আমিনুল হত্যা- মোস্ট ওয়ান্টেড মুস্তাফিজ ছিলেন বেপজার গুপ্তচর! by লায়েকুজ্জামান
শ্রমিক নেতা আমিনুল হত্যাকারী, পুরস্কার
ঘোষিত আসামি, মুস্তাফিজ ছিল বেপজার গুপ্তচর। ওই প্রতিষ্ঠানের বেতনভুক্ত
কর্মচারী হিসেবে সে অন্য একটি গার্মেন্টে গুপ্তচারবৃত্তি করত।
তাকে
ধরিয়ে দিতে সরকারের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার পর নতুন করে
আলোচনায় এসেছে এ মুস্তাফিজের নাম। শ্রমিক নেতা আমিনুল নিখোঁজ হওয়ার আগে
মুস্তাফিজই একজনকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল আমিনুলের অফিসে। দু’বছর পর প্রায়
হঠাৎ করে মুস্তাফিজকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার পর নানা
প্রশ্ন মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে আশুলিয়ার শ্রমিকদের মাঝে। হঠাৎ পুরস্কার
ঘোষণাকে উদ্দেশ্যমূলক বলেও মনে করছেন অনেক শ্রমিক সংগঠনের নেতা। গত বছর ৪ঠা
এপ্রিল অপহরণের আগেও তিনবার অপহরণ করা হয়েছিল আমিনুলকে। কম করে হলেও ১০
বার শিল্প পুলিশ তাকে অনাহুত ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রেখেছে বিনা দোষে, বিনা
কারণে। সাভারে আশুলিয়ায়, ইপিজেড এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলেই পুলিশের
টার্গেট ছিল আমিনুল। সে সন্ধ্যায় মুস্তাফিজই আমিনুলকে ডেকে নিয়েছিল, সে
ঘটনা জানে আশুলিয়ার সাধারণ শ্রমিকরাও। শ্রমিকরা মুস্তাফিজকে গ্রেপ্তার করতে
বার বার অনুরোধ করলেও কর্ণপাত করেনি প্রশাসন। আমিনুল অপহরণ ও হত্যার পরও
মুস্তাফিজ চাকরি করেছে সাভার ইপিজেডে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থি অধ্যুষিত জেলা মাগুরার ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান। গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার পূর্ব কাদিরপাড়া গ্রামে। পিতা শমসের মল্লিক। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার। স্কুলের পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই ২০০৮ সালের শেষের দিকে মুস্তাফিজ বাড়ি থেকে বের হন কাজের সন্ধানে। সাভার ইপিজেডের কুইন্স গার্ডস নামের একটি টেক্সটাইল মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজে যোগ দেন। এক বছর পর ২০০৯ সালের শেষের দিকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ওই মিলের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে চাকরিচ্যুত করা হয় আন্দোলনের অন্যতম নেতা মুস্তাফিজসহ ২৫ জনকে। চাকরিচ্যুত অন্য শ্রমিকদের চাকরিতে ফিরিয়ে না নিলেও মাত্র পনের দিন পর চাকরিতে বহাল করা হয় মুস্তাফিজকে। সূত্র মতে, মুস্তাফিজকে পুনরায় চাকরিতে বহাল করে কাজ দেয়া হয় ইপিজেডের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বেপজার হয়ে শ্রমিকদের ভেতর গোয়েন্দার কাজ করতে। এরপর থেকে ওই গোয়েন্দাগিরির কাজ করতে থাকে মুস্তাফিজ, যদিও সে অন্য শ্রমিকদের কাছে বলতেন গোয়েন্দা হিসেবে নয় তিনি চাকরি করেন বেপজার কর্মচারী হিসেবে। আশুলিয়া এলাকায় শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত অনেকেই বলেছেন, মুস্তাফিজ কে দেখা যেত বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অফিসগুলোতে গিয়ে বসে থাকতে। ২০১০ সালের দিকে শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামকে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারশনের আশুলিয়া এলাকার সভাপতি করা হয়, সে সময় থেকেই আমিনুলের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে মুস্তাফিজ।
২০১২ সালের ৪ঠা এপ্রিল সন্ধ্যায় কালো বোরকা পরা সুঠাম দেহী একজনকে সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়ায় আমিনুলের অফিসে প্রবেশ করে মুস্তাফিজ। আমিনুলকে বলে মেয়েটি দীর্ঘ দিন ধরে আমার সঙ্গে প্রেম করছে। আজ পালিয়ে এসেছে, বন্ধু তুমি বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও, আমার সঙ্গে গাড়ি আছে চলো তোমাকে নিয়ে কাজী অফিসে যাবো। ধার্মিক স্বভাবের মানুষ আমিনুল মুস্তাফিজকে বলে দেন আমি কোন অনৈতিক কাজ করতে পারবো না। তুমি চলে যাও, এ কথা বলে আমিনুল অফিসের নিচে চলে যান। আমিনুল চলে গেলেও তার অফিসে বসে থাকে মুস্তাফিজ। আধাঘণ্টা পর আমিনুল মোবাইল ফোনে