেদা জিয়া
হরতাল-অবরোধ বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গতকাল বুধবার
বিকেলে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে দশম সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম সংবাদ
সম্মেলনে খালেদা জিয়া বক্তব্য রাখেন। শিগগির বেশ কিছু অঞ্চলও সফর করবেন বলে
জানান খালেদা জিয়া। নবগঠিত সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন ২৯ জানুয়ারি
'গণতন্ত্র হত্যা ও জনগণের ভোটাধিকার হরণে'র প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ
সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপিপ্রধান। রাজধানীসহ সারাদেশে ওই দিন
কালো পতাকা মিছিল করবেন তারা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে 'বর্জন' করার জন্য
দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে ২০ জানুয়ারি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে
গণসমাবেশ ও শোভাযাত্রার কর্মসূচি দেন তিনি। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকার
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশ করবে বিরোধী জোট। এর আগে ১৮ জানুয়ারি
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালনে সারাদেশে বিভিন্ন
কর্মসূচি পালন করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজন
করা হবে আলোচনা সভা। সংবাদ সম্মেলনের আগে ৫ জানুয়ারির 'একতরফা' নির্বাচনের
ভোটচিত্র নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র সাংবাদিকদের দেখানো হয়। সংবাদ
সম্মেলনে সাধারণত প্রশ্নোত্তর না দিলেও গতকাল লিখিত বক্তব্যের পর কয়েকটি
প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও ১৮ দলীয়
জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। খালেদা জিয়া বলেন, প্রহসনের
নির্বাচনে গণতন্ত্রের হত্যাকারী এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ নীরব প্রতিবাদ
জানিয়েছে। অন্যায়, অবিচার, ভোটাধিকার হরণ ও গণতন্ত্র হত্যাকারী সরকারের
বিরুদ্ধে গত ৫ জানুয়ারি নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই ভোটে জনগণের মতের প্রতিফলন
ঘটেনি। এই 'প্রহসন' দেশের মানুষ বর্জন করেছে। সারাদেশে কোথাও মানুষ
ভোটকেন্দ্রে যায়নি।
গড়ে ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি দাবি করে তিনি বলেন, আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন 'জালিয়াতি' করে ৪০ শতাংশ ভোটের হিসাব দিয়েছে। এভাবে প্রতারণা করে, সন্ত্রাস করে, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তারা বেশিদিন গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এখন তাদের আচরণ ও ভাষা অরাজনৈতিক, অশালীন ও বেসামাল হয়ে পড়েছে। তারা রাজনীতিকে কলুষিত করে ফেলেছে। খালেদা জিয়া বলেন, সমঝোতার জন্য তারা তাদের বারবার আহ্বান জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়েই জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলেছেন। তারা সে আহ্বানে সাড়া দেননি। তারা আবারও সমঝোতার আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা সহিংসতা, হানাহানিতে বিশ্বাস করেন না; শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতি করতে চান। সে পথ বন্ধ করলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তার দায় ক্ষমতাসীন ছাড়া আর কারও নয়।
খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচনের নামে ৫ জানুয়ারির প্রহসন প্রমাণ করেছে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি কতটা যৌক্তিক ছিল। প্রমাণ হয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হতে পারে না। ৫ জানুয়ারির ভোটে অংশ না নেওয়ার জন্য কোনো আক্ষেপ নেই জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ১৫৩ আসনে তারা কোনো নির্বাচনই করতে পারেনি। বাকি আসনগুলোতে জঘন্য কারসাজি ও জালিয়াতি করেছে। এটা গায়ের জোরে এক অবৈধ সরকার। এটাই আমাদের আন্দোলনের এক বিরাট সাফল্য। আন্দোলনের পাশাপাশি চলবে সংলাপের প্রচেষ্টা : খালেদা জিয়া বলেন, মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। এই সংগ্রামের পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে তাদের আহ্বান অব্যাহত রয়েছে। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তিনি আবারও অবিলম্বে সে লক্ষ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংলাপ ও সমাঝোতার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অবিলম্বে সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার; গ্রেফতার, নির্যাতন, হামলা, মামলা বন্ধ; বিএনপি সদর দফতরসহ বিরোধী দলের সব অফিস খুলে দিয়ে স্বাভাবিক তৎপরতার সুযোগ দেওয়া; শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির ওপর থেকে অলিখিত বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে সভা-সমাবেশ, মিছিল-শোভাযাত্রা ও প্রচারাভিযানে হামলা, হুমকি, বাধা দেওয়া বন্ধ করা এবং সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
