যেভাবে চলছে দল নির্বাচন
ক্রিকেট বোর্ড থাকলে নির্বাচক কমিটি থাকবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিবি) একটা নির্বাচক কমিটি আছে। তবে বেতন দিয়ে এই নির্বাচক কমিটি রাখার যুক্তি এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দলে কে থাকবেন, কে থাকবেন না—সেসব তো নির্বাচকদের সিদ্ধান্তেই হয় না। বিসিবি কর্মকর্তারাও সে ব্যাপারে যথেষ্টই সক্রিয়।
বোর্ডের বিশ্বস্ত সূত্রে যেমন জানা গেছে, রকিবুল হাসানের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তাঁকে গত ইংল্যান্ড সফরের ওয়ানডে দলে নিতে ইতস্তত বোধ করছিলেন নির্বাচকেরা। বোর্ডের মনোভাব বুঝতে প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলম এক বোর্ড পরিচালককে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, রকিবুলকে দলে নেওয়াটা ঠিক হবে কি না। ওই বোর্ড পরিচালকের সম্মতিতে রকিবুল দলে এলেনও। কিন্তু পরে টেকনিক্যাল কমিটির সভায় উল্টো তোপের মুখে পড়েন প্রধান নির্বাচক—‘কেন নেওয়া হলো রকিবুলকে? ও তো কোনো ক্রিকেটারই না!’ প্রধান নির্বাচক মনে করিয়ে দিলেন, সিদ্ধান্তটা একজন বোর্ড পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করেই নেওয়া। দুর্ভাগ্য রফিকুলের। যাঁর সঙ্গে আলোচনা করে রকিবুলকে দলে নিয়েছিলেন, সেই বোর্ড পরিচালক তাঁকে সমর্থন তো করলেনই না, উল্টো বললেন, তিনি নাকি তখন খুব ঝামেলায় ছিলেন। ফোনে কী বলতে কী বলেছেন...! ইনজুরিতে পড়ে দেশে ফিরে এলেও রকিবুল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ৭৬ রান করে তাঁর দলভুক্তির যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছিলেন।
জাতীয় ক্রিকেট দল নির্বাচন এখন এই প্রক্রিয়াতেই চলছে। নির্বাচকেরা একটা নাম লেখার আগে শতবার চিন্তা করেন, নামটা থাকবে তো! এত ‘ভেবেচিন্তে’ কাজ করার পরও তাঁদের স্বাক্ষর করা দল বদলে যায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে। গত মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজ থেকেই শুরু এই প্রবণতার। নির্বাচকদের দেওয়া টেস্ট দলে থাকলেও বোর্ডের ইচ্ছায় সেবার কাটা পড়ে রকিবুলের নাম। সূত্র জানিয়েছে, কাটাছেঁড়ার প্রতিবাদে এক নির্বাচক বোর্ডের বদলে দেওয়া দলে সই করতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। ‘এটাই প্রথম, এটাই শেষ’ আশ্বাস দিয়ে পরে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে ওই নির্বাচককে দিয়ে।
ওটা প্রথম ঘটনা, তবে শেষ নয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজের দলেও বোর্ড কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ আর কাটাছেঁড়ার অভিযোগ আছে। এশিয়া কাপ চলাকালে শ্রীলঙ্কা থেকেই নাকি ফ্যাক্সে ইংল্যান্ড সফরের দল নির্বাচনের নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল নির্বাচক কমিটিকে। বোর্ড সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল ও বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির প্রধান এনায়েত হোসেন ওই সময় শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করছিলেন। নির্বাচকদের করা দলে তার পরও নাঈম ইসলাম থেকে গেলে পরে সে নাম কেটে ঢোকানো হয় ফয়সাল হোসেনের নাম। ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মার হিসেবে ফয়সাল জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখতেই পারেন। কিন্তু এভাবে দলে আসতে নিশ্চয়ই তিনিও চাননি। এ ছাড়া এশিয়া কাপের দলেও বোর্ডের খবরদারির অভিযোগ আছে।
এসব ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলমের বরাবরই ‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না’ অবস্থা। ভাবটা এমন, সবাই যখন সবকিছু জানেই, ‘সাধারণ চাকুরে’ হয়ে খামোখা ঝামেলায় পড়ার দরকার কী! সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি অন্য দুই নির্বাচক আকরাম খান ও জাহিদ রাজ্জাকও। তবে দল নির্বাচনে বোর্ডের হস্তক্ষেপ নেই, এমন কথাও নির্বাচকদের কেউ বলছেন না। আকরাম খান বলেছেন, ‘আমি এ নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করব না।’ জাহিদ রাজ্জাকেরও প্রায় একই কথা, ‘আমি তো এখনো নতুন। সবকিছু ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারিনি। আমার এখনই এসব নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।’
নির্বাচকেরা স্বীকার-অস্বীকার কোনোটাই না করলেও ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির প্রধান এনায়েত হোসেন দল নির্বাচনে বোর্ডের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন, ‘দল নির্বাচনে বোর্ডের প্রভাব খাটানোর কোনো অভিযোগই ঠিক না। নির্বাচকদের দেওয়া দল খারাপ পারফরম্যান্স করলে বোর্ড জবাবদিহি চাইতে পারে। কিন্তু বোর্ড কখনোই একজনের নাম কেটে আরেকজনকে দলে ঢোকায়নি। নির্বাচকেরা যাঁদের নেন তাঁরাই দলে থাকে।’
এনায়েত হোসেন যা-ই বলুন, বোর্ড পরিচালকদের অযাচিত হস্তক্ষেপের অন্য প্রভাবও এর মধ্যে পড়তে শুরু করেছে জাতীয় দলে। সাকিব আল হাসান যে হুট করে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেন, তার একটা কারণ যে দলের মধ্যে বিসিবি কর্মকর্তাদের ইচ্ছার অনুপ্রবেশ নয়, সেটা কে বলতে পারে?