তার অফিসের সহকর্মী লাবনীকে বলেন, তুমি মুস্তাফিজকে বলে দাও, আমি বাড়ি চলে যাচ্ছি। লাবনীর সঙ্গে কথা শেষ করে বাইপাইল গিয়ে বাসে ওঠার জন্য একটি রিকশায় ওঠেন আমিনুল, সঙ্গে সঙ্গে বোরকা পরা নারী বেশিকে নিয়ে বের হয়ে পড়েন মুস্তাফিজ। এর পরই অপহৃত হন আমিনুল ইসলাম। পর দিন ৫ই এপ্রিল তার লাশ পাওয়া যায় টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়। ক্ষতবিক্ষত লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে ঘাটাইল থানা পুলিশ। ৭ই এপ্রিল দৈনিক পত্রিকায় ছবি দেখে আমিনুলের পরিবার শনাক্ত করে তার লাশ। পরবর্তীকালে ঘাটাইলের কবর থেকে তার লাশ এনে দাফন করা হয় গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আটাব ইউনিয়নের হিজলাহাটি গ্রামে। আমিনুল অপহরণের পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে এবং তার শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বার বার মুস্তাফিজকে গ্রেপ্তারের কথা বললেও পুলিশ তা করেনি। কোন মামলা ও হয়নি। আমিনুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকার নড়ে বসতে বাধ্য হয় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরের পর। সে সময় আশুলিয়া থানায় দায়সারা গোছের একটি মামলা করা হয়। পরবর্তীকালে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে শ্রমিক নেতা আমিনুল হত্যা মামলাটি তদন্ত করছেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ফজুলল কবীর। মামলার প্রধান আসামি মুস্তাফিজকে ধরিয়ে দিতে ১ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তার নামে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গিয়েছে মাগুরার শ্রীপুর থানায়। শ্রীপুর থানার পূর্বকাদির পাড়া গ্রামে মুস্তাফিজের প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, প্রায় দেড় বছর ধরে বাড়িতে আসেন না তিনি।
মুস্তাফিজ বেপজার গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করা প্রসঙ্গে বেপজার জিএম আশরাফুল কবীর মানবজমিনকে বলেন, ‘বেপজার নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা আছে, তবে মুস্তাফিজ এখানে কাজ করতেন ডে লেবার হিসেবে।’ তিনি জানান, আমিনুলের অপহরণ ও খুনের সঙ্গে বেপজার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আমিনুল অপহরণের পর ওই সন্ধ্যায় লাবনীসহ আমিনুলের অফিসে অন্য যারা ছিলেন তারা জানিয়েছেন, মুস্তাফিজের সঙ্গে সে দিন বোরকা পরা যে ছিল তাকে মহিলা বলে মনে হয়নি। শ্রমিক নেতা বাবুল আখতার বলেছেন, আমিনুল হত্যার সঙ্গে জড়িত মুস্তাফিজ ছিল ক্রীড়নকমাত্র।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল কবীর বলেন, মামলাটি এখন মুস্তাফিজকে ঘিরে আবর্তিত, সে-ই আমিনুলকে অপহরণে সহযোগিতা করেছে। তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তাকে ধরতে পারলেই মামলার জট খুলবে বলে আশা করি।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থি অধ্যুষিত জেলা মাগুরার ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান। গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার পূর্ব কাদিরপাড়া গ্রামে। পিতা শমসের মল্লিক। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার। স্কুলের পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই ২০০৮ সালের শেষের দিকে মুস্তাফিজ বাড়ি থেকে বের হন কাজের সন্ধানে। সাভার ইপিজেডের কুইন্স গার্ডস নামের একটি টেক্সটাইল মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজে যোগ দেন। এক বছর পর ২০০৯ সালের শেষের দিকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ওই মিলের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে চাকরিচ্যুত করা হয় আন্দোলনের অন্যতম নেতা মুস্তাফিজসহ ২৫ জনকে। চাকরিচ্যুত অন্য শ্রমিকদের চাকরিতে ফিরিয়ে না নিলেও মাত্র পনের দিন পর চাকরিতে বহাল করা হয় মুস্তাফিজকে। সূত্র মতে, মুস্তাফিজকে পুনরায় চাকরিতে বহাল করে কাজ দেয়া হয় ইপিজেডের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বেপজার হয়ে শ্রমিকদের ভেতর গোয়েন্দার কাজ করতে। এরপর থেকে ওই গোয়েন্দাগিরির কাজ করতে থাকে মুস্তাফিজ, যদিও সে অন্য