খালেদা জিয়া বলেন, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ওপর এই হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, 'এর জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নিরপরাধ নেতাদের ওপর অত্যাচার বাড়ানো হয়েছে। অথচ সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এ ঘটনার সঙ্গে শাসক দলের লোকজনই জড়িত।'
খালেদা জিয়া এও বলেন, এখন যদি এসব পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে আগামীতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং প্রয়োজনবোধে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে সব অপরাধীকে চিহ্নিত ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। কোনো কুল হারাইনি : নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন দুই কুলই হারিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে খালেদা জিয়া বলেন, 'আমরা কোনো কুল হারাইনি। কুল হারিয়েছে তারা। জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।'
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহিংসতা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি কখনোই সহিংসতা করেনি। আমাদের আন্দোলন জনগণকেন্দ্রিক। আমাদের আন্দোলন সব সময়ই সঠিক ছিল। কারণ আমরা উন্নয়ন আর গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়বেন কি-না, জানতে চাইলে সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের একসঙ্গে আন্দোলন করার বিষয়টি তুলে ধরেন বিএনপি নেত্রী। তিনি বলেন, '৮৬ সালের স্বৈরাচার আমলে সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি ছিল যে, কেউই নির্বাচনে অংশ নেবে না। সে সময় আওয়ামী লীগ চুক্তি ভঙ্গ করে জামায়াতের সঙ্গে ওই নির্বাচনে অংশ নেয়। এই যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা উঠছে, এর জন্য আন্দোলন কে করেছে। আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি একত্রে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি চালু করে।
পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে খালেদা জিয়া বলেন, প্রতিবেশীসহ সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপ বিএনপি সমর্থন করে না।
সরকারে গেলে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে : খালেদা জিয়া বলেন, তারা সরকারে গেলে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবেন। পদক্ষেপগুলো হলো_ সবার অংশগ্রহণে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা; সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা কঠোরভাবে দমন করা; সব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব আরও জোরদার করা; মেধা ও যোগ্যতাই হবে মূল্যায়নের মাপকাঠি, বিরোধী দলকে যথাযথ মর্যাদা; অখ জাতিসত্তা গড়ে তোলা; সংঘাতের রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে সুস্থ রাজনীতি ফিরিয়ে আনা; বিচার বিভাগ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা; সুশাসন ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা; নারী শিক্ষা, নারী অধিকার ও নারীর ক্ষমতায়নকে প্রসারিত করা হবে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নির্বাচনী ইশতেহারে বিশদভাবে তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে 'যথাযথ' মর্যাদা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভোট নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র : খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের আগে ৫ জানুয়ারির 'একতরফা' নির্বাচনের ভোটের চিত্র নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র সাংবাদিকদের দেখানো হয়। ৪৫ মিনিট স্থায়ী এই তথ্যচিত্রে ভোটকেন্দ্রের ভোটারশূন্য অবস্থা, প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ স্থানীয় জনসাধারণের বক্তব্য রয়েছে। পরে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্যচিত্রের একটি সিডিও দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সারোয়ারী রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সহসভাপতি শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, শমসের মবিন চৌধুরী, বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান, ওসমান ফারুক, রিয়াজ রহমান, ফজলুর রহমান পটল, আবদুল মান্নান, মুশফিকুর রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, হায়দার আলী, আহমেদ আজম খান, আবদুল কাইয়ুম, মোহাম্মদ শাহজাহান, জয়নুল আবদিন ফারুক, শিরিন সুলতানা, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান।
