ফলহীন বায়বীয় সংলাপে সময়ক্ষেপণ- সমঝোতায় সব পক্ষের আন্তরিকতা প্রয়োজন
দেশের চলমান সঙ্কট নিরসনে রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবাই চাচ্ছেন সংলাপ হোক। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে সংলাপ ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক নেতাদের মুখে মুখে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও বলছে সংলাপের কথা। কিন্তু কোথায়, কখন, কিভাবে এই সংলাপ হবে তা নিয়ে স্পষ্ট করে কেউ কিছু বলছেন না। সংলাপ নিয়ে সরকারি দল থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব যায়নি প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কাছে। ফলে সংলাপ শুধু মুখেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এটি হয়ে পড়েছে অনেকটা বায়বীয় উদ্যোগে। সংলাপ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকেও প্রায় প্রতিদিনই প্রতিবেদন বের হচ্ছে। কিন্তু এর কোনোটাতেও সুনির্দিষ্ট উদ্যোগের কথা থাকছে না। গত কয়েক দিনে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সংলাপ নিয়ে বলা কথায় কারো সাথে কারো মিল নেই। সৈয়দ আশরাফ বলেছেন, ‘আমরা সংলাপ করতে প্রস্তুত, যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে এ সংলাপ হতে পারে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা সংলাপ চাই; কিন্তু শর্ত দিয়ে কোনো সংলাপ হবে না।’ দফতরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন করতে হলে সংলাপ খুবই জরুরি। তবে সে সংলাপ হতে হবে যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষের শক্তির মধ্যে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, সংলাপ করতে হলে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে হবে বিএনপিকে। সংলাপ নিয়ে নেতাদের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্যই বলে দিচ্ছে সরকার আদৌ সংলাপ চাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য হলো, ‘সংলাপের কথা বলে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। সংলাপের কথা শুধু শুনি, আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব আমরা পাইনি। আসলে সরকারই চায় না সংলাপ হোক।’
সংলাপ নিয়ে আন্তরিক কোনো উদ্যোগ না থাকায় এমন একটি ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে সংলাপের কথা বলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে ফেরাতে চাইছে সরকার। বাস্তবে তারা এ নিয়ে আন্তরিক নয়। দেশে এখনকার সঙ্কট মূলত দু’টি ইস্যু নিয়ে। এর একটি হলো তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান। আর দ্বিতীয়টি হলো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের অস্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার বিষয়টি। এ দু’টি ইস্যু নিয়ে এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা ও হানাহানি গৃহসঙ্ঘাতের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। কয়েক দিনে দেড় শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি আর বিরোধী পক্ষ থেকে জননিরাপত্তা কমিটি গঠনের ঘোষণায় দুই পক্ষ পরস্পরের দিকে যুদ্ধের ঘোষণা নিয়ে যেন এগিয়ে আসছে। আর এর মধ্যে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, ব্যবসায়-বাণিজ্য, উন্নয়ন সব কিছু মুখথ্বুড়ে পড়ার উপক্রম। বিক্ষোভে গুলি, হত্যা, হরতাল অবরোধ একটির পর একটি ঘটনা ঘটেই চলেছে। স্পর্শকাতর ধর্মীয় ইস্যুতে জনগণের সংবেদনশীলতায় আঘাত করে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিকে আরো উসকে দেয়ার পরিবর্তে আন্তরিক সংলাপই কেবল সঙ্কট উত্তরণে সহায়তা করতে পারে। সেটি হতে হবে মূল দুই ইস্যুকে নিয়ে। কিন্তু কূটনৈতিক অংশীদার থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী সুশীলসমাজ পর্যন্ত সবাই বলছে বলেই যেন সরকারের কর্তাব্যক্তিরা সংলাপের কথা বলছেন। সংলাপের যেকোনো আয়োজন সরকারের পক্ষ থেকে আগে নিতে হয় বলে বিরোধী পক্ষকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো থেকে শুরু করে অন্যান্য উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। সে উদ্যোগ নেয়ার পর যদি বিরোধী দল তাতে সাড়া না দেয়, তাহলে এ জন্য অবশ্যই বিরোধী দলকে দায়ী করতে হবে।