বোর্ডের বিশ্বস্ত সূত্রে যেমন জানা গেছে, রকিবুল হাসানের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তাঁকে গত ইংল্যান্ড সফরের ওয়ানডে দলে নিতে ইতস্তত বোধ করছিলেন নির্বাচকেরা। বোর্ডের মনোভাব বুঝতে প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলম এক বোর্ড পরিচালককে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন, রকিবুলকে দলে নেওয়াটা ঠিক হবে কি না। ওই বোর্ড পরিচালকের সম্মতিতে রকিবুল দলে এলেনও। কিন্তু পরে টেকনিক্যাল কমিটির সভায় উল্টো তোপের মুখে পড়েন প্রধান নির্বাচক—‘কেন নেওয়া হলো রকিবুলকে? ও তো কোনো ক্রিকেটারই না!’ প্রধান নির্বাচক মনে করিয়ে দিলেন, সিদ্ধান্তটা একজন বোর্ড পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করেই নেওয়া। দুর্ভাগ্য রফিকুলের। যাঁর সঙ্গে আলোচনা করে রকিবুলকে দলে নিয়েছিলেন, সেই বোর্ড পরিচালক তাঁকে সমর্থন তো করলেনই না, উল্টো বললেন, তিনি নাকি তখন খুব ঝামেলায় ছিলেন। ফোনে কী বলতে কী বলেছেন...! ইনজুরিতে পড়ে দেশে ফিরে এলেও রকিবুল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ৭৬ রান করে তাঁর দলভুক্তির যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছিলেন।
জাতীয় ক্রিকেট দল নির্বাচন এখন এই প্রক্রিয়াতেই চলছে। নির্বাচকেরা একটা নাম লেখার আগে শতবার চিন্তা করেন, নামটা থাকবে তো! এত ‘ভেবেচিন্তে’ কাজ করার পরও তাঁদের স্বাক্ষর করা দল বদলে যায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে। গত মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজ থেকেই শুরু এই প্রবণতার। নির্বাচকদের দেওয়া টেস্ট দলে থাকলেও বোর্ডের ইচ্ছায় সেবার কাটা পড়ে রকিবুলের নাম। সূত্র জানিয়েছে, কাটাছেঁড়ার প্রতিবাদে এক নির্বাচক বোর্ডের বদলে দেওয়া দলে সই করতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। ‘এটাই প্রথম, এটাই শেষ’ আশ্বাস দিয়ে পরে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে ওই নির্বাচককে দিয়ে।
ওটা প্রথম ঘটনা, তবে শেষ নয়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজের দলেও বোর্ড কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ আর কাটাছেঁড়ার অভিযোগ আছে। এশিয়া কাপ চলাকালে শ্রীলঙ্কা থেকেই নাকি ফ্যাক্সে ইংল্যান্ড সফরের দল নির্বাচনের নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল নির্বাচক কমিটিকে। বোর্ড সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল ও বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির প্রধান এনায়েত হোসেন ওই সময় শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করছিলেন। নির্বাচকদের করা দলে তার পরও নাঈম ইসলাম থেকে গেলে পরে সে নাম কেটে ঢোকানো হয় ফয়সাল হোসেনের নাম। ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মার হিসেবে ফয়সাল জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখতেই পারেন। কিন্তু এভাবে দলে আসতে নিশ্চয়ই তিনিও চাননি। এ ছাড়া এশিয়া কাপের দলেও বোর্ডের খবরদারির অভিযোগ আছে।
এসব ব্যাপারে প্রধান নির্বাচক রফিকুল আলমের বরাবরই ‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না’ অবস্থা। ভাবটা এমন, সবাই যখন সবকিছু জানেই, ‘সাধারণ চাকুরে’ হয়ে খামোখা ঝামেলায় পড়ার দরকার কী! সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি অন্য দুই নির্বাচক আকরাম খান ও জাহিদ রাজ্জাকও। তবে দল নির্বাচনে বোর্ডের হস্তক্ষেপ নেই, এমন কথাও নির্বাচকদের কেউ বলছেন না। আকরাম খান বলেছেন, ‘আমি এ নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করব না।’ জাহিদ রাজ্জাকেরও প্রায় একই কথা, ‘আমি তো এখনো নতুন। সবকিছু ঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারিনি। আমার এখনই এসব নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।’
নির্বাচকেরা স্বীকার-অস্বীকার কোনোটাই না করলেও ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির প্রধান এনায়েত হোসেন দল নির্বাচনে বোর্ডের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন, ‘দল নির্বাচনে বোর্ডের প্রভাব খাটানোর কোনো অভিযোগই ঠিক না। নির্বাচকদের দেওয়া দল খারাপ পারফরম্যান্স করলে বোর্ড জবাবদিহি চাইতে পারে। কিন্তু বোর্ড কখনোই একজনের নাম কেটে আরেকজনকে দলে ঢোকায়নি। নির্বাচকেরা যাঁদের নেন তাঁরাই দলে থাকে।’
এনায়েত হোসেন যা-ই বলুন, বোর্ড পরিচালকদের অযাচিত হস্তক্ষেপের অন্য প্রভাবও এর মধ্যে পড়তে শুরু করেছে জাতীয় দলে। সাকিব আল হাসান যে হুট করে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেন, তার একটা কারণ যে দলের মধ্যে বিসিবি কর্মকর্তাদের ইচ্ছার অনুপ্রবেশ নয়, সেটা কে বলতে পারে?
No comments