১৮ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান, জামায়াতের রেদোয়ান উল্লাহ শাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর শেখ আনোয়ারুল হক, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, 'একতরফা' নির্বাচনের মাধ্যমে ৫ জানুয়ারি দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বর্তমান সংসদ জনপ্রতিনিধিত্বহীন এবং সরকার 'অবৈধ'। তার মতে, এই অবৈধ সরকার দীর্ঘায়িত হওয়া খুবই বিপজ্জনক। দেশ এখন গণতন্ত্রবিহীন অবস্থায় রয়েছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, তাই এখন শুরু হবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। একটি অবৈধ সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়িত্ববোধ থাকে না। শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অবিলম্বে 'বিপজ্জনক সরকার'কে সরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনের পাশাপাশি সমঝোতা ও সংলাপের আহ্বানও জানান তিনি। খালেদা জিয়া হরতাল-অবরোধ বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে দশম সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বক্তব্য রাখেন। শিগগির বেশ কিছু অঞ্চলও সফর করবেন বলে জানান খালেদা জিয়া। নবগঠিত সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন ২৯ জানুয়ারি 'গণতন্ত্র হত্যা ও জনগণের ভোটাধিকার হরণে'র প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি
ঘোষণা করেন বিএনপিপ্রধান। রাজধানীসহ সারাদেশে ওই দিন কালো পতাকা মিছিল করবেন তারা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে 'বর্জন' করার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে ২০ জানুয়ারি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গণসমাবেশ ও শোভাযাত্রার কর্মসূচি দেন তিনি। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশ করবে বিরোধী জোট। এর আগে ১৮ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালনে সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজন করা হবে আলোচনা সভা।
সংবাদ সম্মেলনের আগে ৫ জানুয়ারির 'একতরফা' নির্বাচনের ভোটচিত্র নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র সাংবাদিকদের দেখানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণত প্রশ্নোত্তর না দিলেও গতকাল লিখিত বক্তব্যের পর কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, প্রহসনের নির্বাচনে গণতন্ত্রের হত্যাকারী এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে। অন্যায়, অবিচার, ভোটাধিকার হরণ ও গণতন্ত্র হত্যাকারী সরকারের বিরুদ্ধে গত ৫ জানুয়ারি নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই ভোটে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটেনি। এই 'প্রহসন' দেশের মানুষ বর্জন করেছে। সারাদেশে কোথাও মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি।
গড়ে ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি দাবি করে তিনি বলেন, আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন 'জালিয়াতি' করে ৪০ শতাংশ ভোটের হিসাব দিয়েছে। এভাবে প্রতারণা করে, সন্ত্রাস করে, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তারা বেশিদিন গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এখন তাদের আচরণ ও ভাষা অরাজনৈতিক, অশালীন ও বেসামাল হয়ে পড়েছে। তারা রাজনীতিকে কলুষিত করে ফেলেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, সমঝোতার জন্য তারা তাদের বারবার আহ্বান জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়েই জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলেছেন। তারা সে আহ্বানে সাড়া দেননি। তারা আবারও সমঝোতার আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা সহিংসতা, হানাহানিতে বিশ্বাস করেন না; শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতি করতে চান। সে পথ বন্ধ করলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তার দায় ক্ষমতাসীন ছাড়া আর কারও নয়।
খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচনের নামে ৫ জানুয়ারির প্রহসন প্রমাণ করেছে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি কতটা যৌক্তিক ছিল। প্রমাণ হয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হতে পারে না।
৫ জানুয়ারির ভোটে অংশ না নেওয়ার জন্য কোনো আক্ষেপ নেই জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ১৫৩ আসনে তারা কোনো নির্বাচনই করতে পারেনি। বাকি আসনগুলোতে জঘন্য কারসাজি ও জালিয়াতি করেছে। এটা গায়ের জোরে এক অবৈধ সরকার। এটাই আমাদের আন্দোলনের এক বিরাট সাফল্য।