আমরা মনে করি, দেশ যখন অস্থিরতার আগুনে জ্বলছে, তখন রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ের প্রতিযোগিতা কাম্য হতে পারে না। অনেকে বলে থাকেন ‘ধ্বংস সৃষ্টির প্রসব বেদনা’। এ ধরনের বক্তব্যে বিশ্বাসীরা সরকারের নীতিনির্ধারণে এখন বেশি প্রভাব বিস্তার করে আছে। ধ্বংস করে সৃষ্টির চিন্তা করার সময় এটি নয়। এখন শান্তিপূর্ণ পথে সৃষ্টির চিন্তা করতে হবে। জীবন, সম্পদ, সম্ভাবনাÑ এসবের ধ্বংস অনেক হয়েছে। এবার দয়া করে সবাই শান্তি ও সৃষ্টির পথে আসবেন, দেশকে সম্ভাবনার কক্ষপথে এগিয়ে নেবেনÑ এটিই আমাদের ঐকান্তিক প্রত্যাশা।
সংলাপ নিয়ে আন্তরিক কোনো উদ্যোগ না থাকায় এমন একটি ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে সংলাপের কথা বলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে ফেরাতে চাইছে সরকার। বাস্তবে তারা এ নিয়ে আন্তরিক নয়। দেশে এখনকার সঙ্কট মূলত দু’টি ইস্যু নিয়ে। এর একটি হলো তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান। আর দ্বিতীয়টি হলো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের অস্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার বিষয়টি। এ দু’টি ইস্যু নিয়ে এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা ও হানাহানি গৃহসঙ্ঘাতের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। কয়েক দিনে দেড় শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি আর বিরোধী পক্ষ থেকে জননিরাপত্তা কমিটি গঠনের ঘোষণায় দুই পক্ষ পরস্পরের দিকে যুদ্ধের ঘোষণা নিয়ে যেন এগিয়ে আসছে। আর এর মধ্যে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, ব্যবসায়-বাণিজ্য, উন্নয়ন সব কিছু মুখথ্বুড়ে পড়ার উপক্রম। বিক্ষোভে গুলি, হত্যা, হরতাল অবরোধ একটির পর একটি ঘটনা ঘটেই চলেছে। স্পর্শকাতর ধর্মীয় ইস্যুতে জনগণের সংবেদনশীলতায় আঘাত করে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতিকে আরো উসকে দেয়ার পরিবর্তে আন্তরিক সংলাপই কেবল সঙ্কট উত্তরণে সহায়তা করতে পারে। সেটি হতে হবে মূল দুই ইস্যুকে নিয়ে। কিন্তু কূটনৈতিক অংশীদার থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী সুশীলসমাজ পর্যন্ত সবাই বলছে বলেই যেন সরকারের কর্তাব্যক্তিরা সংলাপের কথা বলছেন। সংলাপের যেকোনো আয়োজন সরকারের পক্ষ থেকে আগে নিতে হয় বলে বিরোধী পক্ষকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানানো থেকে শুরু করে অন্যান্য উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। সে উদ্যোগ নেয়ার পর যদি বিরোধী দল তাতে সাড়া না দেয়, তাহলে এ জন্য অবশ্যই বিরোধী দলকে দায়ী করতে হবে।
আমরা মনে করি, দেশ যখন অস্থিরতার আগুনে জ্বলছে, তখন রাজনৈতিক স্বার্থ আদায়ের প্রতিযোগিতা কাম্য হতে পারে না। অনেকে বলে থাকেন ‘ধ্বংস সৃষ্টির প্রসব বেদনা’। এ ধরনের বক্তব্যে বিশ্বাসীরা সরকারের নীতিনির্ধারণে এখন বেশি প্রভাব বিস্তার করে আছে। ধ্বংস করে সৃষ্টির চিন্তা করার সময় এটি নয়। এখন শান্তিপূর্ণ পথে সৃষ্টির চিন্তা করতে হবে। জীবন, সম্পদ, সম্ভাবনাÑ এসবের ধ্বংস অনেক হয়েছে। এবার দয়া করে সবাই শান্তি ও সৃষ্টির পথে আসবেন, দেশকে সম্ভাবনার কক্ষপথে এগিয়ে নেবেনÑ এটিই আমাদের ঐকান্তিক প্রত্যাশা।
No comments