সাকার রায়ের জন্য বিশেষ আগ্রহ by মেহেদী হাসান পিয়াস
একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ
অপেক্ষমাণ রয়েছে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার রায়।
গত
১৪ আগস্ট সাকা চৌধুরীর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হলে চেয়ারম্যান বিচারপতি
এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য
অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন।
নানা কারণেই মামলাটির রায় নিয়ে জনমনে রয়েছে বিশেষ আগ্রহ। যে ছয়টি মামলার রায় ইতোমধ্যেই হয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটি মামলার আসামিই জামায়াতের শীর্ষ নেতা। প্রথম রায় হওয়া মামলার আসামি আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকার এ দলটিরই সাবেক নেতা।
ঘোষিত রায়গুলোর মধ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও পলাতক জামায়াতের সাবেক রোকন (সদস্য) আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকারকে ফাঁসি এবং জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে ৯০ বছর ও আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার রায়টি হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সপ্তম এবং ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৃতীয় রায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ রায় নিয়ে আগ্রহের কারণ হচ্ছে, এটি হবে কোনো দ্বিতীয় রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে প্রথম রায়। আর প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতা হওয়ার কারণেই রায়টি নিয়ে আগ্রহ খুব বেশি।
আইন বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিকভাবে বিএনপির প্রধান মিত্র জামায়াত। এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল পাঁচটি রায় দিয়েছেন ধর্মাশ্রয়ী এ রাজনৈতিক দলটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে।
জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ওরফে দেইল্যা রাজাকার এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ওরফে কসাই কাদের।
এসব মামলার রায়ের পর বিএনপির শীর্ষ অনেক নেতাই বিচ্ছিন্নভাবে জামায়াতের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সুর মেলালেও রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে দলটিকে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেখা যায়নি। অনেক চেষ্টা করেও ট্রাইব্যুনাল কিংবা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপিকে পাশে পায়নি জামায়াত।
আবার বিভিন্ন রায়ের পর দেশব্যাপী যেসব সহিংস কর্মকাণ্ড জামায়াত-শিবির সংঘটিত করেছে তার থেকেও স্পষ্ট দূরত্বে থেকেছে বিএনপি। এ নিয়ে জোটগত রাজনীতিতে মাঝে মধ্যেই দূরত্ব তৈরি হয়েছে শরিক এ দু’টি দলের মধ্যে। সম্প্রতি হাইকোর্টের রায়ে নির্বাচনে অযোগ্য দল হিসেবে সে সংকট আরো ঘণীভূত হয়েছে বলেও কারো কারো ধারণা।
তাই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার রায়ের পর বিএনপি কি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সেটিই আগ্রহের বিশেষ কারণের একটি। আর রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে জামায়াত কি প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটিও অনেকের আগ্রহের কারণ বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন সময়ে রুচিহীন বক্তব্য এবং বেফাঁস মন্তব্য করায় প্রায়ই সমালোচিত হয়েছেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। প্রায় দুই বছর ৮ মাস ধরে চলা মামলার বিভিন্ন ধাপে প্রসিকিউশন এমন কি ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিদের উদ্দেশ্যেও নানা কটূক্তি করেছেন সাকা চৌধুরী, জড়িয়েছেন বাক-বিতণ্ডায়।
ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আর কথাবার্তায় ট্রাইব্যুনালের এজলাসকক্ষেও আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন তিনি। এমন কি নানা অসঙ্গত আবেদন, নিবেদনে বিচারিক কার্যক্রমকে বিলম্বিত করতে সাকা ও তার আইনজীবীদের তৎপরতাও ছিল লক্ষ্যণীয়।
সব মিলিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে কি রায় হয় এ নিয়ে তরুণদের আগ্রহই বেশি বলে মনে করেন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ।
তাদের মতে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের রাজনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায়- তা যে রায়ই হোক না কেন, চলমান সঙ্কটে সেটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করেন তারা।
২০১০ সালের ২৬ জুন হরতালের আগের রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাংচুর ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সকালে গ্রেফতার করা হয় তাকে। ১৯ ডিসেম্বর একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে। পরে ৩০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো সাকা চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অগ্রগতি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থা। একই বছরের ১৪ নভেম্বর সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) জমা দেওয়া হয়। ১৮ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গত বছরের ৪ এপ্রিল সাকার বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এতে তার বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৩টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ করে গুডস হিলে নির্যাতন, দেশান্তরে বাধ্য করা ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধ।
সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ মে থেকে এ বছরের ১৩ জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা নূরুল ইসলামসহ ঘটনা ও জব্দ তালিকার সাক্ষী মিলিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ৪১ সাক্ষী। আর ৪ সাক্ষীর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিকেই সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
অন্যদিকে গত ১৭ জুন থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত সাকা চৌধুরীর পক্ষে সাফাই সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও রাষ্ট্রপক্ষের জেরা সম্পন্ন হয়। সাকা চৌধুরীসহ মোট ৪ জন সাক্ষী সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ তাদের জেরা সম্পন্ন করেছেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে শুরু হয় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন। ২৮ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই চার কার্যদিবসে চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ১ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্টের প্রথম সেশনের এক ঘণ্টাসহ ৭ কার্যদিবস সাকার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। গত ১৪ আগস্ট পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন ও সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