আন্দোলনের পাশাপাশি চলবে সংলাপের প্রচেষ্টা : খালেদা জিয়া বলেন, মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। এই সংগ্রামের পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে তাদের আহ্বান অব্যাহত রয়েছে। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তিনি আবারও অবিলম্বে সে লক্ষ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংলাপ ও সমাঝোতার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অবিলম্বে সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার; গ্রেফতার, নির্যাতন, হামলা, মামলা বন্ধ; বিএনপি সদর দফতরসহ বিরোধী দলের সব অফিস খুলে দিয়ে স্বাভাবিক তৎপরতার সুযোগ দেওয়া; শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির ওপর থেকে অলিখিত বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে সভা-সমাবেশ, মিছিল-শোভাযাত্রা ও প্রচারাভিযানে হামলা, হুমকি, বাধা দেওয়া বন্ধ করা এবং সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
খালেদা জিয়া বলেন, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ওপর এই হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, 'এর জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নিরপরাধ নেতাদের ওপর অত্যাচার বাড়ানো হয়েছে। অথচ সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এ ঘটনার সঙ্গে শাসক দলের লোকজনই জড়িত।'
খালেদা জিয়া এও বলেন, এখন যদি এসব পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে আগামীতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং প্রয়োজনবোধে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে সব অপরাধীকে চিহ্নিত ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
কোনো কুল হারাইনি : নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন দুই কুলই হারিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে খালেদা জিয়া বলেন, 'আমরা কোনো কুল হারাইনি। কুল হারিয়েছে তারা। জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।'
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহিংসতা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি কখনোই সহিংসতা করেনি। আমাদের আন্দোলন জনগণকেন্দ্রিক। আমাদের আন্দোলন সব সময়ই সঠিক ছিল। কারণ আমরা উন্নয়ন আর গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়বেন কি-না, জানতে চাইলে সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের একসঙ্গে আন্দোলন করার বিষয়টি তুলে ধরেন বিএনপি নেত্রী। তিনি বলেন, '৮৬ সালের স্বৈরাচার আমলে সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি ছিল যে, কেউই নির্বাচনে অংশ নেবে না। সে সময় আওয়ামী লীগ চুক্তি ভঙ্গ করে জামায়াতের সঙ্গে ওই নির্বাচনে অংশ নেয়। এই যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা উঠছে, এর জন্য আন্দোলন কে করেছে। আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি একত্রে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি চালু করে।
পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে খালেদা জিয়া বলেন, প্রতিবেশীসহ সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপ বিএনপি সমর্থন করে না।
সরকারে গেলে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে : খালেদা জিয়া বলেন, তারা সরকারে গেলে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবেন। পদক্ষেপগুলো হলো_ সবার অংশগ্রহণে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা; সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা কঠোরভাবে দমন করা; সব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব আরও জোরদার করা; মেধা ও যোগ্যতাই হবে মূল্যায়নের মাপকাঠি, বিরোধী দলকে যথাযথ মর্যাদা; অখ জাতিসত্তা গড়ে তোলা; সংঘাতের রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে সুস্থ রাজনীতি ফিরিয়ে আনা; বিচার বিভাগ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা; সুশাসন ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা; নারী শিক্ষা, নারী অধিকার ও নারীর ক্ষমতায়নকে প্রসারিত করা হবে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নির্বাচনী ইশতেহারে বিশদভাবে তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে 'যথাযথ' মর্যাদা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