শ্রমিকদের কাছে বলতেন গোয়েন্দা হিসেবে নয় তিনি চাকরি করেন বেপজার কর্মচারী হিসেবে। আশুলিয়া এলাকায় শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত অনেকেই বলেছেন, মুস্তাফিজ কে দেখা যেত বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অফিসগুলোতে গিয়ে বসে থাকতে। ২০১০ সালের দিকে শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামকে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারশনের আশুলিয়া এলাকার সভাপতি করা হয়, সে সময় থেকেই আমিনুলের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে মুস্তাফিজ।
২০১২ সালের ৪ঠা এপ্রিল সন্ধ্যায় কালো বোরকা পরা সুঠাম দেহী একজনকে সঙ্গে নিয়ে আশুলিয়ায় আমিনুলের অফিসে প্রবেশ করে মুস্তাফিজ। আমিনুলকে বলে মেয়েটি দীর্ঘ দিন ধরে আমার সঙ্গে প্রেম করছে। আজ পালিয়ে এসেছে, বন্ধু তুমি বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও, আমার সঙ্গে গাড়ি আছে চলো তোমাকে নিয়ে কাজী অফিসে যাবো। ধার্মিক স্বভাবের মানুষ আমিনুল মুস্তাফিজকে বলে দেন আমি কোন অনৈতিক কাজ করতে পারবো না। তুমি চলে যাও, এ কথা বলে আমিনুল অফিসের নিচে চলে যান। আমিনুল চলে গেলেও তার অফিসে বসে থাকে মুস্তাফিজ। আধাঘণ্টা পর আমিনুল মোবাইল ফোনে তার অফিসের সহকর্মী লাবনীকে বলেন, তুমি মুস্তাফিজকে বলে দাও, আমি বাড়ি চলে যাচ্ছি। লাবনীর সঙ্গে কথা শেষ করে বাইপাইল গিয়ে বাসে ওঠার জন্য একটি রিকশায় ওঠেন আমিনুল, সঙ্গে সঙ্গে বোরকা পরা নারী বেশিকে নিয়ে বের হয়ে পড়েন মুস্তাফিজ। এর পরই অপহৃত হন আমিনুল ইসলাম। পর দিন ৫ই এপ্রিল তার লাশ পাওয়া যায় টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়। ক্ষতবিক্ষত লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে ঘাটাইল থানা পুলিশ। ৭ই এপ্রিল দৈনিক পত্রিকায় ছবি দেখে আমিনুলের পরিবার শনাক্ত করে তার লাশ। পরবর্তীকালে ঘাটাইলের কবর থেকে তার লাশ এনে দাফন করা হয় গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আটাব ইউনিয়নের হিজলাহাটি গ্রামে। আমিনুল অপহরণের পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে এবং তার শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বার বার মুস্তাফিজকে গ্রেপ্তারের কথা বললেও পুলিশ তা করেনি। কোন মামলা ও হয়নি। আমিনুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকার নড়ে বসতে বাধ্য হয় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশ সফরের পর। সে সময় আশুলিয়া থানায় দায়সারা গোছের একটি মামলা করা হয়। পরবর্তীকালে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে শ্রমিক নেতা আমিনুল হত্যা মামলাটি তদন্ত করছেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ফজুলল কবীর। মামলার প্রধান আসামি মুস্তাফিজকে ধরিয়ে দিতে ১ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তার নামে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা গিয়েছে মাগুরার শ্রীপুর থানায়। শ্রীপুর থানার পূর্বকাদির পাড়া গ্রামে মুস্তাফিজের প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, প্রায় দেড় বছর ধরে বাড়িতে আসেন না তিনি।
মুস্তাফিজ বেপজার গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করা প্রসঙ্গে বেপজার জিএম আশরাফুল কবীর মানবজমিনকে বলেন, ‘বেপজার নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা আছে, তবে মুস্তাফিজ এখানে কাজ করতেন ডে লেবার হিসেবে।’ তিনি জানান, আমিনুলের অপহরণ ও খুনের সঙ্গে বেপজার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আমিনুল অপহরণের পর ওই সন্ধ্যায় লাবনীসহ আমিনুলের অফিসে অন্য যারা ছিলেন তারা জানিয়েছেন, মুস্তাফিজের সঙ্গে সে দিন বোরকা পরা যে ছিল তাকে মহিলা বলে মনে হয়নি। শ্রমিক নেতা বাবুল আখতার বলেছেন, আমিনুল হত্যার সঙ্গে জড়িত মুস্তাফিজ ছিল ক্রীড়নকমাত্র।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার ফজলুল কবীর বলেন, মামলাটি এখন মুস্তাফিজকে ঘিরে আবর্তিত, সে-ই আমিনুলকে অপহরণে সহযোগিতা করেছে। তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। তাকে ধরতে পারলেই মামলার জট খুলবে বলে আশা করি।
No comments