নানা কারণেই মামলাটির রায় নিয়ে জনমনে রয়েছে বিশেষ আগ্রহ। যে ছয়টি মামলার রায় ইতোমধ্যেই হয়েছে, তার মধ্যে পাঁচটি মামলার আসামিই জামায়াতের শীর্ষ নেতা। প্রথম রায় হওয়া মামলার আসামি আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকার এ দলটিরই সাবেক নেতা।
ঘোষিত রায়গুলোর মধ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও পলাতক জামায়াতের সাবেক রোকন (সদস্য) আবুল কালাম আজাদ বাচ্চু রাজাকারকে ফাঁসি এবং জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমকে ৯০ বছর ও আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার রায়টি হবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সপ্তম এবং ট্রাইব্যুনাল-১ এর তৃতীয় রায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ রায় নিয়ে আগ্রহের কারণ হচ্ছে, এটি হবে কোনো দ্বিতীয় রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে প্রথম রায়। আর প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতা হওয়ার কারণেই রায়টি নিয়ে আগ্রহ খুব বেশি।
আইন বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিকভাবে বিএনপির প্রধান মিত্র জামায়াত। এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল পাঁচটি রায় দিয়েছেন ধর্মাশ্রয়ী এ রাজনৈতিক দলটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে।
জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ওরফে দেইল্যা রাজাকার এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ওরফে কসাই কাদের।
এসব মামলার রায়ের পর বিএনপির শীর্ষ অনেক নেতাই বিচ্ছিন্নভাবে জামায়াতের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সুর মেলালেও রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে দলটিকে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেখা যায়নি। অনেক চেষ্টা করেও ট্রাইব্যুনাল কিংবা ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপিকে পাশে পায়নি জামায়াত।
আবার বিভিন্ন রায়ের পর দেশব্যাপী যেসব সহিংস কর্মকাণ্ড জামায়াত-শিবির সংঘটিত করেছে তার থেকেও স্পষ্ট দূরত্বে থেকেছে বিএনপি। এ নিয়ে জোটগত রাজনীতিতে মাঝে মধ্যেই দূরত্ব তৈরি হয়েছে শরিক এ দু’টি দলের মধ্যে। সম্প্রতি হাইকোর্টের রায়ে নির্বাচনে অযোগ্য দল হিসেবে সে সংকট আরো ঘণীভূত হয়েছে বলেও কারো কারো ধারণা।
তাই সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার রায়ের পর বিএনপি কি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে সেটিই আগ্রহের বিশেষ কারণের একটি। আর রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে জামায়াত কি প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটিও অনেকের আগ্রহের কারণ বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন সময়ে রুচিহীন বক্তব্য এবং বেফাঁস মন্তব্য করায় প্রায়ই সমালোচিত হয়েছেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। প্রায় দুই বছর ৮ মাস ধরে চলা মামলার বিভিন্ন ধাপে প্রসিকিউশন এমন কি ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিদের উদ্দেশ্যেও নানা কটূক্তি করেছেন সাকা চৌধুরী, জড়িয়েছেন বাক-বিতণ্ডায়।
ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আর কথাবার্তায় ট্রাইব্যুনালের এজলাসকক্ষেও আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন তিনি। এমন কি নানা অসঙ্গত আবেদন, নিবেদনে বিচারিক কার্যক্রমকে বিলম্বিত করতে সাকা ও তার আইনজীবীদের তৎপরতাও ছিল লক্ষ্যণীয়।
সব মিলিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে কি রায় হয় এ নিয়ে তরুণদের আগ্রহই বেশি বলে মনে করেন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ।
তাদের মতে, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের রাজনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের রায়- তা যে রায়ই হোক না কেন, চলমান সঙ্কটে সেটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করেন তারা।
২০১০ সালের ২৬ জুন হরতালের আগের রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় গাড়ি ভাংচুর ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সকালে গ্রেফতার করা হয় তাকে। ১৯ ডিসেম্বর একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় তাকে। পরে ৩০ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো সাকা চৌধুরীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে অগ্রগতি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত সংস্থা। একই বছরের ১৪ নভেম্বর সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) জমা দেওয়া হয়। ১৮ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
গত বছরের ৪ এপ্রিল সাকার বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এতে তার বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ২৩টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ করে গুডস হিলে নির্যাতন, দেশান্তরে বাধ্য করা ও অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অপরাধ।
সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ মে থেকে এ বছরের ১৩ জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়। তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা নূরুল ইসলামসহ ঘটনা ও জব্দ তালিকার সাক্ষী মিলিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ৪১ সাক্ষী। আর ৪ সাক্ষীর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিকেই সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
অন্যদিকে গত ১৭ জুন থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত সাকা চৌধুরীর পক্ষে সাফাই সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ ও রাষ্ট্রপক্ষের জেরা সম্পন্ন হয়। সাকা চৌধুরীসহ মোট ৪ জন সাক্ষী সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ তাদের জেরা সম্পন্ন করেছেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে শুরু হয় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন। ২৮ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই চার কার্যদিবসে চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। ১ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্টের প্রথম সেশনের এক ঘণ্টাসহ ৭ কার্যদিবস সাকার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। গত ১৪ আগস্ট পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন ও সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।
No comments