গড়ে ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি দাবি করে তিনি বলেন, আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন 'জালিয়াতি' করে ৪০ শতাংশ ভোটের হিসাব দিয়েছে। এভাবে প্রতারণা করে, সন্ত্রাস করে, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তারা বেশিদিন গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এখন তাদের আচরণ ও ভাষা অরাজনৈতিক, অশালীন ও বেসামাল হয়ে পড়েছে। তারা রাজনীতিকে কলুষিত করে ফেলেছে। খালেদা জিয়া বলেন, সমঝোতার জন্য তারা তাদের বারবার আহ্বান জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়েই জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলেছেন। তারা সে আহ্বানে সাড়া দেননি। তারা আবারও সমঝোতার আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা সহিংসতা, হানাহানিতে বিশ্বাস করেন না; শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতি করতে চান। সে পথ বন্ধ করলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তার দায় ক্ষমতাসীন ছাড়া আর কারও নয়।
খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচনের নামে ৫ জানুয়ারির প্রহসন প্রমাণ করেছে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি কতটা যৌক্তিক ছিল। প্রমাণ হয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হতে পারে না। ৫ জানুয়ারির ভোটে অংশ না নেওয়ার জন্য কোনো আক্ষেপ নেই জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ১৫৩ আসনে তারা কোনো নির্বাচনই করতে পারেনি। বাকি আসনগুলোতে জঘন্য কারসাজি ও জালিয়াতি করেছে। এটা গায়ের জোরে এক অবৈধ সরকার। এটাই আমাদের আন্দোলনের এক বিরাট সাফল্য। আন্দোলনের পাশাপাশি চলবে সংলাপের প্রচেষ্টা : খালেদা জিয়া বলেন, মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। এই সংগ্রামের পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে তাদের আহ্বান অব্যাহত রয়েছে। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তিনি আবারও অবিলম্বে সে লক্ষ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংলাপ ও সমাঝোতার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অবিলম্বে সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার; গ্রেফতার, নির্যাতন, হামলা, মামলা বন্ধ; বিএনপি সদর দফতরসহ বিরোধী দলের সব অফিস খুলে দিয়ে স্বাভাবিক তৎপরতার সুযোগ দেওয়া; শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির ওপর থেকে অলিখিত বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে সভা-সমাবেশ, মিছিল-শোভাযাত্রা ও প্রচারাভিযানে হামলা, হুমকি, বাধা দেওয়া বন্ধ করা এবং সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
খালেদা জিয়া বলেন, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ওপর এই হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, 'এর জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নিরপরাধ নেতাদের ওপর অত্যাচার বাড়ানো হয়েছে। অথচ সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এ ঘটনার সঙ্গে শাসক দলের লোকজনই জড়িত।'
খালেদা জিয়া এও বলেন, এখন যদি এসব পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে আগামীতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং প্রয়োজনবোধে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে সব অপরাধীকে চিহ্নিত ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। কোনো কুল হারাইনি : নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন দুই কুলই হারিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে খালেদা জিয়া বলেন, 'আমরা কোনো কুল হারাইনি। কুল হারিয়েছে তারা। জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।'
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহিংসতা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি কখনোই সহিংসতা করেনি। আমাদের আন্দোলন জনগণকেন্দ্রিক। আমাদের আন্দোলন সব সময়ই সঠিক ছিল। কারণ আমরা উন্নয়ন আর গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়বেন কি-না, জানতে চাইলে সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের একসঙ্গে আন্দোলন করার বিষয়টি তুলে ধরেন বিএনপি নেত্রী। তিনি বলেন, '৮৬ সালের স্বৈরাচার আমলে সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি ছিল যে, কেউই নির্বাচনে অংশ নেবে না। সে সময় আওয়ামী লীগ চুক্তি ভঙ্গ করে জামায়াতের সঙ্গে ওই নির্বাচনে অংশ নেয়। এই যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা উঠছে, এর জন্য আন্দোলন কে করেছে। আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি একত্রে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি চালু করে।
পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে খালেদা জিয়া বলেন, প্রতিবেশীসহ সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপ বিএনপি সমর্থন করে না।
সরকারে গেলে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে : খালেদা জিয়া বলেন, তারা সরকারে গেলে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবেন। পদক্ষেপগুলো হলো_ সবার অংশগ্রহণে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা; সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা কঠোরভাবে দমন করা; সব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব আরও জোরদার করা; মেধা ও যোগ্যতাই হবে মূল্যায়নের মাপকাঠি, বিরোধী দলকে যথাযথ মর্যাদা; অখ জাতিসত্তা গড়ে তোলা; সংঘাতের রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে সুস্থ রাজনীতি ফিরিয়ে আনা; বিচার বিভাগ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা; সুশাসন ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা; নারী শিক্ষা, নারী অধিকার ও নারীর ক্ষমতায়নকে প্রসারিত করা হবে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নির্বাচনী ইশতেহারে বিশদভাবে তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে 'যথাযথ' মর্যাদা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভোট নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র : খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের আগে ৫ জানুয়ারির 'একতরফা' নির্বাচনের ভোটের চিত্র নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র সাংবাদিকদের দেখানো হয়। ৪৫ মিনিট স্থায়ী এই তথ্যচিত্রে ভোটকেন্দ্রের ভোটারশূন্য অবস্থা, প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ স্থানীয় জনসাধারণের বক্তব্য রয়েছে। পরে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্যচিত্রের একটি সিডিও দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সারোয়ারী রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সহসভাপতি শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, শমসের মবিন চৌধুরী, বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান, ওসমান ফারুক, রিয়াজ রহমান, ফজলুর রহমান পটল, আবদুল মান্নান, মুশফিকুর রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, হায়দার আলী, আহমেদ আজম খান, আবদুল কাইয়ুম, মোহাম্মদ শাহজাহান, জয়নুল আবদিন ফারুক, শিরিন সুলতানা, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান।
১৮ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান, জামায়াতের রেদোয়ান উল্লাহ শাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর শেখ আনোয়ারুল হক, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, 'একতরফা' নির্বাচনের মাধ্যমে ৫ জানুয়ারি দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, বর্তমান সংসদ জনপ্রতিনিধিত্বহীন এবং সরকার 'অবৈধ'। তার মতে, এই অবৈধ সরকার দীর্ঘায়িত হওয়া খুবই বিপজ্জনক। দেশ এখন গণতন্ত্রবিহীন অবস্থায় রয়েছে দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, তাই এখন শুরু হবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। একটি অবৈধ সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়িত্ববোধ থাকে না। শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অবিলম্বে 'বিপজ্জনক সরকার'কে সরিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনের পাশাপাশি সমঝোতা ও সংলাপের আহ্বানও জানান তিনি। খালেদা জিয়া হরতাল-অবরোধ বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে দশম সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বক্তব্য রাখেন। শিগগির বেশ কিছু অঞ্চলও সফর করবেন বলে জানান খালেদা জিয়া। নবগঠিত সংসদের প্রথম অধিবেশনের দিন ২৯ জানুয়ারি 'গণতন্ত্র হত্যা ও জনগণের ভোটাধিকার হরণে'র প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি
ঘোষণা করেন বিএনপিপ্রধান। রাজধানীসহ সারাদেশে ওই দিন কালো পতাকা মিছিল করবেন তারা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে 'বর্জন' করার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে ২০ জানুয়ারি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গণসমাবেশ ও শোভাযাত্রার কর্মসূচি দেন তিনি। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশ করবে বিরোধী জোট। এর আগে ১৮ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী পালনে সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজন করা হবে আলোচনা সভা।
সংবাদ সম্মেলনের আগে ৫ জানুয়ারির 'একতরফা' নির্বাচনের ভোটচিত্র নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র সাংবাদিকদের দেখানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণত প্রশ্নোত্তর না দিলেও গতকাল লিখিত বক্তব্যের পর কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, প্রহসনের নির্বাচনে গণতন্ত্রের হত্যাকারী এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে। অন্যায়, অবিচার, ভোটাধিকার হরণ ও গণতন্ত্র হত্যাকারী সরকারের বিরুদ্ধে গত ৫ জানুয়ারি নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে। এই ভোটে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটেনি। এই 'প্রহসন' দেশের মানুষ বর্জন করেছে। সারাদেশে কোথাও মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি।
গড়ে ৫ শতাংশ ভোটও পড়েনি দাবি করে তিনি বলেন, আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন 'জালিয়াতি' করে ৪০ শতাংশ ভোটের হিসাব দিয়েছে। এভাবে প্রতারণা করে, সন্ত্রাস করে, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তারা বেশিদিন গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এখন তাদের আচরণ ও ভাষা অরাজনৈতিক, অশালীন ও বেসামাল হয়ে পড়েছে। তারা রাজনীতিকে কলুষিত করে ফেলেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, সমঝোতার জন্য তারা তাদের বারবার আহ্বান জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়েই জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলেছেন। তারা সে আহ্বানে সাড়া দেননি। তারা আবারও সমঝোতার আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা সহিংসতা, হানাহানিতে বিশ্বাস করেন না; শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতি করতে চান। সে পথ বন্ধ করলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তার দায় ক্ষমতাসীন ছাড়া আর কারও নয়।
খালেদা জিয়া বলেন, নির্বাচনের নামে ৫ জানুয়ারির প্রহসন প্রমাণ করেছে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি কতটা যৌক্তিক ছিল। প্রমাণ হয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হতে পারে না।
৫ জানুয়ারির ভোটে অংশ না নেওয়ার জন্য কোনো আক্ষেপ নেই জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ১৫৩ আসনে তারা কোনো নির্বাচনই করতে পারেনি। বাকি আসনগুলোতে জঘন্য কারসাজি ও জালিয়াতি করেছে। এটা গায়ের জোরে এক অবৈধ সরকার। এটাই আমাদের আন্দোলনের এক বিরাট সাফল্য।
আন্দোলনের পাশাপাশি চলবে সংলাপের প্রচেষ্টা : খালেদা জিয়া বলেন, মানুষ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। এই সংগ্রামের পাশাপাশি আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে তাদের আহ্বান অব্যাহত রয়েছে। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তিনি আবারও অবিলম্বে সে লক্ষ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সংলাপ ও সমাঝোতার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য অবিলম্বে সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার; গ্রেফতার, নির্যাতন, হামলা, মামলা বন্ধ; বিএনপি সদর দফতরসহ বিরোধী দলের সব অফিস খুলে দিয়ে স্বাভাবিক তৎপরতার সুযোগ দেওয়া; শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির ওপর থেকে অলিখিত বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে সভা-সমাবেশ, মিছিল-শোভাযাত্রা ও প্রচারাভিযানে হামলা, হুমকি, বাধা দেওয়া বন্ধ করা এবং সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন।
খালেদা জিয়া বলেন, সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ওপর এই হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, 'এর জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নিরপরাধ নেতাদের ওপর অত্যাচার বাড়ানো হয়েছে। অথচ সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এ ঘটনার সঙ্গে শাসক দলের লোকজনই জড়িত।'
খালেদা জিয়া এও বলেন, এখন যদি এসব পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে আগামীতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং প্রয়োজনবোধে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে সব অপরাধীকে চিহ্নিত ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
কোনো কুল হারাইনি : নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন দুই কুলই হারিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে খালেদা জিয়া বলেন, 'আমরা কোনো কুল হারাইনি। কুল হারিয়েছে তারা। জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।'
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সহিংসতা নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি কখনোই সহিংসতা করেনি। আমাদের আন্দোলন জনগণকেন্দ্রিক। আমাদের আন্দোলন সব সময়ই সঠিক ছিল। কারণ আমরা উন্নয়ন আর গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি।
জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছাড়বেন কি-না, জানতে চাইলে সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের একসঙ্গে আন্দোলন করার বিষয়টি তুলে ধরেন বিএনপি নেত্রী। তিনি বলেন, '৮৬ সালের স্বৈরাচার আমলে সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি চুক্তি ছিল যে, কেউই নির্বাচনে অংশ নেবে না। সে সময় আওয়ামী লীগ চুক্তি ভঙ্গ করে জামায়াতের সঙ্গে ওই নির্বাচনে অংশ নেয়। এই যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা উঠছে, এর জন্য আন্দোলন কে করেছে। আওয়ামী লীগ, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি একত্রে আন্দোলন করে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি চালু করে।
পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে খালেদা জিয়া বলেন, প্রতিবেশীসহ সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারও হস্তক্ষেপ বিএনপি সমর্থন করে না।
সরকারে গেলে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হবে : খালেদা জিয়া বলেন, তারা সরকারে গেলে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবেন। পদক্ষেপগুলো হলো_ সবার অংশগ্রহণে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পন্থায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা; সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা কঠোরভাবে দমন করা; সব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা ও বন্ধুত্ব আরও জোরদার করা; মেধা ও যোগ্যতাই হবে মূল্যায়নের মাপকাঠি, বিরোধী দলকে যথাযথ মর্যাদা; অখ জাতিসত্তা গড়ে তোলা; সংঘাতের রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে সুস্থ রাজনীতি ফিরিয়ে আনা; বিচার বিভাগ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করা; সুশাসন ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা; নারী শিক্ষা, নারী অধিকার ও নারীর ক্ষমতায়নকে প্রসারিত করা হবে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা নির্বাচনী ইশতেহারে বিশদভাবে তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসকে 'যথাযথ' মর্যাদা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভোট নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র : খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের আগে ৫
জানুয়ারির 'একতরফা' নির্বাচনের ভোটের চিত্র নিয়ে নির্মিত একটি
প্রামাণ্যচিত্র সাংবাদিকদের দেখানো হয়। ৪৫ মিনিট স্থায়ী এই তথ্যচিত্রে
ভোটকেন্দ্রের ভোটারশূন্য অবস্থা, প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারসহ স্থানীয়
জনসাধারণের বক্তব্য রয়েছে। পরে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্যচিত্রের একটি সিডিও
দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সারোয়ারী রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সহসভাপতি শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, শমসের মবিন চৌধুরী, বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান, ওসমান ফারুক, রিয়াজ রহমান, ফজলুর রহমান পটল, আবদুল মান্নান, মুশফিকুর রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, হায়দার আলী, আহমেদ আজম খান, আবদুল কাইয়ুম, মোহাম্মদ শাহজাহান, জয়নুল আবদিন ফারুক, শিরিন সুলতানা, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান। ১৮ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান, জামায়াতের রেদোয়ান উল্লাহ শাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর শেখ আনোয়ারুল হক, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, সারোয়ারী রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সহসভাপতি শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, শমসের মবিন চৌধুরী, বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান, ওসমান ফারুক, রিয়াজ রহমান, ফজলুর রহমান পটল, আবদুল মান্নান, মুশফিকুর রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, হায়দার আলী, আহমেদ আজম খান, আবদুল কাইয়ুম, মোহাম্মদ শাহজাহান, জয়নুল আবদিন ফারুক, শিরিন সুলতানা, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান। ১৮ দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে ছিলেন এলডিপি সভাপতি অলি আহমদ, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান, জামায়াতের রেদোয়ান উল্লাহ শাহেদী, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল লতিফ নেজামী, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার শফিউল আলম প্রধান, এনডিপির খন্দকার গোলাম মর্তুজা, বাংলাদেশ ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাপ ভাসানীর শেখ আনোয়ারুল হক, ইসলামিক পার্টির আবদুল মোবিন, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি প্রমুখ।
No comments